নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মৌমাছি

TOMORROW>>>>>>>>>>>

হারুনূর

প্রয়োজন নাই ।

হারুনূর › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণতন্ত্রের মৃত্যু চাই

০১ লা মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:০১

মৃত্যুর কষ্ট কতখানি তীব্র হতে পারে তা আমি জানি না। মৃত্যুর কষ্ট লঘু করা যায় কিনা তাও আমার জানা নাই। তবে মৃত্যু মর্মান্তিক হতে পারে; নিষ্ঠুর হতে পারে। নিষ্ঠুর বা মর্মান্তিক মৃত্য আমাদের কাছে কখনো কাম্য নয়। আমার ছোট মামা একবার আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন যে, তুমি যদি কখনো দেখো যে তোমার কোন এক বন্ধুকে কিছু মানুষখেকো বন্য মানুষ চিতায় উঠিয়ে উল্লাস করছে এবং তুমি নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছ হাতে একটি পিস্তল নিয়ে যাতে একটি মাত্র বুলেট আবশিষ্ট আছে তখন তোমার বন্ধুর নিষ্ঠুর মৃত্যুকে রুধ করতে তুমি কি করবে? আমি তখন অনেক ছোট ছিলাম বলে এই প্রশ্নের কোন উত্তর খুজে পাই নি বা এই প্রশ্নের গভীরতা অনুভব করতে পারি নি। কিন্তু ঘটনাক্রমে সেই আমি আজ জাতীয় জীবনের এমনই এক পর্যায় অতিক্রম করছি।



আমার বয়স অনেক কম। আমি নব্বইয়ে গনতন্ত্রকে মূল্যায়ন করতে পারব না বা ছিয়ানব্বইয়ের গনতন্ত্রের সরূপ আমি ব্যাখ্যা করতে পারব না। কিন্তু আমি ২০০১ এর গনতন্ত্র দেখেছি; ২০০৮ এর গনতন্ত্র দেখেছি; ২০১৪ এর গনতন্ত্র দেখেছি। বার বার আসুস্থ গনতন্ত্রকে দেখতে দেখতে আমার রুচি বিকৃত হয়ে গেছে।এখন আমি আর সুস্থ গনতন্ত্রের সপ্ন দেখি না। আমার সপ্ন দেখার কোন ইচ্ছাও আর আবশিষ্ট নাই। তাই আমি গনতন্ত্রের শেকড়ের কাছে ফিরে যেতে চাই।



যদি প্রশ্ন করা হয় গনতন্ত্র কি তাহলে তার উত্তরটা মনে হয় সবাই দিতে পারবে। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয় যে গনতন্ত্রের জন্ম কেন হল তাহলে উত্তরটা দেওয়ার জন্যে অনেক কিছু উপলিব্ধি করতে হবে। উত্তরটা এমন হতে পারে যে, একজন সুশাসককে জনগনের সেবায় নিযুক্ত করাটাই গনতন্ত্রের মূল প্রতিশ্রুতি। কিন্তু সুশাসক জিনিসটা যে কি? তা আমার জীবদ্দশায় দেখি নাই। যে দেশের অর্ধেক মানুষ নিরক্ষর তারা কিভাবে নিজেদের জন্যে সুশাসক নিয়োগ করবে তা সহজেই অনুমেয়। যার নুন্যতম চিকিৎসা জ্ঞান নেই, সে কিভাবে অসুস্থ মানুষের ক্ষত সারাবে? মঙ্গল কামনা করতে গিয়ে অমঙ্গল বয়ে আনার সম্ভাবনাই এক্ষেত্রে বেশি থাকে। তাই হয়ত আমাকে বার বার গনতন্ত্রের নিষ্ঠুর পরিনতি দেখতে হয়েছে।



গনতন্ত্রের বয়স বেড়েছে ঠিকই; কিন্তু এখনো সে হাটতে শিখে নি, কথা বলতে শিখে নি। এই গনতন্ত্রকে অবশ্যই প্রতিবন্ধী বলা ছাড়া কোন বিকল্প খুজে পাচ্ছি না। প্রতিবন্ধী গনতন্ত্র দিয়ে আমি কি করব? দারিদ্র, প্রাকৃতিক দূর্যোগ আর অশিক্ষার ভার বহন করতে করতে জাতি আজ দিশেহারা হয়ে আছে। একটা প্রতিবন্ধী গনতন্ত্র সেখানে মরার উপর খাড়া ঘা হয়ে পথ রূদ্ধ করে রেখেছে। ‘আমি আর পারছি না; এবার আমায় মুক্তি দে’ এই বোবা কান্না আজ ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। তাই অপরাগ হয়ে আমি আজ গনতন্ত্রের মৃত্যু কামনা করছি।



২০১৪ এর ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন আমি দেখেছি। এদেশের সিংহভাগ মানুষকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেখি নি। আবার এদেরকে ভোটাধিকার আদায়ের জন্যে রাস্তায় নামতেও দেখি নি। এমন পরিস্থিতিকে আমি কিভাবে মূল্যায়ন করব? আমাকে আবারও শৈশবের সেই শিক্ষায় ফিরে যেতে হচ্ছে। একদল গনতন্ত্র খেকো মানুষ যখন গনতন্ত্রকে চিতায় উঠিয়ে উল্লাস করছে তখন অবশ্যই এদেশের মানুষ গনতন্ত্রের নিষ্ঠুর মৃত্যুকে রুধ করার জন্যে প্রিয় গনতন্ত্রের মৃত্য কামনা করে একমাত্র বুলেটটি যথাসময়েই ছুড়েছে। আমি নিজেও গনতন্ত্রের মৃত্যু কামনা করে সেই বুলেটটি ছুড়ায় অংশ নিয়েছিলাম। আমরা আজ গনতন্ত্র নয়, সুশাসক চাই। ভোটের অধিকার নয়, ভোটের মূল্য চাই। এ যেন এক দিশেহারা জাতির অসহায় আত্নসমর্পণ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.