নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তন্দ্রাকুমারী একটি কাল্পনিক চরিত্র যার সন্ধানে আছি নিশিদিন!!
মাইকেল দেখছে তার নর্তকীকে। না দেখে উপায় নাই। নর্তকী এমনভাবে নাচছে, যেন সৌরজগৎ কাঁপছে ত্রাসে। বুকের ভেতর ঢিব ঢিব করে, চোখে নেশা লাগে, ভয় লাগে। তবুও মাইকেল তাকে দেখছে অপলক। নর্তকীর কোমড়ের দোলায় যেন ভূমিকম্প হচ্ছে। তার হাসিতে যেন মাইকেলের বুকে বাঁশি বেজে চলছে। তার বিচিত্র ইশারায় মন দিশাহারা হয়। মাইকেল তাকে দেখছে একা ঘরে। সংগোপনে। বাইরে চলছে কুকুরের কড়া পাহারা। নর্তকীরও নেই কোন তাড়া। রাত এখনো যুবতী। কত কি হবে আজ রাতে! নর্তকীর পিঠে হাত বুলায় মাইকেল। গানের তালে তালে সে মাতাল আজ। মাঝে মাঝে ঠোঁটটাকে বাঁকিয়ে শিস দিচ্ছে এলোমেলোভাবে। হঠাৎ মাইকেলের ঘুম ভেঙে গেল। সে স্বপ্ন দেখছিল। ঘুম থেকে উঠে তার খুব ক্লান্ত লাগছে। গতকাল সে একটা নির্জন জায়গার খোঁজে অনেক দূর হেঁটে এখানে একটা বট গাছে নীচে এসে বসে এবং বেখেয়ালে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়ে। চারিদিক জনমানব শূন্য। মাইকেল বারবার মনে করার চেষ্টা করে স্বপ্নে দেখা নর্তকীর চেহারা। মনে পড়েছে তার। মেয়েটার নাম মাধুরী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন তার সহপাঠী ছিল। মাইকেল ছিল পুরো দস্তুর একজন কবি। সে লেখাপড়া করতো খুব সামান্য। মাধুরী তাকে ভালবাসতো। তার লেখাপড়ার ব্যাপারে মাধুরী অনেক হেল্প করতো। কিন্তু মাইকেলের কোন কিছু নিয়েই অত মাথা ব্যথা ছিল না। তাই তাদের সম্পর্কটা খুব বেশি এগোয় নি। মাইকেল ক্লাস না করে বিভিন্নভাবে সময় নষ্ট করতো। এবং একসময় লেখাপড়া বাদ দিয়ে নিরুদ্দেশ যাত্রা শুরু করে। বাহ্যিকভাবে দেখলে তাকে এখন পাগল মনে হয়। কেউ কেউ দয়া করে তাকে কিছু খেতে দেয়। না দিলেও ক্ষতি নেই। সে এখন ক্ষুধাকে দমন করতে শিখে গেছে। ৩/৪ দিন না খেয়ে থাকলেও অতটা সমস্যা হয় না তার। তার কিছু গোপন জায়গা আছে সেখানে গিয়ে দিনের পর দিন ধ্যান করে মাইকেল। আজ তার অভুক্ত থাকার ৩য় দিন চলে। এ অবস্থা নিয়ে সে কবিতা লিখবে। লেখাটা থাকবে তার মাথায়। তার লেখার জন্য আর কোন কাগজ কলমের আর দরকার হয় না।
হে নর্তকী মম, তুমি মোর প্রাণসম
তুমি মধু-মক্ষিকাসম চিরতার রস
তোমায় করলে পান, হয় অবসান
মোর আত্মার সকল কু-রিপুর টান।
দেখতে তোমার নাচ সদা চোখ বুজি
তোমার রসের নদীর উৎস খুঁজি
যখন দেখি তোমার নদীতে প্লাবন
বুকে আসে অবাধ্য সিংহের সাহস।
মাইকেল আধো ঘুমে মগ্ন হয়ে কবিতা রচনা করছিল। কোথা থেকে কখন একটা রাজহাঁস তার পাশে এসে বসেছে, সে দেখেনি। রাজহাঁসটাকে খুঁজতে এক বৃদ্ধা সেখানে হাজির হয়েছে। বৃদ্ধা তার চুল-দাড়ির জট দখে তাকে সিদ্ধপুরুষ ভাবে। সিজদায় লুটিয়ে পড়ে বৃদ্ধা। মাইকেল বৃদ্ধার ঘন নিশ্বাস আর কান্নার আওয়াজ শুনে কিছুটা বিরক্ত হয়ে ধ্যান ভঙ্গ করে। চোখ খুলে দেখে এক বৃদ্ধা তাকে সিজদা করছে।
তুমি মাথা তোল হে অপ্রিয় সত্যবাদিনী
তোমার জন্য খোলা মোর সদর দরজাখানি
তুমি কি চাও এই অক্ষম পাগলের কাছে
এই মন মস্তিষ্ক চায় উত্তর হে মোর অভিমানী।
বৃদ্ধা উঠে দাঁড়ায় আর তার রাজহাঁসটাকে তাকে দিয়ে দেয় এবং বলে, "আপনি আমার এই সামান্য উপহার গ্রহণ করুন, এই আমার চাওয়া।"
বৃদ্ধা চলে যেতে থাকলে মাইকেল তাকে পেছন থেকে ডাক দেয়, "মাধুরী........."
২৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৪০
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
২| ৩০ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:০৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এ তো এক বিরাট উপন্যাস!!! লিখেছেন ভালো। কবিতাংশ ভালো হয়েছে - পুরোনো রীতিকে এমন ঢঙে লিখেছেন, সরস আধুনিককেও হার মানিয়েছে।
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৯
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার কথায় মনে সাহস পেলাম। প্রথমবার অণুগল্প লেখলাম। জানি না কেমন হয়েছে। পরবর্তীতে আরো ভাল লেখার চেষ্টা করব।
৩| ৩০ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।
৩০ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৭
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৪| ৩০ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৩৫
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: সবাইকে ধন্যবাদ, আমার লেখাটা পড়ার জন্য।
৫| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৫
বাকপ্রবাস বলেছেন: অণুগল্প শব্দটা পেলেই আমার আগ্রহ বেড়ে যায়। বেশ ভাল হয়েছে। অণুগল্প লিখতে পারেন, আপনি ভাল লিখতে পারবেন। অণুগল্পের অন্যতম মজা হল টুইস্ট। গল্প শেষ হলে পাঠক বুঝবে আসল ঘটনা, অথচ যতক্ষন পাঠরত তখন পাঠকের মনে ছিল অন্যকিছু, এমন টাইপ লেখা হলে অণুগল্প সমৃদ্ধ হয়ে উঠৈ।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৪৮
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: ভাল লেখাটা যদিও অনেক চ্যালেঞ্জিং, তবুও আমি মনে করি ইচ্ছাশক্তি থাকলে মানুষ সবই জয় করতে পারে। আমি চাই আরো লিখতে। আপনার মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করবে।
৬| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৫
সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: অণুগল্পের সুবাদে আপনার কবিতা পড়ে আসার সুযোগ হয়েছে। অনেক সুন্দর কবিতা লিখেন আপনি। আর এই অণুগল্পের সাথে কবিতার যে যোগসূত্র ঘটিয়ে একটি পরিচ্ছন্ন চিত্র অঙ্কন করেছেন তা সত্যি প্রশংসনীয়। এমন আরো অনেক অণুগল্প কাম্য। শুভকামনা থাকলো।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৪৯
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: অত্যন্ত ধন্যবাদ। সম্ভব হলে এরচেয়ে ভাল লিখব। ধন্যবাদ আপনাকে।
৭| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৫০
নীল আকাশ বলেছেন: অণু গল্পের তুলনায় বড় হলেও ভালো লেগেছে।
আপনার ব্লগ নিক দেখলে দ্বিধান্বিত হয়ে যাই।
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৪৮
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: ধন্যবাদ। নিক চেঞ্জ করা দরকার।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৩১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: অণুগল্পটি পড়ে গেলাম।