নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টুকরো কথা

হিসলা সিবা

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ট্রাকের চাকার নিচে ফেটে যাওয়া দিপালী সাহার হৃদপিন্ডকে যারা ভ্যালেন্টাইন-বেলুন বানিয়ে বেচে দ্যায়, অথবা যাদের শুধুমাত্র শরৎবাবুই কাঁদাতে পারেন, একমাত্র গোপাল ভাঁড়ই হাসাতে পারে- সেই নিথর স্বাভাবিকতায় মৃত মানুষদের ব্যবচ্ছেদ ঘটে এক নীল ক্লিনিকে।

হিসলা সিবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ুন আজাদ স্যারের মৃত্যু বার্ষিকীতে স্যারের লেখা আমার কয়েকটি অসম্ভব প্রিয় কবিতা

১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৭

সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে



আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।

নষ্টদের দানবমুঠোতে ধরা পড়বে মানবিক

সব সংঘ-পরিষদ; চলে যাবে, অত্যন্ত উল্লাসে

চ’লে যাবে এই সমাজ-সভ্যতা-সমস্ত দলিল

নষ্টদের অধিকারে ধুয়েমুছে, যে-রকম রাষ্ট্র

আর রাষ্ট্রযন্ত্র দিকে দিকে চলে গেছে নষ্টদের

অধিকারে। চ’লে যাবে শহর বন্দর ধানক্ষেত

কালো মেঘ লাল শাড়ি শাদা চাঁদ পাখির পালক

মন্দির মসজিদ গির্জা সিনেগগ পবিত্র প্যাগোডা।

অস্ত্র আর গণতন্ত্র চ’লে গেছে, জনতাও যাবে;

চাষার সমস্ত স্বপ্ন আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে একদিন

সাধের সমাজতন্ত্রও নষ্টদের অধিকারে যাবে।





আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।

কড়কড়ে রৌদ্র আর গোলগাল পূর্ণিমার চাঁদ

নদীরে পাগল করা ভাটিয়ালি খড়ের গম্বুজ

শ্রাবণের সব বৃষ্টি নষ্টদের অধিকারে যাবে।

রবীন্দ্রনাথের সব জ্যোৎস্না আর রবিশংকরের

সমস্ত আলাপ হৃদয়স্পন্দন গাথা ঠোঁটের আঙুর

ঘাইহরিণীর মাংসের চিৎকার মাঠের রাখাল

কাশবন একদিন নষ্টদের অধিকারে যাবে।

চলে যাবে সেই সব উপকথাঃ সৌন্দর্য-প্রতিভা-মেধা;

এমনকি উন্মাদ ও নির্বোধদের প্রিয় অমরতা

নির্বাধ আর উন্মাদদের ভয়ানক কষ্ট দিয়ে

অত্যন্ত উল্লাসভরে নষ্টদের অধিকারে যাবে।





আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।

সবচে সুন্দর মেয়ে দুইহাতে টেনে সারারাত

চুষবে নষ্টের লিঙ্গ; লম্পটের অশ্লীল উরুতে

গাঁথা থাকবে অপার্থিব সৌন্দর্যের দেবী। চ’লে যাবে,

কিশোরীরা চ’লে যাবে, আমাদের তীব্র প্রেমিকারা

ওষ্ঠ আর আলিঙ্গন ঘৃণা ক’রে চ’লে যাবে, নষ্টদের

উপপত্নী হবে। এই সব গ্রন্থ শ্লোক মুদ্রাযন্ত্র

শিশির বেহালা ধান রাজনীতি দোয়েলের স্বর

গদ্য পদ্য আমার সমস্ত ছাত্রী মার্ক্স-লেনিন,

আর বাঙলার বনের মত আমার শ্যামল কন্যা-

রাহুগ্রস্থ সভ্যতার অবশিষ্ট সামান্য আলোক

আমি জানি তারা সব নষ্টদের অধিকারে যাবে।







——————————————————————



বাঙলাদেশের কথা (আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম)



যখন আমরা বসি মুখোমুখি, আমাদের দশটি আঙুল হৃৎপিন্ডের মতো কাঁপতে থাকে

দশটি আঙুলে, আমাদের ঠোঁটের গোলাপ ভিজে ওঠে আরক্ত শিশিরে,

যখন আমরা আশ্চর্য আঙুলে জ্বলি, যখন আমরাই পরষ্পরের স্বাধীন স্বদেশ,

তখন ভুলেও কখনো আমাকে তুমি বাঙলাদেশের কথা জিজ্ঞেস করো না;

আমি তা মূহূর্তেও সহ্য করতে পারি না, -তার অনেক কারণ রয়েছে।

তোমাকে মিনতি করি কখনো আমাকে তুমি বাঙলাদেশের কথা তুলে কষ্ট দিয়ো না।

জানতে চেয়ো না তুমি নষ্টভ্রষ্ট ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের কথা, তার রাজনীতি,

অর্থনীতি, ধর্ম, পাপ, মিথ্যাচার, পালে পালে মনুষ্যমন্ডলি, জীবনযাপন, হত্যা, ধর্ষণ,

মধ্যযুগের দিকে অন্ধের মতোন যাত্রা সম্পর্কে প্রশ্ন ক’রে আমাকে পীড়ন কোরো না;

আমি তা মুহূর্তেও সহ্য করতে পারি না, – তার অনেক কারণ রয়েছে ।



তোমাকে মিনতি করি কখনো আমাকে তুমি বাঙলাদেশের কথা তুলে কষ্ট দিয়ো না।

জানতে চেয়ো না তুমি নষ্ট ভ্রষ্ট ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ

মাইলের কথা: তার রাজনীতি

অর্থনীতি, ধর্ম, পাপ, মিথ্যাচার, পালে পালে মনুষ্যম-লী

জীবনযাপন, হত্যা, ধর্ষণ

মধ্যযুগের দিকে অন্ধের মতোন যাত্রা সম্পর্কে প্রশ্ন

করে আমাকে পীড়ন কোরো না





তার ধানক্ষেত এখনো সবুজ, নারীরা এখনো রমনীয়, গাভীরা এখনো দুগ্ধবতী,

কিন্তু প্রিয়তমা, বাঙলাদেশের কথা তুমি কখনো আমার কাছে জানতে চেয়ো না;

আমি তা মুহূর্তেও সহ্য করতে পারি না, তার অনেক কারণ রয়েছে।



——————————————————————



আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে



আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।

আমার খাদ্যে ছিল অন্যদের আঙুলের দাগ,

আমার পানীয়তে ছিল অন্যদের জীবাণু,

আমার বিশ্বাসে ছিল অন্যদের ব্যাপক দূষণ।

আমি জন্মেছিলাম আমি বেড়ে উঠেছিলাম

আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।

আমি দাঁড়াতে শিখেছিলাম অন্যদের মতো,

আমি হাঁটতে শিখেছিলাম অন্যদের মতো,

আমি পোশাক পরতে শিখেছিলাম অন্যদের মতো ক’রে,

আমি চুল আঁচড়াতে শিখেছিলাম অন্যদের মতো ক’রে,

আমি কথা বলতে শিখেছিলাম অন্যদের মতো।

তারা আমাকে তাদের মতো করে দাঁড়াতে শিখিয়েছিলো,

তারা আমাকে তাদের মতো করে হাঁটার আদেশ দিয়েছিলো,

তারা আমাকে তাদের মতো করে পোশাক পরার নির্দেশ দিয়েছিলো,

তারা আমাকে বাধ্য করেছিলো তাদের মতো করে চুল আঁচড়াতে,

তারা আমার মুখে গুজে দিয়েছিলো তাদের দূষিত কথামালা।

তারা আমাকে বাধ্য করেছিল তাদের মতো করে বাঁচতে।

আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।

আমি আমার নিজস্ব ভঙ্গিতে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম,

আমি পোশাক পরতে চেয়েছিলাম একান্ত আপন রীতিতে,

আমি চুল আঁচড়াতে চেয়েছিলাম নিজের রীতিতে,

আমি উচ্চারন করতে চেয়েছিলাম আন্তর মৌলিক মাতৃভাষা।

আমি নিতে চেয়েছিলাম নিজের নিশ্বাস।

আমি আহার করতে চেয়েছিলাম আমার একান্ত মৌলিক খাদ্য,

আমি পান করতে চেয়েছিলাম আমার মৌলিক পানীয়।

আমি ভুল সময়ে জন্মেছিলাম। আমার সময় তখনো আসে নি।

আমি ভুল বৃক্ষে ফুটেছিলাম। আমার বৃক্ষ তখনো অঙ্কুরিত হয় নি।

আমি ভুল নদীতে স্রোত হয়ে বয়েছিলাম। আমার মেঘ তখনো আকাশে জমে নি।

আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।

আমি গান গাইতে চেয়েছিলাম আপন সুরে,

ওরা আমার কন্ঠে পুরে দিতে চেয়েছিলো ওদের শ্যাওলা-পড়া সুর।

আমি আমার মতো স্বপ্ন দেখতে চেয়েছিলাম,

ওরা আমাকে বাধ্য করেছিলো ওদের মতো ময়লা-ধরা স্বপ্ন দেখতে।

আমি আমার মতো দাঁড়াতে চেয়েছিলাম,

ওরা আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলো ওদের মতো মাথা নিচু করে দাঁড়াতে।

আমি আমার মতো কথা বলতে চেয়েছিলাম,

ওরা আমার মুখে ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছিলো ওদের শব্দ ও বাক্যের আবর্জনা।

আমি খুব ভেতরে ঢুকতে চেয়েছিলাম,

ওরা আমাকে ওদের মতো করেই দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছিলো বাইরে।

ওরা মুখে এক টুকরো বাসি মাংস পাওয়াকে বলতো সাফল্য,

ওরা নতজানু হওয়াকে ভাবত গৌরব,

ওরা পিঠের কুঁজকে মনে করতো পদক,

ওরা গলার শেকলকে মনে করতো অমূল্য অলংকার।

আমি মাংসের টুকরা থেকে দূরে ছিলাম। এটা ওদের সহ্য হয় নি।

আমি নতজানু হওয়ার বদলে নিগ্রহকে বরণ করেছিলাম। এটা ওদের সহ্য হয় নি।

আমি পিঠ কুঁজের বদলে বুকে ছুরিকাকে সাদর করেছিলাম। এটা ওদের সহ্য হয় নি।

আমি গলার বদলে হাতেপায়ে শেকল পড়েছিলাম। এটা ওদের সহ্য হয় নি।

আমি অন্যদের সময়ে বেঁচে ছিলাম। আমার সময় তখনো আসেনি।

ওদের পুকুরে প্রথাগত মাছের কোনো অভাব ছিলো না,

ওদের জমিতে অভাব ছিলো না প্রথাগত শস্য ও শব্জির,

ওদের উদ্যানে ছিলো প্রথাগত পুষ্পের উল্লাস।

আমি ওদের সময়ে আমার মতো দিঘি খুঁড়েছিলাম ব’লে

আমার দিঘিতে পানি ওঠে নি।

আমি ওদের সময়ে আমার মতো চাষ করেছিলাম ব’লে

আমার জমিতে শস্য জন্মে নি।

আমি ওদের সময়ে আমার মতো বাগান করতে চেয়েছিলাম ব’লে

আমার ভবিষ্যতের বাগানে একটিও ফুল ফোটে নি।

তখনো আমার দিঘির জন্য পানি উৎসারণের সময় আসে নি।

তখনো আমার জমির জন্য নতুন ফসলের সময় আসে নি।

তখনো আমার বাগানের জন্যে অভিনব ফুলের মরশুম আসে নি।

আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।

আমার সবকিছু পর্যবসিত হয়েছে ভবিষ্যতের মতো ব্যর্থতায়,

ওরা ভ’রে উঠেছে বর্তমানের মতো সাফল্যে।

ওরা যে-ফুল তুলতে চেয়েছে, তা তুলে এনেছে নখ দিয়ে ছিঁড়েফেড়ে।

আমি শুধু স্বপ্নে দেখেছি আশ্চর্য ফুল।

ওরা যে-তরুণীকে জরিয়ে ধরতে চেয়েছে তাকে ধরেছে দস্যুর মতো।

আমার তরুণীকে আমি জরিয়ে ধরেছি শুধু স্বপ্নে।

ওরা যে-নারীকে কামনা করেছে, তাকে ওরা বধ করেছে বাহুতে চেপে।

আমার নারীকে আমি পেয়েছি শুধু স্বপ্নে।

চুম্বনে ওরা ব্যবহার করেছে নেকড়ের মতো দাঁত।

আমি শুধু স্বপ্নে বাড়িয়েছি ওষ্ঠ।

আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।

আমার চোখ যা দেখতে চেয়েছিলো, তা দেখতে পায় নি।

তখনো আমার সময় আসে নি।

আমার পা যে-পথে চলতে চেয়েছিলো, সে পথে চলতে পারে নি।

তখনো আমার সময় আসে নি।

আমার হৃদয় যা নিবেদন করতে চেয়েছিলো, তা নিবেদন করতে পারে নি।

তখনো আমার সময় আসে নি।

আমার কর্ণকুহর যে-সুর শুনতে চেয়েছিলো, তা শুনতে পায় নি।

তখনো আমার সময় আসে নি।

আমার ত্বক যার ছোঁয়া পেতে চেয়েছিলো, তার ছোঁয়া পায় নি।

তখনো আমার সময় আসে নি।

আমি যে পৃথিবীকে চেয়েছিলাম, তাকে আমি পাই নি।

তখনো আমার সময় আসে নি। তখনো আমার সময় আসে নি।

আমি বেঁচে ছিলাম

অন্যদের সময়ে।



——————————————————————





আমি সম্ভবত খুব ছোট কিছুর জন্য



আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো

ছোট ঘাসফুলের জন্যে

একটি টলোমলো শিশিরবিন্দুর জন্যে

আমি হয়তো মারা যাবো চৈত্রের বাতাসে

উড়ে যাওয়া একটি পাঁপড়ির জন্যে

একফোঁটা বৃষ্টির জন্যে



আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো

দোয়েলের শিসের জন্যে

শিশুর গালের একটি টোলের জন্যে

আমি হয়তো মারা যাবো কারো চোখের মণিতে

গেঁথে থাকা একবিন্দু অশ্রুর জন্যে

একফোঁটা রৌদ্রের জন্যে



আমি সম্ভবতখুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো

এক কণা জ্যোৎস্নার জন্যে

এক টুকরো মেঘের জন্যে

আমি হয়তো মারা যাবো টাওয়ারের একুশ তলায়

হারিয়ে যাওয়া একটি প্রজাপতির জন্যে

এক ফোঁটা সবুজের জন্যে



আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো

খুব ছোট একটি স্বপ্নের জন্যে

খুব ছোট দুঃখের জন্যে

আমি হয়তো মারা যাবো কারো ঘুমের ভেতরে

একটি ছোটো দীর্ঘশ্বাসের জন্যে

একফোঁটা সৌন্দর্যের জন্যে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১৩

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: অসাধারন তার লেখা
ভিন্ন মনোরম প্রতিবাদি তার কাব্য স্রিজনিতে আঁকা ।।
পোষ্টে ধন্যবাদ

২| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২১

বনসাই বলেছেন: কবির "গরিবদের সৌন্দর্য" কবিতাটিও আজ আরেকবার পড়তে পারেন:

গরিবেরা সাধারণত সুন্দর হয় না।
গরিবদের কথা মনে হ'লে সৌন্দর্যের কথা মনে পড়ে না কখনো।
গরিবদের ঘরবাড়ি খুবই নোংরা, অনেকের আবার ঘরবাড়িই নেই।
গরিবদের কাপড়চোপড় খুবই নোংরা, অনেকের আবার কাপড়চোপড়ই নেই।
গরিবেরা যখন হাঁটে তখন তাদের খুব কিম্ভুত দেখায়।
যখন গরিবেরা মাটি কাটে ইট ভাঙে খড় ঘাঁটে গাড়ি ঠেলে পিচ ঢালে তখন তাদের
সারা দেহে ঘাম জবজব করে, তখন তাদের খুব নোংরা আর কুৎসিত দেখায়।
গরিবদের খাওয়ার ভঙ্গি শিম্পাঞ্জির ভঙ্গির চেয়েও খারাপ।
অশ্লীল হাঁ ক'রে পাঁচ আঙ্গুলে মুঠো ভ'রে সব কিছু গিলে ফেলে তারা।
থুতু ফেলার সময় গরিবেরা এমনভাবে মুখ বিকৃত করে
যেনো মুখে সাতদিন ধ'রে পচছিলো একটা নোংরা ইঁদুর।
গরিবদের ঘুমোনোর ভঙ্গি খুবই বিশ্রী।
গরিবেরা হাসতে গিয়ে হাসিটাকেই মাটি ক'রে ফেলে।
গান গাওয়ার সময়ও গরিবদের একটুও সুন্দর দেখায় না।
গরিবেরা চুমো খেতেই জানে না, এমনকি শিশুদের চুমো খাওয়ার সময়ও
থকথকে থুতুতে তারা নোংরা করে দেয় ঠোঁট নাক গাল।
গরিবদের আলিঙ্গন খুবই বেঢপ।
গরিবদের সঙ্গমও অত্যন্ত নোংরা, মনে হয় নোংরা মেঝের ওপর
সাংঘাতিকভাবে ধ্বস্তাধ্বস্তি করছে দু'টি উলঙ্গ অশ্লীল জন্তু।
গরিবদের চুলে উকুন আর জট ছাড়া কোনো সৌন্দর্য নেই।
গরিবদের বগলের তলে থকথকে ময়লা আর বিচ্ছিরি লোম সব জড়াজড়ি করে।
গরিবদের চোখের চাউনিতে কোনো সৌন্দর্য নেই,
চোখ ঢ্যাবঢ্যাব ক'রে তারা চারদিকে তাকায়।
মেয়েদের স্তন খুব বিখ্যাত, কিন্তু গরিব মেয়েদের স্তন শুকিয়ে শুকিয়ে
বুকের দু-পাশে দুটি ফোড়ার মতো দেখায়।
অর্থাৎ জীবনযাপনের কোনো মুহূর্তেই গরিবদের সুন্দর দেখায় না।

শুধু যখন তারা রুখে ওঠে কেবল তখনি তাদের সুন্দর দেখায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.