নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমার চোখের তারায় আমার হাজার মৃত্যু!

অতন্দ্র সাখাওয়াত

তন্দ্রাকুমারী একটি কাল্পনিক চরিত্র যার সন্ধানে আছি নিশিদিন!!

অতন্দ্র সাখাওয়াত › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেষ দীর্ঘশ্বাস (অণুগল্প)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫



পারমিতা রায় আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড। তাকে আমি ভালবাসি এ কথা জোর দিয়ে বলতে পারি না। কিন্তু একটা ইনফাচুয়েশন আছে। কিন্তু কেন? সে হিন্দু, আমি মুসলিম সে জন্য নয়তো? ধারণা করা হয়, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি প্রত্যেকটা মানুষের একটা অবৈধ আকর্ষণ আছে। মাঝে মাঝে আমি ধন্য বোধ করি যে আমি মানুষ হয়ে জন্ম নিয়েছি। কারণ মানুষ হয়েছি বলেই পারমিতাকে ভালবাসার অধিকার আমার আছে। গরু, ছাগল হলে থাকতো না। কিন্তু সে অধিকার কতটা অনধিকারচর্চা তা জানি না। প্রতিমার মত দেখতে সে। আমি যদি কোন দেবতা হতাম, তাহলে হয়তো তাকেই আমার দেবী বানাতাম। ঐ টানা টানা চোখ কত কি যে বলে যায়! আমি ভাবতেই পারি না, একটা মানুষ কি করে এত মিষ্টত্ব আর স্নিগ্ধতা ধারণ করতে পারে।

টুং করে একটা ম্যাসেজ এলো ম্যসেঞ্জারে। পারমিতার ম্যাসেজ। লিখেছে, "আমার বয়ফ্রেন্ড আছে, আপনি ভুল করছেন।" বুঝতে দেরী হলো। এই ম্যাসেজ সে আমাকে কেন করবে? কিন্তু একটু স্ক্রল করতেই দেখি আমি গতকাল রাতে তাকে ইনবক্সে লিখেছি,

আমার মানচিত্র পুড়ে যায় রক্তাভ লেলিহান শিখায়
তোমার নিরব অভিমানের পানে ছুটে যাই অবিরাম
অন্তহীন শবযাত্রায় একা।
কারণে অকারণে ডাক দেই তোমার নাম ধরে
নিস্তব্ধতায়।
আমার আর্তনাদ তোমাকে ছুঁতে পারেনি
তুমি অধরাই থেকে গেছ পারমিতা।
যে ধ্বনি চিরদিন গোপন থাকবে তোমার হৃদয়ে
কিন্তু তা তোমার জীবনে
তোমার হৃদস্পন্দনে একটি মৃদু দীর্ঘশ্বাস হয়ে থাকবে।

বেখেয়ালে ম্যাসেজটা কখন সেন্ড হয়ে গেছে, আমি বুঝতেই পারছি না। কিন্তু এখানেতো লেখা নেই আমি তাকে ভালবাসি। এখন কি রিপ্লাই দেব? মাথাটা পুরোপুরি শূন্য হয়ে গেল কিছুক্ষণের জন্য। যে ম্যাসেজ যাবার কথা না, তা চলে গেছে। সেটা নিয়ে কি আলোচনা করা যায়?

তবে বয়ফ্রেন্ড আছে মেয়েটার, জেনে অবাক হলাম। তাই সাহস করে লেখলাম, "আপনি আরেকটু সময় নেবেন? আপনাদের ব্রেক আপ পর্যন্ত না হয় আমি অপেক্ষা করলাম।"

রিপ্লাই এলো "×"

এই ক্রসের মানে হলো না। আমি কিছুটা আশাহত হলাম। কিন্তু দমে গেলাম না। লিখলাম, "আমি কি আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড হয়ে এই জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারি?"

তৎক্ষণাৎ ফেসবুকে পোস্ট করলো সে,

#আমি চিরকুমারী থাকতে চাই#

কমেন্ট সেকশন অফ করা। তার কিছুক্ষণ পর আইডিটা ডিএ্যাকটিভেট করা হলো।

৫ বছর পর। আমি হসপিটালের বেডে শুয়ে আছি। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আমি অন্ধ হয়ে গেছি। আমাকে দেখাশুনা করছে এক নার্স। তার নাম পারমিতা রায়। সে আমার কানে কানে বলল, "আমি ৫ বছর আগে বলিউড নায়িকা দিব্যা ভারতীর ছবি প্রোফাইলে দিয়ে একটি ফেসবুক আইডি চালাতাম। আপনি আমাকে দিব্যা ভারতীয় ভেবে আমার প্রেমে পড়েছিলেন।" আমি কি বলব বুঝতে পারছিলাম না। বুকটা চমকে উঠলো। আমি হাসিমুখে বললাম, "আপনি হয়তো ভাবছেন, আমি আপনার না দিব্যা ভারতীর প্রেমে পড়েছিলাম। আর আমি বলব, আমি আপনাকেই ভালবাসি আর দিব্যা ভারতীকে আমি খুন করিনি।"

পুনশ্চ: পারমিতা রায় দেখতে হুবহু দিব্যা ভারতীর মতো দেখতে!


মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:২২

বাকপ্রবাস বলেছেন: আপনার কবিতা ভাল হচ্ছে। অণুগল্পও অণুগল্প হয়ে আসছে। এই গল্পে কিছুকিছু বিষয় ঝুলে গেছে আমার পাঠক মন দৃষ্টিকোণ থেকে। যেমন আজিবন ফেইসবুক ফ্রেন্ড থাকার বাসনা, ব্রেকআপ হয়ে গেলে তখন চান্স নেবার বিষয়টা, আর অন্ধ হয়ে যাবার বিষয়টা। আপনার অন্যান্য বিষয় বা প্রেক্ষাপট যে একটা মান ধরে রেখেছে উল্লেখিত বিষয়গুলোর মানটা সেই তুলনায় একটু নেমে গেছে, যাকে আমি ঝুলে গেছে বলছি। কিন্তু আপনার লেখা ভাল। ছোটখাট এসব বিষয় এড়িয়ে যেতে পারলে আপনার লেখাটা আরো স্বচ্ছ এবং উচ্চমান বজায় থাকবে। আপনার লেখায় আমি অণুগল্পের স্বাদ পাচ্ছি। অনেকেই ছোট গল্প লিখে অণুগল্প শিরোনাম দিয়ে দেয়। আপনারটা অণুগল্পে হয়ে আসছে তায় আমার ভাল লাগছে।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩০

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: আসলে তার বয়ফ্রেন্ড নেই। এড়িয়ে যেতে চাইছে। সেটা মাথায় রেখেই কিছুটা এগিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর অন্ধ হয়েছে বলেই তার আসল চেহারাটা নায়ক দেখতে পায়নি। আপনার মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করবে।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩৪

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: তাছাড়া যখন সে তাকে ব্রেকআপ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকবে বলেছে, তখন তার ইনফাচুয়েশন ছিল। প্রেম ছিল না।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৪০

বাকপ্রবাস বলেছেন: লেখক বলেছেন: আসলে তার বয়ফ্রেন্ড নেই। এড়িয়ে যেতে চাইছে। সেটা মাথায় রেখেই কিছুটা এগিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর অন্ধ হয়েছে বলেই তার আসল চেহারাটা নায়ক দেখতে পায়নি। আপনার মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করবে।

হুম, আপনার সাথে আমিও সহমত, কিন্তু প্রকাশটা আরেকটু উহ্য রাখার চেষ্টা করতে হবে, প্রেমতো প্রেমই, ভাললাগা সব এক কিন্তু প্রকাশ ভিন্ন, কিছু বিষয় আছে সরাসরি না বলে ইঙ্গিতে বললে সুন্দর বেড়ে যায়। যেমন ধরুণ শহরে এসেছে এক মেয়ে খুব সুন্দর, চুল সুন্দর, চোখ সুন্দর প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে যাবার মতো এই বিষয়টা আমি যখন বলব এভাবে, শহরে এসেছে এক পাখি দেখেই আটকে গেল চোখ, বুকটায় যেন চিন করে উঠল......... এভাবে পাখির বর্ণনায় পাখি পেতে গিয়ে প্রেমিকাকেও পাওয়া যাবে কিন্তু প্রকাশ ভিন্ন হয়ে গেল।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:২৩

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: ঠিক বলেছে। ব্যাপারটা এভাবে ভেবে দেখা হয়নি। পরবর্তীতে এই বিষয়টা মাথায় রাখা হবে। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:১৬

ডিএনএ মনির বলেছেন: আর একটু লম্বা করলে ভালো হত , তবে ধন্যবাদ এত সুন্দর লেখার জন্য ।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:২৯

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। গল্পটা পড়ার জন্য। পরামর্শের জন্যও ধন্যবাদ।

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:১০

আহমেদ জী এস বলেছেন: তন্দ্রাকুমারী,



অনুগল্প হলেও বড় কিছু প্রশ্ন রয়ে গেলো্-
এক) নার্স পারমিতা রায় কি করে বুঝলো যে, এতো লোক থাকতে অন্ধ হয়ে যাওয়া রোগীটিই তার ফেসবুক বন্ধু ?
বলবেন, ফেসবুকের ছবি দেখে। ফেসবুকে নায়কের ছবির মুখ কি আর কারো সাথে মিলে যেতে পারেনা ?
দুই ) পুনশ্চঃ তে বলেছেন, পারমিতা রায় হবহু দিব্যা ভারতীর মতো দেখতে। অন্ধ নায়ক কি করে জানলো সেটা ?

যাকগে, গল্পটা খারাপ লাগেনি। লেখায় জড়তা দেখা যায়নি। ঝরঝরে লেখা।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:১৬

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: হতে পারে পারমিতা রায় তার অন্ধ প্রেমিকের পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ সব খবরই রাখেন। হতে পারে তার প্রেমিক খুব বিখ্যাত কেউ। পারমিতা রায় দেখতে কি রকম সেটা প্রেমিক দেখেনি। বরং বক্তব্যটা লেখকের। পাঠকে অন্ধকার থেকে আলোতে আনার ক্ষুদ্র প্রচেষ্ট।

৫| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৪:০১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




অনুগল্পটির গাথুনী ও পরিকাঠামো সুন্দর হয়েছে ।
সাবলিল গতিতে এগিয়ে গিয়েছে শেষ দীর্ঘশ্বাসের দিকে ।
তবে শেষের পুনচ্ছের কথামাথায় মনে হল পথিক কি
পথ হারিয়েছে! নাকি এর পিছনেও আছে কোন তত্ব কখা?

শুভেচ্ছা রইল

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:২০

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: পুনশ্চ ছাড়া গল্পের সমাপ্তি হয় না। কারণ দিব্যা ভারতীর মৃত্যু রহস্যকে গ্লোরিফাই করা হয় তাতে। Click This Link

৬| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:২৩

Mashira বলেছেন: "পারমিতা রায়" গল্পটি একটি প্রেমের গল্প, তবে এটি একটি ব্যতিক্রমী প্রেমের গল্প। গল্পের শুরুতেই আমরা দেখতে পাই যে, একজন মুসলিম যুবক, যার নাম জানা যায়নি, পারমিতা রায় নামের একজন হিন্দু মেয়ের প্রেমে পড়ে। এই প্রেমটি একটি নিষিদ্ধ প্রেম, কারণ দুজনের ধর্ম ভিন্ন।

গল্পের শুরুতেই আমরা দেখতে পাই যে, যুবকটির পারমিতা রায়ের প্রতি একটি গভীর আকর্ষণ রয়েছে। তিনি তাকে "প্রতিমার মত দেখতে" বলেন এবং তার চোখের প্রশংসা করেন। তিনি এমনকি ভাবতে থাকেন যে, যদি তিনি একজন দেবতা হতেন, তাহলে তাকেই তার দেবী বানাতেন।

কিন্তু এই আকর্ষণটি শুধুমাত্র শারীরিক নয়, এটি একটি মানসিক আকর্ষণও। যুবকটি পারমিতা রায়ের ব্যক্তিত্বের প্রতিও মুগ্ধ। তিনি তাকে "মিষ্টত্ব আর স্নিগ্ধতা" সম্পন্ন একজন মানুষ হিসেবে দেখেন।

একদিন, যুবকটি পারমিতা রায়কে তার প্রেম নিবেদন করে। কিন্তু পারমিতা রায় তাকে বলে যে, তার একটি বয়ফ্রেন্ড আছে। যুবকটি এই কথা শুনে হতাশ হয়, কিন্তু তিনি থেমে যান না। তিনি পারমিতা রায়কে বলেন যে, তিনি তাকে অপেক্ষা করতে রাজি।

কিন্তু পারমিতা রায়ের উত্তরে আবারও একটি হতাশা। তিনি যুবককে বলেন যে, তিনি চিরকুমারী থাকতে চান।

৫ বছর পর, যুবকটি একটি সড়ক দুর্ঘটনায় অন্ধ হয়ে যায়। তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে একজন নার্স তার দেখাশোনা করেন, যার নামও পারমিতা রায়।

নার্স পারমিতা রায় যুবককে বলে যে, তিনিই সেই পারমিতা রায়, যার প্রেমে যুবকটি পড়েছিলেন। কিন্তু সেদিন যুবকটি তাকে দিব্যা ভারতীর ছবি দেখে ভুল করে ফেলেছিল।

এই কথা শুনে যুবকটি প্রথমে অবাক হয়, কিন্তু তারপর তিনি হাসিমুখে বলে, "আমি আপনাকেই ভালবাসি আর দিব্যা ভারতীকে আমি খুন করিনি।"

গল্পের শেষে আমরা দেখতে পাই যে, যুবকটির প্রেম সত্যিই ছিল। তিনি পারমিতা রায়কেই ভালবাসতেন, দিব্যা ভারতীকে নয়।

গল্পটি একটি সুন্দর প্রেমের গল্প। এটি আমাদেরকে শেখায় যে, প্রেম সব ধর্ম, জাতি, বা বর্ণকে ছাড়িয়ে যায়।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:১৯

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: আপনি অনেক ভাল রিভিউ লেখেন। অনেক শুভকামনা রইলো।

৭| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: গল্পটি ভালো লেগেছে।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:১০

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যা আমাকে অনুপ্রাণিত করবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.