![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।
গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীসহ সারাদেশে চলছে তীব্র তাপদাহ। আবার এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দিনে-রাতে ৫-৬ বার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। গতকাল রোববারও ব্যাপক লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই ফোনে অভিযোগ জানিয়েছেন। কখন বিদ্যুৎ আসবে তা জানতেও ফোন করেছেন অনেকে। চলতি অর্থবছর সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল বিদ্যুৎ খাতে। এমনকি সরকারের এতদিন হাঁকডাকও বেশি ছিল বিদ্যুৎ খাতে। কিন্তু নাগরিক হিসেবে আমাদের দুর্ভোগ আর কমলো না।
পিডিবির হিসেবে গতকাল সন্ধ্যায় সারা দেশে সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ৬ হাজার ৯’শ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ৬ হাজার ৫৩০ মেগাওয়াট। খোদ পিডিবির হিসেবেই গতকাল লোডশেডিং হয়েছে ৩৭০ মেগাওয়াট। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও অনেক বেশি।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সোমবার দিনের বেলায়ই বিদ্যুৎ চলে গেছে ৩ বার। প্রথম বেলা ১১টায় বিদ্যুৎ যাওয়ার পর এসেছে দুপুর ১২টায়। এরপর আবার গেছে ২টায়, এসেছে সাড়ে তিনটায়। আবার সাড়ে চারটায় গিয়ে এসেছে চল্লিশ মিনিট পর। এমনিভাবে দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ছিল না প্রায় পৌনে ৩ ঘণ্টা। রাজধানীর রামপুরা, বনশ্রী, বাড্ডা, গুলশান, উত্তরা, পল্টন, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, মীরপুর ও পুরাতন ঢাকার কিছু এলাকায় দিনভর লোডশেডিং ছিল। তবে জিগাতলা, কলাবাগানসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় সীমিত আকারে লোডশেডিং ছিল বলে জানা গেছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যানুযায়ী, সোমবার সারাদেশে ৬ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছিল ৬ হাজার ৫৩০ মে.ও.। এতে সারাদেশে বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল ৩৭০ মে.ও.। এর আগের দিন সারাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬ হাজার ৯০০ মে.ও. এর বিপরীতে সরবরাহ করা হয় ৬ হাজার ৭০০ মে.ও.। এতে ঘাটতি ছিল প্রায় ২০০ মে.ও.। এভাবে প্রতিদিনই প্রায় ২০০ থেকে ৪০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ঘাটতি আরও অনেক বেশি হবে। সোমবার রাজধানীতে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল প্রায় আড়াই হাজার মে.ও.। এতে ঘাটতি ছিল প্রায় ১০০ মে.ও.। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) দৈনিক বিদ্যুৎ চাহিদা প্রায় ১৩০০ মে.ও.। পিডিবির সূত্রমতে, সোমবার কোম্পানিটি প্রায় ৩০ মে.ও. বিদ্যুৎ কম পেয়েছে। এর সঙ্গে সিস্টেম লস ও বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটিতো রয়েছেই। তাছাড়া ডেসকোও তার চাহিদার চেয়ে প্রায় ৩০ মে.ও. বিদ্যুৎ কম পেয়েছে।
এ বিষয়ে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. নজরুল হাসান বলেন, গ্রাহকদের কাছ থেকে এখনও সেভাবে অভিযোগ আসেনি। তবে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, গ্রাহকদের উন্নত সেবা প্রদান এবং গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতে ডিপিডিসি অনেকগুলো প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সব প্রকল্পের কাজই এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, এলাকাভিত্তিক শাট ডাউন বন্ধে ৫৫টি উপকেন্দ্রে সুপারভাইজরি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডাটা একুইজিসন (স্ক্যাডা সিস্টেম) চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্ক্যাডা স্থাপনের ফলে সর্বোত্তম উপায়ে বিদ্যুৎ বণ্টনের মাধ্যমে সুষ্ঠু লোড ব্যবস্থাপনার কাজ করা যাবে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিচ্যুতির স্থায়িত্ব কমিয়ে আনা যাবে। একই সঙ্গে লোড ফ্লো মনিটর ও কন্ট্রোলে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
রাজধানীতে বিদ্যুৎ বিতরণে নিয়োজিত দুইটি সংস্থার মধ্যে ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জসহ রাজধানীর আটটি সার্কেল আজিমপুর, তেজগাঁও, সাত মসজিদ, রমনা, শ্যামপুর, বাংলাবাজার, নারায়ণগঞ্জ এবং মতিঝিলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। ডেসকো ঢাকার কাফরুল, পল্লবী, রূপনগর, মিরপুর-১, গুলশান, উত্তরা, বারিধারা, দক্ষিণখান, টঙ্গী, কল্যাণপুর, আগারগাঁও এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
জরাজীর্ণ বিতরণ লাইন, ওভারলোডেড ট্রান্সফর্মার এবং লোড ফ্লো মনিটর ও কন্ট্রোলে কার্যকর ব্যবস্থার অভাব। কারণে-অকারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, হাই-ভোল্টেজ, লো-ভোল্টেজ সমস্যা নিয়ে ডিপিডিসি ও ডেসকোর গ্রাহকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। অভিযোগ করেও সুরাহা হয় না এমন মন্তব্য অনেক গ্রাহকের। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পেলেও আধুনিক মনিটরিং ব্যবস্থার অভাবে এই বিভ্রাট মোকাবিলা করতে না পরায় লোডশেডিং বাড়ছে বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। এ কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা দেখছি এবং শিখছি। এর মধ্য দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়েছে কিন্তু নানা রকম জটিলতার কারণে বিতরণ ব্যবস্থার আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। তবে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। আশা করি দ্রুতই তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম বলেন, অতীতের কথা মনে রাখতেই একটু লোডশেডিং করা হচ্ছে। তাছাড়া প্রচন্ড গরমের কারণে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে না পারায় লোডশেডিং হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে লোডশেডিং অনেকাংশে কমে আসবে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:২৫
রাহাত লতিফ তৌসিফ বলেছেন: কি যে অবস্থা!!!!!