নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১
প্রতিটি তরুন-তরুনী স্বপ্ন দেখে জীবন নিয়ে; আর প্রায় অনেকাংশেই স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপটি থাকে একটি ডিগ্রী; আর তা যদি হয় ভালো রেজাল্ট নিয়ে তাহলে তো কথাই নাই। ধরুন আপনি প্রথম শ্রেণীর রেজাল্ট নিয়ে গ্রাজুয়েট হলেন এবং উচ্চতর শিক্ষার জন্য 'হাভার্ড ইউনিভার্সিটি'তে আইন বিষয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে যান; তাহলে সোনায় সোহাগা। কিন্তু প্রতিটি মানুষই তো আর একই ধাঁচে গড়া না। আর এই কারনেই মনে হয় মানুষ সৃষ্টির সেরা। তো যা বলছিলাম, এরকম একটা চমৎকার ক্যারিয়ার (প্রচলিত আমাদের সিভিলাইজড সোসাইটিতে) যখন কারো ভালো লাগে না, মন চায় সবছেড়ে ছুড়ে দূরের কোন বরফে ঢাকা পর্বতের কোলের বন্য জীবনে বাকী জীবনটা কাটিয়ে দিতে, সে কি আসলে স্বাভাবিক মানুষ? না সে স্বাভাবিক না, তবে অস্বাভাবিক বলাটা কি শোভনীয়? হতে পারে সে ব্যতিক্রম, আমাদের আমজনতার ভাবনার জগত থেকে তার ভাবনার জগতটা ব্যতিক্রম। যুগে যুগে এরকম ব্যতিক্রম মানুষেরা এসেছে এই মানব সভ্যতায়; আর তাদের এই ব্যতিক্রমী চিন্তাধারাই কিন্তু তাদের স্মরণীয় করে রেখেছে ইতিহাসের পাতায়।
আজকের এই মুভির কেন্দ্রীয় চরিত্র এমনই এক ছেলে, আমেরিকার ইস্ট কোস্টের সম্ভ্রান্ত এক পরিবারের ছেলে, ক্রিস্টোফার জনসন ম্যাক্যান্ডেলস। ভালো রেজাল্ট করে যার যাবার কথা হাভার্ড, বাবা যাকে পুরাতন গাড়ীর বদলে নতুন একটি গাড়ী কিনে দিতে চাচ্ছেন; সেই ছেলে সকল সার্টিফিকেট নষ্ট করে দিয়ে, জমানো চব্বিশ হাজার পাঁচশত ডলার আটষট্টি সেন্ট চ্যারিটি ফান্ডে দাণ করে দিয়ে একদিন বের হয়ে পড়েন ঘর থেকে; নিজের পুরাতন গাড়ী আর কিছু হাত খরচের টাকা নিয়ে রওনা দেন উত্তর আমেরিকার পথ ধরে; উদ্দেশ্য আলাস্কার বরফে ঢাকা বনে জীবন কাটানো। কিন্তু কিভাবে যাবেন, কিভাবে থাকবেন, পথই বা কি? সব অজানা, আর এই আজানাতে ভর করেই একদিন বাড়ীর কাউকে না জানিয়ে, সকল ধরণের পরিচয়পত্র নষ্ট করে দিয়ে বেড়িয়ে পড়েন ক্রিস্টোফার।
চলার পথে একসময় গাড়ীটিও ত্যাগ করেন, পুড়িয়ে নষ্ট করে দেন সাথে থাকা টাকাগুলোকেও। এরপর একে একে পাড়ি দিতে থাকেন নানান জনপদ, বিস্তৃন চারণভূমি, নদী পথ, কখনো মরুভুমি'র রুক্ষ্ম প্রান্তর। আর এই চলার পথে তারমত আরও অনেক পর্যটকের দেখা হয়; কিন্তু তাদের লক্ষ বা গন্তব্য কোনটাই তো ক্রিস্টোফার এর মত নয়। তরুন ক্রিস্টোফার সকল সকল সম্পর্কের মায়া পেছনে ফেলে এগিয়ে যায় তার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন আলাস্কার পথে।
ছোটবেলা থেকেই বাবা মা'র দাম্পত্য সম্পর্কের টানাপোড়ন, কলহ এবং মায়ের উপর বাবার শারীরিক নির্যাতন কিশোর ক্রিস্টোফার এর মনোজগতে বিরুপ প্রভাব ফেলে। সংসারের প্রতি, সংসার জীবনের মায়ার প্রতি, এই সমাজের প্রচলিত জীবন যাপন পদ্ধতির উপর অদ্ভুত এক বিতৃষ্ণা বাসা বাঁধতে থাকে ক্রিস্টোফার মনের ভেতর। আর সেই তিলে তিলে গড়ে ওঠা বিতৃষ্ণা একদিন বিশাল জলরাশির মত ঢেউ তুলে তাকে করে গৃহছাড়া।
আমরা এই মুভির শুরুতে দেখতে পাই ক্রিস্টোফার আলাস্কার বরফে ঢাকা পথে নেমে পড়ে একটা গাড়ী হতে। এরপর সে হেঁটে হেঁটে খুঁজে পায় বরফে ঢাকা পাহাড়ের উপর একটি পরিত্যক্ত বাস, যাকে সে Magic Bus নামে অভিহিত করে। এখানেই সে কাটায় তার স্বপ্নের বুনো জীবনের সময়টুকু। তার দীর্ঘ দুই বছরের যাত্রাপথে সে নানান মানুষের সংস্পর্শে আসে; এদের মধ্যে যে বৃদ্ধ লোকটি তাকে আলাস্কার প্রান্তে নামিয়ে দিয়ে যায়; ক্রিস্টোফার তাকে বলে তার কোন পরিবার নেই। বৃদ্ধ লোকটি ক্রিস্টোফারকে আপন নাতি করে নিতে চাইলে তরুন ক্রিস্টোফার কথা দেয় আলাস্কার জীবন কাটিয়ে ফিরে আসবে সে; তখন এই বিষয়ে ভেবে দেখবে। এরকম হাজারো স্বপ্ন নিয়ে আলাস্কার জীবনে কি হয়েছিলো ক্রিস্টোফার এর সাথে জানতে হলে আপনাকে দেখতে হবে সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এই সিনেমাটি।
এই সিনেমাটি মূলত Jon Krakauer এর উপন্যাস Into the Wild অবলম্বনে ২০০৭ সালে নির্মিত হয়। ছবিটি পরিচালনা এবং প্রযোজনা করেন Sean Penn। অসাধারণ নির্মানশৈলী'র জন্য ছবিটি সর্বকালের অন্যতম সেরা 250 ছবির তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। কেন্দ্রীয় চরিত্র অনবদ্য অভিনয় করেছেন Emile Hirsch। ছবিটিতে চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন এরিক গ্যাটিয়ার আর সম্পাদনায় ছিলেন জে ক্যাসিডি; তাদের কাজ আসলেই দেখার মত। ছবিটি পরিবেশনায় ছিল প্যারামাউন্ট ভ্যান্টেজ। ১৪৮ মিনিট এর এই মুভিটি যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায় ২১ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে এবং ১৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই ছবিটি এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
ক্রিস্টোফার এর স্বপ্ন কি পূরণ হয়েছিলো? কেমন ছিলো তার আলাস্কার বুনো জীবনের দিনগুলো? কি পরিণতি হয়েছিলো ক্রিস্টোফারের? সে কি ফিরে এসেছিলো তার পরিবারের কাছে? নাকি সেই বৃদ্ধ'র নাতি হিসেবে বাকী জীবন কাটিয়ে দিয়েছিল? নাকি ক্রিস্টোফার এর পুরো অস্তিত্বই মিশে গিয়েছিলো আলাস্কার সেই বুনো জগতে... জানতে হলে আপনাকে দেখতে হবে ছবিটি। অন্তর্জালে নানান সোর্স এ ছবিটি রয়েছে; খুঁজে নিয়ে দেখবেন আশা করি।
ট্রাভেল মুভি রিভিউ সিরিজের আগের পোস্টঃ
মুভি রিভিউ The Perfect Wave (2014) (Adventure & Travel Movie Review - পর্ব ০১)
মুভি রিভিউ Touching The Void (2003) (Adventure & Travel Movie Review - পর্ব ০২)
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:০৮
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: এরকম কিছু মানুষ, অথবা হয়তো অনেকের মাঝেই এমনতর চিন্তা কখনো না কখনো আসে; কিন্তু প্রশ্রয় পায় না। গুটি দুয়েক এর মাঝে প্রশ্রয় পেয়ে তাড়িয়ে বেড়ায় তাদেরকে।
পাঠ এবং মন্তব্যে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা রইলো।
২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: যদিও সিনেমাটি দেখিনি, তবুও এর গল্প সবটাই জানা।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০২
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ স্পয়লার না করার জন্য
৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন রিভিও দিলেনতো। দেখার আগ্রহ জেগে গেল!
ভেতরের বাউল মনটা যেন অপূর্ণ স্বপ্নর কাল্পনিক হাতছানিতে শিহরিত
+++
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:২০
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ জাঁহাপনা, শুকরিয়া প্রশংসার জন্য; যদিও মুভি রিভিউ খুব কম লেখা হয়; কিন্তু মুভি দেখা হয় প্রচুর।
তোমার ভেতর বসত করে কোন জনা? মন জানো না!!!
৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৭
সাজিদ! বলেছেন: এই ক্রিস্টোফারের মতোন জীবন এই জন্মে আর সম্ভব না। খুবই চমৎকার সিনেমা।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:২৮
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: একমত হতে পারলাম না ভ্রাতা। যুগে যুগে সবকালেই এমন ক্ষ্যাপাটেরা জন্মে; শুধু আমরা তাদের খোঁজ রাখি না, এই হল সমস্যা। এই যেমন ক্রিস্টোফার কে নিয়ে বই, সিনেমা না হলে কি জানতে পারতাম? আর ক্রিস্টোফার এর গল্প কি খুব বেশী দিন আগের কথা?
পাঠ এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
৫| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:০৪
গরল বলেছেন: মোভিটার শেষে তো দেখায় যে এটা একটা সত্যি ঘটনার উপর ভিত্তি করে বানান এবং সাল উল্লেখ করা থাকে কোবে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, আমার যতটুকু মনে পড়ে। অনেক আগে দেখেছিলাম মুভিটা নেটফ্লিক্স এ।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:১৩
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: দিলেন তো মুভি রিভিউ এ স্পয়লার এর ঘোল ঢেলে... আপনার উচিত
আপনার জন্যঃ স্পয়লার (spoiler) কী?
৬| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখেছি। খুব সুন্দর মুভি।
১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:১২
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর।
৭| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:২১
গরল বলেছেন: আমি বোকাসোকা মানুষ, না বুঝে করে ফেলেছি। দয়া করে মুছে দিন কমেন্ট টা।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:২৬
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: হা হা হা, আপনি বোকা হইলে আমি কি? আমার এই টাইটেল অন্য কাউকে কিছুতেই দিতে রাজী না।
মনে কষ্ট নিয়েন না, আমরা আমরাই তো। মুভি রিভিউ লেখার এই এক যন্ত্রনা সব কথা বলা যাবে না, বলেন তো কি যন্ত্রণা?
কমেন্টটা থাক, ভালবাসা হিসেবে।
৮| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:০৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: সময় পেলে দেখবো
১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৩৬
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আশা করি ভালোই লাগবে।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২৮
শায়মা বলেছেন: একালের গৌতম বুদ্ধা না নিমাই আর কি। সব থাকার পরেও সন্যাসে পায়।
এই ম্যুভি দেখবো।
খুবই ইন্টারেস্টিং বুঝাই যাচ্ছে।