![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।
পঙ্গু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য জরুরি হুইল চেয়ার আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক ও আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ মোট ২০ শতাংশ শুল্ক কর আদায় করা হয়। আর বাংলাদেশের সংসদ সদস্যরা (এমপি) দুনিয়ার সর্বশেষ মডেলের দামি গাড়িগুলো কেনার সুযোগ পান বিনা শুল্কে। অথচ বিশ্বের অনেক দেশেই প্রতিবন্ধীদের জন্য শুল্ক না দিয়ে গাড়ি কেনার সুযোগ রাখা হয়েছে এবং সবার জন্য আরোপিত শুল্কেই গাড়ি কিনতে হয় এমপিদের। ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশ।
লন্ডনে এমপিদের গাড়ি কেনার জন্য বাড়তি কোনো সুবিধা নেই। তবে দেশটির সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য বিনা শুল্কে গাড়ি কেনার সুযোগ দিয়েছে ২০১০ সাল থেকে। সেখানেও ওই সুবিধার অপব্যবহার হয়। সন্তানের শারীরিক অসহায়ত্বের কথা বলে তাদের মা-বাবারা বিএমডাব্লিউসহ নানা ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি কেনেন। তবুও প্রতিবন্ধীদের ওই সুবিধা বাতিল না করে বরং দেশটি ২০১১ সালে শর্ত জুড়ে দিয়ে বলেছে, প্রতিবন্ধীরা ২৫ হাজার পাউন্ড দরের মধ্যে যেকোনো গাড়ি বিনা শুল্কে আমদানি করতে পারবে। পাকিস্তানও ২০১০ সাল থেকে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিনা শুল্কে গাড়ি কেনার সুযোগ দিয়েছে, তবে দেশটির এমপিদের এ ধরনের কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশের মতো এমপিদের অবাধে বিনা শুল্কে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানির সুযোগ নেই ভারতেও। দেশটির এমপিরা ভারতের তৈরি সর্বোচ্চ ১৩০০ সিসির গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন। আর শ্রীলঙ্কা ২০১৩ সাল থেকে সাবেক প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুযোগ দিয়েছে, তবে তা কমপক্ষে আড়াই বছর ব্যবহার করার পরই হস্তান্তরযোগ্য।
তুলনা টানলে বাংলাদেশের এমপিদের গাড়ি-ভাগ্য দুনিয়ার অন্য দেশগুলোকে পেছনে ফেলেছে। ১৯৮৮ সালে এ সুবিধা পাওয়ার পর থেকে অবাধে বিলাসবহুল গাড়ি শুল্ক না দিয়েই সস্তায় আনছেন তাঁরা। দশম সংসদের এমপিরাও এই সুবিধা পাচ্ছেন। সংসদ সচিবালয়ে এরই মধ্যে প্রায় ৪০ এমপি গাড়ির মডেল ও দাম উল্লেখ করে আমদানির অনুমোদন চেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন যাঁরা হলফনামায় নিজেদের প্রায় গরিবের পর্যায়ে দেখিয়েছেন।
হলফনামায় একজন এমপি বলেছেন, তাঁর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ টাকা। অথচ তিনিই এখন ৭০ লাখ টাকায় টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার আমদানি করার অনুমতি চেয়েছেন।
এরই মধ্যে এমপিদের বেশির ভাগই আবেদন ফরম নিয়ে গেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই চার হাজার বা তার বেশি সিসির ডিজেলজালিত জিপ আনার সুযোগ চেয়েছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্কনীতি অনুযায়ী, সাড়ে চার হাজার সিসির গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৮৪১ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন এমপিরা। এমন অনেক এমপি রয়েছেন, যাঁরা ১৯৮৮ সালের পর থেকে কয়েকবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। এভাবে প্রতি পাঁচ বছর পর পর বিনা শুল্কে নতুন নতুন দামি গাড়ি সস্তায় আমদানির সুযোগ ভোগ করছেন তাঁরা, সঙ্গে কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন।
শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুযোগ চেয়ে এমপিদের করা আবেদন পাঠানো হবে স্পিকারের কাছে। তাঁর অনুমোদন মিললেই এলসি (ঋণপত্র) খোলার অনুমতি দেওয়া হবে। গাড়ি আমদানি করার পর তাঁদের চূড়ান্ত প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হবে।
পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিনা শুল্কে গাড়ি আমদানির সুযোগ রয়েছে। আর আমাদের দেশে ওই সুবিধা ভোগ করছেন এমপিরা। আইন নিজেদের মতো করে তৈরি করে নেওয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় তাঁদের গাড়ি আমদানির বিষয়টি বৈধ। তবে রাজনীতি ও নৈতিকতার বিচারে এমপিদের এ ধরনের সুবিধা নেওয়া মোটেও যৌক্তিক নয়। এটা বাতিল করা উচিত।
বাংলাদেশের এমপিদের গাড়িবিলাস অনেকটা রবীন্দ্রনাথের কবিতার মতোই। ‘এ জগতে হায় সেই বেশি চায়, আছে যার ভূরি ভূরি, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি’- ঠিক তেমন করেই আমাদের জনপ্রতিনিধিরা গাড়িবিলাসের পাশাপাশি নানা সুবিধা নিচ্ছেন। অথচ প্রতিবন্ধীদের মতো নাগরিক, যাদের সব ধরনের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়ার অধিকার রয়েছে, তাদের ব্যবহৃত হুইল চেয়ারে শুল্ক বসানো হয়েছে।
নিয়ম করা হয়েছে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় ইঞ্জিন সিলিন্ডারের মাপে ছয় ধরনের গাড়ি আমদানি করতে পারবেন সংসদ সদস্যরা। এগুলো হলো- সর্বোচ্চ ১৬৫০ সিসির পেট্রলচালিত, ১৮০০ সিসির ডিজেলচালিত ও ২০০০ সিসির হাইব্রিড মোটরগাড়ি, ২০০০ সিসির মাইক্রোবাস, ৩০০০ সিসির পেট্রলচালিত জিপ এবং ৪০০০ সিসির ডিজেলচালিত জিপ। তবে লেক্সাস, মার্সিডিজ বেঞ্জ, হ্যামার, বিএমডাব্লিউ, পোরশে, ফেরারি, ক্যাডিলাক, রোলস রয়েস, জাগুয়ার, করভেট, অডি, রেঞ্জ রোভার ও ভলবো- এই ১৩টি মডেলের গাড়ি বিনা শুল্কে আমদানির সুযোগ পাবেন না এমপিরা।
এমপিদের বিনা শুল্কে বিলাসী গাড়ি আমদানি সুবিধার কারণে রাজস্ব ক্ষতিই কেবল নয়, এর বিরুদ্ধে সুধী সমাজ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের চরম ক্ষোভ রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০২ সালে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল একজন ব্যক্তি একাধিকবার এমপি হলেও একবারই তিনি শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুযোগ পাবেন। আর আমদানি করা গাড়ি পাঁচ বছর ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু আইন বদলের ক্ষমতা নিজেদের হাতে থাকায় ওই সব শর্ত ছেঁটে ফেলতে সময় লাগেনি এমপিদের। আর ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এমপিদের বিনা শুল্কে গাড়ি আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল। ২০০৮ সালে নির্বাচনের পর মহাজোট সরকারের সময় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সব দলের এমপিরা একজোট হয়ে আবারও ওই সুযোগ চালুর পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন। স্পিকারের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৯ জুন রাজস্ব বোর্ড প্রজ্ঞাপন জারি করে এ সুযোগ পুনর্বহাল করে। তার আগে বর্তমান রাষ্ট্রপতি ও তখনকার স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ চেয়েছিলেন, সরকারিভাবে গাড়ি কিনে এমপিদের মধ্যে বিতরণ করতে। এমপিদের বিরোধিতার কারণে ওই উদ্যোগটিও ভেস্তে যায়। পরে এফবিসিসিআইও একাধিক সভা-সেমিনারে এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুযোগ বাতিল করার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রীর কাছে একাধিকবার জোরালো দাবি জানিয়েছে।
তবে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা সবসময়ই বলে আসছেন, সংসদ সদস্যরা বিলাসবহুল গাড়ি আমদানির পর তা আর নিজেরা ব্যবহার করেন না। ওই সব গাড়ি তাঁরা বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের কাছে দ্বিগুণ-তিন গুণ দামে বিক্রি করে দেন। গত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দেখা গেছে, অনেকেই এমপিদের নামে আনা বিলাসী গাড়ি রাতের বেলায় রাস্তায় ফেলে পালিয়েছেন। এ কারণেই রাজস্ব বোর্ডের শর্ত রয়েছে যে শুল্কমুক্ত সুবিধায় এমপিদের আমদানি করা গাড়ির নম্বর প্লেটে নিজ জেলা ও নির্বাচনী এলাকার নম্বর লেখা থাকতে হবে। আমদানি করা গাড়ি খালাসের সময় সব শর্ত পূরণের মুচলেকা দিয়েও পরে তার ছিটেফোঁটাও মেনে চলছেন না এমপিরা।
গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে দেওয়া অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিবৃতি অনুযায়ী, নবম সংসদের ২৭৫ জন এমপি শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করেছেন। এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ২৮০ কোটি টাকা। এদের মধ্যে ২০০ এমপি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, ১৮ জন ভক্সওয়াগন ও অন্যরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিলাসী গাড়ি আমদানি করেছেন। নরসিংদী-৪ আসনের গতবারের এমপি নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন ছয় কোটি ৫৪ লাখ টাকা শুল্ক সুবিধায় ৭৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকায় টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার জিপ আমদানি করেন। এভাবে গত সংসদের ১৬ জন এমপি ছয় কোটি টাকারও বেশি করে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে গাড়ি কেনেন। আর তিন কোটি টাকার বেশি শুল্কছাড় নিয়েছেন ৫৪ জন, ৯০ জন দুই কোটি টাকার বেশি করে এবং ৬০ জন এক কোটি টাকার বেশি করে শুল্কছাড়ে গাড়ি আমদানি করেছেন।
কার্টেসি
ctgnews.com
১৪ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬
এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: ঠিক তাই...
২| ১৪ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১:৩৯
আহলান বলেছেন: জটিল পোষ্ট ..... মারহাবা ..... এই দেশে তো চোর বাটপাড়রাই জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হন, সুতরাং তারা তাদের আখের গোছাবে, সুবিধা ভোগ করবে, এটাই তো স্বাভাবিক ..........
১৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৩৭
এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই..
৩| ১৪ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:২৯
আদম_ বলেছেন: এ জন্যই ওই শালাদের কারো কারো পোলাপান প্রতিবন্ধী হয়ে জম্নায়। ওদের কষ্ট দেখলে মনটা সুখে ভরে যায়। মর শালারা।
১৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৩৯
এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: পেটে খেলে যে পীঠে সইতে হয় ভাই....
৪| ২০ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৩৯
আহসানের ব্লগ বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫
স্বপ্নবাজ (অতি ক্ষুদ্র একজন) বলেছেন: "এ জগতে হায় সেই বেশি চায়, আছে যার ভূরি ভূরি, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি"
এমনটাই হবে.. স্বাভাবিক!!!!