![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কানাডাতে নিজের গাড়ী নিজেই ড্রাইভ করি সতের বছর, কখনো এমনটা ঘটে নি, সেবার ঘটলো, বলছি একটু পরে। এখানে প্রতিবছর গাড়ীর রেজিষ্ট্রেশন বা নাম্বার প্লেট রিনিউ করতে হয়। কেউ কেউ ডাবল ফি দিয়ে পুরো দু বছরের জন্যও করে ফেলতে পারেন। প্র্থমবার রেজিষ্ট্রেশন করার পর পরের বছর প্রত্যেকের জন্মদিনের তারিখটাই থাকে গাড়ী রিনিউ করার লাষ্ট ডেট। সেই তারিখ পার হয়ে গেলে পুলিশের চোখে পড়লেই জরিমানা দিতে হবে। আর এর সাথে রয়েছে দু বছর পর পর গাড়ীর ইমিশন টেষ্ট। অর্থাত বাধ্যতামুলক ভাবে দু বছর পর গাড়ীগুলোকে একটা কম্পিউটারাইজড মেশিনের সাহায্যে পরীক্ষা করে প্রমান করতে হবে যে এই গাড়ী বাতাসে কোন কালো ধোয়া বা ক্ষতিকর কিছু নির্গত করছে না। এই পরীক্ষায় ফেল করলে টাকা দিয়েও গাড়ীর নাম্বার প্লেট রিনিউ করা যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত গাড়ী মেরামত করে নুতন করে ইমিশন পরীক্ষার পাস সার্টিফিকেট দেখানো না যাবে।
আমার গাড়ীর নাম্বার প্লেট রিনিউ করার মাস হলো জানুয়ারী। বছর দুয়েক আগে সন্ধ্যার পর গাড়ী চালিয়ে টরন্টোর ডলমিলস রোড দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাত করেই দেখি একটা পুলিশের গাড়ী দ্রুত আমাকে পাস কাটিয়ে চলে গেল। মিনিট দু য়েক পরেই কোন এক গলির আড়াল থেকে বের হয়ে আমাকে সাইরেন দিয়ে থামতে ইংগিত করলো। সাথে সাথে রাস্তার এক পাশে গাড়ী থামিয়ে ভাবছি কি অন্যায় করলাম কে জানে! পিছনের গাড়ী থেকে পুলিশ অফিসার নেমে এলেন, আমি আমার গাড়ীর জানালার কাচ নামিয়ে দিলাম। অফিসার যথারীতি আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ীর ইন্সুরেন্স পেপার চাইলেন। ওগুলো বের করে দিয়ে দিলাম। অফিসারকে প্রশ্ন করলাম, হোয়াট হ্যাপেনড, এ্যানি থিং রং, অফিসার? সাথে সাথে পুলিশ অফিসার জবাব দিলেন, ইয়েস, হোয়াই ডিড ইউ নট রিনিউ ইউর প্লেট? ওরা এই অন্ধকার রাতেও দুর থেকে লেজার মেরে ডিটেক্ট করেছে যে আমার গাড়ীর প্লেটের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে।
আমিতো অবাক! বললাম বল কি! তারপর বললাম, ঠিক আছে, এই মাসেইতো আমার করার কথা, জানুয়ারী মাসের এখনো ক দিন অবশিষ্ট আছে, শেষ তারিখের মধ্যে করলেইতো হবে। পুলিশ অফিসার আমার চেয়ে বেশী অবাক। বললেন, হোয়াট আর ইউ টকিং এ্যাবাউট? দিস ইজ নট জানুয়ারী এ্যানি মোর, মাই ফ্রেন্ড, দিস ইজ মার্চ।
অর্থাত আমার প্লেটের মেয়াদ তিন মাস আগেই পার হয়ে গেছে। আমার মাথার মধ্যে কিভাবে যেন ঘুরছিল যে আমি জানুয়ারী মাসেই পরে আছি। অবশেষে যা হবার তাই, আমাকে একশত পন্চাশ ডলারের একখানা জরিমানার হলুদ টিকিট ধরিয়ে দিয়ে বিদায় নিলেন। কোন ক্ষমা পেলাম না।
বাবু সুরন্জিত গুপ্তের সদ্য প্রকাশিত ভিডিওতে তার নাম্বার প্লেট বিহীন গাড়ীতে আরামে বসে নির্বিকারভাবে চলাচলের দৃশ্য দেখে সেদিন তাজ্জব হলাম। তিনি একজন মন্ত্রী, এমপি, আইন প্রণেতা এবং উকিল। তিনি নম্বর প্লেট বিহীন গাড়ীতে বসে ডিফেন্ড করলেন যে নাম্বার প্লেট এনালগ থেকে ডিজিটাল করতে দেয়া হয়েছে সে জন্য এখন খালি রয়েছে, ওটা আসতে সময় লাগবে ব্লা ব্লা ব্লা। ঠিক অনেকটা যেমন কেউ কেউ ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচার খালি রেখে লাগিয়ে দেন 'প্রোফাইল পিকচার ধুইতে দিছি' সেই রকম। সাংবাদিক ভাইটি সাথে সাথে বিআরটিএর চেয়ারম্যানের ইন্টারভিউ দেখালেন যেটাতে দেখা গেল তিনি পরিস্কারভাবে বললেন যে, দেশের আইন হলো, কেউ এক সেকেন্ডের জন্যও নম্বর প্লেট খালি রেখে গাড়ী চালাতে পারবেন না। প্রয়োজন হলে সাদা কাগজে হাতে লিখে গাড়ীর সাথে লাগিয়ে রাখত হবে। আপনার পুরোনোটা খুলতে পারবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত নুতনটা না পাবেন। মানে হলো সুরন্জিত বাবু সেই সময় দেশের প্রচলিত আইন লংঘন করেছেন। অর্থাত সেখানে একটা অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। সেই অপরাধটা ধরার কথা ছিল পুলিশের, কিন্তু পুলিশ ধরেন নাই, জীবনের ঝুকি নিয়ে ধরলেন একজন সাংবাদিক।
উনার সেই অপরাধের শাস্তি যদি পাচশত টাকা জরিমানাও হয়, সেটাও তাকে দিতে হবে, দেয়া উচিত ছিল। উনার নিজেরই উচিত ছিল পুলিশকে ডেকে অপরাধের শাস্তিটা ভোগ করে দেশ ও জাতিকে বুঝানো যে তিনি কতবড় দায়িত্বশীল, দেশপ্রেমিক ও সুনাগরিক। তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন একটা দৃষ্টান্ত স্হাপনের, কিন্তু তিনি সে সুযোগটা নিলেন না, বরং নিজেকে ডিফেন্ড করলেন নানান ভুয়া অজুহাত দেখিয়ে।
কথাগুলো এজন্য বলছি যে এইসব কারনেই পহেলা বৈশাখের মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ সম্ভব হবে না। আজ যদি তার ঐ ছোট অপরাধেরও দেশের আইন মোতাবেক শাস্তি হতো, তাহলে অন্যেরা সাবধান হয়ে যেত। ভাবতো, যে দেশে মন্ত্রীও রেহাই পায় না, সেখানে অন্যেরাও পাবে না। এভাবেই দেশের সকল অপরাধীরা অপরাধ করার আগে দ্বিতীয়বার চিন্তা করতো।
আর এখন কি হচ্ছে? ফ্রি স্টাইল। সবাই অন্যায় করে যার যার পয়েন্ট অব ভিউ থেকে নানা ধরনের কারন খুজে খুজে, একে অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে অপরাধীদের আরো বড় অপরাধ করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। দেশটা কি এভাবেই চলতে থাকবে? আর কতকাল?
২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৪
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ, আপনাকেও।
২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৪৮
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন!
২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৪
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৩৭
তাসজিদ বলেছেন: Here might is right.
শুধু মন্ত্রীর দোষ দিয়ে কি লাভ? সাধারণ মানুষ ও আইন ভাংতে উস্তাদ।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৫
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: দু:খজনক
ধন্যবাদ।
৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:১৬
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
তাই বলি, আর কতকাল!
অনেক সুন্দর একটি লেখা ভাই। উপভোগ করলাম। প্রবাসের প্রতিটি ঘটনা আমাদের কাছে গল্পের মতো।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৭
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: আমাদের চেষ্টা করা দরকার একটা কিছু করার, নিজ গ্রাম, নিজ উপজেলা থেকে, ভিন্নভাবে, ভিন্ন উপয়ে, হতে পারে সেটা ভারতের আন্না হাজারির মত। ধন্যবাদ।
৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:৩০
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভাল বলেছেন।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৭
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৩৫
সুমন কর বলেছেন: বাংলার মাটিতে জোড় যার, আইন তার !!
২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৮
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: এই বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসার উপায় খোজা দরকার।
৭| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৩৭
মোহামমদ অাবুল বাশার বলেছেন: কৃষ্ণ করলে লিলা খেলা ফালু করলে দোষ
২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৯
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: দু:খজনক
৮| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:০৫
িবর্ন জামান বলেছেন: নিলজ্জতার উৎকৃষ্ট উদহারন হল এই সুরন্জিত। দেখলেন না সে তার চিরাচরিত স্বভাব সুলুভ ভাষায় কথা বললেন ।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৯
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: দু:খজনক
৯| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৮
তপ্ত সীসা বলেছেন: এদের শরীরে দুষিত রক্ত। এদের জন্যই দেশটা এখনো সোনার বাংলা হয়ে উঠলোনা ভায়া।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১০
আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: এই রক্ত পরিশোধনের দায়িত্বটা আমাদেরকেই নিতে হবে, না হলে ওরা আরো খারাপের দিকে নিয়ে যাবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:১৭
আহমেদ আলিফ বলেছেন:
সহমত!
ধন্যবাদ!!!