নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

~ An Average, An Explorer ~

ওমর ফারুক কোমল

অজ্ঞ এক মানবসন্তান

ওমর ফারুক কোমল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকার ঐতিহাসিক ঢাকেশ্বরী মন্দির

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০০



বাংলায় তখন সেন রাজবংশের দ্বিতীয় রাজা বল্লাল সেন রাজত্ব করছিলেন। একদা রাত্রিতে তিনি স্বপ্ন দেখলেন ঢাকার এক জঙ্গলে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছেন এক দেবী। অতঃপর সেই দেবী কে খুঁজে বের করে সেখানেই তৈরি করা হল একটি মন্দির। ঢাকার ঈশ্বরী অর্থাৎ ঢাকার রক্ষাকর্ত্রী দেবী হিসেবে সেই দেবীর মন্দিরের নাম ছড়িয়ে পড়ল সর্বত্র। যেটি পরবর্তীতে ঢাকেশ্বরী মন্দির নামে পরিচিতি লাভ করল।

আবার আরেকটি জনশ্রুতি অনুযায়ী বল্লাল সেন যখন মাতৃগর্ভে তখন তার মা নির্বাসিত হয়ে বুড়িগঙ্গার একটি জঙ্গলে এসে আশ্রয় নেয় এবং এখানেই তিনি প্রসব করে পুত্র বল্লাল সেনকে। শৈশব কালে এই জঙ্গলেই বল্লাল সেন একটি দেবী মূর্তি খুঁজে পায়। এবং পরবর্তীকালে রাজ ক্ষমতায় আসীন হবার পর সেই স্থানেই একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।


(ছবিঃ ১৯০৪ সালের ঢাকেশ্বরী মন্দির)

আবার কেউ কেউ বলেন, রাজা বিজয় সেন একবার লাঙ্গলবন্দে গিয়েছিলেন গঙ্গাস্নান করতে। সেখান থেকে ফেরার পথে জন্ম নেয় তাঁর একটি পুত্রসন্তান, যার নাম রাখা হয় বল্লাল সেন। এই বল্লাল সেন যখন সিংহাসনে বসেন তখন তাঁর জন্মস্থানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যে তিনি এই ঢাকেশ্বরী মন্দির তৈরি করেন।

অন্যদিকে গবেষক ড. রতনলাল চক্রবর্তীর মতে, “ঢাকেশ্বরী মন্দিরটির নির্মাণ-শিল্প ও গঠন-প্রণালী বৌদ্ধ মঠের মতো। ...সম্ভবত এটি পূর্বে ছিল বৌদ্ধ মন্দির, পরে যা রূপ দেয়া হয় হিন্দু মন্দিরে।” এই তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে তিনি অনুমান করেন মন্দিরটি দশম শতকের দিকে নির্মিত।


(মন্দিরটির আরও একটি পুরাতন ছবি)

তবে, বাংলাদেশের জাতীয় এবং ঢাকার প্রথম এই মন্দিরটি যেভাবেই নির্মিত হয়ে থাকুক না কেন এর নান্দনিক সৌন্দর্যে আমি বেশ মুগ্ধ হয়েছি। ঢাকার যত পুরাতন মন্দির আমি দেখেছি তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে সুন্দর এবং গোছানো বলে মনে হয়েছে। এটির প্রকৃত রূপ (অর্থাৎ প্রতিষ্ঠাকালে যেই রূপ ছিল) কিন্তু এখন আর নেই। জানা যায়, মানসিংহ নামের বাংলার এক সুবেদার মন্দিরটিকে বেশ কয়েকবার সংস্কার করে।


(ছবিঃ মন্দিরের ফটকের সামনে)

প্রাচীন এই মন্দিরটি প্রধানত দুভাগে বিভক্ত। পূর্বদিকে প্রধান মন্দির, নাট মন্দিরসহ কয়েকটি ইমারত। আর পশ্চিম অংশে কয়েকটি মন্দির, পান্থশালা, কয়েকটি কক্ষ ও উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বি একটি পুকুর।


(ছবিঃ মন্দিরের মূল অংশ, কৃতজ্ঞতা উইকিপিডিয়া)

দুর্ভাগ্যবশত আমার পিসি থেকে বেশ কিছু ছবি মুছে যায়। যার দরুন নিজের তোলা তেমন কোন ছবি দিতে পারলাম না। যাহোক, সবশেষে বলব ঢাকার এই ঐতিহাসিক মন্দিরটি বেশ সমৃদ্ধভাবেই মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে। এমনিভাবেই দাড়িয়ে থাকুক ঐতিহাসিক সকল স্থাপনা। এমনিভাবেই ভরিয়ে দেক ভ্রমণপিপাসুদের অন্তর।


-০৬/আগস্ট/২০১৫ ইং, ঢাকা

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২২

চাঁদগাজী বলেছেন:


"দুর্ভাগ্যবশত আমার পিসি থেকে বেশ কিছু ছবি মুছে যায়। যার দরুন নিজের তোলা তেমন কোন ছবি দিতে পারলাম না। "

-এই মন্দিরের বিশেষ কিছু ছবি নিজের থেকে মুছে যায়, পিসি, বা ক্যামেরা থেকে সেগুলো মুছেই যায়; এটি হয়তো আপনি জানতেন না বলে, আপনার হারিয়ে যাওয়া ছবি জন্য খারাপ লাগছে; আসলে, এটা ভালো একটা মিরাকল, আপনি সৌভাগ্যবান

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩৭

ওমর ফারুক কোমল বলেছেন: আরে বস, কি বুঝাইলেন কিছুই বুঝলাম না। তবে কথা হইল, শুধু এইখান কার ছবিই না, আমার অনেক ভ্রমনেরই বেশ কিছু ছবি মুছে যায়। এসডি কার্ড নষ্ট হয়ে যাওয়াতে আরকি। এই দুই একটা ছবি ফেবুতে আপলোড ছিল বলে সেখান থেকে ডাউনলোড করে দিতে পারসি। :)

২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫১

ঢাকাবাসী বলেছেন: খুব ভাল একটা পোস্ট, দারুণ লাগল। সেন বংশ রাজত্ব করে ১০৭০ খ্রীঃ থেকে প্রায় দুশ বছর সুতরাং এই মন্দির সেন রাজাদের বানানো সেই মন্দির হতে পারেনা। ১৯০৪ এর ছবির মন্দিরটাই এটা যা বহুবার পুনর্নিমান করা হয়!

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩৯

ওমর ফারুক কোমল বলেছেন: হতে পারে ভাইজান। প্রাচীন স্থাপত্য গুলো ঘাটতে গিয়ে এই মধুর সমস্যায় হরহামেশা পড়তে হচ্ছে।

৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১৮

আহা রুবন বলেছেন: ছবির মাঝে মাঝে ছোট বর্ণনা কিন্তু প্রাঞ্জল! মনোযোগ দিয়ে দেখে-পড়ে গেলাম।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪১

ওমর ফারুক কোমল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.