নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোকা মানুষের কথায় কিই বা আসে যায়

বোকা মানুষ বলতে চায়

আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১

বোকা মানুষ বলতে চায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

কালের সাক্ষী - শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ী (বাংলার জমিদার বাড়ী - পর্ব ১১)

১৪ ই মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩২





জমিদার বাড়ী সিরিজের সব লেখাঃ "বাংলার জমিদার বাড়ী"



গন্তব্য ছিল বলিয়াদী জমিদার বাড়ী, আমার গাইড কাম রিকশাচালক বলল সামনে যাওয়ার পথে আরেকটা জমিদার বাড়ী আছে, নাম ছিবলতলী জমিদার বাড়ী। আমি একটু সন্দিহান হলাম, এমন নামে কোন জমিদার বাড়ী’র কথাতো আগে শুনি নাই। জমিদার বাড়ীর খোঁজে গিয়ে অনেক জায়গায় এমন অনেক পুরাতন ভবনের দেখা পেয়েছি যা আসলেই অবাক করার মত, কিন্তু কোন জমিদার বাড়ী নয়। আবার এমনও হয়েছে নব্য নির্মিত পাঁচতলা ভবন এর সামনে নিয়ে গিয়েছে জমিদার বাড়ী বলে। ঘটনা হল ঐ বাড়ীর মালিক হয়ত অত্র এলাকার সবচেয়ে ধনী মানুষ, স্থানীয়দের কাছে যা জমিদারের সমতুল্য। আসলেই তো, সে ঐ এলাকার জমিদার, তবে নব্য জমিদার। যাই হোক আমি তাকে বললাম চলেন তাহলে, আগে আপনার ছিবলতলী জমিদার বাড়ী দেখে আসি।







রিকশা গ্রামের পথ ধরে ছুটে চলল, আমি মধ্য দুপুরের ঝিরিঝিরি বাতাসে পাকা ধান ক্ষেতের রূপ তন্ময় হয়ে দেখছিলাম। হঠাৎ রিকশা বাক নিতেই দূরে একটা মসজিদের মিনার চোখে পড়ল, আর সাথে সাথে আমি যেন টাইম মেশিনে করে বছর ছয়েক পেছনে চলে আসলাম। আরে এটাতো চেনা চেনা লাগছে? সামনে যেতেই চিনতে পারলাম। বছর ছয়-সাত আগে এখানে এক আত্মীয়র বিয়ের দাওয়াতে এসেছিলাম, মেয়ে পক্ষের বাসা ছিল এই জমিদার বাড়ীর পেছনে। তখন আমি এখানে অনেক ছবি তুলেছিলাম কিন্তু তখনতো আর জমিদার বাড়ীর খোঁজে ঘুরে বেড়াতাম না। যাই হোক রিকশা থেকে নেমে ঢুঁকে পড়লাম জমিদার বাড়ীর সীমানায়।







গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার শ্রীফলতলী গ্রামে এই ‘শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ী’ যা স্থানীয় উচ্চারণে হয়ে গেছে ছিবলতলী। বিখ্যাত তালিবাবাদ পরগণার নয় আনা অংশের মালিকানা নিয়ে গঠিত হয় শ্রীফলতলী জমিদার এস্টেট। এই এস্টেটের প্রধান কর্ণধার খোদা নেওয়াজ খানের কনিষ্ঠ পুত্র রহিম নেওয়াজ খান চৌধুরী’র হাত ধরে এই শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ীর গোড়াপত্তন ঘটে। জমিদারী পরিচালনায় তিনি তার নিজের কাচারি বাড়ীর পাশাপাশি আধারিয়া বাড়ীর বাগানবাড়ীকে অফিস হিসেবে ব্যবহার করতেন। তার জমিদারীর পরিসীমা ময়মনসিংহ, নরসিংদি ও সাটুরিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়ই আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর পূর্বে তালিবাবাদ পরগনা সাভার হতে পৃথক হয়ে ‘কালিয়াকৈর’ নামে নতুন থানা হিসেবে পরিচিতি পায়। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়, সমাজসেবা ও দানশিলতায় তিনি সমসাময়িক অন্যান্য জমিদারদের তুলনায় অগ্রগামী ছিলেন। ৩০শে বৈশাখ ১৩২০ বঙ্গাব্দে এই জমিদার ইন্তেকাল করেন।







উচু পাঁচিল ঘেরা অংশে মূল জমিদার বাড়ীর একাংশ, যা কেয়ারটেকার দিয়ে সংরক্ষণ করা আছে। আমি যখন সেখানে পৌঁছই তখন সেখানে কোন নাটকের শুটিং চলছিল, দারোয়ানকে আমার আগমনের উদ্দেশ্য বুঝিয়ে বলে অনুরোধ করলাম ভেতরে ঢুকতে দিতে। সে সুযোগ করে দিতে ভেতর ঢুঁকে কিছু তথ্য-উপাত্ত আর কয়েকটা ছবি তুলে বের হয়ে আসলাম, মূল ভবনের ভেতরের কোন ছবি তুলতে পারি নাই।







অন্য পাশের উন্মুক্ত আরেকটি ভবন ছিল, সেখানে গেলাম। আগেরবার এই ভবনটি অনেক জীর্ণ ছিল, সেই ছয় বছর আগে। জমিদার বাড়ি নিয়ে ধারাবাহিক লেখা শুরু করার পর এই বিষয় নিয়ে অল্পবিস্তর ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। উন্নতবিশ্বে যে সকল স্থাপনা হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষিত হয়, আমাদের দেশে সেইসকল স্থাপনা পড়ে থাকে অবহেলায়, ক্ষয়ে যায় অস্থি-মজ্জা সকল, ঘুণে ধরে বিচূর্ণ হয় ইতিহাসের পাতা। অপূর্ব সকল স্থাপনা আর নির্মাণশৈলী নিয়ে আমাদের বাংলাদেশের আনাচে কানাচেতে পড়ে আছে অসংখ্য জমিদার বাড়ি, রাজবাড়ীসহ আরও কত স্থাপনা। আর এই সব স্থাপনার কিছু কথা এই বোকা মানুষটার ছেঁড়া খাতায় লিখে রাখার প্রয়াস হল এই “বাংলার জমিদার বাড়ী” সিরিজ।







এখন কিছু সংস্কার কাজ করা হয়েছে। কয়েক জায়গায় নতুন প্লাস্টার চোখে পড়ল। অন্যান্য জমিদার বাড়ীর চাইতে এই শ্রীফল জমিদার বাড়ীর ভবন এর ডিজাইন এবং আনুসাঙ্গিক জিনিসগুলো আমার কাছে ব্যাতিক্রম এবং আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। সেই জমিদার বাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে কেন জানি মনে হয়েছে ঐ ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে যদি আমি এক কাপ চা হাতে বর্ষণমুখর কোন বিকেলবেলায় দাঁড়িয়ে থাকতাম, আজ থেকে পঞ্চাশ অথবা ষাট বছর আগে...







যারা এই জমিদার বাড়ী ভ্রমনে যেতে চান তাদের জন্য বলছি, দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে আপনি গাজীপুর, কালিয়াকৈর বাস স্ট্যান্ড এ এসে যে কোন রিকশাচালককে বলুন ছিবলতলী যাবেন। সেখানে গিয়ে যে কাউকে বললেই আপনাকে ছিবলতলী জমিদার বাড়ী দেখিয়ে দেবে।



মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৬

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

২১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৭

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ, পুরো সিরিজ জুড়ে সাথে থাকবেন আশা করি।

২| ১৪ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:৫১

আমি গাঙচিল বলেছেন: ছবি গুলো ভালো লেগেছে

২১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৮

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আর লেখা বুঝি ভালো লাগে নাই :( ;) :P

৩| ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১:১৮

সুমন কর বলেছেন: গুড পোস্ট।

২১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫০

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: :) :) :)

৪| ১৯ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১৫

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: আপনার পোষ্টগুলো কেবলই আফসোস বাড়ায় ! :(

২১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: :-*

৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৮

মাদিহা মৌ বলেছেন: ইসসসস! আমারোও প্রচন্ড আফসোস হচ্ছে! গাজিপুরের এই কালিয়াকৈরে এক বন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলাম। তখন যদি জানতাম, এখানে জমিদার বাড়ি আছে, না গিয়ে থাকতাম?

অন্যান্যগুলির তুলনায় এটাকে রাজকীয়ই বলা চলে! সংস্কার করলে সবগুলি জমিদার বাড়িই দর্শনীয় আর মনোরম হবে।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: গাজীপুরে কাছাকাছি দূরত্বে দুটি জমিদার বাড়ি আছেঃ শ্রিফলতলী জমিদার বাড়ী আর বলিয়াদি (বলিয়াটি নয়, সেটি মানিকগঞ্জে) জমিদার বাড়ি। এটি নিয়েও পোস্ট আছে আমার, দেখেছেন নিশ্চয়ই।

আপনার আগ্রহ দেখে জমিদার বাড়ি নিয়ে আবার নিয়মিত লেখার ইচ্ছেটা জোড়ালো হচ্ছে। :)

ভাল থাকুন সবসময়, অনেক শুভকামনা থাকবে। ঈদের শুভেচ্ছা জানবেন।

৬| ২৬ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৪

রানা আমান বলেছেন: এই বাড়িটিতে আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠতম চলচিত্রগুলোর একটি "সীমানা পেরিয়ে" এর শ্যুটিং হয়েছিলো ।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৪৪

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: বাহ! এই তথ্যটি জানা ছিল না। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য সুপ্রিয় ব্লগার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.