নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোকা মানুষের কথায় কিই বা আসে যায়

বোকা মানুষ বলতে চায়

আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১

বোকা মানুষ বলতে চায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

রন্তু'র কালো আকাশ - ১২ (ধারাবাহিক)

০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১:২০


"রন্তু'র কালো আকাশ" সব পর্ব

মায়েদের গায়ে এক অজানা গন্ধ থাকে বোধহয় আর সেই গন্ধটি পায় শুধুমাত্র সেই মায়ের সন্তানেরা। এই গন্ধ এক মায়ার অদৃশ্য বন্ধনের গন্ধ, নাড়ির সম্পর্ককালীন যে গন্ধ মাতৃজঠর থেকে সন্তানের ইন্দ্রিয়ে বাসা বাঁধে। আশ্চর্য এক ঘোরলাগা মাদকতাময় সেই ঘ্রাণে প্রতিটি সন্তান খুঁজে পায় অপার্থিব এক সুখানুভুতি। এই মুহূর্তে রন্তু নিজ মনে মায়ের শরীরের সেই গন্ধটা উপভোগ করছে। ছোট্ট রন্তুর খুব ভালো লাগে মন ভালো করে দেয়া এই পরম প্রিয় গন্ধটি।

রন্তু এই মুহূর্তে মায়ের হাত ধরে হাঁটছে নিউমার্কেটের ভেতরের পিচঢালা রাস্তা ধরে। মা সবসময় এই মার্কেটে শপিং করতে আসে। আজ রন্তু মায়ের সাথে এসেছে তার স্কুলের জন্য নতুন ড্রেস তৈরির মাপ দিতে। ছোট মামা যদিও মা’কে বলেছিল তার পরিচিত এক দোকানে নিয়ে গিয়ে জামা বানিয়ে দিবে, কিন্তু মা রাজী হয় নাই। সবসময় যে দোকান থেকে রন্তুর জামা তৈরি করিয়ে দেয় সেই দোকান থেকেই এবারো জামা বানাবে বলে মামাকে জানিয়ে দেয়। রন্তু অবশ্য এতে খুব খুশী, কেননা মা’র সাথে যখনই নিউমার্কেট আসে মা তাকে নিউমার্কেট দুই নম্বর গেটের ফাস্টফুডের দোকান থেকে মেশিনে তৈরি কোণ আইসক্রিম কিনে দেয়। তাই এখান থেকে জামা বানালে দু’বার কোণ আইসক্রিম খাওয়া যায়, একবার মাপ দিতে যেদিন আসে আর আবার যেদিন জামা নিতে আসে।

মা সবসময় জামা ডেলিভারি নেয়ার দিনও রন্তুকে নিয়ে আসে, নতুন জামা রন্তুর গায়ে চাপিয়ে দেখে নেয় সব ঠিক আছে কিনা? মা সবসময় রন্তু ধমক দেয়, রন্তু নাকি তালগাছের মত দিন দিন বড় হয়ে যায়। কোনদিন দেখা যাবে জামা’র মাপ দিয়ে গেল একরকম আর ডেলিভারি নেয়ার সময় সে বড় হয়ে যাওয়ায় তা আর তার গায়ে আঁটছে না।

(পূর্ব ঘটনা প্রবাহঃ রন্তু, শায়লা আর জাভেদের একমাত্র সন্তান। জাভেদের সাথে শায়লার প্রনয় থেকে পরিণয়, পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পর শায়লা ধীরে ধীরে বুঝতে পারে জাভেদ ভয়ঙ্কর রকমের মানসিকভাবে অসুস্থ। এক সময় মানিয়ে নিতে না পেরে ছোট্ট শিশু রন্তুকে নিয়ে মায়ের বাসায় চলে আসে। তাদের মিউচুয়ালি ডিভোর্স হয়ে গেছে। মা-বাবার এই টানাপোড়নে শিশু রন্তুর মানসিক জগতের গল্প, সাথে তার নিত্যদিনকার প্যাচালি, এই হল এই গল্পের উপজীব্য। কয়েক মাস আগ পর্যন্ত জাভেদ রন্তুকে স্কুলের গেটে মাসে এক-দুইবার দেখা করতে আসতো, গত মাস দুয়েক আগে শেষবারের মত ছেলেকে দেখতে এসেছে। মানসিক সমস্যাগ্রস্থ জাভেদ পরিবার, আত্মীয় পরিজন হতে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে একাকী জীবন পথে হেঁটে চলেছে। অপর দিকে রন্তুর মা শায়লা এক প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরী করছে, যেখানে তার এক সিনিয়র পোস্টের সহকর্মী ইরফানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে যাচ্ছে প্রণয়ের দিকে। ইদানীং রন্তুর মাঝে একটি মানসিক সমস্যা দেখা যাচ্ছে, সে বাবা-মা সহ নিজেদের একটি পরিবার খুব মিস করে। আর সেই অপ্রাপ্তি থেকে সে নিজের মনে একা একা এক কাল্পনিক জগতে বিচরন করে। পিতামাতা’র সম্পর্কের এই টানাপোড়নের সাথে তার শিশু মনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া’য় কেমন চলছে আমাদের রন্তুর জগত তা জানার জন্য আসুন এবার আবার শুরু করা যাক)

শায়লা ছেলেকে নিয়ে হাঁটছে আনমনে। আজ তার মনটা ভালো নেই, ভালো নেই বলাটা বোধহয় ঠিক না, বলা যেতে পারে মেঘলা। বিষণ্ণ নয়, তবে তার খুব কাছাকাছি, সাথে এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতি। গত কিছুদিন ধরে ইরফান আর তার সম্পর্ক নিয়ে অফিসে নানান কথা হচ্ছে, অথচ তেমন কোন সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক তাদের মাঝে আছে বলে সে মনে করে না।

যদিও ইরফান আর শায়লা দুজনই দুজনকে পছন্দ করে, কিন্তু তাদের মাঝে আনুষ্ঠানিক কোন প্রেমালাপ হয়েছে এমনটা নয়, ইরফান তাকে আনঅফিশিয়ালি প্রপোজ করেছে এটা ঠিক। কিন্তু শায়লা কৌশলে সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছে, এটা না করে তার আর কিই বা উপায় আছে। তার পেছনে ফেলে আসা জীবন, জাভেদের সাথে পেছনের স্মৃতিময় জীবন, স্মৃতিময় বলা যায় কি? স্মৃতি’র চেয়ে এখন বেশী মনে পরে দুঃস্মৃতির সময়গুলো। কত স্বপ্ন, কত ভালবাসার সম্পর্ক কিভাবে যেন কোন ফাঁকে দুঃস্বপ্ন আর যন্ত্রণার উপাখ্যান হয়ে গেল।

রন্তু’র মুখের দিকে চেয়ে শায়লা সব দুঃখ ভুলে থাকার চেষ্টা করে যায় অবিরত। মাঝে মাঝে খুব যখন অস্থির লাগে নিজের ভেতরটা, তখন মনে হয় এই কষ্টময় জীবন ছেড়ে দূরে কোথাও হারিয়ে যায়, অনেক দূরে। যেখানে তার কষ্টের অতীত ভুলেও উঁকি দিবে না কখনো। সেই অস্থির সময়ে মাঝে মাঝে ছোট্ট ছেলেটার উপর শায়লার খুব রাগ হয়, এই পিছুটান না থাকলে আজ তার জীবনটা কি আবার নতুন করে শুরু করা যায় না? কিই বা তার বয়স হয়েছে, এখনও ত্রিশ পেরোয়নি, তার সমবয়সী অনেক আত্মীয়া এখনো অবিবাহিত অবস্থায় হনহন করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর শায়লা কি না এই ছোট্ট সময়ে জীবনের সব রূপ দেখে যেন বুড়িয়ে গেছে। মনের এই দোলাচালের সময়ে যোগ হয়েছে ইরফান, না পারে ইরফানকে জীবনে টেনে নিয়ে আঁকড়ে ধরে নতুন করে সব শুরু করতে, না পারে তাকে ঝেড়ে ফেলে দিতে।

‘মা... মা... চশমা...’ চশমা’র দোকানের পাশ দিয়ে যেতে যেতে রন্তু শায়লা’র হাত নেড়ে ইশারা করল।

‘হুমম চশমা... তো কি হয়েছে’

‘তুমি বলেছিলে আমাকে চশমা কিনে দিবে’

‘কবে বলেছিলাম?’

‘রেজাল্ট যেদিন দিল... ওমা আজকে দাওনা কিনে...’

‘না... এই ছেলে তোর কি চোখে সমস্যা হয়েছে যে তুই চশমা পড়বি? এইটুকুন বয়সেই চশমা শখ। বড় হয়ে নে, তখন দেখবি এমনি এমনি চোখে চশমা দিতে হবে’

‘কেন? বয়স হলে কি চশমা পড়তে হয়? তো তুমি, ছোট মামা... তোমরা পড় না কেন?’

‘আমাদের চোখের পাওয়ার অনেক ভাল, তাই’

‘আমারও চোখের পাওয়ার ভাল’

‘তাহলে তো হলই, নো চশমা। চশমা হল চোখের সমস্যার জন্য বুঝেছিস’

‘হুমম... কিন্তু তুমি বলেছিলে আমায় চশমা কিনে দিবে’ রন্তু গাল ফুলিয়ে কথাগুলো বলে গম্ভীর হয়ে গেল। ছেলের জামার মাপ দিয়ে শায়লা মার্কেটে একবার চক্কর দিচ্ছিল। এই বিকেলবেলা বাসায় গিয়ে আর কি করার আছ? সেই চারদেয়ালে বন্দী হয়ে বসে থাকা। তারচেয়ে নিউমার্কেটের এই খোলামেলা চত্বরে ছেলেকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে ভালোই লাগছে।

রন্তুকে নিয়ে দুই নাম্বার গেটের ফাস্টফুডের দোকানের দিকে হাঁটা আরম্ভ করতেই শায়লার নজরে এল। ইরফান দুই নাম্বার গেটের সেই ফাস্টফুডের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। শায়লা’র সাথে চোখাচোখি হতে সুন্দর করে একটা হাসি দিল, এই হাসি দেখলেই শায়লার বুকে একটা তরঙ্গ খেলে যায়। কিন্তু কেন? শায়লা কখনোই চায় না এমনটা হোক, তবু ইরফান তার সামনে আসলেই তার ভেতরে এই তরঙ্গের খেলা শুরু হয়ে যায়। অফিসে যখনই সে ইরফানের মুখোমুখি হয়, সে নিজেকে চেষ্টা করে স্বাভাবিক রাখতে। তার মনে হয় এই বুঝি তার আশেপাশের সবাই জেনে যাচ্ছে, সবাই তার প্রতিটি হৃদস্পন্দন শুনতে পাচ্ছে।

আর এখনতো ছেলে রন্তু সাথে রয়েছে। শায়লা’র কেন যেন খুব রাগ হচ্ছিল, ইরফান কেন এখানে এল? শায়লা আজ অফিস থেকে একটু আগে বের হয়েছে, সে যখন এমডি স্যারকে বলছিল আগে বের হয়ে যাবে আজ, ছেলেকে নিয়ে নিউমার্কেট যেতে হবে; তখন ইরফান সেখানে ছিল। আর সেই সুযোগটা সে নিয়েছে।

গত সপ্তাহ দুয়েক শায়লা ইরফানকে যথা সম্ভব এড়িয়ে চলেছে। এতদিন দুজনার ভালো লাগা দুজন জানতো, অনুভব করতো, কিন্তু মুখ ফুটে কেউ কাউকে কিছু বলে নাই। কিন্তু সপ্তাহ দুয়েক আগে ইরফান যখন শায়লাকে সরাসরি তার মনের কথা বলে ফেলল, কেন জানি শায়লা’র কাছে ভালো লাগেনি। অদ্ভুত মানুষের মন, শায়লা কেন ব্যাপারটায় অসন্তুষ্ট সে নিজেও বুঝতে পারছে না। সে শুধু জানে, তার ভালো লাগেনি। ইরফান শায়লার মনোভাব বুঝে সরি বলেছে বেশ কয়েকবার, অফিসের বাইরে শায়লার সাথে দেখা করতে চেয়েছে, কিন্তু শায়লা সবসময়ই তা এড়িয়ে গেছে।

শায়লা নিজের মনের এই দ্বৈত আচরণে নিজেই খুব মনঃকষ্টে আছে। সে নিজেকে সময় দিতে চায়, নিজের মনের সাথে তার আরও বোঝাপড়া করার দরকার আছে। ইরফান বুঝতে পারেছে না, ইরফানের এই অতি আগ্রহী হয়ে ওঠাটা শায়লার ভালো লাগছে না। সময়ের স্রোতে যদি তাদের গন্তব্য একই ঘাটে হয়ে থাকে, তবে তাই হবে। অন্যথায় না...
শায়লা রন্তুকে নিয়ে ফাস্টফুডের দোকানে পৌঁছতেই ইরফান এগিয়ে এল তাদের দিকে। শায়লা নিজেকে সামলে নিয়েছে মনে মনে, রন্তুর সামনে কোন ধরণের রিঅ্যাক্ট করা যাবে না। শায়লা জানে, তার ছেলে ছোট্ট হলে কি হবে, এই বয়সেই তার মানসিক গঠন অনেক পরিপক্ক। ছেলে বুঝতে পারে অনেক কিছুই, যা তার সমবয়সী ছেলেমেয়েরা বুঝবে না।

‘আরে ইরফান স্যার, আপনি এখানে’ শায়লা ইরফানকে দেখে অবাক হবার ভান করল।

‘এইতো, অফিস শেষে কিছু কেনাকাটা করতে চলে এলাম’

‘অফিস হতে এই মার্কেট একটু উল্টো পথ হয়ে যায় না? মৌচাক মার্কেটতো আপনার বাসার পথে... বিশেষ কিছু কেনাকাটা ছিল বুঝি...’ শায়লা ইচ্ছে করে ইরফানকে অপ্রস্তুত করে দিল।

‘হ্যাঁ, কিছু বই কেনার ছিল, নিউমার্কেট ছাড়া অন্য কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না বইগুলো।’

‘আমি এলাম ছেলের স্কুলের জামা বানাতে দিতে। রন্তু আঙ্কেলকে সালাম দিয়েছো?’ শায়লা রন্তুর দিকে চাইতে রন্তু ইরফানের দিকে ফিরে হাত তুলে সালাম দিল। ছেলের সালাম দেয়ার ভঙ্গি দেখে শায়লা হেসে ফেলল, তার সাথে ইরফানও হেসে উঠলো।

‘তো রন্তু, স্কুলের নতুন জামা বানাতে দেয়া হল?’

‘হুম...’

‘এখন কি কোণ আইসক্রিম খাবার পালা’

‘হুম...’

‘আমাকেও কি একটা আইসক্রিম খাওয়াবে তোমাদের সাথে?’

‘হুম...’

‘ওমা! তুমি কি সব কথার উত্তর ‘হুম’ দিয়েই দাও?’

‘হুম...’

রন্তুর হুম... শুনতে শুনতে আবারো শায়লা আর ইরফান হেসে উঠল। তাদের অজান্তেই পরিবেশটা হালকা হয়ে গেল। ইরফান তিনটে মেশিন কোণ আইসক্রিম এর অর্ডার দিয়ে রন্তুর কাছে এসে দাঁড়ালো। ঢাকা শহরে এখন এই দোকানেই একমাত্র মেশিন কোণ আইসক্রিম পাওয়া যায়। ইরফানের খুব পছন্দের জায়গা, শায়লারও... তবে তারা দুজনে কখনো একসাথে আইসক্রিম খায় নাই বাইরে কোথাও। আজ ইরফানের সাথে এই বিকেল বেলা নিউমার্কেটের এই চত্বরে কোণ আইসক্রিম খেতে খেতে শায়লা ভুলে যায় তার অতীত, তার দুঃখগাঁথা পেছনের জীবনের কথা। ইরফানকে ঘিরে মনে মনে কতশত কল্পনার খেলা তখন দানা বাঁধতে শুরু করেছে শায়লার হৃদয়ের গোপন ঘরে। এদিকে ইরফান ব্যস্ত রন্তুকে ঘিরে।

‘রন্তু কোণ আইসক্রিম নাকি চকবার আইসক্রিম কোনটা বেশী মজার বলতো?’

‘কোণ আইসক্রিম’

‘ওমা তুমি দেখি ‘হুম’ ছাড়াও কথা বলতে পার!’

রন্তু লজ্জা পেয়ে মাথা নামিয়ে নিল। লজ্জা পেয়েছে কিন্তু কথা বলার জন্য না। ইরফানকে কেন জানি রন্তুর বাবা বলে মনে হচ্ছে। বাবা তাদের সাথে থাকলে এমন করে হয়ত কথা হত রন্তুর সাথে। শেষ যেদিন বাবা স্কুলে দেখা করতে এল, সেদিন স্কুল হতে বাবার সাথে এই নিউমার্কেটে এসেছিল রন্তু। বাবা তাকে একটি বাইনোকুলার কিনে দিয়েছিল, জন্মদিনের অগ্রিম উপহার হিসেবে। তারপর আজ অনেকদিন হল বাবার সাথে আর রন্তুর দেখা হয় নাই। রন্তু মনে মনে এখন মাঝে মাঝে বাবার সাথে কথা বলে, তবে খুব সাবধানে। নানু, মা বা ছোট মামা দেখে ফেললে তাকে পাগল ভাববে বলে সে খুব সাবধান থাকে। আজ এই লোকটাকে কেন জানি রন্তুর বাবা বলে মনে হচ্ছে। বাবা বুঝি বহুদিন পর মা’র সাথে দেখা করতে এসেছে। রন্তু হাসি হাসি মুখ করে আইসক্রিমে মুখ দিল।

শেষ বিকেলের মায়াবী আলোয় রন্তুর মুখখানি ঝলমল করতে লাগলো। পাশে শায়লা আর ইরফান নিজেদের মাঝে কথোপকথনে মত্ত। এই বিকেলে আগত কোন এক বিকেলের বীজ বপন হয়ে গেল কি? সেই আগত বিকেলে এরা তিনজন একসাথে আবার কোন আইসক্রিম পার্লারে আইসক্রিম খেতে খেতে জীবনের সব পঙ্কিলতাকে পেছনে ফেলতে পারবে কি না তা ভবিষ্যতই বলে দিবে।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১:৩৪

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: অনেক দিন পরে রন্তুর সাথে দেখা হলো :(

০১ লা মে, ২০১৫ রাত ৯:০৭

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: রন্তুর সবচেয়ে পুরাতন সাথী'কে পাওয়া গেল। হুমম... আবার কিন্তু রন্তু হাজির হয়েছে নিয়মিত সামু ব্লগে। প্রতি সপ্তাহে একটা করে পর্ব দেয়ার চেষ্টা করছি। দেখা যাক কতদিন দিতে পারি।

ভালো আছেন নিশ্চয়ই প্রিয় সপ্নবাজ অভি। ভালো থাকুন সবসময়, অনেক অনেক ভালো :)

২| ০২ রা মে, ২০১৫ রাত ১:৩১

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: রন্তুর মত প্রতিটি সন্তানের কাছেই তাদের পিতা-মাতা,বিশেষ করে মায়ের গন্ধটি তাকে নিয়ে যায় একভিন্ন জগতে।।
খুব সুন্দর ফুটে উঠেছে শায়লার মানসিক অন্তর্দন্ধ।। পিছুটান আর পুরানো স্মৃতি।। পেয়ে হারানো আবার নূতন করে পাওয়া নিয়ে ভাবনা।। যেখানে এগুলিই বাধার প্রাচীর তৈরী করছে।।ঠিক যেমন ঘরপোড়া গরু সিদুঁরে মেঘ দেখলেও ভয় পায়।।
আবার শায়লার বয়সের কথা ভাবলে কষ্ট লাগে নিঃসংগতার কথা ভেবে।। কেন না চায় প্রিয়জনদের মুগ্ধ দৃষ্টি,একটু ভলবাসা আর আদর??
তবে শায়লার চেয়ে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ন লেগেছে রন্তুর চরিত্রটি।। এই বয়সে সবাই চায় বাবা-মা দুজনেরই আদর ভালবাসা।। কারন প্রকারভেদ।। সেখানে রন্তু কিন্তু একদিক থেকে বঞ্চিত।।।।
মোট কথা ভাললাগা মানসিক টানা-পোড়নের ব্যাখ্যায় পূর্ন গল্পটি।।
অনেকদিন পরে আসা আপনার ব্লগে।। মূল কারনটা হলো আমি যখন আসি তখন আপনার লেখা পড়ে যায় পিছনে।। আর আমি সময়ের অভাবে প্রথম,অনুসারিত আর নির্বাচিত পাতা পড়েই বিদায় নেই।। (যদিও আপনি আমার ভাললাগাদের একজন) আরো কৈফিয়তের কি প্রয়োজন আছে?? ধন্যবাদ।।

০২ রা মে, ২০১৫ রাত ২:১৪

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: কি বলব? ভেবে পাচ্ছি না। আপনার মন্তব্য পড়ে মনটা অনেক ভাললাগায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠলো। আসলে আমি নিজেও ব্লগে ঠিক মত সময় দিতে পারি না। তার উপর আমার আবার পড়ার চাইতে লিখতে বেশী ভালো লাগে, যদিও সব ছাইপাশ পোস্ট করি। তবে, এই রন্তু সিরিজটা আমার খুব প্রিয় একটা সিরিজ। একটা বাস্তব চরিত্র থেকে এই গল্প, আর তা হল রন্তু। এটা নিয়ে লিখে যাবার ইচ্ছা আছে দীর্ঘ সময় ধরে। এই রন্তু বড় হবে, সাথে সাথে বাড়বে তার জীবনের জটিলতা আর কষ্টের উপাখ্যানগুলো। আমি ইচ্ছে করলেও তা এড়িয়ে যেতে পারবো না, কেননা বাস্তব ঘটনাই গল্পের উপজীব্য। আমার বেশীরভাগ গল্পই বাস্তব ঘটনা হতে লেখা, শুধু পার্শ্ব পটভূমি আর চরিত্রগুলো একটি থেকে আরেকটিতে ধার করতে হয় গল্প হিসেবে সাজানোর জন্য। এই সিরিজের পাঠক খুবই কম, তারপরও কয়েকজন আছে যাদের উৎসাহে লিখে যাচ্ছি। আপনাদের ভালোবাসা আর উৎসাহে লিখে যেতে চাই অবিরত।

আদর্শ ব্লগিং্যের মদ্দকথা পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া। যদিও আমি এতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আমি শুধু লিখে যাই, তেমন একটা অন্যদের লেখা পড়া হয়ে উঠে না। তাই কখনো আদ্রশ ব্লগার দূরের কথা, ভালো ব্লগারও হতে পারবো না জানি। তারপরও লিখে যাই লিখতে ভালবাসি বলে। আর উপরি পাওনা হিসেবে আপনাদের ভালবাসাতো আছেই।

আবেগি মনে অনেক কথা বলে ফেললাম। ভালো থাকুন সবসময়, অনেক অনেক ভালো। শুভকামনা নিরন্তর।

৩| ০২ রা মে, ২০১৫ রাত ৩:২১

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: পারষ্পরিক মত বিনিময়ের উন্মুক্ত ক্ষেত্র হিসাবে ব্লগকে আমি আদর্শস্থান বলেই মনে করি।। হয়তো কেউ কাউকে জীবনে দেখবোও না( বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া)সেখানে মনের খোলা কথাগুলি দ্বিধা থাকা উচিৎ বলে আমি মনে করি না।।
আপনার দ্বিধাহীন কথাগুলি ভাল লাগলো।। ভাল থাকবেন।।

০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২০

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ সচেতনহ্যাপী, ভালো থাকা হোক সবসময়। :)

৪| ০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫

এম এম করিম বলেছেন: ভালো লাগলো।

সময় করে আগের পর্বগুলো পড়ে নিতে হবে।

+++

০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:৪১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ এম এম করিম ভাই। আগ্রহে ভালো লাগা জানবেন।

ভালো থাকুন সবসময়।

৫| ০৩ রা মে, ২০১৫ রাত ১:২২

ডি মুন বলেছেন: কোনদিন দেখা যাবে জামা’র মাপ দিয়ে গেল একরকম আর ডেলিভারি নেয়ার সময় সে বড় হয়ে যাওয়ায় তা আর তার গায়ে আঁটছে না।

...... হা হা হা, ভীষণ মজা পেলাম।

এ পর্বটা খুব ভালো লাগল। রন্তর সাথে ওর মায়ের চশমা সংক্রান্ত কথোপকথন খুব উপভোগ করেছি। সুখপাঠ্য।

চলতে থাকুক রন্তু সিরিজ।
শুভকামনা রইলো বোকা মানুষ ভাই
:)

০৬ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:১৭

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ ডি মুন। কয়েকদিন একটু ব্যস্ত ছিলাম, তাই প্রতিত্তরে দেরী হয়ে গেল। চলছে রন্তু সিরিজ, একটু আগেই পর্ব ১৩ পোস্ট করলাম। সামনে একটু ফ্রি আছি, এই ফাঁকে রন্তু সিরিজ এগিয়ে নিয়ে যাব অনেকটা। সিরিজের ব্যাপারে কোন সাজেশান? আমি কিন্তু রন্তুর মত করে সহজ সাবলীলভাবে লিখে যাচ্ছি। :)

ভালো থাকুন সবসময়।

৬| ০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:৪৪

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: খুব ভাল লাগল পড়তে ,আগামী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম এবং আগের পর্বগুল
সময় করে পড়ে নেব ।শুভ কামনা ।

০৬ ই মে, ২০১৫ রাত ১:৩৮

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ঘণ্টা দুয়েক আগে পর্ব ১৩ পোস্ট করলাম। রন্তু সিরিজে নতুন একজন পাঠক পেয়ে খুব ভালো লাগলো। পাঠ এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন, ভালো থাকুন সবসময়।

৭| ০৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১০

শ্রেষ্ঠা বলেছেন: একসাথে আইসক্রীম খাওয়ার মুহূর্তটা অনেক সুন্দর ছিলো..চলুক :)

০৭ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৫

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ শ্রেষ্ঠা, রন্তু সিরিজের সাথে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন। পাঠকদের উৎসাহ আর তাগাদা'র কারণেই এই সিরিজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি। তাই রন্তু সিরিজের পুরো কৃতিত্ব এর পাঠকদের।

ভালো থাকুন সবসময়, শুভকামনা জানবেন।

৮| ০৯ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:২০

কলমের কালি শেষ বলেছেন: উপন্যাসটার কাহিনী আস্তে আস্তে গা ছাঁটা দিয়ে উঠতে শুরু করেছে । খুব সুন্দরভাবে জমছে । এগিয়ে চলুক ।

১০ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:০৬

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: যাক, পাঠকের ভালো লাগাই এই উপন্যাসের প্রাপ্তি। গুটি কয়েক পাঠক পাই এই উপন্যাসে, তাদের উৎসাহ, প্রেরণাতেই লিখে যাচ্ছি। এখন থেকে নিয়মিত প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে একটি করে পর্ব পাবেন বলে আশা করি।

ভালো থাকুন সবসময়, অনেক অনেক ভালো। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.