![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।
নারায়ণগঞ্জের সিটি কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ আলোচিত ৭ অপহরণ ও খুনে সম্পৃক্ততার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণ হলেও দুই সেনা ও এক নৌ বাহিনীর কর্মকর্তার কোর্ট মার্শাল হচ্ছে না। বিদ্যমান সামরিক আইনে তাদের কোট মার্শাল হওয়ার সুযোগ নেই।
এই তিন কর্মকর্তা সশস্ত্রবাহিনীর হলেও অপরাধ সংঘটিত হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন র্যাবে ডেপুটেশনে থাকা অবস্থায়। আর এ কারণেই তাদের কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তাদেরকে লগ এরিয়ায় অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। যে কোনো সময় গ্রেপ্তারও হতে পারেন তারা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত ৫ মে সোমবার সেনাবাহিনীর ২ কর্মকর্তাকে অকালীন অবসর ও নৌবাহিনীর ১ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তারা হলেন র্যাব-১১-এর প্রত্যাহার করে নেওয়া অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের প্রধান লে. কমান্ডার এমএম রানা। এর মধ্যে তারেক সাঈদ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা। সূত্রমতে, সেনা সদর দপ্তর ও নৌবাহিনী সদর দপ্তর থেকে জারি হওয়া এ সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে তাদের অকালীন অবসর ৫ মে অপরাহ্ন থেকে কার্যকর হবে। তবে স্বাভাবিক অবসরের মতো তারা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। অবসরপ্রাপ্ত বলে র্যাঙ্ক পরিচিতিও ব্যবহার করবেন।
সূত্র জানায়, এই ৩ কর্মকর্তাকে অকালীন ও বাধ্যতামূলক অবসর মূলত অপহরণ বা খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগের কারণে নয়, অপহরণের পর দায়িত্ব অবহেলার কারণে প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্বাহী ক্ষমতাবলে তাদের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ এই শাস্তি দিয়েছেন।
সূত্র আরও জানায়, সেনা আইনে এই ৩ কর্মকর্তার বিচারের সুযোগ নেই। তারা ডেপুটেশনে র্যাবে রয়েছেন। র্যাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন। নারায়ণগঞ্জে ৭ অপহরণ ও খুনের ঘটনায় র্যাব কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ ওঠার পর র্যাব তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্তে তারা দোষী সাব্যস্ত হলে ফৌজদারি আইনে তাদের বিরুদ্ধে বিচার হবে। এর আগে চট্টগ্রামের আনোয়ারার তালসার দরবার শরীফে দুই কোটি ৭ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ তৎকালীন র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ফৌজদারি আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। সূত্রমতে, এই ঘটনায়ও তদন্তে প্রমাণ হলে ৩ কর্মকর্তা যে কোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন। অবসরে গেলেও তারা নজরদারিতে রয়েছেন। অনুমতি ছাড়া দেশ ছাড়ারও তাদের কোনো সুযোগ নেই। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরাও বলেছেন, ফৌজদারি আইনে তাদের বিচার হতে কোনো বাধা নেই। অপরদিকে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীও তাদের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তদন্ত করেছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
৩০ মে অপহূত ৭ জনের মরদেহ হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার হয়। আর গাড়ি দুটি পাওয়া যায় গাজীপুর ও ঢাকার নিকেতনে। জনগণের প্রতিবাদে প্রায় অচল হয়ে পড়া নারায়ণগঞ্জ থেকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করা হয় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও র্যাবের অধিনায়ককে। দুই থানার ওসিকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হলেও তারা এখনও বহাল রয়েছে। মরদেহ উদ্ধারের ৪ দিন পর গত ৪ মে নারায়ণগঞ্জের সরকারদলীয় এমপি শামীম ওসমানকে সঙ্গে নিয়ে নিহত নজরুলের শ্বশুর সাংবাদিকদের বলেন, র্যাব ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে এই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তিনি ব্যাংকে টাকা লেনদেনসহ অপহরণ পরবর্তী র্যাবের রহস্যজনক কর্মকাণ্ডের কথাও তুলে ধরেন। তার এই বক্তব্যের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তোলপাড় শুরু হয়।
অভিযোগের বিষয়ে অবশ্য লে. কর্নেল তারেক সাঈদ বলেন, সব বাহিনীর লোক মিলে এক সঙ্গে ঘুষ নেয়া বাস্তবসম্মত নয়। তা ছাড়া ছয় কোটি টাকা অনেক টাকা। এত টাকা নিতে পিকআপ লাগার কথা। প্রশ্ন হলো, এত টাকা নিয়ে আমি কী করলাম? সে টাকা তো আমার কাছে থাকতে হবে। আমার মনে হয়, কাউকে বাঁচানোর জন্য এসব কথা বলা হচ্ছে। এসব কথাবার্তা তদন্তকে জটিল করে তুলবে।
এদিকে অবসরে পাঠানো র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। শহীদ চেয়ারম্যান লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদের ব্যাংক লেন-দেনের যে তথ্য দিয়েছেন এখনও তার প্রমাণ পায়নি সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা।
র্যাব ডিজি মোখলেসুর রহমান বলেন, কেবল র্যাব নয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বেশ কয়েকটি তদন্ত টিম কাজ করছে। তদন্ত টিমগুলোকে স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমার একমাত্র চাওয়া সত্য ও ন্যায় বের হোক।
তথ্যসূত্র:
Click This Link
©somewhere in net ltd.