নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমার চোখের তারায় আমার হাজার মৃত্যু!

অতন্দ্র সাখাওয়াত

তন্দ্রাকুমারী একটি কাল্পনিক চরিত্র যার সন্ধানে আছি নিশিদিন!!

অতন্দ্র সাখাওয়াত › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাবিজ ব্যবসার রূপান্তরিত রূপ

৩০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:০৭

আমাদের সমাজে যে হারে নৈরাজ্য বাড়ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে যে গৃহযুদ্ধ এখানে হবে তা বলাই বাহুল্য। পাশ্চাত্যের রঙ লেগেছে আমাদের প্রতিটি অঙ্গে। দিন দিন আমরা স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছি। আমাদের প্রমিত বাংলা ভাষায় কথা বলা মানুষের সংখ্যা নিতান্ত নগণ্য। ইদানিং বাংলিশ ভাষার প্রবণতা চোখে পড়ার মতো। হলিউড মুভি, হিন্দি মুভি, ইংলিশ বা হিন্দি গান আমাদের হৃদয়কে দখল করে নিচ্ছে। একটা দেশের পরিচয় হয় তার সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক বৈচিত্র, জীববৈচিত্র, পর্যটন খাতের সাফল্য ইত্যাদি দিয়ে। কিন্তু আজকের জেনারশন সে সব নিয়ে ভাবার সময় পাবে কোথায়? আমাদের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব দিন দিন বেড়ে চলছে। আমাদের সব শিল্পকে দখল করে নিচ্ছে তৈরী পোশাক শিল্প। যে বিপ্লব এই সেক্টরে হয়েছে, তা যদি কৃষি ক্ষেত্রে হতো তবে আমাদের আনন্দিত হবার জায়গা থাকত। যেটা ছিল আমাদের জন্য কাম্য, আমাদের জন্য আদর্শ। এই দেশকে নেতৃত্ব দেবার জন্য আছে কিছু অসাধু মানুষের দল। সুন্দর মনের অধিকারী মানুষেরা রাজনীতির ধারে কাছে আসতে চায় না। আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধও তলানীতে গিয়ে পৌঁছেছে। পত্রিকার পাতা উল্টালে পাওয়া যায় ধর্ষণ, লুটপাট, গুম, খুনের খবর। আমাদের সামনে নেই কোন দেশপ্রেমিকের নমুনা, নেই কোন অনুকরনীয়, অনুসরনীয় ব্যক্তিত্ব। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসেরর মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যে ভেজাল, ক্ষুদ্র ঋণের নামে সুদের কারবার, পরিবহন সেক্টরের অব্যবস্থাপনা, রোহিঙ্গা সমস্যা, নিয়োগ বাণিজ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বাণিজ্য, নেশাদ্রব্যের ব্যাপকতা, সীমাহীন দুর্নীতির পাশাপাশি এমন কোন সমস্যা নাই যা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে না। যে দেশে বঙ্গবন্ধুর মতো মানুষকে সপরিবারে নিহত হতে হয়, সে দেশে কি কি অন্যায় হতে পারে না, তা নিয়ে বাজি ধরা বোকামী। বিশেষ করে বলতে হয় আমদের চিকিৎসা সেবা আর বীমা সেক্টরের কথা। এই দুই জায়গায় কাজ না করলে ভবিষ্যতে আমরা জাতি হিসেবে কালের অতল গর্ভে হারিয়ে যাব- সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। ইদানিং সাইবার ক্রাইমেরও রমরমা অবস্থা। একজন মানুষ মারা যাচ্ছে, অথচ অন্যরা তখন সেল্ফি তুলছে, ভিডিও আপলোড করে মনের ক্ষুধা মেটাচ্ছে। সবাই আজকাল ভাইরাল হতে চায়, চায় সেলিব্রিটি হতে। ফলস্বরূপ আমাদের তরুণেরা ভুগছে বিষন্নতা, দ্বিধা, সন্দেহে। আর বৃদ্ধ বাবা-মা'র জায়গা হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। কেউ কোন দায়িত্ব নিতে চায় না। সবাই চর্চা করছে স্বার্থপরতার।

ভাবতে অবাক লাগে, এই জাতিকুলের মানুষেরাই নাকি একসময় দেশের জন্য প্রাণ দিত! ভাষার জন্য ঝরাতো রক্ত। তারা ঝড়, ঝঞ্ঝার সাথে যুদ্ধ করে, মাঠে মাঠে ফলাতো সোনার ফসল। ছিল গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিল সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা এই দেশটি। এ দেশের মসলিন আর মসলা, ইলিশ আর রয়েল বেঙ্গল টাইগার, পালা গান আর বাউল গান,লোকগীতির আসর মেটাত আমাদের মনের খোরাক। আমাদের বুঝতে হবে, আমাদের কি আছে আর কি কি আমাদের সম্ভাবনা। কেন আমরা অন্য দশটা দেশ থেকে আলাদা! বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত খাত সম্ভবত গবেষণা খাত। সে জন্যই বড় কোন প্রকল্পের কাজ করতে হলে বাইরে থেকে আমাদের আনতে হয় এক্সপার্ট। আমরা কোনকিছুতেই স্বয়ংসম্পূর্ণ না। আগুন নেভানো, ডুবে যাওয়া লঞ্চ উদ্ধারের জন্যও নেই কোন আধুনিক প্রযুক্তি। এই যখন অবস্থা তখন আপনার, আমার মটিভেশনাল স্পিচগুলোকে মনে হয় আধুনিক যুগের মডারেট তাবিজ ব্যবসা!

দ্রষ্টব্যঃ কাউকে জ্ঞান দেবার আগে চারপাশ ভালভাবে দেখে ভেবে নিন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশ কুব দরিদ্র। মানূষ গুলো লোভী। এবং অদক্ষ। এজন্য সমস্যার শেষ নেই।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৪৭

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: হুম। আসলেই সমস্যার শেষ নেই। কিন্তু কিছু মানুষ, সমস্যা সমাধানের নামে সমস্যা আরো বাড়িয়ে তোলে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.