নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টুকরো কথা

হিসলা সিবা

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ট্রাকের চাকার নিচে ফেটে যাওয়া দিপালী সাহার হৃদপিন্ডকে যারা ভ্যালেন্টাইন-বেলুন বানিয়ে বেচে দ্যায়, অথবা যাদের শুধুমাত্র শরৎবাবুই কাঁদাতে পারেন, একমাত্র গোপাল ভাঁড়ই হাসাতে পারে- সেই নিথর স্বাভাবিকতায় মৃত মানুষদের ব্যবচ্ছেদ ঘটে এক নীল ক্লিনিকে।

হিসলা সিবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

"দেড় কোটি লিটার রক্ত, বিশ্বাস কর আমি নিরপেক্ষ ছিলাম না"

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৯

......ঝাঁকে ঝাঁকে শকুন নেমে এসেছে। তীক্ষ্ণ ঠোঁট দিয়ে ছিড়ে খুড়ে খাচ্ছে মরা মানুষের দেহ। তাদের চোখ চক চক করছে। কিন্তু মৃত মানুষের সংখ্যা এত বেশী যে শকুনের খেয়ে শেষ করতে পারছে না। শকুনদেরও খাওয়ায় অরুচি এসে গেছে। মরা মানুষের গা থেকে ছিঁড়ে খুঁড়ে ফেলেছে জামা কাপড়। তাদের অনেকের তখনো গা গরম। সবেমাত্র মরেছে। পথে ঘাটে নালা নর্দমায়—সর্বত্রই কলেরায় মরা মানুষ পড়ে আছে। জন সার দেখতে পেয়েছেন একটি শিশুর মৃতদেহ। শিশুটির গায়ে একটি শাড়ির অংশ পেঁচানো। তাঁর হতভাগী মা পেঁচিয়ে পুটুলি বানিয়েছে। ট্রাকের চলার সময় অসুস্থ শিশুটি মারা গেছে।চলন্ত ট্রাক থামেনি। মৃত ছেলের জন্য ট্রাক থামানো কোনো মানেই হয় না। আরও অনেক মৃতপ্রায় মানুষ এই ট্রাকেই ধুঁকছে। আগে পৌঁছাতে পারলে হয়তো কোনো হাসপাতাল পাওয়া যেতে পারে। তাদের সুযোগ মিলতে পারে চিকিৎসার। বেঁচেও যেতে পারে। এই আশায় সময় নষ্ট করতে কেউ চায় না। শিশুটির পুটুলী করা মৃতদেহটিকে ট্রাক থেকে রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতে ছুড়ে ফেলা দেওয়া হয়েছে.........

(Genocide:Leo kuper)



...... বাস্তবের সমাপ্তি এরকম ছিল না। নাইমুল কথা রাখে নি। সে ফিরে আসতে পারে নি তার স্ত্রীর কাছে। বাংলার বিশাল প্রান্তরে কোথাও তার কবর হয়েছে। কেউ জানে না কোথায়। এই দেশের ঠিকানাবিহীন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার কবরের মধ্যে তারটাও আছে। তাতে কিছু যায় আসে না। বাংলার মাটি পরম আদরে তার বীর সন্তানকে ধারণ করেছে। জোছনার রাতে সে তার বীর সন্তানদের কবরে অপূর্ব নকশা তৈরি করে। গভীর বেদনায় বলে, আহারে! আহারে! ......

(জোছনা ও জননীর গল্প)



... নওয়াবপুর রোডে পা দিয়েই দেখলাম বিহারীদের উল্লাশ ও উন্মত্ত লাফালাফি, ওরা পশুর মত অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে অসংখ্য বাঙালির লাশ পাড়িয়ে জয়ধ্বনি করে মিছিল করে নওয়াবপুরের রাস্তায় বের হয়ে পড়েছিল। পাঞ্জাবি সেনা কর্তৃক নিরবিচারে বাঙালি হত্যার খুশীতে দেখলাম বিহারীরা রাস্তায় পড়ে থাকা নিরীহ বাঙালিদের লাশের উপর লাথি মারছে, কেউ প্রস্রাব করে দিচ্ছে হাসতে হাসতে, রাস্তায় রাস্তায় বিহারী এলাকায় দেখলাম সরু বাঁশের মাথায় বাঙালি বালক ও শিশুর লাশ বিদ্ধ করে খাড়া করে রাখা হয়েছে। দেখলাম উন্মত্ত বিহারী ছেলেরা রাস্তায় পড়ে থাকা লাশগুলিকে দা দিয়ে কুপিয়ে কুচি কুচি করে কেটে আনন্দ করছে, উশৃঙ্খল বিহারী ছেলেরা রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে উল্লাস করছে, রাস্তার দু’ পাশে সর্বত্র আগুন আর আগুন দেখলাম।......

(মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস:প্রথম খণ্ড)



একটা দেশ এমনি পাইনি , কেউ দয়া করে নাই , কেউ ভিক্ষা দেয় নাই, দাম দিয়ে কেনা। রুমির জন্য পাকিদের কাছে ক্ষমা ভিক্ষার প্রস্তাব নাকচ করে ছেলের জন্য শহীদের মৃত্যু পছন্দ করেছিল তার পিতা । মায়ের সামনে মেয়ে খায়রুন্নেসার ইজ্জত গেছে , ভাই এর লাশ নিয়ে বোন বিলকিস দারে দারে ঘুরেছে একটু কবর হবে এই আশায় । মেজর নুরুল ইসলামের প্রেগন্যান্ট স্ত্রী কে পাকিস্তানীরা..................... , ছেলের জন্য কাঁদতে কাঁদতে মা অন্ধ হয়ে গেছে , শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের লাশ দেখে নাতি রাহুল আজও মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে বেঁচে আছে ।



না আশা হারাই না , হতাশ হই না , ৭১ এ এই দুর্বল বাঙালি-ই জিতেছিল ।



সবাই কে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ।

শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ...

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৯

অস্পিসাস প্রেইস বলেছেন:

কতটা উন্নত শির হলে এত ত্যাগ স্বীকার করে হলেও একটি জাতি স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে পারে!

আমি গর্বিত, এমন এক জাতির একজন হয়ে। এমন একটি দেশের সন্তান হতে পেরে।

চমৎকার সঙ্কলন হিসলা সিবা, অনেক ধন্যবাদ।

সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।




আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.