নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মো: আবদুল হাফিজ

শুখি বালক

আমি অপার হয়ে বসে আছি ওহে দয়াময়....পারে লয়ে যাও আমায়.....।

শুখি বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার রাত জাগা

৩০ শে এপ্রিল, ২০১০ ভোর ৬:৩৩

আমার রাত জাগার অভ্যাস অনেক পুরনো। ছোটবেলায় যেকোন ছুঁতোয় অনেক রাত পর্যন্ত সজাগ থাকার চেষ্টা করতাম। সবসময় একটা অজুহাত খুজতাম। কত বকুনি যে খেয়েছি মা-বাবার কাছে। বাড়িতে নতুন কোন অতিথি আসলে তাকে ইনিয়ে বিনিয়ে গল্প একটা বলতেই হতো। যে অতিথি যত ভালো গল্প বলতে পারতেন তিনি তথো ফেভারিট ছিলেন আমার কাছে। আমাদের আত্বীয় বৃদ্ধ একজন দাদা খুবই ভালো গল্প বলতেন। তাকে কত যে কষ্ঠ দিয়েছি শুধু রাত জেগে গল্প শুনব বলে।



আরেকটু বড় হলাম। আলাদা ঘরে থাকি। মা-বাবা দেখছেন পড়ছি। পড়ছি ঠিকই কিন্তু কিসব বই যে পড়ছি তা যদি দেখতেন? নির্ঘাত পিঠের ছাল তুলে ফেলতেন। তবুও বলতেন, বাবা অনেক রাত হয়েছে এবার ঘুমাও। পড়াশুনায় খারাপ ছিলাম না তাই দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আমার মা সবার সাথে গল্প করতেন যে তার ছেলে রাত জেগে পড়ে। । শুধু যে গল্প বই তা না। যেকোনো একটা বই হলেই চলত। চাই তা ইতিহাসের কোন গুরুগম্ভির বই বা ধর্মীয় কোন নীতিকথা। স্কুল লাইব্রেরি থেকে শুরু করে বন্ধু-বান্ধব, আত্বীয়-সজন, পাড়া-প্রতিবেশি সবার কাছ থেকে বই ধার নিতাম। এদের সবার বই এখনও আমার বাড়িতে আমার ঘরে পাওয়া যাবে। কারন সব বই ফেরত দেওয়া হয়নি। প্রতিরাতে নতুন বই আমার লাগবে। সেই দিন আর নেই।



ইউনিভার্সিটির ক্লাশ সকাল আটটায় হলেও আমি রাত তিনটা পর্যন্ত জেগে থাকতাম। পড়াশুনার জন্য জেগে থাকাটা হয়ত ভালো জিনিস। কিন্তু আমি জেগে থাকতাম অন্য সব কাজে। তারপর আসল কম্পিউটারের যুগ। রাতজেগে কম্পিউটারে গেম খেলা আর মুভি দেখা। এমন কতরাত না ঘুমিয়ে সকালে গেছি ক্লাশ করতে। ক্লাশে ঘুমাচ্ছি দেখে স্যার দাড় করিয়ে রেখেছেন। তারপর দু্ষ্টামির চোটে স্যার বলতে বাধ্য হতেন অনেক হয়েছে এবার বস বাপু।



তারপর একসময় আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম। ইন্টারনেট। জগতের যাবতীয় বিষয় এখন আমার হাতের মুঠোয়। যেকোন গান, মুভি, সফ্টওয়ার, বা যেকোন তথ্য মুহর্তের মধ্যে আমি পেয়ে যাচ্ছি। জগতের সকল ইতিহাস আমার সামনে। সকল শিল্পী আজ আমার ঘরে। সমূস্ত খবর আমার নখদর্পনে। প্রতি মুহর্তের আপডেট আমার সামনে। এসব রেখে কি

কেউ ঘুমাতে পারে। অন্য কেউ পারলেও আমি পারিনা। তখন থেকে শুরু ।আর রাতে ঘুমানোর কথা চিন্তা করিনি কোনদিন।



এখন বাজে রাত তিনটা। সমুস্ত প্রিথিবী অনেক আগে ঘুমিয়ে গেছে। কিন্তু আমি বালিশে হেলান দিয়ে বিছানায় বসে কোলে ল্যপটপে লিখছি। জানিনা আর কতকাল চলবে এই রাত জাগা?







পুনশ্চ:

(লেখাটি গত সপ্তাহর। অনেক ভালো রেস্পন্স পেয়েছি। তাই এডিট করে ছেড়ে দিলাম)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.