![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।
নির্বাচন ও তত্তাবধায়ক সরকার দাবি, সরকার পতন এবং ঘোষিত সমাবেশকে সফল করার মানসে নেতা-কর্মীদের দা-কুড়াল নিয়ে ২৫ অক্টোবর রাজপথে নামার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা। আর দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ওই দিনই শুরু হবে ফাইনাল খেলা। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও দলের নেতাদের সাফ-সাফ জানিয়ে দিয়েছেন— এ খেলায় মাঠে না-থাকলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।
একবার ভাবুন আমাদের রাজনীতিকদের চিন্তা-চেতনা আর মানসিকতা নিয়ে। সারাদেশের মানুষ যখন প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ-পূজা উদযাপন করতে পথের কষ্ট উজিয়ে দেশ-গ্রামে যাচ্ছেন, তখন এইসব উদ্বেগসঞ্চারক কথা কেউ বলতে পারেন?
২০০৬ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনকালে নেতা-কর্মীদের লগি-বৈঠা নিয়ে রাজপথে নেমে আসতে বলেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। বিএনপি তখন ক্ষমতায় এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে। কোনও সুস্থচিন্তার মানুষই সেদিন বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি। ২০০৬ থেকে ২০১৩ ঢের সময়। এর পর সাত সাতটি বছর অতিক্রান্ত হওয়ার বা মাঝে সেনাসমর্থিত ওয়ান-ইলেভেন আসার পরও বাংলাদেশের রাজনীতিকদের স্বভাব পাল্টায়নি, বরং আরও অধঃপতিত হয়েছে। ফলত লগি-বৈঠা থেকে দা-কুড়াল পর্যন্ত গড়িয়েছে প্রতিহিংসার প্রকাশ।
কথা এই যে, ভোঁতা লগি-বৈঠার পরিণতি যদি হয় ওয়ান-ইলেভেন, ধারালো দা-কুড়াল যে আরও ভয়াবহ কিছু ডেকে আনতে পারে, সাদেক হোসেন খোকা বা মির্জা ফখরুল বা খালেদা জিয়া নিশ্চয়ই তা জানেন ও বোঝেন। আবার, বিরোধী দলকে ধারাবাহিক উপেক্ষার মধ্যে রাখলে সরকারি দলের পরিণতিও যে ভালো হয় না, আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রীদের তা অজানা নয়।
১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করার আগে দলপালিত রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে দিয়ে রাজপথে ট্যাংক প্রদর্শন করেও ফায়দা হয়নি বিএনপির। কাজে আসেননি প্রফেসর ইয়াজউদ্দিনের মতো ‘ইয়েস ম্যাডাম’ রাষ্ট্রপতি। অসার প্রমাণিত হয়েছে সংবিধানের দোহাইও। তাহলে আওয়ামী লীগই বা কেন জেনেশুনে গোঁয়ার্তুমি করছে? হানাহানি-সংঘর্ষ অধ্যুষিত রাজনীতিতে তেতোবিরক্ত হয়ে মানুষ ইতোমধ্যেই বলতে শুরু করেছে— ‘ওয়ান-ইলেভেনের সময়ই ভালো ছিল দেশ, নিরাপদ ছিল জনগণ।’
তারপরও কথা থাকে। ‘নির্বাচন’ই গণতন্ত্র নয়। গণতন্ত্রের সার্থকতা নির্বাচনোত্তর পাঁচ বছরের সুশাসনে। সুশাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারি ও বিরোধী দল উভয়কেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হয়। রাষ্ট্রপরিচালনার ভার সরকারি দলের হাতে ন্যস্ত থাকলেও বিরোধী দলকে আস্থায় নিয়ে তা করতে হয়। নইলে জাঁ পল সার্ত্রের দীর্ঘশ্বাসই সত্য প্রমাণিত হতে বাধ্য— ‘গণতন্ত্র হচ্ছে ৪৯ ভাগ মানুষকে বঞ্চনার একটি পদ্ধতি।’ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কথাটি বোধহয় শতভাগ প্রযোজ্য। যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে, খেয়াল-খুশি মতো দেশ চালায়। ফলে বিরোধী দলের সামনে সংসদবর্জন ছাড়া অন্য কোনও পথ খোলা থাকে না। ইস্যু থাক আর না-ই থাক, সরকারকে একহাত দেখাতে রাজপথে নৈরাজ্য সৃষ্টিই হয়ে দাঁড়ায় বিরোধী দলের মুখ্য কর্মসূচি। এর সরাসরি শিকার হয় সাধারণ মানুষ। তো, পাঁচ বছর গণতন্ত্রের চর্চাই যদি না থাকবে দেশে, একদিনের নির্বাচন হলেই কী আর না-হলেই কী?
গণতন্ত্রও একটি জুজু। ক্ষমতার পালাবদলের নিয়ম মোতাবেক, ২০০৬-এ শেখ হাসিনা লগি-বৈঠার ডাক দিতে পারলে ২০১৩ সালে সাদেক হোসেন খোকা কেন নেতা-কর্মীদের দা-কুড়াল নিয়ে রাজপথে নেমে আসার নির্দেশ দিতে পারবেন না?
আর আল্লাহ জানেন, আমরা নিরীহ জনগণের কপালে কি আছে?
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৩
এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:০০
শামীম সুজায়েত বলেছেন: আমাদের রাজনীতিকরা খুবই ভোলামনের মানুষ। সবসময়ই অতীতের মন্দটা অনুসরণ করতে তাঁরা পছন্দ করেন।