নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমার চোখের তারায় আমার হাজার মৃত্যু!

অতন্দ্র সাখাওয়াত

তন্দ্রাকুমারী একটি কাল্পনিক চরিত্র যার সন্ধানে আছি নিশিদিন!!

অতন্দ্র সাখাওয়াত › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি মৌমাছি ও একজন পুরুষ মানুষ (পর্ব-২)

০৬ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৫

আমার নাম মিল্টন। বয়স ৪৪ বছর । আমার জীবনের চাওয়া খুব সামান্য। আমি কিছুক্ষণ হাসতে চেয়েছি শুধু। কারণ, আমার জীবনে দীর্ঘদিন যাবৎ আনন্দ বা হাসি নেই। আমার গল্পের শুরু হয়েছে, যখন আমার বয়স ছিল ১২ বছর। আমার বাবা ছিলেন একজন কাঠুরিয়া এবং মা ছিলেন দর্জি। তখন ১৯৮৭ সাল। আমি তখন ৫ম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। তখনই আমি প্রথম দেখি লাইলীকে। ওর বাবা ছিল ফরেস্ট অফিসার। বিশাল একটা বাংলো বাড়িতে ওরা থাকতো। সেই ছোট্ট বয়সে আমি পারি নি ওর কাছে মনের কথা প্রকাশ করতে।

কিন্তু কল্পনায় আমি ওর সাথে প্রেমের সমুদ্র পাড়ি দিতাম। নতুন নতুন দ্বীপে আমি ওকে নিয়ে ভ্রমণ করতাম। গভীর রাত নেমে আসলে আমি ওদের বাংলো বাড়ির চারপাশে প্রদক্ষিণ করতাম। আড়াল থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে ওর মুখটা দেখে ভুলে যেতাম আমার দীর্ঘ বিরহের প্রহরগুলো। কারণ, ওকে ছাড়া এক সেকেন্ড আমার কাছে এক যুগ মনে হতো। বিচ্ছেদের মুহূর্তগুলোতে আমার মনে হতো, সময় যেন থমকে গেছে। আমি কোনভাবেই সেই সোনার স্বপ্নের জাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারতাম না। নিজের তৈরী জালে নিজেই আটকে যেতাম বারবার।

তারপর একদিন ওর বাবা ট্রান্সফার হয়ে যায়। লাইলী আমার জীবন থেকে হারিয়ে যায়। দীর্ঘদিন আমি ওর ফিরে আসার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু সে আমার জীবনে কখনোই ফিরে আসে নি। এমন কি তার ছায়াও আমার থেকে চিরদিন শত শত মাইল দূরত্বে অবস্থান করতো। এটা সেই অন্ধ সময়ের কথা- যখন আমার জীবনে কিছুই ঠিকমতো চলছিল না। সবকিছুই ছিল রাজ্যের বিষন্নতা দিয়ে ঢাকা। আমার জীবনে লইলীর অস্তিত্ব ছিল ১ বছরেরও কম সময়। তারপর যখন সে চলে গেল, তখন আমি নিরবে তাকে ভালবাসতে থাকলাম।

তাকে হারানোর পরে আমার যন্ত্রণা আর যেন শেষ হতে চায় না। আমি একা কাঁদতাম, চিৎকার করতাম। নিজের সাথে গভীর কথোপকথন চলতো প্রতিটি সন্ধ্যা এবং সকালে। দিনদিন আমার জীবনটা হয়ে ওঠলো ব্যক্তিগত। কোনভাবেই আমি নিজের জন্য একটি মসৃণ পথ তৈরি করতে পারছিলাম না। আমি সারারাত নীল আকাশ দেখতাম। গহীন বনে হিংস্র সাপ দেখে মনে হতো- যদি সাপ হয়ে জন্মাতাম, তবে কত ভালই না হতো। সময় করে পাখি, ফুল আর জলের প্রবাহ দেখতাম। আর সবকিছুর ভেতর শুধু একটি মুখ খুঁজে পেতাম। সেই মুখটি অন্য কারো মুখে খুঁজি নি কখনো। দিনদিন আমার ব্যথাগুলো অসহ্য হতে লাগল। আমি একটি স্বর্গীয় সাহায্যের আশায় ছটফট করছিলাম। কারণ, আমার বিশ্বাস ছিল, প্রেম হচ্ছে স্বর্গীয়। প্রেম মানেই নতুন কিছু পাওয়ার আশা। প্রেম মানে বিমূঢ়তা নয়। তারপর একদিন আমার দেখা হলো একটি ঘ্রাণের সাথে। সেটা ছিল ভিনগ্রহ থেকে আগত একটা মৌমাছির আগমন বার্তা। সেই মৌমাছিটি এসছিল ২০১০ সালের ২১ শে জুন রাতে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: মিল্টন ভাগ্যবান ৪৪ বছর পর্যন্ত যেতে পেরেছে। বহু পুরুষ তার আগেই মরে যায়।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০৪

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: মিল্টন মরার আগেই মরে যেতে বসেছিল!

২| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:১০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: নান্দনিক উপস্থাপন।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৩১

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য।

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সুন্দর হয়েছে

১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০২

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: তাই? ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.