নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারন একজন মানুষ... লিখতে ভালো লাগে।কিন্তু আলসেমি লেখার গতি কমিয়ে দেয়.।এমন একটা যন্ত্র আবিস্কার হত।যাতে বলার সাথে সাথে প্রিন্ট হয়ে বের হয়ে যেত লেখা।সেই দিনের অপেক্ষায় আছি

পথিক শোয়েব

পথিক শোয়েব › বিস্তারিত পোস্টঃ

#গডেস_অব_আইজার( শেষ পর্ব )

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৪


পর্ব- ১০

রাজ ঠাকুরের ফ্রেন্ড নারায়নের সাথে আমি আর নয়ন দেখা করলাম । পুরো নাম নারায়ন চন্দ্র। কুটিল টাইপ লোক একটু । প্রশ্নের উত্তর ঘুরিয়ে পেচিয়ে দিতে পছন্দ করেন । আমার কোন প্রশ্নেরই ঠিক মত উওর দিলেন না ভদ্র লোক। রাজ ঠাকুরের সাথে কথাবার্তা না বলার ও নির্দিষ্ট কোন কারন বলতে পারলেন না তিনি । কথাবার্তার বেশির ভাগ সময় ই তিনি রাজ ঠাকুরকে দোষা রোপ করে গেলেন। তার থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম। এখন কারো কাছে তথ্য পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছি। যা করার নিজেদের করতে হবে। অপহরন কারীরা ম্যাপ পেয়ে গেছে । জামশেদ ও ভালো মতই লেগেছে এর পিছনে। যা করার তারাতারি করতে হবে। না হলে তারা আমাদের আগেই পেয়ে যেতে পারে গুপ্তধনের সন্ধ্যান। একদিন নয়ন আমি বসে গল্প করছি।

- নারায়ন চন্দ্রকে তোর সন্দেহ হয় ?

কিছুক্ষন ভেবে নয়ন উত্তর দিল

- সন্দেহ করার মত কিছু দেখছি না তো।

- জামশেদ করতে পারে তাহলে ?

- জামশেদের মত লোকেরই করার সম্ভাবনা বেশি।

- কিন্তু আমার সন্দেহের তালিকায় এখন এক নম্বরে জামশেদ পরে নারায়ন চন্দ্র ।

- ইশান তোর মাথা গেছে, নারায়ন চন্দ্র কেন তার ফ্রেন্ডকে অপহরন করতে যাবে ?

- তার একটা ব্যাখ্যা আছে আমার কাছে ।

- কি ব্যাখ্যা বল।

- সেটা হচ্ছে । রাজ ঠাকুর অনেক সজ্জন একজন ব্যাক্তি । তিনি চাইতেন না রিজভি আহমেদের কোন ক্ষতি হোক। তাকে এই নারায়ন চন্দ্রই রিজভি আহমেদ থেকে সরিয়ে রেখেছিল। কিন্তু রিজভি আহমেদ বিশ্বাস করতেন বেশি রাজ ঠাকুরকেই । তাই সে মৃত্যুর পরে রাজ ঠাকুরের কাছেই তার সব দলিল দস্তাবেজ তুলে দিয়েছিলেন। আর এটা নারায়ন ভালো ভাবে নেয়নি ।

- কিন্তু নারায়ন চন্দ্রতো রিজভি আহমেদের সাথে এক সাথে কাজ করতেন। তার পক্ষে তো সব জানা স্বাভাবিক। এখানে আবার লুকোচুরির কি আছে?!

- এক সাথে কাজ করলে ও নারায়নকে সব বলতেন না তিনি । তিনি যে এই ম্যাপ একেছেন এটা নারায়ন কে দেখাননি তিনি। আর তার মত্যুর পরে রাজ ঠাকুরের হাতে চলে যায় সব কিছু । যখন শুনলেন এগুলো রাজ ঠাকুর আমার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তখন সে গোপনে এসে খুজলো আমার বাসায় ম্যাপটা ।

- তোর এটা তো অনুমান। প্রমান নাই।

- আমার মনে হয় জামশেদই তোর ঘরে ঢুকেছিল।

- আচ্ছা সেটা সময় হলেই বোঝা যাবে।

এমন সময় নায়রা আসলো। আমরা আলোচনা বন্ধ করে দিলাম ।
মেয়েটা ওয়েস্টার্ন ধাচের জামা পরে । বেশির ভাগ মেয়েদের ওয়েস্টার্ন ড্রেসে মানায় না। দেখতে ভালো লাগে না। কিন্তু এই মেয়েটাকে অদ্ভুত ভাবে মানিয়ে যায় ড্রেস গুলো। স্নিগ্ধ একটা ভাব সময় চেহারায় ফুটে থাকে তার। যে কোন ছেলেই তার রূপে আর গাম্ভীর্যের কাছে হার মানবে।
নায়রা বলল

- তোমাদের খোজে হোটেলে গিয়ে ছিলাম । ফোন ও দিয়েছিলাম। না পেয়ে চলে এলাম বিচের দিকে ।কি সুন্দর আবহাওয়া তাইনা । বলে বসে পরলো আমাদের পাশেই ,

- ফোন রেখে এসেছি হোটেলে । তো আমাদের এভাবে হন্যে হয়ে খোজার কারনটা কি জানতে পারি ?

- একা একা থেকে হাপিয়ে উঠেছি। গল্প করার লোক খুজছিলাম ।

- তাই নাকি। তাহলে তো ভালই হল। স্বপ্নের ব্যাপারটা ক্লিয়ার হওয়ার সুজোগ পাব।

- হ্যা ব্যাপারটা ক্লিয়ার হওয়া দরকার আপনাদের ও।

এর পর নায়রা বলতে লাগলো

- ওই দিন রাতে আমিই গিয়েছিলাম আপনার রুমে।

- কিন্তু রিসিপশনের লোকটা বলল তো আপনার মৎ কাওকে দেখেনি সে।

- সেটার ব্যাখ্যা ও সোজা ।

-কী ব্যাখ্যা ?

- আমি গিয়েছিলাম দশটার দিকে ।ওই টাইমে বিদ্যুৎ অফ করে দেয়া হয়েছিল । প্রায় অন্ধকারে রিসেপশনের লোকটার চোখ ফাঁকি দেয়া এতই কি কঠিন কোন কাজ ?

-কিন্তু বিশেষ ব্যাবস্থায় সিসিক্যামেরা চালু ছিল। সেখানে কোন ভিডিও ছিল না। আর রিসিপশনের ওই রূমে আলো ছিল।

আমার কথাটা শুনতেই পায় নি এমন ভাবে করে নায়রা কথা বলে যেতে লাগল।

-প্যারালাল স্পেস বিশ্বাস করেন ?

-বুঝিয়ে বলেন ।

-আপনি এখন যে এই জগতে আছেন। আরেক ইশান একই সময়ে আরেক জগতে বর্তমান । শুধু দুইজনের সাথে একটা নির্দিষ্ট সময়ের ব্যাবধান থাকে। আপনি যে মন্দিরের স্বপ্ন দেখেছিলেন ভালো করে লক্ষ করলে আরেক ইশানকে দেখতে পেতেন।

- তার মানে আরেক আমি সেই পনেরশ সালে বর্তমান ?!!

- হ্যা, প্রত্যেক মানুষেরই এমন এক একটা প্যারালালে দ্বিতীয় স্বত্বা বর্তমান।
মাথা কেমন জানি গুলিয়ে যাচ্ছে । নায়রা আবার বলতে লাগল

- এক এক জনের প্যারালাল স্পেসের দ্বিতীয় স্বত্বা আগে পরে হতে পারে। কারো দ্বিতীয় স্বত্বা সে যেই সময় বর্তমান তার থেকে ভবিষ্যতে হতে পারে।

- আর একটু ক্লিয়ার করেন ব্যাপারটা ।

- ধরেন রহিম নামের এক লোক ২০১৭ সালে বর্তমান কিন্তু তার দ্বিতিয় স্বত্বা হয়তো ২৪০০ সালে বর্তমান। তার মানে তার দ্বিতীয় স্বত্বা তার থেকে ৪০০ বছর জ্ঞান বুদ্ধিতে এগিয়ে। প্রত্যেক মানুষের ই এমন প্যারালাল স্পেস আছে । কারোটা আগে বা কারোটা পরে। মানুষ এই দুই স্বত্বার মাঝে সরা সরি যোগাযোগ করতে পারে না। কিন্তু মাঝে মধ্যে অবচেতন মনে একে অপরের বিপদের সময় সাহায্য করে ফেলে। বেশির ভাগ সময় এটা ঘটে ঘুমের মধ্যে।
আমি হা করে শুনে যাচ্ছি নায়রার কথা

- মানুষ দৈব সাহায্য পায় বিপদে পরলে।এটা ও তার এই দ্বিতীয় স্বত্বার কাজ। সেই সাহায্য করে। ওইদিন আমি আমার যাদু বিদ্যার মাধ্যমে আপনাকে ,আপনার প্যারালাল স্পেসে নিয়ে গিয়েছিলাম।দেখানোর চেষ্টা করেছিলাম ইগনাসিওর গুপ্তধন কোথায় লুকিয়ে রেখেছে সেটা জানতে পারেন কিনা।

- তো আপনি নিজে গিয়ে দেখে আসলেই তো পারতেন ।

- আমি নিজে নিজে যেতে পারি। কিন্তু আমার কোন ইচ্ছা শক্তি থাকে না তখন। আমি তখন আমার দ্বিতিয় সত্বার মধ্যে ঢুকে যাই। সে যা করে আমি ও তাই করি। সেই আমাকে চালায়। কিন্তু অন্য কাওকে প্যারালাল স্পেসে পাঠালে সে নিজের ইচ্ছায় কাজ করতে পারে। তার দ্বিত্বীয় সত্বার পাশা পাশি। যেটা আপনি পেরেছেন আপনার স্বপ্নে। এটা কিছুটা সম্মোহন বিদ্যার মত।

- আচ্ছা ভালো কথা । প্যারালাল স্পেসে আপনাকে দেখলাম আইসিস দেবির মন্দিরে পুজো করছেন ।

- নাহ। আমি পুজো করচ্ছিলাম না। সবাই আমাকে পুজো করে ওখানে ।

- মানে ?

- মানে সহজ। এখন আমি যেমন কিছু যাদু বিদ্যা জানি । আমার দ্বিতিয় স্বত্বাও জানতো যাদু । ইগনাসিও আমার বাবা ছিলেন ওখানে। আমার নাম ইন্দ্রকান্তা । বাবা আইসিসের আদলে একটা মন্দির বানায় । যেখানে সে শয়তানের পুজো করত। তিনি মারা যাওয়ার পরে ইন্দ্রকান্তার মুর্তি বানিয়ে পুজো করা শুরু করে সবাই।

- আমার ভুমিকা কি থাকে সেখানে ?

- এক দিন দ্বিপে এক পরিব্রাজক আসে । নাম ইকারাস। আর এই ইকারাস আর আপনি একই ব্যাক্তি । ইন্দ্রকান্তা প্রেমে পড়ে যায় ইকারাসের । কিন্তু ইকারাস ইন্দ্রকান্তাকে পছন্দ করতো না। ইন্দ্রকান্তা বন্ধী করে তাকে। কিন্তু একদিন ইকারাস পালিয়ে যায়, এক যাদুকরের সহায়তায়। চন্দ্রদ্বীপের দিকে চলে যায়। এখন আপনাদের দেশের বরিশালের প্রাচীন নাম ছিল চন্দ্রদ্বীপ ।

- হ্যা তা জানি আমি, বরিশালের প্রাচিন নাম চন্দ্রদ্বীপ । তার মানে আপনি আইজারের দেবী ইন্দ্রকান্তার দ্বিতীয় স্বত্বা?

- হ্যা ।
কেমন আজগুবি লাগছে নায়রার কথা গুলো । কিন্তু ফেলে দেয়া যাচ্ছে না। আমার দ্বিতিয় স্বত্বা ইকারাস ??!!

পর্ব-১১
এর পরের ঘটনা খুবই সিম্পল । নায়রা আমাকে আর নয়নকে আমাদের প্যারালাল স্পেসে পাঠালো। দুইটি বক্স নিয়ে আসলাম । বক্স গুলোর মধ্যে পাওয়া গেল ইউরেনিয়াম। প্রাচীন মিশরের কোন মন্দিরের ধন সম্পদের মধ্যে ইউরেনিয়াম আসলো কিভাবে সে এক আশ্চর্য ব্যাপার । ইগনাসিওর কোন গুপ্ত ধন পেলাম না। হয়ত তিনি সেগুল বিক্রি করে দিয়েছিলেন । ইউরেনিয়াম আমরা তুলে দিলাম বাংলাদেশ সরকারের হাতে। নৌবাহিনীর লোকেরা এসে নিয়ে গেল। এখন একটা ব্যাপার ক্লিয়ার হল। ইগনাসিওর লোকেরা কিভাবে মারা গিয়েছিল । উচ্চ রেডিয়েশনে তারা সবাই মারা যায় । তারা ইগনাসিওর অজান্তে বক্স খুলে কিছু রেডিয়াম সরিয়ে ফেলেছিল মনে হয়। রেডিয়াম গুলো পুরু গ্রাফাইটের বক্সে ছিল। গ্রাফাইট ক্ষতিকর রশ্মি বাহিরে আসতে বাধা দেয়। ইগনাসিও মনে হয় এই বক্স গুলোকে অভিশপ্ত মনে করতেন ।তাই কখনো খুলেন নি বক্স গুলো। তার তৈরি মন্দিরের মেঝের নিচে পুতে ফেলেছিলেন। এর জন্যই তার সব সাংগ পাংগ মারা গেলেও তিনি বেচে যান। আর রাজ ঠাকুরকে অপহরন করেছিল নারায়ন চন্দ্র । তিনি জানতেন ইগনাসিওর গুপ্তধনের সাথে ইউরেনিয়াম ছিল। হাজার কোটি টাকা মুল্য এগুলোর। তিনি জামশেদের সাথে একত্রে কাজ করতেন।নারায়ন চন্দ্রকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে । জামশেদ পলাতক ।
আর হ্যা বক্সের সাথে একটা অদ্ভুত বই পেয়েছি। যাদুর বই । বইটা আমাকে নায়রা উপহার দিয়েছে। এই বইটা রচনায় নাকি খোদ শয়তান ইগনাসিও কে সাহায্য করেছিল । আমি ও বিশ্বাস করি এটা।পাতা গুলো কেমন জীবন্ত হয়ে উঠে পড়ার সময় । যে পড়বে সে ওই গল্পের সময়ে ঢুকে যাবে । চন্দ্রদ্বীপ নিয়ে একটা কাহিনি আছে। ইকারাস আর ইন্দ্রকান্তার কাহিনী । সময় করে একদিন পড়ে শুনাব । আর আপনার রূম যদি কখনো স্বাভাবিকের চেয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়। বা কোন বস্তুর যদি জায়গা পরিবর্তন হয়ে যায় আপনা আপনি । বই বা মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে আছেন এমন অবস্থায় যদি গভির রাতে পাশে বা রুমে কারো উপস্থিতি অনুভুত হয় । তাহলে ধরে রাখবেন ওটা আপনার দ্বিতীয় স্বত্বা । আর নায়লার সাথে এই ঘটনার পরে আর যোগাযগ হয়নি। আমাকে ঠিকানা দিয়ে যায়নি সে । সে যে ইউনিভার্সিটিতে পড়েছে বলেছিল। সেখানে খোজ নিয়েছি এই নামে কেউ নাই।নিওইয়র্ক টাইমসে ও এই নামে কেউ জব করে না। আর সেন্ট মার্টিনে গেলে একটু সাবধানে থাকবেন । দেবী ইন্দ্রকান্তা বা আইসিস আপনার প্রেমে পড়ে যেতে পারে । গেলেই সাড়ে সর্বনাশ ;)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হাহা হা

যেমন মজার গল্প তেমনি তার এন্ডিং ;)

মজা লাগল

++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.