![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেফটেন্যান্ট জেনারেল ট্রাকের চাকার নিচে ফেটে যাওয়া দিপালী সাহার হৃদপিন্ডকে যারা ভ্যালেন্টাইন-বেলুন বানিয়ে বেচে দ্যায়, অথবা যাদের শুধুমাত্র শরৎবাবুই কাঁদাতে পারেন, একমাত্র গোপাল ভাঁড়ই হাসাতে পারে- সেই নিথর স্বাভাবিকতায় মৃত মানুষদের ব্যবচ্ছেদ ঘটে এক নীল ক্লিনিকে।
একাত্তরে স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন জামাতের মুখপাত্র ছিল ‘দৈনিক সংগ্রাম’ নামের পত্রিকাটি।
২৫ মার্চ পৃথিবীর বৃহত্তম গনহত্যার পরের দিন যখন সমস্ত শহর নিস্তব্ধ, সেদিনও প্রকাশিত হয়েছিল দৈনিক সংগ্রাম।
এবং সেদিন থেকে বিজয়ের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত পাক বাহীনির সমর্থনে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত দৈনিক হিসেবে নিজের স্থান পাকা করে নেয় ওরা।
২৫ মার্চের নায়ক পাক বাহিনীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে সংগ্রাম বিবৃতি দেয়। তাদের সময়োচিত গণহত্যার সিদ্ধান্তকে জানায় সাধুবাদ।
পুরো একাত্তর জুড়ে পাকিদের পা চেটে ডিসেম্বরে বুদ্ধিজীবিদের হত্যাকান্ডের মূল ইন্ধনও জোগায় পত্রিকাটি। শোনা যায় বুদ্ধিজীবিদের নাম লিস্ট আকারে প্রকাশ করে তারা,
ওই লিস্টে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবিদের কাউকেই আর স্বাধীন বাংলার মাটিতে দেখতে পাইনি আমরা...
আজ স্বাধীনতার ৪২ বছর পরেও ত্রিশ লক্ষ শহীদ এবং দুই লক্ষ ধর্ষিতার রক্তের উপর দাঁড়িয়ে প্রকাশিত হচ্ছে দৈনিক সংগ্রাম এবং তাদের স্বভাব মোটেও পাল্টায়নি।
নতুন বোতলে যেন সেই পুরনো কাসুন্দি। বারবার এই দেশে হত্যাযজ্ঞ চালানো জামাতে ইসলাম ও শিবিরের গীত গেয়ে চলেছে পত্রিকাটি...
এবারে আসুন একটি গল্প শোনা যাক......
রহিম আর করিম দুই বন্ধু। বন্ধু মানে সহপাঠী আর কি, জানে জিগার দোস্ত বলতে যা বোঝায় সেরকম কিছু না।
দুজনের মধ্যে তুমল ঝগড়া চলছে। ঝগড়ার বিষয়বস্তু করিমের পাকিস্তান ক্রিকেট টিম সাপোর্ট করা।
কেউ যদি পাকিস্তান ক্রিকেট টিম সাপোর্ট করে সেটা মন থেকে একদমই মানতে পারেনা রহিম, আর যে করে তাকে তো নয়ই...
সুযোগ পেলেই দুটো কথা শুনিয়ে দেয়।
তো দুজনের ঝগড়া চলছে। করিমকে রহিম জিজ্ঞেস করল, ‘কি রে তুই যখন পাকিস্তান জিতলে খুশি হোস, মন প্রাণ দিয়ে পাকিস্তানের সমর্থন করিস
তোর বিবেকে কি একটুও বাঁধেনা?’ করিমের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘কেন বাঁধবে? আর খেলার মধ্যে বারবার রাজনীতি টাইনা আনিস ক্যান?
অনেকে তো ভারত সাপোর্ট করে। ভারত কি আমাদের কম ক্ষতি করতেছে এখন? বর্ডারে মানুষ মারা যাচ্ছে,তিস্তাতে ভারত আমাদের ঠকাইতেছে,টিপাইমুখ,রামপাল,পেঁয়াজ সমাচার...
আরো কত কি...ভারত কি সাধু? আর আমি পাকিস্তান সাপোর্ট করি পাকিস্তান ভালো খেলে তাই। খেলাধুলার মধ্যে বারবার এসব কি টাইনা আনস? পারিসও বটে তোরা বাপু...’
রহিম অবাক হয়ে করিমের কথা শোনে আর ভাবে করিমের তুলনা করার লেভেল সেন্স কতটা নিম্ন পর্যায়ের। করিমকে সে বলে, “আমি তো বলিনাই ভারত সাধু।
ভারত অবশ্যই সুবিধাবাদী রাষ্ট্র। কিন্তু পাকিস্তানের সাথে,১৯৭১ এর সাথে তুই তুলনা করিস কিভাবে? ধর,আমি আর তুই প্রতিবেশি।কিন্তু সবকিছুতেই আমি বেশি সুবিধা চাই,
তোকে ঠকাই। তখন তুই অবশ্যই আমার উপর ক্ষেপে থাকবি।আমাকে তোর শত্রু ভাববি। কিন্তু এই আমিই যদি কোনদিন তোর বাসায় ঢুকে
তোর মা আর বোনকে একসাথে রেপ করি তোর সামনে, তোর হাত পা বেঁধে। তার পরে যদি তোর বোনের স্তন দুটো কেটে তোর হাতে ধরিয়ে দেই...
তাহলে আগের শত্রুতা আর এখনকার শত্রুতা এক কাতারে ফেলতে পারবি? তাহলে পাকিস্তান আর ভারতের সাথে আমাদের শত্রুতা এক কাতারে ফেলিস কিভাবে?
পাকিস্তান ভালো খেলে বলেই তোর সাপোর্ট করতে হইব? পাকিস্তান ছাড়া কি আর কোন টিম ভালো খেলে না? পাকিস্তান টিম যখন সাপোর্ট করিস তখন পাকিস্তানের পতাকা সাপোর্ট করছিস...
তখন চোখের সামনে ভেসে ওঠে না ত্রিশ লক্ষ শহীদের লাশ? ভেসে ওঠেনা চোখের সামনে বীরাঙ্গনার ছিন্নভিন্ন মলিন শাড়ীর আঁচল...”
সত্যি কথা বলতে কি, এমনই লক্ষ লক্ষ করিম আমাদের চারপাশেই বাস করে। এধরনের তুলনা করার নমুনা কিন্তু শুধুমাত্র ক্রিকেটীয় এমন ঘটনার মধ্যেই সীমাবধ্য নয়।
ভারতের কিছু সমালোচনা করতে গিয়ে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ করছি আমাদের কিছু মৌলিক চেতনাকে।
ফেলানী হত্যা, রামপাল ইস্যু, তিস্তা, টিপাইমুখ সহ নানা বিষয়ে আমরা ভারতের স্বেচ্ছাচারিতার সমালোচনা প্রতিবাদ করছি, ভবিষ্যতেও করব।
ভারতের এখনকার কর্মকান্ডের সমালোচনা আমরা করি কিন্তু এর সাথে আমরা একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদানকে গুলিয়ে ফেলবো না।
কিন্তু রাজাকারদের এযুগের দোসররা ঠিক এ সুযোগটিই নেয়...
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় এক কোটি শরনার্থী ভারতে আশ্রয় নেয়, যে সংখ্যাটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ। চ
লুন দেখে আসি ভারতে আশ্রয় নেয়া শরনার্থীদের সংখ্যার ব্যাপারে উইকিপিডিয়া কি বলছে...
“As a result of the conflict, a further eight to ten million people, mostly Hindus, fled the country at the time to seek refuge in neighbouring India.”
(Wikipedia, the free encyclopedia)
এত শরনার্থী কি ভারত শুধুই রাজনৈতিক স্বার্থ বাস্তবায়নের জন্যই করেছে? মোটেও নয়, মানবীয় ব্যাপারগুলোই সেখানে প্রাধান্য পেয়েছিল।
ভারত বর্তমানে আমাদের সাথে সুবিধাবাদী আচরণ করলে আমরা সেটার প্রতিবাদ করব, কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা ভারতের অবদানকে অস্বীকার করবো।
তার মানে এই নয় এই সমালোচনা করতে গিয়ে আমরা একাত্তরের ইতিহাস অস্বীকার করে ভারতের অবদান অস্বীকার করব।
আমরা সমালোচনা করব, তুলনা করব কিন্তু লেভেল বুঝে...
ভারত বিদ্বেষে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের এই অবস্থান নতুন নয়। একাত্তরে শরনার্থীদের ব্যাপারেও রাজাকারদের মিথ্যাচারিতার মূখপাত্রের ভূমিকা পালন করে ‘সংগ্রাম’।
আমাদের এই গবেষণামূলক নিবন্ধের বিভিন্ন পর্বে আমরা দেখাবো ‘সংগ্রামের’ স্বাধীনতা বিরোধিতা, স্ববিরোধীতা, শরণার্থীদের নিয়ে যুগপৎ মিথ্যাচারিতা, গনহত্যার ইন্ধন জোগানোর প্রমাণ।
পরবর্তী পর্বে আমরা আলোচনা করব মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থী সংখ্যা, তাদের মানবেতর জীবন-যাপন ইত্যাদি সম্পর্কে স্বাধীনতা বিরোধী “সংগ্রাম” কি বলেছিল।
তার সাথে সাথে দেখানো হবে তৎকালীন বিশ্বের মিডিয়া গুলো কি বলেছিলো এই ইস্যুতে।
সংগ্রাম পত্রিকার মিথ্যাচারিতার সংগ্রাম এখনো চলছে সমান তালে, সদর্পে।
আজও সংগ্রাম পত্রিকাটি নিষিদ্ধ করার জন্য গড়ে ওঠে ওঠেনি একক আন্দোলন।
এই দেশে এখনো যদি এই সংবাদপত্র বেরুতে থাকে তাহলে কি আমাদের একাত্তরের চেতনা,মুক্তিযুদ্ধ,মুক্তিযোদ্ধা,বীরাঙ্গনা এসব রাশভারী শব্দের কোন মূল্য থাকে?
আজ এই সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা তাই ভেবেছি কিছু করতে। আমরা ভেবেছি এখনই সময়।
যুদ্ধাপরাধীদের সাথে সাথে আজ সংগ্রামকেও দাঁড়াতে হবে বিচারের কাঠগড়ায়। আর কোনও দিনও যেন এদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে স্বাধীনতা বিরোধীরা...
২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৪
কলাবাগান১ বলেছেন: "ভারত তাদের সুবিধার জন্য বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছিল।"
ঠিক আছে... কিন্তু বাংলাদেশ তো স্বাধীন হল...। আমরা তো আর সিকিম হয়ে যাই নাই....... গত ৪০ বছর ধরে জামাতি আর রাজাকার বান্ধব লোকদের মুখে শুনে আসছি দেশ সিকিম হয়ে গেল...... জামাতি দের একটাই অস্ত্র... ভারত জুজু
ওপরের ব্লগারকে বলছি ভারত সহযোগিতা করেছিল বলে কি রাজাকারদের নৃসংসতা জায়েজ হয়ে গেল?
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩০
বশর সিদ্দিকী বলেছেন: ভারত কখনোই বাংলাদশের বন্ধু ছিল না। ১৯৭১ সালে তারা তাদের সুবিধার জন্য বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছিল। মিজোরামের বিদ্রোহিদের দেয়া আইএরআইএর সহযোগিতা বন্ধের জন্য। শেখ মুজিবর রহমান ভারতিয় সৈন্যদের ঘার ধরে বের নাকরলে আর একটা সিকিম বানাইয়া ফেলত বায়লাদেশরে। আপনি র এর সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বি রমন লিখিত << র এর কাওবয়েরা>> বইটি পইরেন।