![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তন্দ্রাকুমারী একটি কাল্পনিক চরিত্র যার সন্ধানে আছি নিশিদিন!!
ছায়া নেই—
তবু মাটির ফাঁকে ফাঁকে
ঝরে পড়ে নিঃশব্দ স্বপ্ন—
যেন মৃতদেহ নিজেই
হারিয়ে যাওয়া ছায়াকে খুঁজে ফেরে।
বুক নেই—
জলের গভীরে অনন্ত গহ্বর,
যেখানে কান্না নয়,
শুধু গলে যাওয়া মজ্জার সুর
বাজে নিঃশব্দ বেদনাতে,
অনন্তে ভেসে যায়
সময়ের মৃদু ঢেউয়ে।
স্মৃতি?
এক নিঃশ্বাসহীন আগুন,
রক্তের ধোঁয়ায় আঁকা
অন্ধ পথচিত্র,
যেখানে প্রত্যেক ধাপ
পোড়ায় শূন্যতার শেষ পরশ।
নাম?
ভ্রান্ত উচ্চারণের ঢেঁকি
জং ধরা এক তাম্রলিপি—
যার কোনো ভাষা নেই,
তবু মনে গেঁথে বেদনার স্তবক।
স্পর্শ?
এক বিবর্ণ ওড়নার ম্লান ঘ্রাণ—
রক্তমাখা স্মৃতির স্বাদ,
যার স্পন্দনে জন্মায়
অপ্রকাশিত শোকের করুণ গান।
জন্ম?
ভাঙা দেয়ালের ফাটলে—
নীরব প্রেমিকের কাতার,
যেখানে শব্দেরা
গর্ভপাত ঘটায় জীবনের প্রথম নিঃশ্বাস।
আমি নিঃশ্বাস নই—
এক বোতলবন্দি ঝড়,
অস্তিত্বের ফাটল পথে আটকে থাকা
এক কেঁচোর স্মৃতি,
যা কামড়ে ধরে
ভেঙে দেয় আশা।
ঘুম?
কাশ্মীরি কার্পেটে আঁকা
তালাবদ্ধ অপরাহ্ন,
আয়নার কোণে জমে থাকা
আলোহীন কুয়াশার ফাঁদ।
আমি ডাকি—
কিন্তু শব্দ আসে না,
জিহ্বার পুড়ে যাওয়া আগুনে
কণ্ঠস্বর নেই শুধু গর্জন।
সময় ফিসফিস করে—
“আরও একটু থাকবো?,”
তবু তার কণ্ঠে
এক নিঃশেষিত ঘড়ির কাঁটায়
ঝুলে আছে ছাইয়ের ঘ্রাণ।
প্রেম?
লাল পাথরে খোদিত
মাতৃগর্ভের রক্ত—
যে পাথর চুষলে
জিভে লেগে যায়
রোদমাখা অশ্রুর স্বরলহরী।
প্রতীক্ষা?
কাঁটাবেষ্টিত নিঃশ্বাস,
যার প্রতিটি স্পন্দনে
বুকের মসজিদে
চাষ করে নিঃশব্দে: লেবু বাগান।
শূন্যতা?
এক ছায়াহীন ছায়া—
যা নিজের দেহ ছুঁয়ে
গিলে নেয় সব ভাষার কণ্ঠস্বর।
একাকীত্ব?
হ্যান্ড গ্লাভসের আদরে মোড়া
নীরবতার আলিঙ্গন,
যার ভেতর অসীম স্রোত
আর শীতল জমাট বরফ।
আমি শব্দ নই—
শব্দের মধ্যবর্তী ছায়া,
পৃথিবীর প্রতিটি প্রেসে
জেগে উঠেছে ধূসর বনানী,
আর সেখানে নাচে
দাম্ভিক কাক—
ঠোঁট নেই, ছায়া নেই,
শুধু ঘন কালো পথ।
দেশ?
ভাঙা আয়নায় গাঁথা
নামহীন ভূগোল,
যেখানে মানচিত্র নয়,
শুধু দুই জোড়া ঠোঁটের কাঁপন-
আর অশ্রুর মিশ্র ইতিহাস।
বায়ু?
এক ক্ষণস্থায়ী বৃক্ষ,
যার প্রতিটি শাখা
স্পন্দনের অপেক্ষায়
থেমে থাকে পরম রাত্রি।
সুখ?
জিহ্বার পেছনে আটকে থাকা
অচেনা নুন,
যার স্পর্শ নেই,
তবু শরীরের প্রতিটি কোষে
শীতল কম্পন জাগে।
এই যাত্রা
মন থেকে মনান্তর নয়—
এ এক সূক্ষ্ম মত্যান্তর—
চোখ খোলার আগেই
নিজেকে ছায়ায় গিলে ফেলা।
তারপরে—
নিভে যাওয়া উচ্চারণের গর্ভে
জন্ম নেয় সোনার মাছিরা,
যাদের ছায়া নেই,
যারা শুধু ডুবে যায়,
ছায়ার নিচে নয়,
ছায়ার আরও পেছনে—
যেখানে ছায়া নিজেকেই শুষে নিয়েছে
অনন্ত এক তৃষ্ণার গভীরে।
©somewhere in net ltd.