নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বিপ্লবী ধারায় লিখতে পছন্দ করি।

গিলগামেশের দরবার

সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র গবেষক (দক্ষিণ চীন সাগর)

গিলগামেশের দরবার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট মাছের প্রিসার্ভেশন, কিছু বাস্তবতা

৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৪:০৬


স্মল ইন্ডিজেনাস ফিস (SIS) গুলা বাংলাদেশ থেকে প্রায় হারিয়েই যাচ্ছে। বিশেষ করে আমাদের দক্ষীন বঙ্গে ফার্ম ফিসারির উত্তর উত্তর উন্নয়নের কারনে, খামারি ও ব্যাবসায়ীরা বানিজ্যিক ভাবে লাভবান হওয়া যায় এমন স্পিসিসের চাষ করছেন। এতে করে এই সব সিস স্পিসিসের টিকে থাকা নিয়ে শংকা দেখা দিচ্ছে। বিভিন্ন বাজার গুলা ঘুরলে বুঝতে পারবেন বাজারে এই ধরনের মাছ নাই বললেই চলে। আর যদি থেকেও থাকে তাইলে বড় কোন মাছ বিক্রেতা এই সিস মাছের ঝুড়ি নিয়ে বসে থাকে না। খালি গায়ে, ছোট একটা ঝুড়ি নিয়ে একেবারে গরীব কোন মাছ বিক্রেতাই এই মাছ নিয়ে বসে থাকতে দেখবেন। অথচ ডাক্তারের কাছে চোখের কোন সমস্যা নিয়ে গেলে, যে কথাটা প্রথমে বলে সেটা হলো "ছোট মাছ বেশি বেশি করে খান, চোখ ভালো হয়ে যাবে"। গর্ভবতী মায়েদের জন্যও ডাক্তারদের একই পরামর্শ থাকে। কেননা এই মাছ গুলা পুরোটুকুই খাওয়া যায়। কাটা সমেত। বড় মাছে এই সুবিধা পাবেন না। ছোট মাছ প্রোটিনের পাশাপাশি নানা রকমের প্রানিজ খনিজ পাওয়া যায়। যা চোখ ও হাড়ের অনেক উপকার করে থাকে। অথচ বাজারে গেলে এই মাছ পাওয়া যায় না। তাইলে পাবেন কিভাবে?

যদি চাষ না হয়, তাইলে হয়তো প্রকৃতিতে বেশিদিন এই মাছ টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। এখনই স্ট্রেটেজি ঠিক করতে হবে। যদি বড় মাছের পাশাপাশি কিছু ছোট মাছ ছেড়ে দিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা যায় তাইলে হয়তো এই মাছ গুলা বায়োলজিক্যালি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে। সাথে ভোক্তাদের ভিতরে এই মাছের উপকারিতা ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। কারন বানিজ্যিক লাভ না থাকলে কৃষক আগ্রহ দেখাবে না, আর ভোক্তাও জানবে না প্রচারের অভাবে। উদাহরনটা দেয়া যায় এভাবে- আমেরিকার স্পেস রিসার্চ অরগানাইজেশন নাসা (NASA) ও ইন্ডিয়ার ইসরোতে (ISRO) খুবই কম ব্যবসায়ীরা ইনভেস্ট করেন। কারন সেখানে লাভ খুবই কম, আর যারা আসেন তারা কোন না কোন ভাবে গাড়ি কিংবা বিমান ব্যবসার সাথে জড়িত। কারন এরা তাদের গাড়ি কিংবা বিমানের টেকনোলজি ব্যবসার উন্নয়ন চান। তাই ব্যবসার দিকটা মাথায় রেখেই স্ট্রেটেজি ঠিক করতে হবে।

যাই হোক, অনার্স প্রথম বর্ষে " Introduction to Fisheries Resources" কোর্সটা নিতেন Masuma Motahar ম্যাম। সেখানে সিসের একটা চ্যাপ্টার পড়েছিলাম। ম্যাম সিসের ক্লাস গুলা একটু আবেগের সাথেই নিতেন। তিনি সিসের প্রিসারভেশনের কথা বলতেন। তখন ছোট ছিলাম, কম বুঝতাম। ম্যামের আবেগটা এখন বুঝি। আজ যদি এই মাছ গুলাকে বাঁচাতে না পারি তাইলে হয়তো আমাদের বাচ্চা-কাচ্চা বা পরবর্তী প্রজন্ম মাছ গুলো জাদুঘরে দেখতে পাবে। আর আমরা আমাদের বাচ্চাদের জাদুঘরে টিকেট কেটে সেই মাছ দেখাতে নিয়ে যাব। কিন্তু আমাদের বাচ্চারা যখন জানবে আমরা ফিসারিজ এক্সপার্ট ছিলাম তখন হয়ত আমাদের লজ্জায় মাথা হেট হবে। কি জানি, নাও হতে পারে। লজ্জা ঢাকতে হয়ত আমরা ঠিকই কোন কৌশল বের করে ফেলব।

তবে আশার কথা হলো এখন রিসার্চ হচ্ছে এই মাছ গুলার উপর। আমাদের টিমও রিসার্চ করেছিলো। আমার পরম শ্রদ্ধেয় এবং পিতাতুল্য Md. Abdus Samad স্যার ও বি এফ আর আই এর সায়েন্টিস্ট Shahinur Rahman মামা এবং Ripon Kumar Adhikary স্যার ছিলেন আমাদের টিমে। আমাদের রিসার্চ কিন্তু ভালো কিছু ইন্ডিকেশন করে নি। বিশেষ করে চ্যাং , নাপিত কৈ, কাচকি ও ঘোড়া চেলা সবচেয়ে থ্রেটের উপর আছে। বাকি গুলাও ঝুঁকি ঝুকিমুক্ত নয়। সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হলো আমাদের এই রিসার্চ অবজ্ঞা ও অবহেলায় পড়ে ছিল বহু দিন। এরপর জানতে পারলাম আমার বন্ধু মিথুন ঢেলা মাছ নিয়ে কাজ করছে। খুবই ভালো লাগল শুনে। এই রকম রিসার্চ আরো হোক।

আমাদের এই ছোট দেশীয় মাছ গুলো টিকে থাক। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের হাত আর মুখ দিয়ে মেছো গন্ধ বের হোক। আর সারা বিশ্বে তারা বলে বেড়াক আমরা মাছে ভাতে বাঙালি।

এই লিংকটাতে আমাদের রিসার্চটা পেয়ে যাবেন-
আর্টিকেল লিঙ্ক

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.