নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বিপ্লবী ধারায় লিখতে পছন্দ করি।

গিলগামেশের দরবার

সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র গবেষক (দক্ষিণ চীন সাগর)

গিলগামেশের দরবার › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক মানদন্ড কি হওয়া উচিত?

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৫৩


ঘটনা প্রবাহ-১

সল্টলেক কলকাতা, ২০১৮ সাল

আমি রাস্তার এক টং দোকানে চা খাবো বলে দাঁড়ালাম, চা দিতে বললাম। দাদা আমাকে চা দিল, আমি চা শেষ করলাম। যখন টাকা দিতে যাব, দুঃখিত রুপি দিতে যাব; ঠিক সেই সময় আমার হাত থেকে ১০ রুপির একটা কয়েন মাটিতে পড়ে গেল। সাথে সাথে দোকানদার আঁতকে উঠল, দাদা, এ আপনি কি করলেন? আপনি টাকা মাটিতে ফেলে দিলেন? কলকাতায় এই দৃশ্য খুবই স্বাভাবিক, আমার কেন যেন মনে হলো এরা টাকাকে ঈশ্বর-ভগবান এই জাতীয় কিছু একটা জ্ঞান করে থাকে। তারমানে অর্থনীতি শাস্ত্র এরা খুব ভালো করে জানে এবং আয়ত্ত করেছে। ফলাফল? দুই দুইটা নোবেল। অমর্ত্য সেন এবং অভিজিৎ ব্যানার্জি, দুইজনই দাপুটে অর্থনীতিবিদ ও নোবেল লরিয়েট।

বাঙলাদেশেও চায়ের বিল দেয়ার সময় অনেকবার টাকা হাত থেকে পড়ে গেছে কিন্তু কখনো কোন দোকানদার টাকা পড়ে যাওয়ার কারণে আঁতকে ওঠে নাই। কারন বাঙলাদেশে টাকা পড়ে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক, সম্ভবত বাঙলাদেশের বাঙালিরা টাকা মূল্যায়ন করতে জানে না।

ডক্টর ইউনুস এর নোবেল
ডক্টর ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তি এক আজব ঘটনা, যিনি কিনা সারা জীবন ক্ষুদ্র ঋণের উপরে কাজ করলেন অথচ নোবেল পেলেন শান্তিতে। আমার কাছে কেন যেন মনে হয় উনি অর্থনীতিতেও একটা নোবেলের দাবিদার, বাঙালি অর্থশাস্ত্রে খুবই পারদর্শী।

ঘটনাপ্রবাহ ২
সুশান্ত পাল বলে বাঙলাদেশ সিভিল সার্ভিস ক্যাডারের একজন ব্যক্তি আছেন যিনি খুবই নাম করেছিলেন তার বিভিন্ন ভালো এবং বিতর্কিত কাজের জন্য। উনি যেবার সিভিল সার্ভিসে এডমিশন পান, সেবার উনি প্রথম হয়েছিলেন। খুবই ট্যালেন্টেড এবং মেরিটোরিয়াস। একটা জাতির মেধাকে কিভাবে একদিকে ডাইভার্ট করে রাখা যায় সুশান্ত পাল খুব ভালো করে জানতেন এবং তিনি তা করে দেখিয়েছিলেন। সিভিল সার্ভিসে এডমিশন পাওয়ার পর, উনি সারা বাঙলাদেব্যাপী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পেইন করে ছাত্রদেরকে সিভিল সার্ভিস এবং অন্যান্য সরকারি চাকরির জন্য পড়াশোনার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতেন। উনার এই উদ্ভুদ্ধকরণ ব্যাপার গুলো, খুবই কাজে দিয়েছিল সেই সময়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ছেলেটার মাথায় সারাদিন গবেষণার প্রজেক্টগুলো ঘুরতো, সে ও সিভিল সার্ভিস এবং অন্যান্য চাকরির পড়াশোনার জন্য উঠে পড়ে লেগে গেল। এই ছাত্র গুলো এমন ভাবে পড়াশুনা করতো, যেন আগামীকাল বলে আর কিছু নাই। এবং তাদের কাছে মনে হল বেহেশতে যাওয়ার একমাত্র পদ্ধতি হলো এই সিভিল সার্ভিস এবং অন্যান্য সরকারী চাকরি।

উক্ত ঘটনা প্রবাহে, একটা মারাত্মক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। একটা জাতির সমস্ত মেধা, বুদ্ধিদীপ্ত মেধা; একটামাত্র ধারায় এবং একটামাত্র পথে ধাবিত হয়েছে। যাতে করে যিনি কিনা একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, একজন আর্কিটেক্ট, একজন ডাক্তার, একজন মেরিন বায়োলজিস্ট; তিনিও এই সিভিল সার্ভিস এবং অন্যান্য সরকারি চাকরির পেছনে সময় দিতে দিতে তাদের নিজের জাত ভুলে গিয়েছিলেন।

যে ছাত্রটা, জাতে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সে নিজেকে একজন সরকারি প্রশাসনিক ক্যাডার হিসেবে কল্পনা করতে লাগলো। যে ছেলে বা মেয়েটার টেবিলে সব সময় ভবন কিংবা ব্রিজের নকশা থাকতো, সে এখন কল্পনা করতে শুরু করলো পররাষ্ট্র ক্যাডার হবে। যে ডাক্তারের টেবিলের পাশে থাকা মানুষের কঙ্কালটা প্রতিদিন নেড়েচেড়ে দেখতো সে এখন স্বপ্ন দেখে সে সরকারি প্রশাসনিক ক্যাডার হবে। পুরো একটা জাতির মেধাকে একদিকে ডাইভার্ট করে একটা জাতিকে ধ্বংস করার স্বপ্ন সুশান্ত পাল দেখেছিলেন।

এর ফলাফল?
প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করার জন্য লোক পাওয়া যাচ্ছিল না মাঝে। মালিকরা যখন ডিমান্ড সাপ্লাইয়ের তারতম্য টা বুঝে ফেললেন তখন বেতন বাড়ানো তো দূরে থাক উল্টো কম সেলারিতে একটা জব ম্যানেজ করাও কঠিন হয়ে উঠেছিল। দেশটির অর্থনীতির চাকা, গতিশীল হওয়া তো দূরে থাক, শামুক গতি হয়ে গেছিল।

কল্পনা করুন প্রাগৈতিহাসিক একটা রাজ্যে ১০০০ পরিবার নিয়ে একটা রাজ্য গড়ে উঠেছিল। সেখানে একজন রাজা ছিলেন, রাজার মন্ত্রীরা ছিলেন, অন্যান্য পর্ষদরাও ছিলেন। রাজা ঘোষণা দিলেন আমার রাজ্যে সকল পরিবার থেকে সমস্ত সদস্যরা রাজ্যের প্রশাসনিক কাজ করবে। এতে করে রাজ্যে কৃষক-ধোপা-নাপিত এদের সংখ্যা কমে গেল এবং একটা সময় পরে বাইরে থেকে নাপিত-ধোপা এদেরকে আনা লাগল রাজ্যের মানুষকে সেবা দেয়ার জন্য।

এগজ্যাক্টলি। সেটাই হয়েছে বাঙলাদেশে। আমাদের সমস্ত মেধাকে ডাইভার্ট করে সিভিল সার্ভিস এবং সরকারি চাকরির পিছনে ছুটিয়ে দিয়ে বেসরকারি দামি দামি বেশি বেতনের হাই স্কিলড চাকরি গুলা বিদেশীদেরকে দেয়া হচ্ছে। ভারত, শ্রীলঙ্কা এমনকি পাকিস্তান থেকে এক্সপার্ট আনা হচ্ছে। বিলিয়ন ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে, অথচ যে এক্সপার্টদের কে আনা হচ্ছে সে জাতীয় এক্সপার্ট বাঙলাদেশে তৈরি করা হয় এবং ভালো মানের এক্সপার্টই তৈরি করা হয়। কিন্তু সেই এক্সপার্টদের কে আমরা ব্যবহার করতে পারছিনা। এক্সপার্টদের ব্রেইন চলে যাচ্ছে সরকারি চাকরিতে।

এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?
এমন একটা সময় ছিল যখন বেসরকারী চাকরীতে সেলারি সরকারি চাকরি থেকে বেশি ছিল। ইভেন আমি প্রথম যে চাকরিটা আমার প্রথম জীবনে শুরু করি, সেটার বেসিক সেলারি ছিল একজন প্রথম শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তার বেসিকের সমান। আমার মনে হয় সরকারি চাকরিতে জৌলুস থাকা ভালো কিন্তু এত সুবিধা দেয়ার কারণে আমাদের মেধা গুলো এই ধরনের বেসরকারী চাকরির পেছনে না ছুটে ডাইভার্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, মেরিন সায়েন্টিস্ট, আইনজীবী তৈরি করেছিলাম তাদের সেবা থেকে দেশটির জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের মূলমন্ত্র হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা। ছাত্রদেরকে তার নিজ নিজ বিষয়ভিত্তিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়গুলোতে বেশি বেশি করে জোর দেয়া।

আমার মনে হয় একটা জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক মানদন্ড, সেটার চর্চাতেই নিহিত। যে জাতি তার বুদ্ধিবৃত্তিক এবং বিষয়ভিত্তিক বিষয় গুলা বেশি চর্চা করবে সে তত উন্নত হবে।

খুবই সিম্পল ফর্মুলা।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:২৫

অধীতি বলেছেন: ভালো বলেছেছেন। ইতিহাস, নৃবিজ্ঞান, সাহিত্য এসব বিষয়গুলো অনেক আগেই বিলুপ্ত হইছে।এখন কর্পোরেট বিষয়গুলোও বহিরাগতদের অধিকারে যাচ্ছে।

২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১১

রাজীব নুর বলেছেন: অর্থকে এত বড় করে দেখার কিছু নাই। অর্থ মানুষকে সুখী করতে পারে না। অবশ্য যাদের টাকা নেই, তারা মনে করে অর্থের কারনে তাদের সুখ নেই।
আমি একলোককে দেখেছি, হাত থেকে একবার কোনো কিছু পড়ে গেলে সেটা আর তুলে নেয় না। হোক, টাকা, সিগারেট বা অন্য কিছু।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫৬

গিলগামেশের দরবার বলেছেন: টাকা কখনো সুখের উৎস হতে পারে না। সহমত। আমি তুলনা করার অন্য এই কথা গুলো, এখানে এনেছি। উদাহরণ দেয়ার জন্য এনেছি। ধন্যবাদ এত বড় লেখা পড়া এবং বুদ্ধিদীপ্ত মন্তব্যের জন্য, সবসময়ের মত।

৩| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩৩

আমি সাজিদ বলেছেন: সুশান্ত পাল তার প্রতিশোধ নিয়েছেন। চুয়েটে পড়ার সময় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া তার ভালো লাগেনি। এই সময়টায় চুয়েট বা তার ক্লাসমেটরাও তার পাশে ছিল না। সে কি করেছে? চুয়েটে থাকাকালীন সময়ে ক্লাসে সময় না দিয়ে চট্রগ্রাম শহরে কোচিং সেন্টার খুলে ক্লাস নাইন টেনের ছেলেমেয়েদের ম্যাথ ইংলিশ ফিজিক্স পড়িয়েছে। পাঁচ বছর এই কাজটাই করেছে। এরপর পিএসসির এক্সামের মাধ্যমে তার প্রতিশোধের পালা আসলো। সে তার প্রতি ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির সকল অবজ্ঞার প্রতিশোধ নিয়েছে। সে এরপর ভেবেছে, কোচিং সেন্টারগুলোর ফান্ডিং এ সে এই সিভিল সার্ভিসের গল্প ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে দিবে। এইখানে, এইসব সেমিনারে 'তুমিও পারবে তোমার বিষয়ে সেরা হতে' এই কথাটার জায়গায় সে ও কোচিংগুলো প্রচার করেছে 'তুমিও পারবে এডমিন ক্যাডার হতে, পুলিশ ক্যাডাএ হতে'। তার ফলেই আজ এই অবস্থা।

শেষে যা হলো তাতে লজ্জা লাগে- আমলাতান্ত্রিক গনতন্ত্রের দেশে নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় সিভিল সার্ভিসের জয়জয়কার। কেউ সমাজবিজ্ঞানী হতে চায় না, মাইক্রোবায়োলজিস্ট হতে চায় না, গনিত নিয়েই সারাজীবন থাকতে চায় না, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক হতে চায় না, প্রকৌশল পেশায় থাকতে চায় না - সবার স্বপ্ন সরকারি চাকরিজীবী হবে। সুশান্ত পালই কিনা বা কানাডার বেগম পাড়ার বর্তমান সময়ের গল্পই কিনা পাওয়ার প্র‍্যাকটিসের জন্য সবাইকে উৎসাহিত করছে। মধুদার ক্যান্টিনের চা সিঙ্গারা খেয়ে ওরাকলের বিসিএস কোচিং এর গল্প বলতে উৎসাহিত করছে।

৪| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৪

কল্পদ্রুম বলেছেন: ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্যান্য মেধাবী ছেলেমেয়েদের নিজের সেক্টরে ক্যারিয়ারের নিশ্চয়তা নেই।যতটুকু আছে সেটা অর্জনেও সময় লাগে।সেই তুলনায় বিসিএস ক্যাডার হতে পারলে অনেক দ্রুত নিশ্চিন্ত এবং সম্মানজনক জীবন পাওয়া যায়।বিষয়ভিত্তিক জোর দেওয়ার পাশাপাশি টাকার ব্যাপারটাও মাথায় রাখা দরকার।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একজন সদ্য গ্রাজুয়েটকে (অন্য বিষয়ের ছেলেমেয়েদের কথা বাদ দিয়ে কেবল মেডিকেল/ইঞ্জিনিয়ারিং এর কথাই যদি বলি) কতটা মূল্যায়ন করে?

৫| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৯

আমি সাজিদ বলেছেন: @কল্পদ্রুম ভাইয়া, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সদ্য গ্রাজুয়েটদের মূল্যায়ন করে না বললে ভুল হবে। তবে, কোন নির্দিষ্ট কর্মপরিধি ও মানসম্মত বেতন কাঠামো এখানে নেই। কিন্তু তা সমাধানের চেষ্টা না করে সিভিল সার্ভিসের চাকরিকে একমাত্র সমাধান ভাবলে তো লাভ হচ্ছে না। সবাই তো আর সরকারি চাকরি করবে না। সবার জন্য পদ সৃজন করাও সম্ভব নয়।

ডাক্তার ইঞ্জিনিয়াররা জানে তাদের গ্রাজুয়েশনের পর ক্যারিয়ার স্টাবল করতে আরও চার থেকে পাঁচ বছর লেগে যায়। কিন্তু তা জেনেই তো কষ্টটা মেনে নিয়েই তারা এই পেশায় এসেছে। কিন্তু যখন দেখা যায়, হেলথ ক্যাডারে উপজেলায় পোস্টিং পাওয়া ছেলেটার জন্য কোন নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই অথচ নন মেডিকেল প্রশাসন ক্যাডারের এন্ট্রি লেভেলে ঢুকা তারই বন্ধু মানুষটি বলিউডের সিনেমার মতো নায়ক সেজে বেড়াচ্ছে, তাতে তার কষ্ট হওয়া স্বাভাবিক। কেন এমন হচ্ছে? আন্তঃক্যাডার বৈষম্য। গিলগামেশ যে বলেছেন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়াররা নিজের পেশা পরিবর্তন করার জন্য সিভিল সার্ভিস এক্সাম দিচ্ছেন, তার কারন তো এটাই দুই তিনটি সরকারি চাকরিজীবী গোষ্ঠী নিজেদের ছাড়া কাউকেই নূন্যতম সম্মান দিতে জানে না। আর ময়ূর সেজে বসে থাকা সুযোগসন্ধানী সুশান্ত পালরা তো আছেনই, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকে প্রমোট না করে চাকরিকে প্রমোট করে কয়েকটা সেশনের কনসেনট্রেশান নষ্ট করে দিয়েছেন আর নিজে কোচিং সেন্টারগুলোর কমিশন কামিয়েছেন।

৬| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: অর্থ অনর্থের মূল যদি তা অপরিমেয় হয়। আর জীবনে অর্থের প্রয়োজন বেচে থাকার জন্য এটা অস্বীকার করা যায়না।তবে একজন মানুষ বা একটি জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতি নির্ভর করে জ্ঞান-বিজ্ঞান তথা বুদ্ধিবৃত্মিক চর্চার উপর এটা সত্যি।

৭| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:




আপনি নিজেই হবুচন্দ্র, আরেক হবুচন্দ্র 'সুশান্ত পালের' কাহিনী লিখেছেন; সুশানত সবাইকে ক্যাডার সার্ভিসে যেতে বলায়, সবাই ক্যাডার সার্ভিসে চলে গেলো, বেসরকারী সেক্টরে লোকই পাওয়া যায় নাই?

বছরে সরকার কতজনকে ক্যাডার সার্ভিসে চাকুরী দেয়, দেশে বছরে কতজন গ্রেজুয়েশন করে? এসএসসিতে অংকে কত পেয়েছিলেন, প্রশ্নফাঁস করতে পেরেছিলেন?

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২২

গিলগামেশের দরবার বলেছেন: সবাই ক্যাডার সার্ভিসে চলে যায় নাই; সবাই যাওয়ার চেস্টা করেছে। নিজের ফিল্ডের পড়াশুনা বাদ দিয়ে একটা কমন পড়াশুনা করেছে সবাই। শতকরা ১০০ জন পাশ করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯৯ ভাগই ক্যাডার সার্ভিসে যাবার জন্য বা বা সরকারী চাকরি পাবার আশায় পড়াশুনা করতে থাকে; তবে আপনি বেসরকারী সেক্টরে লোক পাবেন কোথায়? গবেষক কিভাবে তৈরী হবে? বাইরে থেকে লোক এনে বেসরকারী চাকুরির গর্ত ভরাট করা হয়েছে। গবেষনা তলানিতে। যিনি ডাক্তার তাকে তো পররাষ্ট্র বা প্রশাসনে কাজ করার দরকার নাই। তাকে জনগনের ট্যাক্সের টাকায় পড়ানো হয়েছে, তার নিজের টেকনিক্যাল সেবা দেয়ার জন্য। তার টেকনিক্যাল অভিজ্ঞতা এবঙ জ্ঞান জাতির দরকার। সুশান্ত এখানেই সফল হয়েছে, বাঙালকে সে উদ্ভট স্বপ্ন দেখিয়ে, হ্যামিলনের বাশিওয়ালা বনে গিয়েছে রাতারাতি।

বছরে কত জন ক্যাডার চাকুরি পায়, এবঙ কত জন গ্রাজুয়েট করে সেটার পরিসঙখ্যান আপনি ইন্টারনেটে পেয়ে যাবেন। এই তথ্য জানতে ও হিসেব করতে, অঙকে ১০০ পাওয়া লাগে না, বা প্রশ্নপত্র ফাঁস করা লাগে না।

৮| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখক বলেছেন: সবাই ক্যাডার সার্ভিসে চলে যায় নাই; সবাই যাওয়ার চেস্টা করেছে। নিজের ফিল্ডের পড়াশুনা বাদ দিয়ে একটা কমন পড়াশুনা করেছে সবাই।

আমেরিকার স্কুলের সব বাচ্ছাই নভোচারী হতে চায়; কিন্তু মেকডোনাল্ডেও লোকের অভাবে থাকে না; লিখতে ভেবেচিন্তে লিখবেন।

৯| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২০

রাজীব নুর বলেছেন: এই দেশে জন্ম নিয়ে ভুল করেছি।

১০| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৩

পদ্মপুকুর বলেছেন: ভেবেচিন্তে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য সুশান্ত পাল এরকমটা করেছে, সেটা কতটা সঠিক, আমি নিশ্চিত নই। তবে ২০১০-১১ সময়টাতে সুশান্ত পাল একটা ক্রেজ হয়ে উঠেছিলেন। বাংলাদেশে সরকারী জবের যে জৌলুস, বিশেষত ক্যাডার জবের, সেখানে নব্য ক্রেজ সুশান্ত পাল সে হাওয়াকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করেছে মাত্র, তাঁর ফেসবুকে এখন লেখা- মোটিভেশনাল স্পিকার, লেখক ও সাহিত্যিক!!

মেধাকে সঠিকভাবে ব্যবহার না করা/হওয়ার এই ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছিলো বোধকরি বৃটিশ শাসনের সময় থেকেই; যেখান থেকে আমরা এখনও মুক্তি পাইনি। উপরন্তু, বর্তমান সময়ে ক্যাডার সার্ভিসের কিছু জবকে এত বেশি ক্ষমতায়ন করা হয়েছে, এত বেশি চাকচিক্য দেয়া হয়েছে, সেখানে চাকুরিপ্রত্যাশী সবাই যে ক্যাডার সার্ভিসে যেতে চাইবে, এতে আর আশ্চর্যের কি?
বাই দ্য ওয়ে, সুশান্ত পাল প্রশাসন ক্যাডারের নয়, কাস্টমস-এ।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৬

গিলগামেশের দরবার বলেছেন: ধন্যবাদ। সংশোধিত। অনেক বার প্রশাসন কথাটা এসেছে, টাইপোস এর কারনে হতে পারে।

১১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৭

মেরুভাল্লুক বলেছেন: এই বিসিএস করতে করতে আমার অনেক বন্ধু চুল বাল সব পাকাইয়া ফেললো । যারা বিসিএস দেয় তারা আসলে কেন দেয় ?? অধিকাংশই সরকারী চাকরীর মধুর লোভে দেয়। সুশান্ত পাল যা করে গেছে তাকে জাতীয় ক্রিমিনাল হিসেবে ঘোষনা দেয়া উচিত। তবে ঢাকা ভার্সিটির পোলাপাইনের লাঠি পেটা খেয়ে তার কিছুটা উসুল হয়েছে।

১২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৬

মেরুভাল্লুক বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখক বলেছেন: সবাই ক্যাডার সার্ভিসে চলে যায় নাই; সবাই যাওয়ার চেস্টা করেছে। নিজের ফিল্ডের পড়াশুনা বাদ দিয়ে একটা কমন পড়াশুনা করেছে সবাই।

আমেরিকার স্কুলের সব বাচ্ছাই নভোচারী হতে চায়; কিন্তু মেকডোনাল্ডেও লোকের অভাবে থাকে না; লিখতে ভেবেচিন্তে লিখবেন।

জনাব আপনি কোন লিখা পড়ার পরে ভেবে চিন্তে কমেন্ট করবেন, আমার ধারনা আপনি উনার লেখার মূল সুর ধরতে পারেন নাই। বিসিএস বর্তমান বাংলাদেশে একটা ব্যাধির নাম। পদ থাকে ২ হাজার পরীক্ষা দেয় ২ লাখ। আমার অনেক বন্ধুই বিসিএসের জন্য গ্র্যাজুয়েশনের পরে ৪ ৫ বছর করে ঘরে বসা। এখন যখন বয়স শেষ হয়ে গিয়েছে তখন ফ্রেশার হিসেবে বেসরকারী চাকুরীতে ঢুকেছে। তারূন্যের কি চরম অপচয়। অথচ আমার অন্যান্য অনেক বন্ধুই যারা সরকারী বিসিএসের আশায় বসে না থেকে নিজ নিজ সেক্টরে বেসরকারী জবে ঢুকে গেছে গ্রাজুয়েশনের পরে পরেই তারা আজ প্রতিষ্ঠিত।

আমেরিকার স্কুলের সব বাচ্ছাই নভোচারী হতে চায়; কিন্তু মেকডোনাল্ডেও লোকের অভাবে থাকে না আমেরিকার পরিস্থিতি আর বাংলাদেসের পরিস্থিতি এক না ।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২০

গিলগামেশের দরবার বলেছেন: চাঁদগাজী কে আমি কোন একসময়, অ্যাকাডেমিক এডিটরের পর্যায়ে ফেলেছিলাম। তার আক্রমনাত্বক কমেন্টের কারনে আমার সেই বক্তব্য আজ প্রত্যাহার করে নিলাম। আমি না জেনে বুঝে এইরকম উদ্ভট এবং আক্রমনাত্বক একটা মানুষকে বিশাল কিছু মনে করেছিলাম। আমি কোন অ্যাকাডেমিক এডিটরকে, কখনো, কোনদিন আক্রমনাত্বক কোন মন্তব্য করতে শুনি নাই। আমার মনে হয়, বাঙলাতে শুধু গালাগালি, হামবড়াই, এবঙ আক্রমনের ভাষাই নেই, সেখানে যুক্তি নির্ভর ও সুন্দরভাবেও মন্তব্য করার উপকরণ আছে। কেন জানি মনে হচ্ছে, উনি সেই ভাষা শেখেন নাই।

১৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৫৮

কল্পদ্রুম বলেছেন: আমি সাজিদ ভাই, আন্তঃক্যাডার বৈষম্যের ব্যাপারটা খুবই স্পষ্ট। গিলগামেশ দরবার যেটা লিখেছেন,যতটুকু বুঝেছি,তাতে আমার সরাসরি দ্বিমতের কোন সুযোগ নেই।তবে গিলগামেশ দরবারের লেখাতে অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে সরকারি চাকরি বনাম বেসরকারি চাকরির দিকটা আমাকে বেশি আকর্ষণ করেছে।সেই প্রেক্ষিতেই আগের মন্তব্যটি।মূল্যায়ণ একেবারেই করে না সেটা বুঝাতে চাইনি।তবে অবমূল্যায়ণের সুযোগটা কোথায় আপনিই লিখেছেন।সবাই সরকারি চাকরি করবে না।তবে আমার মনে হয় এ দেশের অধিকাংশ ছেলে মেয়ে সিভিল সার্ভিসকেই প্রথম টার্গেট রাখে।কেন রাখে সেটাও গিলগামেশের লেখা এবং আপনার মন্তব্যে এসছে।তবে "ডাক্তার ইঞ্জিনিয়াররা নিজের পেশা পরিবর্তন করার জন্য সিভিল সার্ভিস এক্সাম দিচ্ছেন, তার কারন তো এটাই দুই তিনটি সরকারি চাকরিজীবী গোষ্ঠী নিজেদের ছাড়া কাউকেই নূন্যতম সম্মান দিতে জানে না।" — এর পাশাপাশি দ্রুত অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রবৃত্তিটাও আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ কারণ বলে মনে হয়।আপনি বেসরকারি চাকরিতে যে খুঁতগুলো লিখেছেন আমি ঠিক সেগুলো মাথায় রেখেই পোস্টের পরিত্রাণের উপায় অংশটি আগ্রহ নিয়ে পড়েছি।গিলগামেশ দরবার লিখেছেন,"আমার মনে হয় সরকারি চাকরিতে জৌলুস থাকা ভালো কিন্তু এত সুবিধা দেয়ার কারণে আমাদের মেধা গুলো এই ধরনের বেসরকারী চাকরির পেছনে না ছুটে ডাইভার্ট হয়ে যাচ্ছে।" এটা পড়ে আমার মনে হয়েছে সরকারি চাকরিতে এত সুবিধা দেওয়ার অর্থ গ্রাজুয়েটদের অতিমূল্যায়ণ করা হচ্ছে।তবে কি বেসরকারি চাকরিতে সঠিকভাবে মূল্যায়ণ করা হয়? দুই একজনের সফলতার/ব্যর্থতার ঘটনা নয়,সামগ্রিক চিত্রটা কেমন! সেটাই জানতে চাচ্ছিলাম।যদিও উত্তর পাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি।যাই হোক,আমার মতামত হলো বেসরকারি সেক্টর যদি দেশি মেধা চায় তাহলে তাদেরকেও একই সুবিধা দিতে হবে।বড় বড় পদে যেখানে বিদেশীদের আমদানি করা হচ্ছে ভবিষ্যতে সেই পর্যায় পর্যন্ত দেশী কাউকে উঠাতে হলে তাদেরকে সেভাবেই ভাবতে হবে।আপনি যেই সমস্যাগুলোর কথা বলেছেন (নির্দিষ্ট কর্মপরিধি ও মানসম্মত বেতন না থাকা) সেগুলো দূর করতে হবে। নাহলে মেধাবী এবং পরিশ্রমী ছেলেমেয়েরা সেদিকেই যাবে যেখানে সুবিধা বেশি।পাশাপাশি গিলগামেশ দরবার যেটা লিখেছেন, "এ থেকে পরিত্রাণের মূলমন্ত্র হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা। ছাত্রদেরকে তার নিজ নিজ বিষয়ভিত্তিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়গুলোতে বেশি বেশি করে জোর দেয়া।" — এটা তো অবশ্যই।

এই দীর্ঘ মন্তব্য চালাচালিতে পোস্টদাতা বিরক্ত হয়ে থাকলে দুঃখিত।আমি সাজিদ কর্তৃক নাম উল্লেখের কারণেই এই প্রতিউত্তর।

১৪| ০৫ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৫:১১

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: দারুণ, এরকম প্রাঞ্জল লেখা বার বার পড়া যায়।
সুচিন্তিত এবং সমাধানের পথ বাতলে দিয়েছেন।
ভালো লাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.