![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।
১৪ বছরেও এই হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। সারা বছর বিচার তো দূরে থাক ঐদিন নিহতদের কোনো খোঁজও কেউ রাখে না। তবে বৈশাখ এলে শুধু সাংবাদিকরাই তাদের খবর নেন, হিউম্যান স্টোরি করতে।
বলছি বটমূলে নিহত রিয়াজুল, আল-মামুন ও শিল্পী এই তিন ভাইবোনের কথা। রমনা বটমূলে বোমা হামলায় নিহত ১০ জনের মধ্যে এরা তিনজন ছিল পটুয়াখালির বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া গ্রামের গাজী পরিবারের। গতকাল দৈনিক ইত্তেফাক একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা ১৪০৮ সালের ১ বৈশাখ রাজধানীর রমনার ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে বোমা হামলায় ঘটনাস্থলে মারা যায় ১০ জন। আহত হয় ২২ জন। এর মধ্যে নিহত ১০ জনের মধ্যে একজনের পরিচয় গত ১৪ বছরেও জানা যায়নি। তবে পুলিশের ধারণা নিহত অজ্ঞাত যুবক ছিল বোমা বহনকারীদের একজন। নিহত অপর ৬ জন ছিলেন ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এরা হলেন আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ এমরান হোসেন, অসীম চন্দ্র সরকার, ইসমাইল হোসেন স্বপন ও আনসার আলী।
নিহত আল-মামুন (২৩), রিয়াজুল (২২) ও জান্নাতুল ফেরদৌস শিল্পী (২০) সর্ম্পকে চাচাতো-জেঠাতো ভাইবোন। শিল্পীর বড় ভাই হাবিবুর রহমান ঐ সময় থাকতেন ফার্মগেট এলাকায় (বর্তমানে থাকেন মোহাম্মদপুরের টিক্কাপাড়ায়। মোহাম্মদপুর কলেজ গেটে তার ওষুধের দোকান রয়েছে)। তার বাসাতেই বেড়াতে গিয়েছিল শিল্পী। আর ঐ সময় রিয়াজুলের বাবা সামসুল গাজীর (বড় চাচা) ওষুধের দোকান ছিল মোহাম্মদপুরের কলেজ গেট এলাকায়। তবে রিয়াজ বাবার দোকানে বসতো। ছেলেকে হারাবার পর তিনি দোকান বিক্রি করে দেন। আর আল মামুন ও শিল্পী থাকতো গ্রামের বাড়িতেই। ১ বৈশাখের কয়েকদিন আগে তারা ঢাকায় বেড়াতে এসেছিল। ঘটনার দিন তিন ভাইবোন এক সঙ্গে বটমূলে গিয়েছিল। সেখান থেকে তারা ফিরেছিল লাশ হয়ে।
সেদিন অনেকেই হাসপাতাল মর্গে সান্ত্বনা ও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে কেউ এগিয়ে আসেনি। প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিল তিনজনের লাশ গ্রামের বাড়ি পাঠানো, দাফনসহ অন্যান্য খরচ বাবদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেবেন। কিন্তু এক টাকাও কেউ দেয়নি। উল্টা হাসপাতাল মর্গ থেকে লাশের (তিনজনের) ময়না তদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছাতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।
চার ভাইবোনের মধ্যে শিল্পী ছিল সবার ছোট। তার মৃত্যুর খবর পাওয়া পর থেকে তার মা সুজা বেগম শোকে নির্বাক হয়ে যান। মেয়ে হারানোর শোক নিয়ে ২০০৬ সালের ১২ ফেব্র“য়ারি মারা গেছেন। কিন্তু এ হত্যার বিচার আজো হয়নি।
আমরা কি অন্তত এই রকম একটি দিনের নিশ্চয়তা সরকারের কাছে পেতে পারি না? কোনো এক বৈশাখে আবার এই ঘটণা ঘটলে আমি কিংবা আপনিও তো আহত কিংবা নিহত হতে পারি! তখন আমাদের পরিবারের ভাগ্যেও কি একই রতম পরিণতি হবে।
আজকের বৈশাখী ঘুরাফেরা তো শেষ, আসুন না এবার অন্তত এই বিষয়টা নিয়ে ভাবি, কথা বলি।
মিডিয়াকে বলছি, আসুন না, একদিন নয়, ফলোআপ রিপোর্ট টা কয়েক দিন পর পর করি।
এটা ঠিক যে, এ রকম শত শত ঘটণা বাংলাদেশে আছে। যেগুলোর বিচার হয়নি। কিন্তু বৈশাখের উপলক্ষ্যটা একটু ব্যতিক্রম নয় কি?
কারণ দিনটি যে আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যের একটি অংশ। অন্তত এদিনে কোনো খারাপ ইতিহাস মনে পড়ুক, আমরা চাই না!
©somewhere in net ltd.