নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমার চোখের তারায় আমার হাজার মৃত্যু!

অতন্দ্র সাখাওয়াত

তন্দ্রাকুমারী একটি কাল্পনিক চরিত্র যার সন্ধানে আছি নিশিদিন!!

অতন্দ্র সাখাওয়াত › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রথম মৃত্যুর আগে

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৫৬



আমার নাম তমাল। সম্প্রতি আমার একটা চাকরি হয়েছে। এতে আমি কিছুটা অবাক হয়েছি। কারণ চাকরিটা আমার পাবার কথা না। আমি এই এক জীবনে অসংখ্যবার অবাক হয়েছি। জন্মের পর হয়তো প্রথমবারের মত অবাক হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, এ আমি কোথায় এসেছি! প্রথমবার আলো দেখে হয়তো অবাক হবার পাশাপাশি চরম বিরক্তি এবং অস্বস্তি নিয়ে চিৎকার করে- করেছিলাম প্রতিবাদ। তারপর কেটে গেছে সুদীর্ঘ ঊনত্রিশ বছর। এখনো ভাবি, এ আমি কোথায় আছি? এখনো আলো দেখে মাঝে মাঝে বিরক্তি এবং অস্বস্তিতে ভুগি। আমি জানি, জীবন একবার গেলে আর ফিরে আসে না। একদিন মায়ের কাছে শুনি আমার এই সাধের জীবন চলে যাবার উপক্রম হয়েছে। আগামী শুক্রবার আমার বিয়ে। বিয়ে এবং মৃত্যু আমার কাছে সমার্থক। এতদিন ভেবে এসেছি বিয়ে নামক দুর্ঘটনার মুখোমুখি আমাকে কখনো হতে হবে না। চিরকুমার হবার পণ করেছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। আমার বিয়েটা শেষ পর্যন্ত পাকা কথায় পৌঁছে গেলো। ফল পাকলে যেমন টুপ করে ঝরে পড়ে- ঠিক তেমনি আমিও ঝরে পড়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম।

যার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল তার নাম অনন্যা। কচি জাম পাতার মতো গায়ের রঙ। চোখের মণি হালকা বাদামী। হাঁটু পর্যন্ত লালচে কালো চুল। লম্বায় আমার চেয়ে হাফ ইঞ্চি বড়ই হবে হয়তো। পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়েছে বলে আমি আগ বাড়িয়ে বেশি কথা বলতে যাইনি অনন্যার সাথে। দেখতে দেখতে আমার বিয়ের বাজার করা শেষ হলো। বিয়ের বাজনা বাজতে শুরু করলো। শেরওয়ানির মাপ ঠিক আছে কিনা তা দেখা হলো। শেরওয়ানি পড়ে ট্রায়াল দিতে গিয়ে আমি পুরোপুরি ঘেমে গিয়েছিলাম। ভরপুর জ্যৈষ্ঠ মাসে এসব পড়ে বিয়ে করতে যাওয়াটা কি ঠিক হবে এই নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম।

শেষমেশ কিন্তু আগ বাড়িয়ে কথা না বলাটাই আমার জন্য কাল হলো। বৃহস্পতিবার দুপুরে জানতে পারলাম, অনন্যা তার খালাতো ভাইয়ের সাথে পালিয়ে গেছে। ক্রিকেট খেলায় ক্যাচ মিস হলে ব্যাটসম্যান যেভাবে জীবন ফিরে পায়, আমিও সেভাবে জীবন ফিরে পেলাম। সেদিন আমাদের বাসায় চাঁদের হাট বসেছিল। গায়ে হলুদের সব আয়োজন সমাপ্ত- তখনই এই খবরে যেন বিনা মেঘে ব্জ্রপাত হলো। আমি মনে মনে খুশি হব নাকি দুঃখিত হবো বুঝতে পারছিলাম না। আমার খালাতো ভাই আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, ❝মন খারাপ করিস না ভাই।❞ আমি হয়তো মন খারাপ করলাম।

বিয়ে ভেঙে যাওয়াতে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে গেলাম। বিয়ে নামক প্রথম মৃত্যু দণ্ডাদেশ পেতে আমি রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়লাম। প্রথম মৃত্যু দ্বিতীয় চেষ্টায় সফল হলো। এবার আর কাউকে দাওয়াত দিলাম না। আগ বাড়িয়ে কনের সাথে কথা বললাম। শেরওয়ানি পড়ে ট্রায়াল দিলাম না। হঠাৎ একদিন অতি সাধারণভাবে আমি প্রথম মৃত্যুকে বরণ করলাম। তেমন উত্তেজনা বোধ না করলেও জ্বরে আক্রান্ত হলাম। জ্বর নিয়েই শেরওয়ানি, পাগড়ী পড়ে কনের বাড়িতে হাজির হয়েছিলাম। বিয়ের পর ধীরে ধীরে অনুভব করলাম, কেন পুরুষ মানুষ দুই প্রকার: জীবিত আর বিবাহিত।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৪:১৯

নিমচাঁদ বলেছেন: বিয়ের প্রতি লেখকের অনীহা আমাকে কমেন্ট করতে উজ্জীবিত করেছে ।জীবন অফুরন্ত নয় তাই বিয়ে ছাড়া সুন্দর পৃথিবী ভোগ করার লেখকের মনোবাসনাকে স্বাগত জানাই

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:২৩

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: বিয়ে কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ

২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৪৪

নাহল তরকারি বলেছেন: বিয়ে আমার কাঝে ভোজা।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:২৪

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: এটাই এখন কালচার হয়ে গেছে। বিয়েকে সবাই বোঝা হিসেবে দেখে।

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৪০

জনারণ্যে একজন বলেছেন: আশাকরি এতদিনে আপনার বিবাহ-বিষয়ক অনুধাবনের পালা শেষ হয়েছে। তাই এ বিষয়ে কথা আর না বাড়াই।

কৌতূহল অন্য জায়গাতে। "কচি জাম পাতার" মতো গায়ের রং কোনটা?

গুগল করেও এই বিষয়ক সুস্পষ্ট কোনো ধারণা পেলাম না।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫০

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: প্রথমত বলতে চাই এটা একটা কাল্পনিক গল্প।
কচি জাম পাতা: যেসব মেয়েরা অতিরিক্ত ফরসা হয়, তাদের শরীরের ধমনী, শিরা, উপশিরা চামড়ার উপর থেকেই দেখা যায়। রংটা তখন সবুজাভ হয়। গাছের সবচেয়ে হাল্কা একটা কচি জামপাতার মধ্যে এক ধরণের চাকচিক্য থাকে। তেলতেলে ভাব থাকে। তার উপর আলো পড়লে সেটা প্রতিফলিত হয়। সেই আবহটাকেই বর্ণনা করা হয়েছে কচি জাম পাতার উপমায়। এখানে উল্লেখ্য, তমাল ভাবতে পারেনি, মেয়েটার সাথে তার বিয়েটা পাকা হবে, তাই সে অনন্যাকে ঠিকমতো দেখেনি। শিরা উপশিরাযুক্ত শরীরের অংশটাতে ফোকাস করেছে বলেই তার এমন মনে হয়েছে। দেরিতে উত্তর দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ভাল থাকবেন।

৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার নিকনেম চেঞ্জ হয়েছে দেখে ভালো লাগলো। দয়া করে একটু আকিকার ব্যবস্থা করবেন।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৯

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: আকিকা দিব। তবে একটা শর্ত আছে। আকিকার পর আগের নামটা স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে হবে।

৫| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সুন্দর গল্প।

০১ লা জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৫৫

অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.