![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনে হয় ওটাই ওর সাথে আমার প্রথম দেখা। আবার মনে হয় না এর আগেও মনে হয় আমি ওকে দেখেছি অনেকবার। হয়তো এভাবে দেখিনি। সেবার দালাল বাজার মহাপ্রভু বাড়ীতে কীর্তন চলছিল। ওর সাথে যে দিন আমার দেখা সেদিন কীর্তনের ২য় দিন (১ মার্চ ২০০৯)। আমার পরনে ছিল জিন্স প্যন্ট আর কালো রঙের একটা গেঞ্জি। ওর পরনে কি ছিলো ঠিক মনে নাই। তবে চোখে একটা চশমা ছিলো তা মনে আছে। ওরা সবাই যখন হাটে তখন সবাই দলবদ্ধ হয়ে হাটে। মহাপ্রভু বাড়িতে ওরা মন্দিরে ডোকার পথে দাড়িয়ে ছিলে। ওদের দলে ও ই ছিলো একটু বড় আর না হয় সবাই ছোট।
এমন সময় আমার দাদু সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। উনাকে দেখে আমার বেশ ভালো লাগছিলো। কারন আমি উনাকে এভাবে আর কখনো সেজে গুজে কীর্তনে আসতে দেখিনী। আমি উনার সাথে ঘুরছিলাম আর নানা রকম কৌতুক করছিলাম। ওদের পাশ দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম দুষ্টমি করে দাদুকে বললাম ”দাদু এই মেয়েটা আপনার জন্য দেখছি”। ও তখন মিটি মিটি হাসছিলো। সত্যি সে হাসি ভোলার মত ছিলো না।
আমি কেন জানি ক্রমেই ওর প্রতি আসক্ত হতে লাগলাম। ওর হাসি দেখে আমার ও হাসি পেতে লাগলো। অকারনে এরকম হাসা হাসির মানে তখন আমি খুজতে যাইনি। শুধু অনুভব করতে পারছিলাম ওর খুশিতে আমি ও খুশি। ওর হাসিতে তাই আমি ও হাসি ।
আমি যখন ওর দিকে তাকিয়ে হাসছিলাম ও তখন আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু-কুচকে ছিলো ।
ঐ দিন আরো অনেক কিছুই হলো আমার ভিতরে এবং বাইরে যা লিখে বর্ণনা করার মত নয় ।
পরের দিন (২ মার্চ ২০০৯) আমি যথারিতি বিকেলে গিয়ে ওকে খুজতে শুরু করলাম। এক সময় ওদেরকে দেখা গেল। কিন্তু ওর চেহারা আমি প্রায় ভুলে গেলাম। আমার সাথে আগের দিন রাজু ছিলো। আজ ও রাজু আছে। ও-ই প্রথমে ওদের দেখলো। আমি বললাম না এ বোধহয় সে নয়। রাজু বললো না এই সে। পরে আর কি করা ওর পিছনে পিছনে ফলো করতে শুরু করলাম। কিন্তু ওর মুখে আর গত কালের মতো হাসি দেখা গেল না।
তবে মাঝে মাঝে আমাদের দিকে তাকিয়ে একটু একটু হাসছিলো।
এ দিন ওকে এত বেশি অনুসরন করছিলাম যে ওদের সাথের এক মহিলা তা লক্ষ করলো ।
তৃতীয় দিন যথা রীতি ওকে দেখতে পেলাম এবং বুঝতে পারলাম গতকাল যার পিছনে আমি ঘুরেছি সে-এ ছিলো না। এই দেখে মনে মনে নিজেকে দিক্কার দিতে ইচ্ছে হলো। আসলে পাশের সব সৈন্য ঠিকই ছিলো শুধু সেনাপতি বদলে গিয়েছিলো। হঠাৎ করে দেখলে চিনা সত্যিই কঠিন। তার উপর দু জনের চেহারার মধ্যে যথেষ্ট মিল আছে।
ও যথারিতি আবার দুষ্টমি করতে শুরু করলো। সেই ভ্রু-কুচকানো, সেই হাসি। ও আমাকে এমন ভাবে নিজের দিকে চোখের ইসারায় ডাকতে লাগলো যে আমি পারি না যেন তার কাছে ছুটে যাই। আমি এটাও বুঝতে পারছিলাম যে এ সবই দুষ্টোমি। তার পরও আমি যেন জেনে-শুনে পতঙ্গের মত অগুনে ঝাপ দিচ্ছি।
ও আমাকে অনেক বার সুযোগ করে দিয়েছিলো ওর সাথে কথা বলার। ওকে দেখলাম অনেক সময় কসমেটিক দোকানে গিয়ে দাড়িয়ে আছে। মনে হয় ও চাইচিলো আমি ওখানে যাই এবং ওর সাথে কথা বলি।
আমি ও অনেক বার ওকে আমার ফোন নাম্বার দিতে চাইছিলাম আথবা ওর ফোন নাম্বার নিতে চাইছিলাম। কিন্তু কিছুই আমার দ্বারা হয়নি। পরে রাতে যখন ও ফিরে যাচ্ছিলো দেখলাম ওর মন খুব খারাপ। মনে হচ্ছিলো ও আমার উপর রাগ করেছে যে এত সুযোগ দেওয়ার পর ও আমি ওকে কিছুই বলতে পারিনি।
বিদায় নেওয়ার সময় ওর মন ভীষণ খারাপ ছিলো যা আমার মন ও খারাপ করে দিলো ।
এর পর কয়েক দিন ওর সথে আমার দেখা হয় নি । এ সময় আমার সকাল বিকাল সব সময় শুধু ওর কথাই মনে পড়তো। সারা দিনের সব ক্ষন শুধু ওকেই মনে পড়তো। এমনকি রাতে স্বপ্নেও ওকে আমি দেখতাম। এ সময় একটা গান আমার খুব মনে পড়তো, ... বিন্দু আমি তুমি আমায় ঘিরে. . . বৃত্তের ভিতর শুধু তুমি আছো । কেন তুমি শোনালে সে দুষ্ট হাসি . . .।
এ সময় আমার মন সবসময় তাকে দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতো । আসলে লাইফের প্রথম অনুভুতি গুলো সত্যিই অন্যরকম ।
এর কিছু দিন পর লক্ষীপুর শ্যম সুন্দর আখঢ়ায় কীর্তন শুরু হলো ।
সে দিন ছিলো ১২ই মার্চ সম্ভবত। বিকেলে যখন সেখানে গেলাম তাকে দেখলাম একা দাড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে ও এমন ভাবে হাসলো যেন ও আমার জন্যই অপেক্ষা করছে। ওর কাছে আমি আর কখনো ব্যাগ দেখিনি। সেদিন ও ব্যাগে করে কাগজ আর কলম নিয়ে এসেছে।
আমি তখন একটা স্টলের সামনে দাড়িয়ে আছি। ওকে দেখলাম একটা মেয়েকে ডাকলো তারপর সে মেয়েটা আরো ছোট একটা মেয়েকে ডাকলো। তার পর ও ব্যাগ থেকে প্যাড বের করলো। তাতে কিছূ একটা লিখলো। এর পর ছোট মেয়েটাকে দিয়ে তা আমার কাছে পাঠালো । আমি সেটা পড়ে দেখলাম তাতে লেখা আছে-
what is your name and phone number?
আমি তাতে লিখে দিলাম-
HIMAL,01715723575
এর পর ও আমাকে ইশারা করলো একটা কসমেটিক দোকানের দিকে যাওয়ার জন্য। আমি বুঝতে পারলাম ও আমার সাথে কথা বলতে চায়। কিন্তু আমি খুব নর্ভাস ফিল করছিলাম। ও বললো কেমন আছেন, স্যরি কেমন আছো? আমি বললাম ভালো। এর পর আরো কি কি কথা হয়েছিলো তার কিছুই মনে আসছে না এখন। আসলে পুরো ঘটনাটাই ঘটে গেলো একটা ঘোরের মধ্যে।
পরের দিন ও সন্ধা ভেলায় ও আমায় মেসেজ দিয়ে জানালো রাত ২টা তিরিশ মিনিটে ও আমার সথে কথা বলবে । সেদিন রতে ও ফোন করেছিলো সারারাত আমরা কথা বলেছি । এভাবে আরা কয়েক দিন কাটলো । এই কয় দিন আমি ওকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছিলাম। আমার মধ্যে ভয় কাজ করতে লাগলো আর সেটা হলো হারানোর ভয়। আর তাই হলো। সেদিন বিকেলে আমি ওর ফোন ওয়েটিং দেখেছিলাম । আর তাতেই আমার মন এতো খারাপ হয়েছিলো আমি ওকে বললাম তুমি আমায় নিয়ে খেলা করছো,আমার সাথে অভিনয় করছে।
এরপর ও অনেক বার আমায় ফোন করেছিলো কিন্তু সেদিন আমি আর ফোন ধরিনি। পরের দিন যখন আমি ফোন করছিলাম তখন ও ফোন ধরছে না । কয়েক শত বার চেষ্টা করেছিলাম । কয়েক শত বার স্যরি লিখে মেসেজ পাঠিয়েছিলাম। কয়েক শত প্রার্থনা ছিলো আমার স্রষ্ঠার উদ্দেশ্যে । এরপর ও আমার ফোন ধরলো আর বললো- এনাফ হইছে, এনাফ, এখানে ফোন করবানা মেসেজও দিবানা ইটস ওকে এন্ড ওভার। সেই দিনের পর আজ পর্যন্ত সেই নাম্বারটা আমি আর খোলা পাইনি।
তখন কষ্টের বন্যায় ভেসে যাচ্ছিলো আমার হৃদয়। সেই বর্ননাতীত কষ্টের কথা আমি জীবনেও ভূলবোনা। কত প্রার্থনা ছিলো ইশ্বরের কাছে । সেই দিন গুলোর কথা মনে পড়লো আজো আমার ঘা কাটা দেয় ।
আমার সব কিছু এলামেলো হয়ে গিয়েছিলো। বেশে কিছু দিন কাটলো বিরহের নদীতে তরী বেয়ে। কিন্তু কোন কুল কিনারা করতে পারলাম না। তখন আমি দুঃখ ভোলার জন্য কেন কিছুর মধ্যে ডুবে থাকার কথা চিন্তা করলাম । এমন পরিস্থিতে সাধারনত ছেলারা নেশায় আসক্ত হয় । কিন্তু আমি তখন লাইব্রেরী থেকে বই এনে পড়তে শুরু করলাম। বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকলাম সারা দিন রাত। তাতে কিছুটা লাভ হয়েছে। আমি অনেক কিছু জানতে পারলাম বই পড়ে । সাহিত্যের সুমিষ্ট রস আমার হৃদয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বুঝতে পারলাম বই আসলেই মানুষের অনেক ভালো বন্ধু হতে পারে।
এর পর এখনো পর্যন্ত ওর সাথে আমার অনেক বার রিলেশান গড়েছে ভেঙেছে । কিন্তু এতে আমি ওকে দোষ দিবো না । আমার মনকে আমি এই বলে বুঝিয়েছি যে ওর জায়গায় আমি থাকলে আমি ও হয়তো এমনই করতাম। ও এখন লক্ষ্মীপুর কলেজে ইন্টার ফাষ্ট ইয়ারে পড়ছে। আমার সাথে যখন প্রথম দেখা তখন ও নবম শ্রেণীতে ছিলো। ওর সাথে এখন আমার শুধুই বন্ধুত্ব আছে আর কিছু নয় । যতদিন পারবো আমি চাইবো না ওর কোন ক্ষতি করতে । আমার কাছে নয় যদি অন্য কোথায় থেকে ও সুখি হয় ততে আমার কোন অভিযোগ নেই । কিন্তু যদি ও অন্য কাউকে ভালোবেসে সুখি হতে না পারে তবে আমার খুব খারাপ লাগবে। আমার দুঃখ শুধু একটাই রয়ে গেলো আমি ওকে বুঝাতে পারলাম না আমার হৃদয়ে ও কতটা স্থান জুয়ে রয়েছে। সবাইকে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা আর কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:৩৪
বড় বিলাই বলেছেন: বন্ধুত্ব অটুট থাকুক। ভালোবাসা নাই বা হল।
৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১:০৩
ঈষাম বলেছেন:
৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩৯
অন্য হিমু বলেছেন: অজো জ্বলে যাই আজো পুড়ে যাই তোর দুচোখের অবস্বাদে
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:১৬
পুশকিন বলেছেন: