নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এখনো জীবনরে উদ্দেশ্য ঠিক করতে পারিনি

হৃদয়হীন মানব

হৃদয়হীন মানব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে নারী শিক্ষার গুরুত্ব

১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:০৯



খেলাফতে আব্বাসিয়া যুগে ৭৫০ সাল থেকে মুসলিম মহিলাদের প্রজ্ঞা ও সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে সুনামখ্যাত সামাজিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে। বিশেষজ্ঞ অনেক মহিলা শিশুকাল থেকে গান, নাচ ও কবিতা চর্চায় প্রশিক্ষণ লাভ করে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘তাওয়াদুদ’ নামক মহিলা যে একজন ক্রীতদাসী ছিলেন, তাকে খলিফা হারুন উর রশীদ চড়া মূল্যে ক্রয় করেছিলেন। কারণ জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসা, আইন, সঙ্গীত, ইতিহাস, আরবি গ্রামার, সাহিত্য ও দাবা সব বিষয়ের পরীক্ষায় তিনি কৃতিত্বের সাথে পাস করেছিলেন। অন্য একজন খ্যাতিমান স্কলার মহিলা ছিলেন যার নাম ‘সুধা’। যিনি দ্বাদশ শতাব্দীতে বাগদাদে Pride of women বলে পরিচিত ছিলেন। আব্বাসী যুগে মহিলাদের খ্যাতি যোগ্যতার স্বীকৃতির পর সব কিছু পরিসমাপ্তি ঘটে ১২৫৮ সালে বাগদাদ লুণ্ঠনের মাধ্যমে। উল্লেখ্য ইসলামের সব ঐতিহ্য ও আদর্শের নমুনা নিশ্চিহ্ন করার জন্য একবিংশ শতাব্দীর মতো একাদশ শতাব্দীতেও ইরাকের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞসহ ইসলামি লাইব্রেরি ধ্বংস করে অপূরণীয় ক্ষতি করেছে ইয়াদুদি ও মুসলমানদের দুশমনেরা।

মুসলিম অনেক মহীয়সী নারী ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করে ইতিহাসে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে আছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ফাতিমা আল ফিহরি, তিনি আল কাবাউয়িন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন ৮৫৯ সালে। এ ধারা উমাইয়া শাসনামলের দ্বাদশ ও ত্রৈয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। তৎকালীন দামেস্কে ১৬০টি মাদরাসা স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ২৬টি মুসলিম মহীয়সী নারীরা প্রতিষ্ঠিত করেছেন ওয়াকফ-এর মাধ্যমে। তা ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের অর্ধেকেরও বেশি Patron ছিলেন মহিলা।

দ্বাদশ শতাব্দীর সুন্নি স্কলার ইবনে আসাকিরের মতানুসারে ইসলামি বিশ্বের মধ্যযুগে নারীশিক্ষার ব্যাপক সুযোগ ছিল। সেকালে মহিলারা লিখতেন, পড়তেন তারা শিক্ষাগত ডিগ্রি অর্জন করতে পারতেন। তাদের অনেকে যোগ্যতাসম্পন্ন স্কলার ও শিক্ষক ছিলেন, স্কলার পরিবারের মহিলারাই এ ক্ষেত্রে অগ্রগামী ছিলেন। এসব পরিবারে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে পার্থক্য না করে ছেলেমেয়ে, নির্বিশেষে তাদের সর্বোচ্চ ডিগ্রি সুযোগ করে দিতেন। উল্লেখ্য ইবনে আসাকির নিজে তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৮০ জন বিশেষ মহিলা শিক্ষকের কাছে পড়েছেন। আমাদের মহানবী সা:-এর স্ত্রীরাই ইসলামি বিশ্বে নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করতেন। যেমন হজরত খাদিজা (রা:) অত্যন্ত সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। হাদিসে রয়েছে নবী করিম সা: মদিনার মহিলাদের ধর্মীয় জ্ঞানার্জনে আগ্রহী ছিলেন বলে প্রশংসা করেছিলেন। ‘কী চমৎকার না আনসার রমণীরা, জ্ঞানার্জনে লজ্জা তাদের জন্য কোনো বাধা নয়।’

পঞ্চদশ শতাব্দীতে আল শাকাত্তরি বার ভলিয়মের biographical dictionary al Daw al alm to female scholars প্রকাশ করেছেন তাতে প্রায় ১০৭৫ জন স্কলার মহীয়সী নারীর তালিকা রয়েছে। Oxford center for Islamic studies এর গবেষক মুহাম্মদ আকরাম নদভী ৪০টি ভলিয়ম লিখেছেন মহিলা মোহাদ্দেসের বিষয়ে, তাতে তিনি আট হাজার মহিলা স্কলারের বিষয় বর্ণনা করেছেন। এ বিষয়ে হাদিসে রয়েছে ‘সেই ব্যক্তি তোমাদের মধ্যে উত্তম যে কুরআন শিখে এবং শিক্ষা দেয়’। এই ঈমানি দায়িত্ব নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য বাধ্যতামূলক ও আবশ্যক। জ্ঞানার্জন ও তা অন্বেষণের জন্য সুদূর চীন দেশের মতো দূর দেশে গিয়ে তা অর্জনের জন্য ইসলামে তাকিদ দেয়া হয়েছে। এ তাগিদটি ও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। এ ক্ষেত্রে তথাকথিত নারীবাদী ও প্রগতিশীলদের কাছে প্রশ্ন, ইসলাম ছাড়া বর্তমান বিশ্বে আর কোনো এমন পুরনো সভ্যতা রয়েছে, যা মানবসভ্যতার এত আদিলগ্নে নারী-পুরুষ সম-অধিকার নিশ্চিত করার আবশ্যিকভাবে তাগিদ দিয়েছে? সব সভ্যতার ঊষালগ্নে ফেরাউন, নমরুদ, আবুজাহেল এবং আবুলাহাবদের মতো খোদাই দুশমন রয়েছে, যাদের অনুসারীদের সংখ্যা শেষ জামানায় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা আজ রাষ্ট্রীয়ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, নারী ক্ষমতায়নের ও প্রগতির নামে নারীকে বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন কাজে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। ইসলাম আল্লাহর বিধান কখনো তা অনুমোদন করে না।

ইসলাম এর ঊষ্ণালগ্ন থেকেই শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে এবং বিভিন্নভাবে শিক্ষালাভ ও বিস্তারের জন্য উৎসাহিত করে আসছে। ইসলামে শিক্ষার একটি বুদ্ধিমত্তার বিরাট ঐতিহ্য ও দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। জ্ঞানবিজ্ঞান ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে সৃষ্টির শুরু থেকেই। ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন ও হাদিসে এ বিষয়ে ৮০০’রও বেশি রেফারেন্স খোঁজে পাওয়া যাবে। পবিত্র কুরআনে বহু জায়গায় শিক্ষা সম্বন্ধে বারবার করে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। আর এ নির্দেশ ও গুরুত্বপূর্ণ যা নারী-পুরুষ সবার জন্য সমভাবে প্রযোজ্য নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে অবস্থান করে। তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞানদান করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে মর্যাদায় উন্নত করবেন; তোমরা যা করো আল্লাহ সেসব বিষয়ে সবিশেষ অবহিত আছেন। (৫৮ : ১১) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে: ‘হে প্রভু আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করো’ (২০ : ১১৪)।

সূরা বাকারায় বলা হয়েছে ‘আল্লাহ যা শিখিয়েছেন তা লিখে নাও’ (২ : ২৮২)। আরবি প্রবাদে আছে জ্ঞানার্জনে সুদূর চীন দেশে হলেও সেখানে যাও। হাদিসে আরো রয়েছে যে, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যে কুরআন পড়ে এবং পড়ায়।’
ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থা নিঃসন্দেহে অন্য সব শিক্ষাব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তার প্রধান কারণ হলো এর তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দিক সম্পূর্ণ কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক, কেননা ইসলাম শুধু ধর্ম নয়, তা একটি সম্পূর্ণ জীবনবিধান।
ইসলাম মানুষের ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সব পার্থিব ও পারলৌকিক বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নীলনকশা দিয়েছে। কুরআন তথা ইসলাম সপ্তম শতাব্দীর নিরক্ষর আরব সমাজে ব্যাপক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করে। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে আরব সমাজে বাগ্মিতা সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ছিল। কিন্তু কুরআন আল্লাহর বাণী হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তা অধ্যয়ন ও গঠন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ায়। তাই কুরআন বোঝা ও সে অনুসারে জীবনবিধান অনুসরণের লক্ষ্যে লেখা ও পড়া মুসলমানদের একান্ত অপরিহার্য কর্তব্য। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের কোনো বিধানের অর্থাৎ জ্ঞানার্জনে নারী-পুরুষের কোনো বৈষম্য সৃষ্টি করার সুযোগ নেই।

সংগ্রহে

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:০০

ফারহানা তাবাসসুম বলেছেন: সুন্দর প পোসস্ট... ধন্যবাদ আপনাকে..

১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৩৬

হৃদয়হীন মানব বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ আপু

২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:০৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: পোস্টটা ভালো লেগেছে, প্রিয়তে নিলাম । আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে হুজুররা নারীদের উচ্চ শিক্ষায় বাধা সৃষ্টি করেন কেন?

১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৩৬

হৃদয়হীন মানব বলেছেন: যাদের ইসলাম সম্পর্কে ভাল জ্ঞান নেই তারাই এসব বলে

৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



এগুলো বকবক ছাড়া কিছুই নয়; এখনো অর্ধেক আরব পড়তে জানে না।

২২ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৩৫

হৃদয়হীন মানব বলেছেন: বুঝলাম না ভাই , কি পড়তে জানেনা?

৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:



আরবী মেয়েরা ইতিহাসে সবচয়ে নির্যাতিত মহিলা; আরবেরা এখনো মেয়ে কিনে; হাউকাউ লেখা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.