নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Nature

হুতুম

হুতুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অভিজিতের হত্যা এবং পরবর্তী অধ্যায়!

০৫ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৫৪

অভিজিতের নির্মম হত্যার প্রতিবাদ দিয়েই শুরু করা যাক। হত্যার প্রতিবাদটাই এখন মূখ্য, তবে তার কালো অধ্যায়কে ধামাচাপা দিয়ে নয়! যে অধ্যায়ের রচয়িতা সে নিজে, তাকে কেন মুছতে হবে! অবশ্য সেটাই নানাভাবে করার প্রয়াস লক্ষ্যণীয়, রাজীব তথা থাবাবাবারে নিয়েও তাই হয়েছিল।

অভিজিতের মতো চরিত্ররা কয়েকবার হত্যা হয়! প্রথমে যে-ই মারুক, পরের বার মারে মুরিদরা! এটাই হয়ে আসছে, সূর্যের চেয়ে বালির তেজ বেশী, গুরুর চেয়ে মুরিদদের উৎসাহ বেশী! তবে লেবু কচলালে তেতো হয়, আর গুরুরে কচলাইলে মিথ হয়। মিথেও সত্য থাকে, অবশ্য মিথ্যার প্রাচুর্যে সত্য পাওয়াটা দূরহ হয়ে পড়ে। উটপাখি কোনকালে কখন বালিতে মুখ লুকিয়েছিল কে জানে, তবে ‘উটপাখি বালিতে মুখ গুঁজে’ মিথের কল্যাণেই!

অসাম্প্রদায়িকতা, প্রগতিশীলতা – ব্রান্ডেড নাম, এই সময়ে যথেষ্ট ওজন বহন করে, অভিজিতও এতে ভূষিত হচ্ছে। অসাম্প্রদায়িকতার কারণে অভিজিত নিহত হলে খুনীদের লিস্ট লাখ বিশেকে ভরে যেতো! অসাম্প্রদায়িকতা একটা আলখাল্লার মতো, পরলে ভালো মানায়, আর ভিতরটাকেও ঢাকা যায়। তাদের গুরু ছিলেন গোঁড়া নাস্তিক! আস্তিক গোঁড়া হলে প্রতিক্রিয়াশীল হয়, আর নাস্তিক গোঁড়া হলে প্রগতিশীল হয়।

প্রগতিশীলতা শব্দটা বামপন্থী কিংবা বামের দিকে হেলানোদের কাছে সম্পত্তিবিশেষ। তারা কেন প্রগতিশীল সেটা অবশ্য পুরোপুরি বুঝার উপায় নাই, অনুমান করা যায়। বেশ কিছুদিন আগে ফেসবুকে কিছু ‘প্রগতিশীল’দের দেখা গেল ইরানে ইসলামী বিপ্লবের আগে এবং আফগানিস্তানে কমিউনিস্ট শাসনের সময়কার কিছু ছবি শেয়ার করতে। ইরান কিংবা আফগানিস্তানে একসময়ে মেয়েরা যে কতো স্বাধীনতা ভোগ করতো সেটাই বুঝানো। অবশ্য সমীকরণে ফেললে ‘প্রগতিশীলতা’কেই পাওয়া যাবে। ছবিগুলোতে ছিল মূলত শর্টস ও বিকিনি পরিহিত কিছু মেয়ে! বাঙ্গালী যে শত বছর আগে কতো আধুনিক ছিল সেটাও জানা হয়েছে তাদের কল্যাণেই!

অভিজিতও প্রগতিশীল, তবে কী কারণে প্রগতিশীল যথারীতি সেটাও বুঝার উপায় নেই। প্রগতিশীলরা না জেনেও প্রগতিশীল উপাধি দিতে এবং নিতে পারে। ইসলামী রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা সাংস্কৃতিক দলকে সাধারণত প্রগতিশীল দাবী করতে দেখা যায় না, সম্ভবত পশ্চাৎপসারণতাকে মেনেই তারা ধার্মিক হয়, ১৪ শো বছরের একটা হিসেব আছে! অবশ্য হাজার বছরের ঐতিহ্য নিয়ে বাঙ্গালী প্রগতিশীলরা প্রগতিশীলতায় তাদের স্বত্ব দিতে নারাজ! প্রগতিশীলতার লিটমাস টেস্ট – ধর্মের বিরুদ্ধাচারণ (সরল হিসেবে সেটা ‘ইসলাম’!!)।

নাস্তিক মানে ধর্মবিরোধী আর মুক্তমনা মানে ইসলাম বিদ্বেষী! অভিজিত মুক্তমনা তথা ইসলাম বিদ্বেষীদের জন্য একটা কমন প্ল্যাটফর্ম তৈরী করে সেই বিদ্বেষের চাষাবাদ করে গেছে। জ্ঞানবান্ধব ‘প্রগতিশীল’রাও সেখানে বিচরণ করতো, লেখালেখি করতো। বিজ্ঞানের বিশেষ গবেষণা হতো, প্রগতিশীলতা এবং অসাম্প্রদায়িকতার আলখাল্লার মতো।

অভিজিতের মুক্তমনার ইসলামবিদ্বেষে শ্রেণীসংগ্রামের বটিকা থাকায় বামরাও ভিড়তো। বামদের অপকর্মের দায় আপামর নাস্তিকরা নিতে অপরাগ, অথচ রাজপথে অতি ক্ষুদ্র বামদের ছাড়া তাদের চলেও না! আর আপামর মুক্তমনারা কলমেই বীরত্ব খুঁজে পায়, এতে নিরাপদ দূরত্বে থেকে রাজা-উজীর মারা যায়। কলম দিয়েও অন্যায় করা যায়, আহত করা যায়, অসততা ও মিথ্যার পাহাড় গড়া যায়। বেচারাদের আবার আফসোস, তারা অস্ত্র দিয়ে হত্যা করতে পারে না! অবশ্য মারার কাজটা তাদের হয়ে অন্য কেউ করে দিলে ঠিকই খুশী হয়! হেফাজতের হুজুরদের রক্তের বিনিময়ে তাদের চেনা গিয়েছিল!

অবশ্য বামরা তুলনামূলকভাবে অনেক সোজাসুজি, কিন্তু বামদিকে হেলানোরা বর্ণিল। এই হেলানোর মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী আছে, আছে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদীরা (অন্য জাতীয়তাবাদীরা ধর্মের সাথে মিশ্রণ তৈরী করে না-ঘরকা না-ঘটকা টাইপের হয়ে গেছে!) এবং কাল্ট এর সদস্যরাও। ঐসব প্রগতিশীলরা রাসুল (সাঃ)-এর বিবাহিত জীবন, চরিত্র, প্রতিরক্ষার যুদ্ধ নিয়ে করা বিদ্রুপকে অবলীলায় হজম করতে পারে, এবং স্থানবিশেষে উস্কানি দিতেও কার্পণ্য করে না। যদিও সময় সুযোগে তাদের অনেকে আবার কোরান হাদিসও টানে! বিষয়টা প্রায়রিটির। লতিফ সিদ্দিকী ভরা কক্ষে রাসুল (সাঃ)-কে নিয়ে বিদ্রুপ করলে হজম করতে পারে প্রায়রিটির জায়গাটা আহত না হবার কারণেই! অভিজিতদের ব্যাপারেও সেই হজমটাই চলে! হজমিটা হল ‘বাকস্বাধীনতা’ এবং বিশেষকিছুতেই কেবল হরণ হয়। অবশ্য, এভাবেই নানা বৈচিত্রের সমন্বয়ে ডান, বাম, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী, প্রগতিশীল ইত্যাদি নিয়ে ১.৬ বিলিয়ন মুসলমান হয়!

হত্যা কখনো কাম্য নয়। অভিজিত হত্যার বিচার হোক। সাথে বন্ধ হোক মুক্তমনাদের ইসলাম নিয়ে ঘৃণার চাষাবাদ!

লেখক শামস



সূত্র

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.