![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম আদালত হলো মানুষের বিবেক।
১। মাননীয় ডা. সাহেব! আপনি লিখেছেন,
‘২) ধরে নিলাম, একজন ব্যক্তি যাকে বছরের পর বছর ‘বাবা’ বলে ডেকে এসেছে, সে একসময় জানলো যে উক্ত ‘বাবা’ তার বায়োলজিক্যাল বাবা নয় বরং ‘পালক বাবা’। সেক্ষেত্রে, বায়োলজিক্যাল বাবা না বলে কী উক্ত পালক বাবাকে ‘বাবা’ বলা যাবে না ? উত্তর হলো – এই পালক বাবা তাকে বছরের পর বছর লালনপালন করে ‘বাবার দায়িত্ব’ পালন করে এসেছেন, সুতরাং ‘পালক বাবা’ হোক আর ‘বায়োলজিক্যাল বাবা’হোক, ‘বাবা’ শেষ পর্যন্ত ‘বাবা’-ই। এতে প্রমাণের দরকার পড়ে না।’
উত্তর : আপনার স্বোদ্ভাবিত এ প্রশ্নোত্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সম্পৃক্ততা কতটুকু ? ধান বাধতে শিবের গীত- ব্যাপারটি কি এরকম হয়ে গেল না ? সুদীর্ঘকাল যাবত প্রতিপালনকারী ব্যক্তিকে বাবা বলা যাবে কি যাবে না- এটা তো একটি স্বতন্ত্র প্রসঙ্গ। এর সাথে প্রমাণসহ বাবা মা বলা না বলার সংশ্লিষ্টতা কি ? খামোকা অদ্ভুত প্রশ্নোত্তরের অবতারণা করে টাইম পাস করার এতো কি প্রয়োজন হলো ?
হয়তো বলবেন আপনি সম্পৃক্ততার সন্ধান না পেলেও আমার নিকট শক্তিশালী সম্পৃক্ততা বিদ্যমান। যদি পরতমতসহিষ্ণুতার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আপনার মতটিকে আপাতত মেনেও নিই তবু প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে বলা যাবে আপনার এ প্রশ্নোত্তরের মাঝে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ রয়েছে। কারণ আপনার প্রশ্নের সারবক্তব্য হলো, একজন ব্যক্তি বছরের পর বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে জন্মদাতা বাবা হিসেবে বাবা বলে ডেকে আসছে। একসময় প্রমাণ হলো, সে তার বায়োলজিক্যাল বা আসল বাবা নয়; নকল বাবা। এখন এ নকল বাবাকে বাবা বলে ডাকা যাবে কি না ? আপনি এ প্রশ্নের উত্তর করেছেন, আসল হোক নকল হোক সে শেষ পর্যন্ত বাবাই। এতে প্রমাণের দরকার পড়ে না। উত্তরে ‘এতে প্রমাণের দরকার পড়ে না।’ কথাটা কেন আসল ? প্রশ্নেই তো বলে এসেছেন ‘সে একসময় জানলো যে উক্ত ‘বাবা’ তার বায়োলজিক্যাল বাবা নয় বরং ‘পালক বাবা’।’ আবার প্রমাণ প্রসঙ্গ কেন ? সে তো জেনে গেছে, সে তার আসল বাবা নয়। এখন তাকে বাবা ডাকা যাবে কি না সে বিষয়ে কথা বলুন। এখানে তো বাবা প্রমাণের প্রসঙ্গ আসে না। ডা. সাহেব ! ভুলটা বেশ সুক্ষ্ন। তবুও সেটা ভুল। এবং আপনাদের মত মানবশ্রেণীর ক্ষেত্রে সে ভুলটা আর ক্ষুদ্র বা সুক্ষ্ন থাকে না; মহাপ্রমাদ হিসেবে পরিগণিত হয়। কারণ আপনারা যে ভুলের ঊর্ধ্বে ! আপনাদের কথা যে অলঙ্ঘনীয় !!
২। আপনি লিখেছেন ‘সুতরাং ‘পালক বাবা’ হোক আর ‘বায়োলজিক্যাল বাবা’হোক, ‘বাবা’ শেষ পর্যন্ত ‘বাবা’-ই।’
উত্তর : ডা. সাহেব ! কথাটা কি ধোপে টেকার পর্যায়ে পড়ে ? এমন একটা দুঃখজনক ঘটনা যদি আপনার জীবনে ঘটে বা ঘটে যেত তবে কি আপনি ‘আসল হোক নকল হোক বাবা তো বাবাই’ এ কথা বলে ব্যাপারটিকে সহনীয় করে নিতে পারতেন ? ডা. সাহেব ! থিউরি এক জিনিস বাস্তবতা আরেক জিনিস। কথা বলতে হলে কখনো নিজেকেও অন্যের স্থানে বিবেচনা করতে হয়। বাস্তবতা এমন জিনিস যে কখনো রূঢ় বাস্তবতার সম্মুখীন হলে পাঁড় নাস্তিকও আস্তিকতার পা জড়িয়ে ধরতে বাধ্য হয়। তসলিমা নাসরিন বোধ হয় আপনাদের চেয়ে একটু বেশি পরিমাণ নাস্তিক। নাস্তিকতা তত্ত্বের এ গুরু ব্যক্তিত্বটিও এক সময় বেশ আশাবাদী হয়ে বলে ফেলে ছিলেন, স্রষ্টা ! তুমি যদি সত্যিই থেকে থাকো এবং স্বর্গ নরক বলে যদি কিছু থেকে থাকে তবে আমার মমতাময়ী মাকে স্বর্গের আনন্দঘন জায়গাটিতে স্থান দিয়ো। দেখুন মা হারানোর রূঢ় বাস্তবাতায় সে তিলে তিলে গড়ে তোলা নিজের অটল বিশ্বাসটাকেও অটুট রাখতে পারে নি। সাথে সাথে ফিফটিতে নামিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।
দেখুন, বাবা শব্দটিকে কারো সাথে সংযুক্ত করা গেলেই সে বাবা হয়ে যায় না। পালক বাবা সে বাবা নয়। সে নিছক পালকই। প্রকৃত জন্মদাতা বাবার মর্যাদা সে পৃথিবীর কোনো আদালতে পাবে না। পেলে দত্তক বাবা বা পালক বাবার ঠুনকো মর্যাদা পেতে পারে।
বস্তুত পালক ব্যক্তির সাথে বাবা শব্দের সংযুক্তিটা নিতান্তই রূপক। প্রতিপালনের দিক থেকে তার সাথে প্রকৃত বাবার একটা সাযুজ্য রয়েছে বলেই তার সাথে বাবা শব্দটির সংযোগ হয়েছে। কাউকে বাঘের বাচ্চা বলা হলেই সে বাঘের বাচ্চা হয়ে যায় না। সে আদতে মানুষই থেকে যায়। বাঘের বাচ্চার ব্যবহারটা এখানে রূপক; বাস্তবিক নয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আমরা জাতির জনক বলি। এ বলা বা ব্যবহারটা কি রূপক না প্রাকৃতিক ? এটা আমরা ছোট বড় সকলেই জানি। বাংলাদেশ জন্মের পেছনে তাঁর ভূমিকাটা মুখ্য ছিল বলেই তাঁকে জাতির জনক বলে একটি সম্মানজনক উপাধি প্রদান করা হয়েছে। একজন পুত্রের জন্মের পেছনে যেমন একজন জন্মদাতা পিতার মুখ্য ভূমিকা থাকে ঠিক তদ্রূপ বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পেছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখ্য এবং প্রধানতম ভূমিকা ছিল বলে তাঁকে জাতির জনক উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। এটা একটি সম্মানজনক উপাধি। এটাকে কেউ বাস্তব এবং প্রকৃতিকভাবে ব্যাহার করতে পারে না। কেউ যদি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কাগজ কলমে নিজের পিতা বা জনক বলে ব্যবহার করে তাহলে সেটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হবে। এতটুকু বোধ বুদ্ধি যার হবে না সে তো বুদ্ধিমান প্রাণীর শ্রেণীভুক্ত হতে পারবে না। উপমা, রূপক, তুলনা, উৎপ্রেক্ষা, পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষ- অলঙ্কার শাস্ত্রের এ জাতীয় শব্দশ্রেণীর শিল্পিত রূপ ও নান্দনিকতা সম্বন্ধে যার মৌলিক ধারণা নেই তাকে তো শিক্ষিত শ্রেণীর কাতারভুক্ত করাটাই দুরূহ হয়ে পড়বে।
ডা. সাহেব ! বঙ্গবন্ধু বিষয়ক উক্ত আলোচনার মাঝে আবার খুঁত অন্বষা করে নিজের জ্ঞানিক দৈন্য ও বুদ্ধির অসহায়ত্ব প্রকাশ করবেন না। ইতিমধ্যেই আপনি আপনার সমালোচনা সিরিজের দ্বিতীয় পর্বটি অন লাইনে আপলোড করেছেন। পর্বটি পাঠ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সে সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনায় পরে আসছি। তবে এখানে এতটুকু বলে রাখি, দ্বিতীয় এ পর্বটিতে আপনার জ্ঞানিক অসহায়ত্ব ও ঈন্দ্রিয়বৈকল্য চরমভাবে উদ্ভাসিত হয়ে পড়েছে। এতটা নগ্নভাবে আপনি আপনার বিবেকী-বৈকল্য বিকশিত করবেন আমি কখনো ভাবি নি। আপনাদের সম্বন্ধে আমার একটা স্বচ্ছ ধারনা ছিল। ভেবে ছিলাম সত্যিই আপনারা প্রমাণ-তত্ত্বে বিশ্বাসী। কিন্তু এখন যে অভিজ্ঞতা হচ্ছে তাতে আপনাদের কথার জবাব লিখতে গিয়ে নিজেকে বড় অসহায় মনে হয়।
গ্রামীণ পরিবেশে কিছুটা দুর্লভ হলেও একটি অশ্লীল কালচার চালু আছে। স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিবাদের সৃষ্টি হলে মূর্খ স্বামীরা স্ত্রীর গায়ে হাত তুলে দেয়। সৃষ্টিগত কারণেই নারীরা পেশি শক্তিতে পুরুষের তুলনায় কিছুটা দুর্বল হয়ে থাকে। বিবদমান এমন পরিস্থিতিতে স্ত্রীরা দৈহিক শক্তিতে না পেরে কখনো কৌশলে স্বামীর শিশ্নাঞ্চলটা খুব শক্ত করে চেপে ধরে বসে। ব্যাস, রিজাল্ট যা হবার তাই হয়। স্ত্রী বিজয় মাল্যে ভূষিত হয়। স্বামী বেচারা পরাজয়ের গ্লানি মাথায় নিয়ে শো শো গর্জন করতে থাকে। বিজয় মাল্য স্ত্রীই পেলেন। কিন্তু প্রক্রিয়াটা দেখলেন ? পৃথিবীর কোন ইতর প্রাণীটা স্ত্রীকে মহাবীর অভিধায় ভূষিত করবে ?
ডা. সাহবে ! আপনার দ্বিতীয় পর্বের কাণ্ডটার সাথে কি গ্রামীণ এ অশ্লীল কাণ্ডটির খুব বেশি ব্যবধান পরিলক্ষিত হয় ? আমার ক্ষুদ্র বিবেক বলে, অণু পরিমাণও ব্যবধান নেই; বরং হান্ড্রেডে হান্ড্রেড।
৩। ডা. সাহেব আপনি লিখেছেন, ‘প্রশ্নঃ যদি বাবা প্রমাণের প্রয়োজন না থাকে তবে আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণের প্রয়োজন কী ? উত্তরঃ আইনগত বিষয়াদির বাইরে কেন ‘বাবা’ প্রমাণের প্রয়োজন নেই তা ওপরেই বলা হয়েছে কিন্তু ‘স্রষ্টা’ প্রমাণ করার বিবিধ প্রয়োজন আছে। কেননা.....’
উত্তর : ডা. সাহেব ! পেছনে বলে এসেছি, বাবা প্রমাণের প্রয়োজ না থাকার পেছনে মূল কারণ হলো চরম ও পরম বিশ্বাস। মা-বাবাকেন্দ্রিক পারিপাশ্বিক তথ্য উপাত্তে একটি অলঙ্ঘনীয় ও অবিনশ্বর বিশ্বাস জন্মে থাকে, তিনিই আমার মা, তিনিই আমার বাবা। এ বিশ্বাসকে টলিয়ে দেবার মত যুদ্ধাস্ত্র এখনো পৃথিবীতে তৈরি হয় নি। এ কারণে কেউ ডিএনএ টেস্ট করে বাবা মাকে বাবা মা বলে না। কেউ যদি দিনকে দিন বলে বিশ্বাস না করে তাহলে পৃথিবীর কোন শক্তি আছে তাকে প্রমাণ-সূত্র দিয়ে দিন আছে বলে বিশ্বাস করাতে পারবে ?
পৃথিবীতে এমন অসংখ্য বিষয় রয়েছে যা নিজে বুঝা যায় কিন্তু অন্যকে বোঝানো যায় না। না বুঝাতে পারার দুটি কারণ হতে পারে। ১. বিষয়টার ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যই এমন যে সেটার বাস্তবতা অন্যকে কোনো কিছু দিয়েই বুঝানো সম্ভব নয়। যেমন মা হারানোর ব্যথার গতি ও প্রকৃতি একমাত্র সেই বুঝবে যার মা চিরতরে হারিয়ে গেছে। এ বেদনার প্রকৃতি সে অন্যকে পৃথিবীর কোনো কিছু দিয়েই বুঝাতে বা বিশ্বাস করাতে পারবে না। অন্য ব্যক্তি শুধু এতটুকু বুঝবে, মা হারালে ব্যথা অনুভূত হয়। এর বেশ কিছু নয়। তাই কবি বলছেন,
‘কি যাতনা বিষে
বুঝিবে সে কিসে
কভু আশীবিষে
দংশেনি যারে।’
মৃত্যু যন্ত্রণার ধরণ কি এটা একমাত্র সেই বলতে পারবে যে মৃত্যুবরণ করছে বা করেছে। অন্যের বুঝার বা বিশ্বাস করার সাধ্য নেই। ২. বিষয়টা প্রমাণাতীত সত্য কিন্তু যাকে বুঝানো হবে বা বিশ্বাস করানো হবে তার জ্ঞানিক দুর্বলতা ও বুদ্ধির স্বল্পতা এখানে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এখানে বুঝতে না পারা বা বিশ্বাস করতে না পারার জন্য তার জ্ঞানিক সীমাবদ্ধতা ও বুদ্ধির স্বল্পতাই দায়ী। তার জ্ঞানিক সীমাবদ্ধতা ও বুদ্ধির স্বল্পতার কারণে মূল বিষয়টি অপ্রমাণিত বা অবিদ্যমান হয়ে যাবে না।
প্রশান্ত মহাসগরের প্রত্যন্ত এক তীরে বাদামের খোসায় ভাসতে থাকা একটি পীপিলিকা যদি বলে জাপান কোরিয়া বলতে কিছু নেই। এগুলো মানুষ নামী প্রাণীগুলোর বানানো কথা। পিপীলিকার এ বক্তব্যে জাপান কোরিয়া মিথ্যা হয়ে যাবে না। বরং জাপান কোরিয়া না চেনার জন্য পিপীলিকার জ্ঞানিক সীমাবদ্ধতাই দায়ী। মানুষের না বুঝাতে পারা বা বিশ্বাস করাতে না পারাটা এর জন্য দায়ী নয়।
ডা. সাহেব ! আমরা স্রষ্টা প্রমাণের প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করি না। আপনি স্রষ্টাকে প্রমাণ করুন। সবটুকু মমতা ঢেলে নিবিড়ভাবে স্রষ্টা প্রমাণের সাধনায় নিরত থাকুন। আস্তিকদের প্রমাণ করতে বলেন কেন ? আস্তিকদের স্রষ্টা প্রমাণের প্রয়োজন ছিল। তারা তাদের মত করে স্রষ্টাকে প্রমাণ করে নিয়েছে। তাদের প্রমাণসূত্র যদি আপনাদের পসন্দ না হয় তাহলে আপনারা আপনাদের মত করে আপনাদের উদ্ভাবিত প্রমাণ-সূত্র দ্বারা স্রষ্টা প্রমাণের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করুন।
এখন প্রশ্ন হলো, আপনারা এ প্রয়োজনীয়তা পূরণে কতটুকু সাধনা ব্যয় করেছেন ? শুধু কয়েকখানা গ্রন্থ পাঠই কি এ প্রয়োজনীয়তা পূরণের সর্বশেষ চাবিকাঠি ? না এর জন্য আরো কিছু করণীয় আছে ? আমাদের দেশীয় পরিমণ্ডলে আপনারা যারা নাস্তিকতার দর্শন লালন করছেন তারা তো বংশগত নাস্তিক নন; স্বশিক্ষিত নাস্তিক। একপেশে বিচ্ছিন্ন কিছু অধ্যয়নই আপনাদের এ দর্শনের মূল কারিকুলাম।
একজন প্রশ্ন করল, ভাই ! পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কত কিলোমিটার ? সে বলল, পনের কোটি কিলোমিটার। প্রশ্নকর্তা বলল, ধ্যাত এসব শোনা কথা বিশ্বাস করি না। তুমি কি মেপে দেখেছ ? উত্তরদাতা বলল, ভাই ! সৌরবিজ্ঞানীগণ এ দূরত্বের কথা বলেছেন। তারা যেহেতু এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাই তাদের কথা আমি বিশ্বাস করি। এখন তুমি বিশ্বাস না করলে তো আমার কিছু করার নেই। তোমার বিশ্বাস না হলে তুমি মেপে দেখো। তুমি পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব না মেপে আমার বিশ্বাসকে অবিশ্বাস্য বলতে পারো না। তুমি যদি মাপতে না পারো তাহলে তো সেটা তোমার সীমাবদ্ধতা ও দুর্বলতা। তোমার সীমাবদ্ধতা ও দুর্বলতার কারণে তো আমার অটল বিশ্বাস ভেঙ্গে যাবে না বা ভাঙ্গতে পারি না।
আস্তিকরা বলছে আল্লাহ আছেন আরশের উপর। এখন আপনাদের যদি এ কথা বিশ্বাস না হয় তাহলে আরশ খুঁজে বের করুন। তারপর গিয়ে দেখুন আল্লাহ আছে কি নেই ? এর জন্য প্রথমত এ মহাজগতের সীমানা খুঁজে বের করতে হবে।
যদি বলেন, বিজ্ঞানীগণ তো আরশ খুঁজে পাচ্ছে না। এর প্রথম উত্তর হলো, কথা হচ্ছে আপনার সাথে। সুতরাং আপনি খুঁজুন। বিজ্ঞানীর সাথে আমার ডিবেট হচ্ছে না। আপনি যদি খুঁজতে না পারেন তাহলে সেটা আপনার অক্ষমতা এবং দুর্বলতা। আপনার দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতার কারণে কি আমার স্রষ্টা নেই হয়ে যাবে ? আর বিজ্ঞানীগণ যদি আরশ বা স্রষ্টার সন্ধান না পান তাহলে সেটা তাদের সীমাবদ্ধতা। তাদের সীমাবদ্ধতার কারণে স্রষ্টার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে না। বিজ্ঞানীগণ যদি এ মহাজগতের সর্বদিকের সীমানা খুঁজে পায় এবং মহাজগতের সবখানে তন্ন তন্ন করে অনুসন্ধান করেও আরশ কিংবা স্রষ্টার সন্ধান না পায় এবং সর্বশেষে একটি প্রেস ব্রিফিং দিয়ে বলে যে আমরা মহাজগতের সবখানে ঘুরে বেড়িয়েছি কোথাও আরশ বা স্রষ্টার সন্ধান পাই নি তাহলে বাহ্যিক বিবেচনায় এর একটা মূল্যায়ন বা বিবেচনা হতে পারে। কিন্তু বিজ্ঞানীগণ এ যাবত মহাজগতের কোনো কিনারাই খুঁজে পেল না। তাহলে তাদের বক্তব্যকে কি করে মেনে নিতে পারি ?
জনৈক শাশুড়ির বামন পুত্রবধূ কলস থেকে পানি তুলতে গেল। কিন্তু উঁচু কলস থেকে পানি তুলতে গিয়ে নাকের অলঙ্কার কলসের ভিতরে পড়ে যায়। শাশুড়িকে বললে শাশুড়ি বলে, কলসের ভিতরে হাত দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে আসো। পুত্রবধূ শাশুড়ির কথা মত কলসের ভিতরে নিজের ক্ষুদে হস্তটি ঢুকিয়ে দেয়। কিন্তু কলসের তুলনায় তো বধূর হাতখানা ছোট। তাই তিনি কলসের তলার নাগাল পেলেন না। ফলে পুত্রবধূ শাশুড়িকে ডেকে বলল, আম্মাজান ! কলসের তো তলা নেই।....। বলুন তো পুত্রবধূর ক্ষুদ্র হাতের কারণে কি কলসের তলা নেই হয়ে গেল ?
ডা. সাহেব ! আপনি ইতিহাসের অনেক তথ্যই পাঠ করেন এবং সেগুলকে মনে প্রাণে বিশ্বাসও করেন। কেন করেন ? ডা. সাহেব ! ইতিহাসে আছে এরিস্টটল নামক একজন বিখ্যাত দার্শনিক ছিল। আপনি সবটুকু মমতা দিয়ে এক কালের এ এরিস্টটলকে বিশ্বাস করছেন। আপনি তাকে দেখেন নি। এখানে চক্ষু, নাসা, জিহ্বা এবং ত্বক- এ পঞ্চেন্দ্রীয়ের একটিও ব্যবহৃত হয় নি। তবু বিশ্বাস করছেন। কেন করছেন ? আপনাদের নাস্তিকতার থিউরি মতে তো এটা বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার কথা নয়। কারণ এখানে পঞ্চেন্দ্রীয়ের একটিও ব্যবহৃত হয় নি। তবুও করছেন। কেন করছেন ? কারণ অসংখ্য তথ্যসূত্র বলছে, হ্যা, এ নামের একজন দার্শনিক ছিল। এত মানুষ বলেছে ও লিখেছে যে, এটা মিথ্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ক্ষীণ হলেও মিথ্যা হওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। এরকম অসংখ্য ঘটনা আছে, যেগুলোকে অসংখ্য মানুষের বলাবলি ও লেখালেখির কারণে মানুষ সত্য বলে বিশ্বাস করে নিয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে তার অসত্যতা ও অসারতা প্রমাণিত হয়েছে। হয়তো বলবেন, এরিস্টটলের অসংখ্য দার্শনিক থিউরি বা এ বিষয়ক তার লেখা গ্রন্থই তার অস্তিত্বের প্রমাণ। আমরা বলতে পারি, সেসব গ্রন্থ বা থিউরি তার নামে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। সেগুলো সে বলে নি বা লেখে নি। কারণ আমরা তো দেখি নি, সে লেখেছে। তার লেখা প্রমাণের ক্ষেত্রে পঞ্চেন্দ্রীয়ের একটিও ব্যবহৃত হয় নি। তবে কেন তাকে বিশ্বাস করছেন ? ঐতিহাসিক তথ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে পঞ্চেন্দ্রীয়ের প্রয়োজন হয় না। অথচ স্রষ্টা প্রমাণে পঞ্চেন্দ্রীয়ের প্রয়োজন হবে ? কেন এমন বৈষম্য ? কেন ?
ডা. সাহেব ! আপনি স্রষ্টা প্রমাণ করার বিবিধ প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ উক্ত তিনটি কারণে স্রষ্টা প্রমাণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন হলো যদি কারণগুলো দূরীভূত করা সম্ভব হয় তাহলে কি স্রষ্টা প্রমাণের প্রয়োজনীয়তা রহিত হয়ে যাবে। এ তিনটি কারণ নিঃশেষিত হলে কি আপনারা দলে দলে আস্তিকতায় ফিরে আসবেন ? যদি আপনারা আস্তিকতায় ফিরে না আসেন তাহলে খামোকা এ কারণগুলোকে দোষারেপ করার কি প্রয়োজন ? করলে অন্য আঙ্গিকে করবেন। স্রষ্টা প্রমাণের ধুঁয়া তুলে এসব প্রসঙ্গ তুলে আনছেন কেন ? তালগাছ তো শেষ মেষ আপনাদের হাতেই রেখে দিচ্ছেন ! খামোকা শব্দ ও সময় নষ্ট।
৩০ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৫০
হাফিজ রাহমান বলেছেন: মাহমুদ ভাই ! অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। তবে ভাই! আমি যার উদ্দেশ্যে লিখেছি লেখাটি তার নজরে এসেছে। তিনি পাঠ করে মন্তব্য করেছেন 'পাঠ করলাম এবং দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে লজিকের কিছুই পেলাম না।' বলুন, কি বলার আছে ? যদি কেউ দেখেও না দেখে, শুনেও না শুনে তবে আপনার কথাটিই প্রযোজ্য। আল্লাহ এ মানুষগুলোকে পথের দিশা দান করুক। এ প্রার্থনা বৈ আপাতত করার আর কিছুই নেই।
২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:২০
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: লেখাগুলো প্যারা আকারে দিলে পড়তে আরো ভাল লাগত
ধন্যবাদ আপনাকে। কেউ তো একজন জবাব দিয়েছেন
৩০ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৯
হাফিজ রাহমান বলেছেন: ধন্যবাদ বোন সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আপনার পরামর্শ মতে লেখাটির অবকাঠামোতে কিছুটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছি। জানি না কতটুকু সফল হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৪০
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: জনাব আপনি যার উদ্দেশ্য লিখছেন সে আপনার লেখা কি তার নজরে আসবে?
তাদেরকে আল্লাহ বদির করে রেখেছেন। তারা শুনবেন না সত্যের কথা।
যাযাকাল্লাহ খায়রান।