নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টুকরো কথা

হিসলা সিবা

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ট্রাকের চাকার নিচে ফেটে যাওয়া দিপালী সাহার হৃদপিন্ডকে যারা ভ্যালেন্টাইন-বেলুন বানিয়ে বেচে দ্যায়, অথবা যাদের শুধুমাত্র শরৎবাবুই কাঁদাতে পারেন, একমাত্র গোপাল ভাঁড়ই হাসাতে পারে- সেই নিথর স্বাভাবিকতায় মৃত মানুষদের ব্যবচ্ছেদ ঘটে এক নীল ক্লিনিকে।

হিসলা সিবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

"চারটি ব্যাটিলিয়ান প্রস্তুত ছিলো, তিনটি কামানের মুখ করা ছিলো সমাবেশ স্থলের দিকে। যদি সমাবেশ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা আসে তাহলে ঢাকাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হবে মুহূর্তে।"

০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:২৪



একাত্তরের মার্চে আমাদের দেশের প্রধান সামরিক প্রশাসক ছিলেন "ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা" এই লোকটাই টিক্কাখানের সাথে বসে পৃথিবীর ঘৃণ্যতম গণহত্যার "অপারেশন সার্চলাইট" এর পরিকল্পনা করে। নিজের "এ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওউন কান্ট্রি" বইতে গর্বভরে বলেছে এই অপারেশনের নামকরণ করেছে সে নিজে। তার বইতে সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের কথা উঠে এসেছে গুরুত্ব নিয়ে।



আগে থেকেই গুঞ্জন চলছিলো সাতই মার্চ কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে, বঙ্গবন্ধু হয়ত স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দিতে পারে। ক্যান্টনমেন্ট ছিলো সর্বোচ্চ সতর্কতায়। খাদিম পরিস্কার কণ্ঠে বলেছে,



"চারটি ব্যাটিলিয়ান প্রস্তুত ছিলো, তিনটি কামানের মুখ করা ছিলো সমাবেশ স্থলের দিকে। যদি সমাবেশ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা আসে তাহলে ঢাকাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হবে মুহূর্তে।"



অনেকেই বলেন "মুজিব কেন সাতই মার্চ সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন না"



স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবির ছাগুকূল এমনকি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কম জানা কিন্তু বেশী বলা বহু মানুষের মুখেই এমন কথা শোনা যায়। সাতই মার্চের ভাষণটা কতটা ডিপ্লোম্যাটিক ছিলো সেটা বুঝতে হলে আপনাকে সেই সময়ের সিচুয়েশন খুব ভালো করে বুঝতে হবে। একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন সেদিন যদি মুজিব স্বাধীনতার ডাক দিতেন তাহলে তিনি হতেন একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা। পাকি সরকার তাকে একহাত দেখে নেয়ার সুযোগ পেতো, বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী ধোঁয়া তুলে সমূলে নির্মূল করা হতো মুক্তিকামীদের।



একবার লক্ষ্য করুন এখনও পৃথিবীর বহুদেশ স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছে। আফ্রিকার খমুজ, ভারত কিংবা পাকিস্তানের কাশ্মীর অংশ, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান, রাশিয়ার বেশ কয়েকটা অংশ স্বাধীনতা সংগ্রাম করছে। পৃথিবীর বেশিরভাগ মিডিয়াই এইসব আন্দোলন কে অভ্যন্তরীণ ইস্যু বিবেচনা করে আসছে। সাতই মার্চ যদি মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দিতেন মুহূর্তেই পাকি সেনাবাহিনী তাকে মাটিতে মিশিয়ে দিতো।



সারা পৃথিবী কাছে বার্তা পৌঁছতো "বিচ্ছিনতাবাদী নেতার ব্যর্থ অভ্যুথানের চেষ্টা"



২৫ মার্চের আক্রমণে বিশ্ব দেখলো রাতের অন্ধকারে বর্বর একটা সেনাবাহিনী কিভাবে নিরস্ত্র মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। আর তখনি ছিলো স্বাধীনতা ঘোষণার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। পৃথিবীর কাছে আমাদের বার্তা পরিস্কার, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি আলোচনা করার, যখন তারা বন্য পশুর মত আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল প্রতিরোধ ছাড়া আমাদের আর কোন রাস্তা খোলা ছিলো না।



তার

"এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতা সংগ্রাম"

কথাটার মাঝেই স্বাধীনতার ঘোষণা লুকানো ছিলো, তবে সেটা পড়তে পারেছিলো শুধু বাঙালীরাই। সাতই মার্চ আমাদের জন্য স্বাধীনতার বার্তাই বয়ে এনেছিলো আর মুজিবের দূরদর্শিতা লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিলো সেদিন।



পঁচিশে মার্চ না আসলে কি হতো জানি না তবে সাতই মার্চ না এলে এই দেশ স্বাধীন হতো না এটা পরিস্কার বলে দেয়া যায় পরিস্কার কণ্ঠে।



মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ ভোর ৪:০৫

হাতীর ডিম বলেছেন: সহজ ভাষায় চমৎকার এবং সময় উপযোগী একটা পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.