নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুহাম্মদ মুফীজুল ইসলাম

আমি একজন লেখক। আমি নিয়মিত হৃদয় গলে সিরিজ নামে একটি সিরিজ লিখি। এ পর্যন্ত আমার ৪৫টি খণ্ড বের হয়েছে।

মুহাম্মদ মুফীজুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

হৃদয়রে সম্রাজ্ঞী

২০ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ১২:৫৯

মুহাম্মদ মুফীজুল ইসলাম

রাণী খায়যারান। আব্বাসীয় খলিফা মাহদীর প্রিয়তমা জীবনসঙ্গিনী। দানশীল। দয়ালু। অসহায়ের সহায়। শুধু রাজ্যেরই নয়, সাধারণ মানুষের হৃদয়ের সম্রাজ্ঞী। বাদশাহ হারুনুর রশীদ তাঁরই ঔরসজাত সন্তান। বুদ্ধিমত্তা, স্বভাবজাত পবিত্রতা ও কল্যাণকামিতার ফলে খলিফা মাহদীর উপর অত্যন্ত প্রভাব রাখতেন তিনি। এই হৃদয়বান মানুষটিরই একটি চমৎকার ঘটনা মুহতারাম পাঠক-পাঠিকাদের উপহার দিচ্ছি।

একদিন সকাল বেলা। রাণী তাঁর মহলে বসে আছেন। রাজকীয় শানশওকত ও আভাময় সে মহল। চেহারায় খুশির আমেজ। হাসি হাসি ভাব নিয়ে কি যেন ভাবছেন তিনি। হয়তো অতীতের কোনো সুখময় স্মৃতি মনে পড়েছে। কিংবা প্রিয়তম স্বামীর হৃদয়জুড়ানো কোনো কথা মনের গহীন কোণে উঁকি দিয়েছে। এমন সময় উপস্থিত হলো এক দাসী। বিনয় ঝরে পড়ছিল দেহের প্রতিটি অঙ্গ থেকে। বলল সেÑ

মহামান্য সম্রাজ্ঞী! একজন মহিলা আপনার সাক্ষাৎ প্রার্থনা করছে। দেখতে বড়ই অসহায় ও দরিদ্র মনে হচ্ছে তাকে। আপনার সাথে সে কথা বলতে চায়।

তার পরিচয় জিজ্ঞেস করেছ?

জ্বি না।

পরিচয় জিজ্ঞেস কর। তাছাড়া আমার সাথে কেন, কী কথা বলতে চায়Ñ তাও জেনে এসো।

দাসী ফিরে গিয়ে আগন্তুক নারীটিকে সম্বোধন করে বললÑ

আপনার পরিচয় কি? কী প্রয়োজনে এসেছেন বলুন।

আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই নি। আমি কথা বলতে চাই এই মহলের রাণীর সাথে। তোমার ওসব শুনে লাভ নেই। যা বলার সরাসরি তাঁর কাছেই বলব।

বেচারী দাসী আবার রাণীর দরবারে হাজির হলো। বলল, আমার সাথে মহিলা কিছুই বলছে না। সে নাকি তার প্রয়োজনের কথা সরাসরি আপনার কাছেই বলবে।

ঠিক আছে। তাকে আসতে বলো।

খানিক পরে জীর্ণ বসনা শীর্ণকায়া ভগ্নদশা এক নারী সম্রাজ্ঞীর সামনে উপস্থিত। কিন্তু তার ভগ্ন অবয়বে আভিজাত্যের অপরূপ সৌন্দর্য ঠিকরে পড়ছে, যেন সে সৌন্দর্য আড়াল করে রেখেছে অবহেলার ক্লেদ, অভাবের অভিশাপ আর ক্ষুধা তৃষ্ণার অবিরাম অবিচার! সে প্রথমে রাণীকে দেখে অপ্রস্তুত হলেও সঙ্গে সঙ্গেই নিজেকে সামলে নিয়ে সালাম দিল। তারপর বললÑ

হে সম্রাজ্ঞী! আমি সর্বশেষ উমাইয়া সম্রাট মারওয়ান ইবনে মুহাম্মদের কন্যা। আমার নাম মাযনা।

নারীদের ধৈর্যশক্তি কম। অল্পতেই তারা ভেঙ্গে পড়ে। হারিয়ে ফেলে হিতাহিত জ্ঞান। আর বেশি হলে তো কথাই নেই। রাণী খায়যারান যেহেতু নারী, তাই তার বেলায়ও এই বক্তব্য সত্য হয়ে দেখা দিল। ‘উমাইয়া' শব্দটি শোনার সাথে সাথে তাঁর মনে পড়ে গেল, বনূ আব্বাসের প্রতি উমাইয়া শাসকদের বর্বরতার কথা। তাদের নির্মম ও নিষ্ঠুর আচরণের কথা। তাই প্রথমে তিনি নিয়ন্ত্রণশক্তি হারিয়ে ফেললেন। ক্রোধে অধীর হয়ে মাযনার কথা শেষ হতেই বললেন-

- দুর্ভাগী! কে তোমাকে এই সাহস দিল যে, তুমি আমার অন্দরমহলে চলে এসেছো! তুমি কি ভুলে গেছো, তোমাদের উমাইয়া শাসকরা আমাদের বনূ আব্বাসের প্রতি কী সব অত্যাচার করেছে? হে কলংকিনী! তুমি কি তোমার নিজের কথাও বিস্মৃত হয়েছো? তোমার কি মনে পড়ে না, যখন আমাদের অসহায় বুড়িরা তোমার কাছে শুধু এইটুকু আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছিল যে, তুমি তোমার পিতার কাছে বলে আমার চাচাশ্বশুর ইমাম মুহাম্মদের লাশটি দাফনের অনুমতিটুকু এনে দিবে? আর তখন! তখন তুমি সেই সব সম্মানিতা নারীদের প্রতি দয়াপরবশ না হয়ে চরম অপমান করে মহল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলে। তুমিই বলো, এটা কি গোটা মানবতাকে অপমান করা নয়? মানলাম, আমাদের পরস্পর গোত্রগত-বংশগত লড়াই আছে এবং ছিল! তারপরও কি অসহায় নারীদের সাথে এমন আচরণ করা যায়? আল্লাহর শোকর! তিনি তোমাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছেন। ক্ষমতার মসনদ থেকে তুলে নিয়ে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছেন। অপমানিত করেছেন। উচিত শিক্ষা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, দুর্বলদের প্রতি সবলদের অত্যাচার তিনিও বরদাশ্ত করতে পারেন না। মাযনা! যদি ভালো চাও, এক্ষুণি এখান থেকে বের হয়ে যাও।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, রাণী খায়যারানের কথায় বিন্দুমাত্রও ভেঙ্গে পড়েনি বিগত কালের সম্রাটকন্যা মাযনা। মনে হয়, রাণীর কোনো কথাই প্রবেশ করে নি তার কর্ণকুহরে। শুনতে পায় নি একটি বাক্যও। মাযনা অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। তার হাসির আওয়াজ চারদিকের নীরবতাকে খান খান করে ভেঙ্গে দিল। তারপর নিজেকে খানিকটা প্রস্তুত করে নিয়ে গাম্ভীর্যপূর্ণ ভাষায় এমন কয়েকটি কথা বলল, যা স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো। সবাই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে তার এ মূল্যবান কথাগুলো থেকে। সে বলল-

- বোন! নিজেকে নিয়ন্ত্রণের ভেতরে রাখ। তুমি ভালো করেই জান যে, একসময় আমি তোমার চেয়েও বেশি বিলাসী ছিলাম। আকণ্ঠ নিমজ্জিত ছিলাম সুখ সাগরে। সম্পদ আর প্রভাব ছিল আমার ঘরের দাসী! আমি আমার রূপ-সৌন্দর্য নিয়ে অহংকার করতাম। গর্বে-দর্পে মাটিতে পা পড়ত না আমার। কাউকে পরোয়া করতাম না আমি। কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এর প্রতিফল আমি কড়ায় গণ্ডায় পেয়েছি। আল্লাহ আমাকে আমার কৃতকর্মের শাস্তি দিয়েছেন। তোমার মহলে এনে তোমার সামনে বিনীতভাবে দাঁড় করিয়েছেন। ইলাহীর অসীম কুদরতের ইশারায় আমি এখন পথের কাঙালী! বরং তার চেয়েও মন্দতর আমার দশা! আমার জীর্ণশীর্ণ অবস্থা আর পরিধেয় কাপড়-চোপড়ই এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ। তোমার কাছে আমার শেষ কথা হলো, তুমি যদি আমার মতোই ভাগ্যবরণ করতে চাও, তবে অপেক্ষায় থাকো। আমি চললাম। এতটুকু বলেই সে দ্রুত বেরুবার পথ ধরল।

মাযনার কথাগুলো রাণী খায়যারানের বদ্ধ হৃদয়ের কপাট খুলে দিল। ক্রোধের আগুন ঠাণ্ডা হয়ে গেল। তিনি চিন্তা করলেন, ঠিকই তো! মাযনা আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছে বলেই আজ তার এ করুণ দশা। পথের ভিখারিণী হয়ে আজ সে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। অপমানের বোঝা মাথায় নিয়ে এখানে সেখানে ধর্ণা দিচ্ছে। আজ তার দিকে ফিরে তাকাবারও কেউ নেই। তার জীবন থেকে আমার শিক্ষা নেওয়া উচিত। আমি যদি তার সাথে ঐরূপ আচরণ করি, যেমন আচরণ সে আমাদের সাথে করেছিল, তবে তো আমি তার মতই হলাম। উপরন্তু এর ফলশ্র“তিতে আমার জীবনেও যে এমন ঝড় বয়ে যাবে না, তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে?

এসব কথা ভাবতে ভাবতে রাণী খায়যারান ফিরে চলা মাযনাকে এক রকম দৌড়ে গিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে আলিঙ্গন করতে চাইল। কিন্তু মাযনা পিছনে সরে গিয়ে বললÑ না, খায়যারান! তুমি আমার সাথে আলিঙ্গন করতে পার না। কারণ তুমি রাণী আর আমি ভিখারিণী। তোমার পরনে রাজকীয় বসন আর আমার গায়ে ছেড়াঁ জামা। কোথায় তুমি আর কোথায় আমি!!

রাণী আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না। বেদনার এক পশলা নোনা পানি তার চোখ বেয়ে টপটপ করে ঝরে পড়ল । যেন অনেক দিনের বেধে রাখা নদীর মুখ এইমাত্র খুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি রুমাল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে দাসীদের আদেশ দিলেন। বললেন, মাযনাকে গোসল করাও। শাহী পোশাকে সজ্জিত করো। উত্তম সুগন্ধিতে সুরভিত করে আমার সামনে উপস্থিত করো।

হুকুম তামিল হলো সঙ্গে সঙ্গে। শাহী পোশাক পরিধান করানোর পর মাযনাকে মনে হচ্ছিল, চাঁদ বুঝি মেঘের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসেছে। এবার সম্রাজ্ঞী খায়যারান মাযনাকে নিজের পাশে বসিয়ে বললেন-

- মাযনা! আমার পূর্বের কথায় নিশ্চয় তুমি কষ্ট পেয়েছ। আমাকে ক্ষমা করে দাও বোন। আসলে তোমার পরিচয় পাওয়ার সাথে সাথে অতীতের সব দৃশ্য একত্রে আমার সামনে ভেসে উঠেছিল। তাই নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখে যা এসেছে বলে ফেলেছি। তোমার কথায় আমার ভুল ভেঙ্গেছে। তাই আবারও তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। বলো, তুমি আমাকে ক্ষমা করেছ কিনা।

- ক্ষমা করব না মানে। অবশ্যই করেছি। আমিও তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমাকেও ক্ষমা করে দাও।

- হ্যাঁ, আজ থেকে আমার মনে কোনো দুঃখ নেই। আমি তোমাকে ক্ষমা চাওয়ার আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি। আর তোমার মনে যে কষ্ট দিয়েছি তার কিছুটা হলেও বদলা দেওয়ার চেষ্টা করব আমি। ওহু! কথায় কথায় তোমার খানার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। এবার খানা খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নাও, তারপর কথা হবে।

বহুদিন পর তৃপ্তি সহকারে আহার করল মাযনা। খাবার ও বিশ্রামের পর আবার কথা শুরু হলো। রাণী বললেনÑ

- এখন তোমার অভিভাবক কে বলতো?

- এখন কে আমার অভিভাবক হবে? আÍীয়দের কেউ তো বেঁেচ নেই যার কাছে আশ্রয় নেব। সম্পর্ক যদি কিছুটা থাকে তাহলে তোমাদের সাথেই আছে!

- দুঃখ করো না মাযনা। আজ থেকে তুমি আমার বোন। আমার তো অনেকগুলো মহল আছে। তন্মধ্যে তোমার যেটি পছন্দ হয় সেটি নিয়ে নাও। এখন থেকে তোমার কোনো অভাব হবে না, ইনশাআল্লাহ।

- আমার মহলের প্রয়োজন নেই বোন। কোনোরকম মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই পেলেই হবে।

- আমি তোমার কোনো কথাই শুনতে চাই না। ঐ যে দেখা যায় আলীশান মহলটা, সেটাই তোমার বসবাসের স্থান। সেখানে তোমার জন্য থাকবে প্রয়োজনীয় সুখ সামগ্রী, দাস-দাসী সবকিছু।

কিছুক্ষণ পর রাণী নিজে মাযনাকে নিয়ে তার মহলে পৌঁছে দিলেন। আসার সময় নগদ পাঁচ লক্ষ দিরহাম তার হাতে তুলে দিয়ে বললেন, এটা তোমার পছন্দ মতো খরচ করবে।

সন্ধ্যায় যখন খলিফা মাহদী তার মহলে ফিরে এলেন, তখন সম্রাজ্ঞী খায়যারান দিবসের কাহিনী বলতে লাগলেন। বলতে বলতে এক পর্যায়ে বললেন, আমার কথা শুনে মাযনা এক অট্টহাসিতে মহল কাঁপিয়ে তুলল এবং দ্রুত বেরিয়ে যেতে লাগল।

মাযনার অহংকার ও দুর্ব্যবহারের কথা রাণী খায়যারান যতটুকু জানতেন, তার চাইতে বহুগুণে বেশি জানতেন খলিফা মাহদী। কিন্তু অসহায় ও দুর্বল মানুষের প্রতি তিনি ছিলেন অত্যন্ত দয়াশীল। চাই সে প্রাণঘাতী শত্র“ই হোক না কেন? তাই রাণীর কথা শেষ না হতেই তিনি ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বলে উঠলেন, খায়যারান! আল্লাহ তাআলা তোমাকে যে সম্পদ ও সম্মান দিয়েছেন তার শুকরিয়া আদায় করার এটাই তো মোক্ষম সময় ছিল। তোমার এই আচরণ মোটেও সমীচীন হয়নি।

- আরে, সব কথা শুনে নিবেন তো!

- বলো।

রাণীর মুখ থেকে সব কাহিনী বিভোর হয়ে শুনছিলেন খলিফা। এতে পুলকিত হচ্ছিল তাঁর হৃদয়-মন। চোখে মুখে খুশির আলো ফুটে উঠছিল থেকে থেকে। রাণীর কথা শেষ হলে আনন্দের আতিশয্যে তাকবীর ধ্বনি দিয়ে সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন তিনি। এরপর স্বামী-স্ত্রী আনন্দ অশ্র“তে ভাসলেন কিছুক্ষণ।

পরদিন খলিফা মাযনার কাছে নিজের পক্ষ থেকে বিরাট অংকের উপহার পাঠালেন। সেই সাথে এই পয়গামও পাঠালেন যে, তোমার সেবা করতে পেরে আমরা আজ সীমাহীন আনন্দিত। এখন থেকে তুমি এখানেই থাকবে। সুখের সামান বলো আর নিরাপত্তাই বলো- কোনোটারই অভাব হবে না তোমার।

প্রিয় পাঠক! শত্র“ ও দুর্ব্যবহারকারীদের সদাচরণ করতে পারাই তো খাঁটি মুমিনের পরিচয়। তাই আসুন, আলোচ্য ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নেই এবং খারাপ ভালো সবার সাথেই সুন্দর আচরণ করি। আর সর্বদা বেঁচে থাকতে আপ্রাণ চেষ্টা করি অহংকার নামক মহাব্যাধি থেকে। হে দয়ালু খোদা! তুমি আমাদের তাওফীক দাও। (সূত্র ঃ মেছালী খাওয়াতীন, পৃষ্ঠা-১৬৪)



বিশেষ দ্রষ্টব্য- সত্য এই ঘটনাটি আমার লিখিত হৃদয় গলে সিরিজের অন্তর্গত ‘হৃদয়বিদারক করুণ কাহিনী’ (সিরিজ নং-১৯) নামক গল্পগ্রন্থ থেকে পোস্ট করেছি। পাঠকবৃন্দের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, মার্চ/১১ পর্যন্ত এই সিরিজের ৪৫টি খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.