![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মহিলাটি ইতস্তত করে বলল
'আমার মেয়ের উপর ভর হয়'
আমি বললাম, ' কি ভর হয়?!'
সে বলল, 'পরী!'
পাশে বসা মেয়েটি ফিক করে হেসে ফেলল। আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকালাম। এর উপরই ভর করে পরী! কিশোরীর মুখে দুষ্টুমীর হাসি। লাবণ্যমাখা একটি মুখ। চোখ দুটি টানা টানা। কেমন দেবী দেবী একটা ভাব আছে তার মধ্যে।
মা বলে চলছে, 'অনেক ডাক্তার কবিরাজ দেখাইছি। তারা এইটা ওইটা ঔষধ দেয়, খেয়ে কোন কাজ হয় না। 'সে' বলছে এইসব ঔষধ খাইলে তার আরও ক্ষতি হবে। ভবিষ্যতে মেয়ের কোনদিন বাচ্চা কাচ্চা হবে না।'
আমি ঘটনা বুঝতে চেষ্টা করছি। কিশোরী মেয়ে। সাইকোলজিক্যাল কেস হবার সম্ভাবনাই বেশি। এই বয়সে মানুষের মন লাগামহীন হয়ে যায়। অদ্ভুত চিন্তাধারা তাদের ঘিরে রাখে। তাদের কর্মকান্ড কোন কিছু দিয়েই ব্যাখ্যা করা যায় না। মেয়েটি হয়ত দৃষ্টি আকর্ষণের এই ধরনের কাজ করে থাকে। তার কর্মকান্ডের অস্বাভাবিকতা সে ধরতে পারে না। অনেক সময় ভয়ংকর কিছু করে ফেলে। যদি অসুস্থতা বাড়তে থাকে তবে সন্তান ধারণের পর নিজের সন্তানকে নিজেই মেরে পরীর উপর দোষ চাপাতে পারে।
তবে কোরআন শরীফে জ্বিনের কথা বলা আছে। আমার মত যারা তা বিশ্বাস করি এই দিকটাও ফেলে দিতে পারি না।
সমস্যা হচ্ছে মেয়েটার উপর ভর করা পরী তাকে শুধু পড়াশুনা করার সময় বিরক্ত করে। পড়তে বসলে, কোচিং কিংবা স্কুলে যাওয়ার সময় তাকে বাধা দেয়।
সেটাও শেষে জিজ্ঞেস করলাম, 'পড়াশুনার প্রতি পরীর এত অনীহা কেন?!'
মা বলল, 'এক সাধু বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম সে কথা, সে বলছে তার পড়াশুনা করার দরকার নাই। তার উপর স্বয়ং মা দূর্গা ভর করেছে!'
আমি আবার মেয়েটির দিকে তাকালাম। লাবণ্যমাখা কিশোরী একটা মুখ। টানা টানা চোখ। এখন কেন জানি দেবী দেবী লাগছে মুখটাকে।
ঔষধ লিখে দিলাম। বললাম, 'পরীকে বলবে তুমি পড়াশুনা করতে চাও, সে যদি তোমার ভাল চায় তোমাকে যেন পড়াশুনা করতে বাধা না দেয়। আর বলবে ডাক্তার বলেছে এই ঔষধ খেলে কোন ক্ষতি নাই'।
দেবী কি বুঝল কে জানে। আমার দিকে রহস্যময় হাসি দিয়ে চলে গেল।
©somewhere in net ltd.