![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।
আধুনিক ইউরোপের চোখে ইসলাম মানেই সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ। ইসলাম এমন মনোভাবে পিছনে কট্টর ধর্মীয় গোষ্ঠী দায়ী। যারা ইসলামকে সকল কিছু থেকে অস্পর্শী রাখতে চায়। কিন্তু ইসলামের সাথে ইউরোপের বিনিময় সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তবে ইসলামের সাথে ইউরোপের এমন সম্পর্ক আধুনিক বিশ্বের চোখের আড়ালেই রয়ে গেছে। ‘ওয়ান্ডারিং মুসলমান’ নামে খ্যাত তারিক হোসেন ইউরোপের সাথে ইসলামের সম্পর্ক ও ইউরোপে কেমন ছিল ইসলাম তা নিয়ে গবেষণা করেছেন। গবেষণায় তিনি তুলে এনেছেন গোপনীয় নানান তথ্য। তিনি ইউরোপ ও মুসলিমদের সংস্কৃতি বিনিময় সম্পর্কে বেশ চমকপ্রদ ও উদ্ভট কিছু তথ্যও উন্মোচন করেছেন পৃথিবীর সামনে।
মহাদেশীয় নাস্তা:
ইউরোপের বাসিন্দাদের কাছে অতি পরিচিত ক্রইসেন্ট তৈরির পিছনে রয়েছে মুসলমানদের অবদান। ষোলশ ও সতেরশ শতাব্দীতে অটোমান রাজা দু’দুবার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা অবরোধ করেন। অটোমানদের পতাকার উপর থাকা অর্ধচন্দ্রাকৃতির অনুসারে তৈরি হয় ক্রইসেন্ট। সুস্বাদু প্যাস্ট্রির নামের উদ্ভবও পতাকার অর্ধচন্দ্রাকৃতি থেকে।
শ্যাম্পু ও তরকারি:
ইউরোপের বাসিন্দারা একটি দিনও শ্যাম্পু ছাড়া ভাবতে পারে না। তবে এই শ্যাম্পুর সাথে ইউরোপের বাসিন্দাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে মুসলিম সাম্রাজ্য তুরস্ক। ইউরোপীয় শহরগুলোতে শ্যাম্পু কিংবা এর পূর্বপুরুষের প্রচলন শুরু হয় শেখ দীন মোহাম্মদ নামক এক ভারতীয়-বাঙ্গালী ডাক্তারের হাত ধরে। আঠারোশো শতাব্দীতে ইস্ট ইন্ডিয়া ডক কোম্পানীর সাথে যোগাযোগের সূত্র ধরে বিহার থেকে এই মুসলিম বাঙ্গালী ব্রাইটনে পৌঁছান। সেখানে পৌঁছেই তিনি ভিক্টরিয়ান ব্রিটিশ সেলুন খোলেন। ব্রিটেনের ভিক্টোরিয়া সোসাইটির অভিজাত ও বিখ্যাত লোকেরা ঐ সেলুনে চ্যাম্পি(হিন্দু শব্দ ‘চ্যাম্পি’ থেকে বর্তমান ‘শ্যাম্পু’ শব্দের উৎপত্তি) চিকিৎসার জন্য আসতেন। ধীরে ধীরে মোহাম্মদের সুখ্যাতি এতই বাড়তে লাগল যে তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে রাজা চতুর্থ জর্জ ও রাজা চতুর্থ উইলিয়ামের কাছে ‘শ্যাম্পুয়িং সার্জন’ হয়ে উঠলেন। ইংরেজ সংস্কৃতিতে তার অবদান শুধুমাত্র এটিই নয়, যুক্তরাজ্যে তিনিই সর্বপ্রথম ‘কারি হাউস’ এর প্রচলনকারী। লন্ডনে এটি পরিচিত ছিল ‘হিন্দুস্থানী কফি হাউস’ নামে।
নরম্যান আরব:
ইউরোপের স্থাপত্যশিল্পে মুসলিম শাসিত ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র সিসিলির প্রভাব চোখে পড়ার মত। এছাড়া সিসিলির বুকেও ইতালির ঐতিহ্যের চিহ্ন এক ধরনের সাংস্কৃতিক বিপ্লবই বলা যায়। ইতালির স্থাপত্য শিল্পে প্রতিবেশী মুসলিম অধ্যুষিত সিসিলির প্রভাব স্থাপত্যশিল্পেও বেশ ভালভাবে পড়েছে বললেও অত্যুক্তি হবে না।
শেখ ড্রাকুলা:
রোমান ভাষায় ড্রাগনকে বলে ড্রাকুল। ড্রাকুল শব্দটির সাথে জড়িয়ে আছে মুসলমানরা। শত্রুর হাতে ভোলাদের পিতা নিহত হন। যুবক ভোলাদ সিংহাসনে বসেই প্রতিশোধ নেওয়া শুরু করেন। অজস্র তুর্কিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করলেন ভোলাদ। মানুষ হত্যা করার নানা ধরনের নিষ্ঠুর পদ্ধতি বের করার কারণে তাকে বলা হত যমদূত। তীক্ষ্ণ অস্ত্র দিয়ে মানুষকে এফোঁড় ওফোঁড় ছিঁড়ে ফেলে তিনি আনন্দ পেতেন। ১৪৭৬ সালে শত্রুদের হাতে তিনি নিহত হন। বুখারেস্টের কাছে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। কয়েক বছর পর তার কবর খুঁড়ে দেখা গেল, কবর শূন্য। তার কাহিনী ড্রাকুলার উৎস বলে অনেকে মনে করেন। ভোলাদ রচনা করা হয়েছিল আরবীতে। অর্থাৎ ড্রাকুলা একজন আরবীয়। এমনকি ড্রাকুলার উপস্থিতি হাফিজ-উল-কুরআনও প্রমাণিত।
ল্যাটিন আরবীয়:
ইউরোপের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত মাল্টার একটি ছোট্ট দ্বীপে ইসলামের উত্তরাধিকার সম্পর্কিত নানা লোককথা প্রচলিত আছে। তবে এটি শুধুমাত্র লোকের মুখে মুখেই প্রচারিত, কোন পাঠ্যবই বা গল্পের বইয়ে এর অস্তিত্ব নেই। মাল্টেজ সংখ্যাগুলো আরবীয়দের মতই। এটি উত্তর আফ্রিকার বেশ নিকটে আর উত্তর আফ্রিকায় আরবী ভাষাই বেশি প্রচলিত। কিন্তু মাল্টায় ইতালিয়ানদেরও পা পড়ায় এটি হয়ে ওঠে সিকিউলি-আরবীয়। এর আধিপত্যও কম ছিল না। সেমিটিক ভাষায় ল্যাটিন স্ক্রিপ্টে লিখা এটিই ছিল প্রথম ভাষা!
তারিক হোসেনের মতে ইসলাম ও ইউরোপ একটির অন্যটি মধ্যে শত্রুতার সর্ম্পকের চেয়ে বিনিময় সম্পর্কই বেশি। ফলে মুসলমানদের সাথে ইউরোপের বর্তমান দূরত্ব কমিয়ে সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরি করা সম্ভব বলেই মনে করেন তিনি।
কার্টেসী: নতুনদিন
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই মে, ২০১৪ ভোর ৫:৫৭
ভারসাম্য বলেছেন: ++