নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নীরব কথামালা

মুক্তমত প্রকাশের প্লাটফর্ম ব্লগ। তাই ব্লগে আসতেই হয়, ভাবনা প্রকাশে......!

এম এ হাসান মাহামুদ

লেখালেখির মোটামুটি ইচ্ছে থেকেই ব্লগে ঢু মারি। ভাল লাগে বই পড়তে আর নিজের ইচ্ছে মতো লিখতে।

এম এ হাসান মাহামুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পথে-ঘাটে ‘ফিল্টার্ড পানি’ থেকে সাবধান. (প্রতিনিয়ত যে কাজটি করতে হচ্ছে আমাদের )

০৮ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬



পান্থপথ মোড়ে ফুটপাতে রহমত আলীর চায়ের দোকান শাজাহান স্টোরে আদা-চায়ের পাশাপাশি ‘ফিল্টার্ড পানি’ বিক্রিও বেশ জমজমাট। এই চা বিক্রেতা জানান, ছাত্রছাত্রী ও রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সব ধরনের পথচারী তাঁর ‘ফিল্টার্ড পানি’র ক্রেতা। প্রতি গ্লাস পানির দাম ‘মাত্র’ এক টাকা। আর কম্পানির কাছ থেকে তিনি ২০ লিটারের বড় জারভর্তি পানি কেনেন ২৫ টাকায়। দিনে তাঁর বিক্রি হয় তিন-চার জার পানি।





ভালো করে খেয়াল করলে চোখে পড়ে, ওই দোকানের ‘ফিল্টার্ড পানি’র জারগুলো আদৌ মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) অনুমোদিত নয়। এ ছাড়া জারগুলোর গায়ে কোনো কম্পানির নাম বা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তারিখও উল্লেখ নেই।



শুধু রহমত আলীর এই দোকানই নয়, রাজধানীর ফুটপাতের দোকান ও মাঝারি মানের রেস্তোরাঁয় সরবরাহ করা ‘ফিল্টার্ড পানি’র ৮০ শতাংশই পরিশোধিত নয়।





বন্ধ বিনা মূল্যের পরিসেবা : পানির অপচয় বা সিস্টেম লস ঠেকাতে দুই দশক আগে ঢাকা ওয়াসা রাজধানীর বিভিন্ন মোড় থেকে বিনা মূল্যে পানি সরবরাহের কলগুলো তুলে নিয়েছে। ওই সব কল চালু থাকার সময় নগরবাসী গরমে স্বস্তি পেতে হাতমুখ ধুতে পারত, মেটাতে পারত তৃষ্ণা। কিন্তু ওই সব পানির লাইন থেকে বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও বস্তিতে অবৈধ সংযোগ নেওয়ার অভিযোগে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বিনা মূল্যে পানি সরবরাহ পরিষেবা বন্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় পথচলা মানুষ বাধ্য হয়েই নিরাপদ ভেবে পান করছে ফুটপাতের ‘ফিল্টার্ড পানি’।







জানতে চাইলে ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল আলম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, যথেচ্ছ অপচয় ও কল চুরির হিড়িক দেখা দেওয়ায় কর্তৃপক্ষ অনেক আগেই বিনা মূল্যের পানির কলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ এসব কল সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। তবে পুরান ঢাকায় এখনো এ ধরনের কিছু কল রয়েছে। তিনি অবশ্য স্বীকার করে বলেন, ‘আধুনিক শহরে পরিচ্ছন্ন পাবলিক টয়লেট ও পানির কল থাকা খুবই জরুরি। তবে এ মুহূর্তে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিনা মূল্যের পানির কল বসানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।’





মানহীন পানির ব্যবসা জমজমাট : খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্তত ৫০টি প্রতারকচক্র ওয়াসার পানি সরাসরি জারে ভরে এগুলো ‘ফিল্টার্ড পানি’ হিসেবে বিক্রি করছে। বিএসটিআই এবং ওয়াসা এসব অবৈধ কারখানার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানও চালাচ্ছে। অবৈধ কারখানা সিলগালা করে জরিমানাও করা হচ্ছে প্রতারকচক্রকে। কিন্তু একই অবৈধ ব্যবসায়ীরা আবারও জড়িয়ে পড়ছে ‘ফিল্টার্ড পানি’র চড়া লাভের ব্যবসায়। মাত্র ৫০০ টাকার পাঁচ হাজার লিটার ওয়াসার পানি প্রতারকচক্র বিক্রি করছে অন্তত ছয় হাজার টাকায়।







কেরানীগঞ্জে বিএসটিআই অনুমোদিত আল কায়সার ড্রিংকিং ওয়াটার লিমিটেডের অন্যতম অংশীদার সিরাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা সরাসরি ভূগর্ভস্থ পানি পরিশোধন করে বোতলজাত করে বাজারজাত করছি। কিন্তু অবৈধ পানির রমরমা ব্যবসার কারণে আমাদের ব্যবসা এখন হুমকির মুখে। মাত্র পাঁচ থেকে সাত টাকায় মানহীন পানি পাওয়া যায় বলে দোকানিরা বেশি লাভের আশায় কিনছে ওই সব পানির জারই।’







অবৈধ পানির ব্যবসায় পিছিয়ে নেই কেউ : নিয়ম হলো, গ্রাহক ছাড়া অন্য কেউ ওয়াসার গাড়িতে করে সরবরাহ করা পানি কিনতে পারেন না। সাধারণত কোনো এলাকায় ওয়াসার পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে গ্রাহকের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ ভ্রাম্যমাণ গাড়ি নিয়ে গিয়ে ওই পানি সরবরাহ করে আগাম মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে। কিন্তু সব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ওয়াসার কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনা রসিদে ভ্রাম্যমাণ গাড়ির পানি সরবরাহ করছে অবৈধ ‘ফিল্টার্ড পানি’ বিক্রেতাদের। অভিনব এই জালিয়াতি হাতেনাতে ধরা পড়েছে খোদ ওয়াসারই ভ্রাম্যমাণ আদালতের ঝটিকা অভিযানে।







ঢাকা ওয়াসার ম্যাজিস্ট্রেট খলিল আহমেদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত গত ১৫ মে দুপুরে এক প্ল্যাটুন পুলিশসহ অভিযান চালায় মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের শাহ আলী মার্কেটের পেছনে ২/২০ সেনপাড়া এলাকায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেনপাড়া হকার্স মার্কেটের পেছনে একটি মুরগির খামারের এক কোণে বিশাল একটি ভূগর্ভস্থ পানির ট্যাংক। সেখানে মিরপুর অঞ্চলের ওয়াসা বিভাগের (জোন-১০) একটি গাড়ি (নম্বর-ঢাকা মেট্রো ঢ-১১-০০-১৩) পাইপ দিয়ে পানি সরবরাহ করছে। গাড়ির ড্রাইভার বাবুল খান ম্যাজিস্ট্রেটের জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে ওই পানি সরবরাহ করার জন্য কোনো টাকা আদায়ের রসিদ ও গেট পাস দেখাতে পারেননি। এমনকি তিনি কাকে পানি সরবরাহ করছেন সেই ব্যক্তিটিকেও তিনি ঘটনাস্থলে দেখাতে পারেননি।





ভ্রাম্যমাণ আদালতের জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে ড্রাইভার বাবুল স্বীকার করে বলেন, ‘আমি প্রতিদিন এখানে পাপ্পু নামে একজনকে এক গাড়ি পানি দেই। ঘটনাস্থল থেকে এক গাড়ি পানির (পাঁচ হাজার লিটার) দাম ৫০০ টাকা বুঝে নেই। পরে পাপ্পুর নামে অফিস থেকে রসিদ দেওয়া হয়। ওপরের বসরা আমাকে এই কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই বাধ্য হয়ে করছি।’







আশপাশের কয়েকজন দোকানি ভ্রাম্যমাণ আদালতকে জানান, বেশ কয়েক বছর হলো, ওই পানির ট্যাংক থেকে ওয়াসার পানি পাইপ দিয়ে তুলে ২০ লিটারের বড় জারে ভরে ‘ফিল্টার্ড পানি’ হিসেবে ২৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন দুপুরে ওয়াসার গাড়ি এসে ট্যাংকি ভর্তি করে দিয়ে যায়। আর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দুই ট্রাক ভর্তি খালি জার এসে সেই পানি ‘ফিল্টার্ড পানি’ হিসেবে বোতলজাত করে আশপাশের সব মার্কেটের দোকানে সরবরাহ করে। সন্ধ্যায়ও লাইন দিয়ে রিকশা ভ্যান এসে সেখান থেকে ‘ফিল্টার্ড পানি’ কিনে নিয়ে যায়।







ম্যাজিস্ট্রেট খলিল আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ওয়াসার (জোন-১০) একটি দুষ্টচক্র এই অবৈধ পানি বিক্রির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। কারণ অভিযুক্ত ২/২০ সেনপাড়া ঠিকানাটি ওয়াসার কোনো গ্রাহকের নয়। এটি একটি অবৈধ ফিল্টার্ড পানি বিক্রির কারখানা। এর আগে আমরা দুই দফায় এটি সিলগালা করে দিয়েছিলাম। এলাকাবাসী জানাচ্ছে, প্রতিদিন ওয়াসার গাড়ি এই অবৈধ ফিল্টার্ড পানি বিক্রেতাকে পানি সরবরাহ করছে। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে ওয়াসারই একটি দুষ্টচক্র জড়িত হয়ে পড়েছে। বিষয়টি বিভাগীয় তদন্তের দাবি রাখে।’







গত ১১ মে ওয়াসার একই ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালান মালিবাগে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজে। সেখানে কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে অবৈধ পানি ব্যবসার কারখানা ধরা পড়ে। ওই কারখানায় ওয়াসার পানি কয়েকটি ট্যাংকে প্রথমে মজুদ করা হয়। পরে সেসব ট্যাংক থেকে ২০ লিটারের জারে ভর্তি করে তা বিক্রি করা হয় বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয়। কলেজ অধ্যক্ষ এস এ মালেক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের নেতা জসিম উদ্দিন যৌথভাবে ওয়াসার অভিযানে বাধা দেন। ওই ঘটনায় অধ্যক্ষ এস এ মালেক এবং ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা দুজনই স্বীকার করেন, বেশ কিছুদিন ধরে তাঁরা যৌথভাবে পানির ওই অবৈধ ব্যবসা করে আসছিলেন। ঘটনার এক সপ্তাহ আগেই ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তাঁদের কারখানাটি সিলগালা করে দিয়েছিল।



কার্টেসী: আমাদের সময়

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৫৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: দুনিয়াতে সবচাইতে দুর্ণীতিবাজ অকর্মন্য অদক্ষ লোভী পাচাটা ওয়াসা হল বাংলা.. ওয়াসা।

০৮ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৫৯

এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই..

২| ০৮ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:১৩

সোহানী বলেছেন: ২/৩ বছর আগে আমার বিদেশী বসের উদ্যোগে ঢাকায় যত জার সাপ্লাইয়ার এর পানি আছে সব টেস্ট করেছিলাম আইসিডিডিআরবি থেকে কিন্তু দু:খের বিষয় একটি জারে ও বিশুদ্ধ পানি পাইনি আমরা এমনকি শহরের নামকরা পানি জার থেকেও।

তাই জারের পানি খাওয়ার আগে আবার ও চিন্তা করবেন... কি খাচ্ছেন আপনি ?????? কস্ট করে বাসায় ফুটানো পানি নিয়ে চলাফেরা করেন যদি বাচঁতে চান।

০৮ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৪০

এম এ হাসান মাহামুদ বলেছেন: খুব ভাল উদ্যোগ ছিল ভাই।
আপনাদের সার্ভের প্রধান ফোকাস কী ছিল? আর এর রেজাল্ট কী ছিল?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.