![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।
দেশের সাম্প্রতিক উদ্বেগজনক গুম-খুনকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, ১৬ কোটি মানুষের দেশ, এতগুলো মানুষের মধ্যে দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতেই পারে।
এ হলো দেশের একজন বিবেকবান, রাজনীতিক আর সবচেয়ে বড় পরিচয় প্রধান বিরোধী দলীয় নেতার মন্তব্য!
এবার আসুন, দেখা যাক, এ সাহসী (!) এবং মহীয়সী (!) এই নারীর আদ্যপান্ত কিছুটা জেনে নেই।
প্রথমেই তার প্রধান বিরোধী দলের নেতা হওয়ার গল্প দিয়েই শুরু করা যেতে পারে।
৫ জানুয়ারীর এক তরফা নির্বাচনের পর যখন মহাজোটেরই শরীক জাতীয় পার্টির নেত্রী রওশন এরশাদকে বিরোধী দলীয় নেতা করা হল তখন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এ নিয়ে নানা পর্যালোচনা শুরু করেন। একই সাথে জাতীয় পার্টি থেকে একাধিক মন্ত্রী নিয়োগ দেয়ায় অনেকে প্রশ্ন তোলেন, সরকারের মধ্য থেকে আবার বিরোধী দল হয় কীভাবে? একে গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি নজীরবিহীন ঘটনা বলে মন্তব্য করেন অনেকে।
তবে ওই সময়ে রওশন এরশাদ বলেছিলেন, এবারের সংসদে বিরোধী দল হবে একটি ব্যাতিক্রমী বিরোধী দল। তারা বিরোধী দল হিসেবে গঠনমূলক ভূমিকা রাখবেন। সরকারের গঠনমূলক সমালোচনাও করবেন তারা। আবার সরকারের ভাল কাজের প্রসংশাও করবেন।
সরকার গঠনের পর গত চার মাসে সংসদে বা সংসদের বাইরে বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টি গঠনমূলক কিংবা অগঠনমূলক কোন ভূমিকাই রাখতে পারেনি বা রাখেনি। তবে সংসদে কখনও কখনও বিএনপি’র সমালোচনায় মুখর ছিলেন এই বিরোধী দলের একাধিক এমপি। বিএনপি সংসদে না থাকলেও সরকারী দলের মত তারাও বিএনপি’র সমালোচনা করেছেন। আর বিরোধী দলীয় নেত্রীকে কখনই সরকারের বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে দেখা যায়নি।
তবে নারায়নগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনায় দেশব্যাপী যখন তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে তখন বিরোধী দলের একটি গঠনমূলক ভূমিকা আশা করেছিলেন দেশের মানুষ। কিন্তু এসময়ে দেশবাসীকে বিস্মিত করে বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ বলছেন, ১৬ কোটি মানুষের দেশে দু’একটি গুম-খুনের ঘটনা ঘটতেই পারে। একে তিনি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেও উল্লেখ করেন।
নারায়নগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনাকে যখন বিরোধী দলীয় নেত্রী এমন ঘটনা ঘটতেই পারে বলে উল্লেখ করেন তখন সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে বিরোধী দলীয় নেত্রীর নিজের স্বামী কিংবা নিকট আত্মীয় এই গুম-খুনের শিকার হলে কি তিনি বিষয়টিকে এত সহজভাবে নিতে পারতেন? ১৬ কোটি মানুষকে যদি তিনি একটি দেশের জন্য অনেক বেশী মানুষ বলে মনে করে থাকেন তাহলে দেশের জনসংখ্যা বেশী হলে কি এক একটি মানুষের জীবনের কোন মূল্য নেই?
এই বিরোধী দলীয় নেত্রীর স্বামী স্বৈরশাসক এরশাদ কখনও অপহরণ হননি। কিন্তু স্বৈরাচারী শাসনামলে নানা অপকর্মের জন্য নব্বইয়ের অভ্যূত্থানের মাধ্যমে যখন ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন তখন টানা পাঁচ বছরেরও বেশি সময় কারা ভোগ করেছিলেন। তখন স্ত্রী রওশন এরশাদ ভাল করেই জানতেন তার স্বামী কারাগারে কোন মর্যাদা পাচ্ছেন। তার পরও তিনি স্বামীর অনুপস্থিতিকে প্রতি মুহূর্তে অনুভব করেছেন। শুধু অনুভব করেনইনি; স্বামীকে মুক্ত করার জন্য সম্ভাব্য সব কিছুই করেছেন।
তিনি নিশ্চয়ই ভুলে জাননি যে, তিনি নিজ বাড়ীতে সংবাদ সম্মেলন করে স্বামীর মুক্তির জন্য কিভাবে আবেদন করেছিলেন। তার চোখের জল কিভাবে গড়িয়ে পড়ছিল। তিনি বিদেশ থেকে আইনজীবী আনতেও ভুল করেননি। তার সেদিনের আকুতির কথা যারা সেই সংবাদ সম্মেলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন তারা আজও ভুলতে পারবেন না।
স্বামী বেঁচে আছেন এবং কারাগারে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা পাচ্ছেন এটা জেনেও সেদিন তিনি সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু আজ যে ৭ জন খুন হয়েছেন তাদের পরিবারের কথা, তাদের প্রিয়জনদের কথা কি তিনি একবারও ভেবে দেখেছেন? তাদের অনুভূতির কথা কি একবারও উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছেন? ওইসব পরিবারের ছেলে-মেয়েদের অসহায়ত্বের কথা কি বিবেচনায় এনেছেন?
একজন স্বৈরশাসকের স্ত্রী হিসেবে ফার্স্ট লেডীর মর্যাদা নিয়ে টানা নয় বছর রাষ্ট্রের সকল সুবিধা ভোগকারী এই মানুষটি স্বামীকে গলফ কোর্সে পাঠিয়ে দিয়ে একটি ভোটারবিহীন নির্বাচনের কল্যানে বিরোধী দলীয় নেত্রীর মর্যাদা ভোগ করছেন। স্বৈরাচারী স্বামীকে বানিয়েছেন গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। কিন্তু ভুলে গেছেন বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে তার দায়িত্বের কথা, ভুলে গেছেন একজন নারী হয়েও আর একজন নারীর স্বামী হারানোর যন্ত্রণার কথা।
সবশেষ কথা হলো; আসলে, ১৬ কোটি মানুষের দেশে দু’একটি গুম-খুনের ঘটনা ঘটতেই পারে, এমন বক্তব্য অবশ্য তার মুখে বেমানানও নয়। কারণ দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচার স্বামী যখন সেলিম, দেলোয়ার, বসুনিয়া, ডা. মিলন, নূর হোসেনদের হত্যা করেছেন তখন এই নারী অন্দরে বসে স্বামীর এসব অপকর্মে উৎসাহ যুগিয়েছেন।
মূল কথা হলো, দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচারী স্বামীকে অনুপ্রেরণা দানকারী এই নারী যদি নিজের প্রিয়জনকে হারাতেন তাহলে কি এমন মন্তব্য করতে পারতেন?
তা তো আর হয়নি তাই না?
কার্টেসী: আমাদেরসময় ডট কম
১৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৫১
এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: এতো ভাল বলেছেন ভাই, লা জবাব..!!!
২| ১৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৪৪
ভুয়া প্রেমিক বলেছেন: একটার অত্যাচারেই অতিষ্ট, আবার নতুন আরেকটা আইছে।
১৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৫২
এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: আসলেই তাই...
কোমর ভাঙ্গা বলেই আজ তিনি চেয়ারে বসেছেন, না হলে নাচতে পারতেন তো...
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৪১
কালের সময় বলেছেন: এ যেন নাটকীয় রুপ কথার গ্লপ ধারা তারা এমনি এক পন্ঠির
লোক তারা হলেন
ছেলের মা
মেয়ের মা
তারাই যেন বিরোধী আবার তারাই সরকারী
তবে রাজনীতি বাদ দিয়ে নাটক করলে তারা ভাল নাটকীয় নোবেল বিজয়ী হোতেন ।
আর ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের কথা বলবেন ও যেন কাঠের উড়জাহাজ দিয়ে মঙ্গল গ্রহ গুরে আসা ।