![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৩ দফা দাবির ব্যাখ্যা প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম ইনকিলাব থেকে কপি পেষ্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো : গত ৬ এপ্রিল ঢাকার মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশেরহেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে-পরবর্তী মহাসমাবেশ থেকে ঘোষিত ১৩ দফা দাবির ব্যাখ্যা প্রকাশ করেছে অরাজনৈতিক সংগঠনটি। এসব দাবি নিয়ে কোন কোন মহল থেকে উত্থাপিত সমালোচনা ও বিতর্কের প্রেক্ষিতে হেফাজতে ইসলাম তাদের দাবি সম্পর্কে ব্যাখ্যাটি দিয়েছে। গতকাল (শনিবার) হেফাজতে ইসলামের আমীর দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ্ আহ্মদ শফী সকল অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি নিরসনে ১৩ দফা দাবির এই ব্যাখ্যা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের উত্থাপিত ১৩ দফা দাবি নিয়ে কোনরূপ বিভ্রান্তি ও অপপ্রচারের সুযোগ নেই। আমরা গত ৯ মার্চ জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে দেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে এই দফা দাবি প্রণয়ন করেছি। আমাদের সকল দাবি মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদার সংরক্ষণ এবং দেশের স্বাধীনতা, সামাজিক শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। সুস্থ বিবেকের কোন নাগরিকই আমাদের যে কোন দাবির বিরোধিতা করতে পারেন না। আল্লামা শাহ আহমদ শফী আশা প্রকাশ করে বলেন, ১৩ দফা দাবি নিয়ে এই ব্যাখ্যা প্রকাশিত হওয়ার পর আর কোন বিভ্রান্তি থাকবে না।
আল্লামা শাহ আহমদ শফী জানান, ১২ ও ১৩নং দাবির বক্তব্য প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় এই ২টিকে একীভূত করা হয়েছে এবং পরিস্থিতির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে ১৩ নম্বরে নতুন দাবি সংযোজন করে হেফাজতে ইসলামের দাবিসমূহ আরো যুগোপযোগী করা হয়েছে।
আল্লামা শাহ আহমদ শফী উপস্থাপিত হেফাজতে ইসলামের ১৩ দাফা দাবির ব্যাখ্যা নিম্নরূপÑ
১। সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। এদেশের জনসংখ্যার ৯০ ভাগই মুসলমান। আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস মুসলমানদের ঈমানের প্রধান বিষয়। এদেশের মানুষ ধর্মপরায়ণ এবং তাদের ধর্মীয় চেতনা অত্যন্ত শানিত। আযানের ধ্বনিতে এদেশের মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। ইসলামী আচার-আচরণ, সংস্কৃতি তাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এই বিশাল ধর্মপ্রাণ জনগণের বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনার প্রতিফলন হিসেবেই সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে শুরুতে বিসমিল্লাহ এবং আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাসকে সংবিধানের প্রধান মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মহাজোট নেতৃত্বাধীন এবং বামপন্থীদের প্রভাবাধীন বর্তমান সরকার কারো মতামতের তোয়াক্কা না করে একতরফাভাবে সংবিধান সংশোধন করে। সর্বশেষ পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের মূলনীতি থেকে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস উঠিয়ে দিয়ে তদস্থলে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি যুক্ত করে। সরকার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে একতরফাভাবে এই কাজটি করে দেশকে ধর্মহীনতার দিকে নিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করেছে, যাতে বামপন্থী ও নাস্তিক ধর্মবিদ্বেষীদের বহুদিনের পুরনো আকাক্সক্ষা পূরণ হয়। এর মাধ্যমে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের ঈমানের ওপর প্রচ- আঘাত হানে সরকার। দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখসহ দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষ এর তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়ে এবং হরতালসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। কিন্তু সরকার কারো কোন দাবির প্রতিই কর্ণপাত করছে না।
এরপর সরকার ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির আলোকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে শুরু করে। ইতোমধ্যে যার প্রতিফল আসতে শুরু করেছে। পাঠ্যপুস্তকে ইসলামবিরোধী বক্তব্য সংযোজন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বইয়ে অশালীন যৌন শিক্ষার বিষয় যুক্ত করা এবং ধর্মীয় চেতনা ধ্বংস, অপসংস্কৃতি বিস্তারের নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। দেশে নাস্তিক্যবাদের বিস্তার এবং ধর্ম অবমাননা ভয়াবহ রূপে দেখা দেয়, যা জাতি ইতোমধ্যেই প্রত্যক্ষ করেছে।
এ কারণেই সংবিধানে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাসের নীতিটি পুনঃস্থাপনের জন্য এদেশের তৌহিদী জনতা দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে রাজপথে নেমেছে। হেফাজতে ইসলাম অত্যন্ত যৌক্তিক কারণেই দেশের মানুষের ঈমান-আক্বীদা ও চিন্তা-চেতনার সাথে জড়িত এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে তাদের প্রধান দাবি হিসেবে পেশ করেছে।
ইতোমধ্যেই ৬ এপ্রিল লংমার্চের মাধ্যমে সারাদেশের কোটি কোটি মানুষ এই দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সরকারি প্রতিবন্ধতা উপেক্ষা করে ঢাকার মহাসমাবেশে জড়ো হওয়া লাখ লাখ তৌহিদী জনতার সাথে সারা দেশের মানুষ এই দাবিসহ ১৩ দফা দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেছে। এটি এখন এদেশের তৌহিদী জনতার প্রাণের দাবি। এই দাবি অত্যন্ত পরিষ্কার এবং যৌক্তিক।
২। আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ পৃথিবীর কোন ধর্ম কিংবা দেশ-সমাজে ধর্ম অবমাননাকে স্বীকৃতি দেয়নি। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার কোন অধিকার কারো নেই। তারপরও একশ্রেণীর ধর্মান্ধ, ধর্মদ্রোহী নাস্তিক মুরতাদ ধর্ম অবমাননা করে থাকে এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে থাকে। এ জন্য পৃথিবীর বহু দেশে ধর্ম অবমনানার কঠোর শাস্তির বিধান সম্বলিত আইন রয়েছে।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে, পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ বাংলাদেশ হওয়া সত্ত্বেও এদেশের ৯০ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী হওয়া সত্ত্বেও এক শ্রেণীর ধর্মবিদ্বেষী নাস্তিক মুরতাদ ও ভিন্নধর্মাবলম্বী ক্রমাগতভাবে ইসলামের ওপর আঘাত করে আসছে। এই ধর্ম অবমাননা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত প্রতিকারে এদেশের আলেম-ওলামাসহ তৌহিদী জনতা তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলন করার পাশাপাশি ধর্ম অবমাননার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান করে আইন পাসের দাবি জানিয়ে আসছে অনেক আগে থেকেই। কিন্তু কোন সরকারই গুরুত্বপূর্ণ ও ন্যায্য এই দাবির প্রতি কর্ণপাত করেনি। সর্বশেষ শাহবাগের আন্দোলনের সাথে জড়িত ব্লগারদের ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে চরম অবমাননা ও কটূক্তির খবর জনসমক্ষে আসে। তার আগে সর্বোচ্চ আদালত ব্লগারদের ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিলেও বর্তমান সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আগে সালমান রুশদী তসলিমা নাসরিনের মতো ব্যক্তিরা বিছিন্নভাবে ধর্ম অবমাননা করেছে। তৌহিদী জনতার প্রতিবাদ আন্দোলনের মুখে তারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। ধর্ম অবমাননার এই প্রবণতা এখন মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। নাস্তিক মুরতাদ ও ভিন্নধর্মী ইসলাম বিদ্বেষীরা এখন সংঘবদ্ধভাবে এই কাজটি করছে। অনলাইনে ব্লগে, ফেসবুক-টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করে কার্টুন এঁকে তারা এই কাজটি করে যাচ্ছে। এটা দেশের তৌহিদী জনতা কোনভাবেই মেনে নিতে পারে না। তাই ধর্ম অবমাননার জন্য কঠোর শাস্তি তথা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান করে আইন পাস করা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। ধর্ম অবমাননার মাধ্যমে কোন স্বার্থান্বেষী মহল যাতে দেশে কোন বিশৃঙ্খলা বা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধাতে না পারেÑ এই দিক বিবেচনায়ও এ ধরনের আইন করা জরুরি।
পবিত্র কুরআন এবং হাদীসের একাধিক বাণীতে নাস্তিক মুরতাদদের ন্যায্য শাস্তি মৃত্যুদ-ের কথা বলা হয়েছে। এ শাস্তি কার্যক্রম বহাল করার জন্য ইসলামী রাষ্ট্র কিংবা শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের দরকার নেই। শরীয়তের যেসব বিধান মতে মুসলিম সমাজে বিয়ে হয়, তালাক হয়, সম্পদ বণ্টন হয়, সেসব প্রচলিত ধারায় এই আইন বাস্তবায়ন করা যায়। মরহুম প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানের অবমাননাকারীদের শাস্তির বিধান থাকতে পারলে কোটি কোটি মুসলমানের প্রাণাধিক প্রিয় আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের কটূক্তিকারীরা নিরাপদ থাকবে, তাদের কঠোর কোন শাস্তির বিধান বা আইন থাকতে পারবে না, এটা যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এই ন্যায় আইনের জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হবে কেন? সরকার স্বপ্রণোদিতভাবে এ আইন বাস্তবায়ন করে ঈমানী দায়িত্ব পালন করতে পারে।
৩। তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কতিপয় ব্লগার, নাস্তিক-মুরতাদ ও ইসলামবিদ্বেষীদের সকল অপতৎপরতা ও প্রচারণা বন্ধ করতে হবে এবং যে সকল নাস্তিক-মুরতাদ ও ইসলামবিদ্বেষী ব্যক্তি-সংগঠন যে কোন মাধ্যমে আল্লাহ-রাসূল (সা.), ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে দেশের ৯০ শতাংশ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে, তাদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্লগার এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে যারা মুক্ত-চিন্তা ও বাকস্বাধীনতার আড়ালে কোটি কোটি মানুষের মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ, প্রিয় নবী রাসূল (সা.), পবিত্র কুরআন ও ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে জঘন্য কুৎসা ও অবমাননায় জড়িত। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ ছাড়াও দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে এবং সভ্যতা-ভব্যতা ও গণতন্ত্রের কোন মাপকাঠিতেই এমন কুৎসা ও অবমাননা মেনে নেয়া যায় না। ওরা ইসলামের এমন জঘন্য অবমাননা করেছে, যা পশ্চিমা বিশ্বের কোন অমুসলিমের মুখেও কখনো শোনা যায়নি। সুস্থ বিবেকের কোন মুসলমানের পক্ষে এসবের সম্পূর্ণটা পড়ে দেখার সাধ্যও নেই।
ধর্ম অবমাননাবিরোধী আইনের আওতায় এসব ব্লগারের সবাইকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দাবি করছি আমরা। কারণ এদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে, দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারীরা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে দ্বিগুণ উৎসাহে এ ধরনের হীন তৎপরতা অব্যাহত রেখে দেশকে চরম বিশৃঙ্খলা ও গণঅসন্তোষের দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা দেশের স্বাধীনতা, সুশৃঙ্খলা ও আইনি কাঠামোর জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করতে পারে।
৪। দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারী জাতির সার্বিক উন্নতির বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে তাদের নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মস্থল, সম্মানজনক জীবিকা এবং কর্মজীবী নারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে-বাইরে ও কর্মস্থলে নারীদের ইজ্জত-আব্রু ও যৌন হয়রানি থেকে বেঁচে থাকার সহায়ক হিসেবে পোশাক ও বেশভূষায় শালীনতা প্রকাশ ও হিজাব পালনে উদ্বুদ্ধকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং একই লক্ষ্যে নারী-পুরুষের সকল প্রকার বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে অবাধ ও অশালীন মেলামেশা, নারী-নির্যাতন, যৌন হয়রানি, নারীর বিরুদ্ধে সর্বপ্রকার সহিংসতা, যৌতুকপ্রথাসহ যাবতীয় নারী নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাস্তিক্যবাদী ব্লগাররা শুধু আল্লাহ, রাসূল, ইসলাম ও মুসলমানদের নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করেই থামেনি, সাথে সাথে আবহমান বাংলার রক্ষণশীল সামাজিক অনুশাসন এবং সংস্কৃতির উপরও আঘাত করে অনেক কর্মকা- ইতোমধ্যে করে ফেলেছে। বিয়ে বহির্ভূত ও ঘনিষ্ঠ অনাত্মীয় নারী-পুরুষের দৃষ্টিকটু বিচরণ ও রাস্তায় একসঙ্গে; এমন কি একই তাঁবুতে অবস্থান করে রাত যাপনের মত অনৈসলামিক, অনৈতিক, অসামাজিক ও এদেশের আবহমান কৃষ্টিকালচার সংস্কৃতি বিরোধী কাজ প্রকাশ্যে ঘটছে শাহবাগে। ধর্মীয় অনুভূতি ছাড়াও যা পারিবারিক, সামজিক এবং জাতীয় সাংস্কৃতিক দৃষ্টিতেও কখনো গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
শাহবাগে যে কালচারের চর্চা চলেছে ও চলছে, তা দেশে চালু হলে নারীদের নিরাপত্তা সর্বক্ষেত্রেই বিঘœ হবে। দেশের নারী সমাজকে ইভটিজিং, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি থেকে বাঁচিয়ে রেখে সর্বোপরি নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই উপরোক্ত কর্মকা- বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। ইসলাম নারীর মর্যাদা, নিরাপত্তা এবং যৌন হয়নারি থেকে বেঁচে থাকার জন্য হিজাব প্রথা বাধ্যতামূলক করেছে এবং পুরুষদেরও বৈধ সম্পর্কের বাইরে নারীদের সাথে দৃষ্টি অবনত রেখে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করতে বলে চমৎকার ভারসাম্য রক্ষা করেছে। কাজেই হিজাব পালন করে, অথবা যৌন উদ্দীপনা তৈরি করে নাÑ এমন শোভনীয় পোশাক পরে নারীরা নিরাপদ কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে বা ঘর থেকে বের হতে তো কোন বাধা নেই। ইসলাম নারীর নিরাপত্তার দিকটা কঠোরভাবে দেখে। কেবল সুযোগসন্ধানীরাই এটাকে নারী অবদমন বলে অপপ্রচার চালায়। আমাদের কথা পরিষ্কার যে, হিজাব বা শালীনতার সাথে নারীদের নিরাপদ পথচলাচল, শিক্ষার্জন ও কর্মক্ষেত্রে যেতে কোন বাধা নেই। উদাহরণত ঃ নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য আলাদা বালিকা বিদ্যালয় বা মহিলা কলেজ থাকতে পারলে আলাদা কর্মক্ষেত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আপত্তি তোলার যুক্তি থাকতে পারে না।
৫। নারীনীতি ও শিক্ষানীতির ইসলামবিরোধী ধারা ও বিষয়সমূহ বিলুপ্ত করতে হবে এবং শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলামের মৌলিক শিক্ষা মুসলিম ছাত্রদের জন্য বাধ্যতামূলক করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ ত্যাজ্য সম্পত্তিতে সমঅধিকারের আইনসহ নারীনীতির পবিত্র কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী ধারাগুলোই আমরা সংশোধনের দাবি করছি। এছাড়া জাতিসংঘ কর্তৃক বিতর্কিত সিডো সনদ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। এই সিডো সনদের বিরুদ্ধে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় নেতা পোপ ও ভ্যটিকানসহ অনেক মুসলিম ও খ্রিস্টান দেশ আপত্তি জানিয়েছে। এই সিডো সনদ কার্যকর হলে পারিবারিক ব্যবস্থা বলে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। এই বিতর্কিত সনদে বিয়ে বহির্ভূত অবাধ যৌনাচারের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে সন্তানের পিতৃ পরিচয় বিলীন হয়ে যাবে। আমরা নারী সমাজকে স্পষ্ট করে জানাতে চাই, ইসলাম সর্বোত্তম উপায়েই নারীদের মর্যাদা, অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার পক্ষে। আর বর্তমানের নাস্তিক্যবাদীরা নারীদের কেবল অলংকারিক ও ভোগ্যপণ্য রূপেই বিবেচনা করে।
অন্যদিকে সরকার ঘোষিত শিক্ষা নীতিতে ধর্মীয় শিক্ষাকে সংকোচিত করা হয়েছে। এখানে ধর্ম শিক্ষা রাখা হলেও ছাত্র-ছাত্রীদের মন ও মননে ধর্মহীন করার জন্য কূটকৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। চলতি ২০১৩ সালের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্য বইসমূহে ইসলামের যে অপব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে, তা চরম অগ্রহণযোগ্য। তাছাড়া কোমলমতি ছেলে-মেয়ে শিশুদের ক্লাসে একসাথে বসিয়ে যেভাবে যৌন শিক্ষা চালু করা হয়েছে, তা এদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নৈতিকতা ও সুস্থ সামাজিক অনুশাসনকে চরম হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। মানুষকে যাবতীয় পশুপ্রবৃত্তি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অন্যায়-অপরাধ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে ধর্মশিক্ষা বা ধর্মীয় অনুভূতির বিকল্প নেই। এ কারণে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের উদ্যোগ থেকেই আমরা দাবি জানিয়ে আসছি যে, শিক্ষার সকল স্তরে সঠিক ধর্ম শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ইসলাম সবসময় অন্যায়, অবিচার, ঘুষ-দুর্নীতি, মদ-জুয়া, মিথ্যা, খুন, ধর্ষণ, মারামারি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখে। সুতরাং সুস্থ মানসিকতাপূর্ণ আদর্শ নাগরিক গঠনে ধর্মীয় শিক্ষার বিকল্প কিছু হতে পারে না।
৬। ভাস্কর্যের নামে মূর্তিস্থাপন, মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলনের নামে শিরিকী সংস্কৃতিসহ সকল বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ দেশে ভাস্কর্যের নামে আবক্ষ নারী-পুরুষ বা জীবজন্তুর মূর্তি তৈরি ও ফুল দিয়ে সে সবকে সম্মানপ্রদর্শনের রেওয়াজ যে হারে শুরু হয়েছে, তা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে কখনো কাম্য হতে পারে না। ইসলামে স্পষ্টভাবে মূর্তি তৈরি ও সম্মান প্রদর্শনকে শিরক ও হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আমরা কখনো প্রাণহীন শিল্পকর্মের বিরোধী নই। বরং ইসলাম সৌন্দর্য ও জ্ঞান-উদ্দীপক শিল্পকর্মকে উৎসাহিত করে।
অপরদিকে মঙ্গলপ্রদীপ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন অগ্নিপূজক ও পশ্চিমা সংস্কৃতি। কথিত গণজাগরণ মঞ্চ থেকে এটাকে এদেশে ঢালাওভাবে প্রচলনের জোর চেষ্টা চলছে। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে অগ্নিপ্রজ্জ্বলনের মতো পশ্চিমা ও বিজাতীয় এই সংস্কৃতির প্রচলন কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কারো ধর্মী আচরণে এ ধরনের কোন সংস্কৃতির চর্চার বিধান থাকলে সেটা তারা নিজেদের পরিসরে পালন করতে পারে। কিন্তু কথিত গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ঘোষণা দিয়ে ঢালাওভাবে এদেশের তরুণ ও ছাত্রসমাজকে দিয়ে এই সংস্কৃতি চর্চা করিয়ে জাতীয় সংস্কৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এদেশের তৌহিদী জনতা এটা মেনে নিতে পারে না। এই ধরনের কার্যক্রম বন্ধের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক এবং বাস্তবসম্মত।
৭। রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামী কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসি-ঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় খল ও নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ বর্তমানে উপরোক্ত গণমাধ্যমে ইসলামী নিদর্শন নিয়ে হাসি-তামাশা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে। খুনি, দাঙ্গাবাজ, সন্ত্রাসী ও দেশদ্রোহী চরিত্রে পায়জামা-পাঞ্জাবি ও দাড়ি-টুপি চরিত্রধারীদের উপস্থাপন করা হয়, যা স্পষ্টতঃই ইসলাম ও মুসলমানদের ষড়যন্ত্রমূলক হেয় করা ছাড়া আর কিছু নয়। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এমন আচরণ কোনভাবেই চলতে দেয়া যায় না এবং এটা সুস্থ চিন্তার মতপ্রকাশও হতে পারে না। এর কুফল বর্তমানে সমাজে পড়তে শুরু করেছে। কথিত শাহবাগিরা দাড়ি-টুপিধারী, বয়োবৃদ্ধ মুসলমান ও ইসলামী সংস্কৃতির প্রতি যেভাবে হামলে পড়ছে, তা অমুসলিম দেশেও সচরাচর দেখা যায় না। আমাদের এই দাবির যৌক্তিকতাও বলার অপেক্ষা রাখে না।
৮। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘেœ নামায আদায়ে বাধা-বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ বর্তমানে রাজনৈতিক কারণে মসজিদ-মাদ্রাসায় অনাকাক্সিক্ষত বিভিন্ন ধরনের হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। জুমার দিন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের বিভিন্ন গেট বন্ধ রাখা, গুলিবর্ষণ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ, তল্লাশির নামে হয়রানি, বুট জুতা নিয়ে পুলিশের মসজিদে প্রবেশসহ হরেক রকমের অবমাননা ও মুসল্লিদের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় ওয়াজ ও তাফসীর মাহফিলে বাধাদান, মাইক খুলে নেয়া ও অনুমতি না দেয়ার মত ঘটনাও ঘটছে। ধর্মকর্ম পালনে এবং মসজিদে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা বা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে চাপিয়ে দেয়া ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
৯। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখ-তা রক্ষার স্বার্থে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ঈমান ও দেশবিরোধী কর্মকা-ে জড়িত এনজিও ও খ্রিস্টান মিশনারীদের ধর্মান্তকরণসহ সকল অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে পশ্চিমা খ্রিস্টান বিশ্ব সুগভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত; এটা এখন আর কারো কাছে গোপন বিষয় নয়। খ্রিস্টান মিশনারীসমূহের পার্বত্য এলাকায় ধর্মান্তকরণ প্রক্রিয়া এতটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, যা এদেশের স্বাধীনতা ও অখ-তার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। এছাড়াও অনেকগুলো চিহিৃত এনজিও দেশের শিক্ষায় অনগ্রসর ও অনুন্নত এলাকায় বেছে বেছে সাহায্য-সহযোগিতা ও শিক্ষাদানেরর আবরণে মুসলমান শিশু-কিশোর ও বয়স্কদের খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করছে, যা খুবই উদ্বেগজনক। আমাদের দাবি হলো, সরকার আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা বাহিনীসহ অন্যান্য তদারকি সংস্থার কঠোর নজরদারির মাধ্যমে এসবের নিয়ন্ত্রণ করে সন্দেহজনকদের দেশ থেকে বহিষ্কার করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে হুমকি মুক্ত রাখতে হবে।
১০। কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ কখনো শেষ নবী, কখনো ঈসা (আ.) এবং কখনো ইমাম মাহদী’র দাবিদার গোলাম আহমদ কাদিয়ানির অনুসারী আহমদিয়ারা নিজেদের মুসলমান দাবি করে এদেশের সরলমনা মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে কাদিয়ানি বা আহমদিয়া জামাতভুক্ত করে ঈমানহারা করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে বিভ্রান্ত হয়ে অনেক সরলমনা মুসলমানই ঈমানহারা হচ্ছেন। কাদিয়ানি তথা আহমদিয়াদের এই ঈমানবিধ্বংসী প্রতারণা বন্ধ করার জন্য বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের মত বাংলাদেশেও তাদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে এবং তাদের প্রতারণাপূর্ণ সকল অপতৎপরতা ও অপপ্রচার নিষিদ্ধ করতে হবে। এই দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের।
১১। রাসূলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদরাসার ছাত্র, মসজিদের ইমাম-খতীব ও তৌহিদী জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ এবং হত্যাকা- বন্ধ করতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ দেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের যৌক্তিক ঈমানী দাবিগুলোর পক্ষে কথা বলতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন রাসূলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসা ছাত্র, মসজিদের ইমাম-খতীব এবং তৌহিদে বিশ্বাসী মুসলমান। কেবল ইসলামের কথা বলতে বা দাবি জানাতে গিয়ে তারা যে মিছিল সমাবেশ ও প্রতিবাদ কর্মসূাচর আয়োজন করেছে, তাতে দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও গণহত্যা চালানো হয়েছে। এ ধরনের কর্মকা- বন্ধ করতে হবে। দেশের বিভিন্নস্থানে এদের ধর্মকর্ম পালনে হুমকি ও ভয়ভীতি দানের খবরও আসছে। একটা স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমনটা চলতে পারে না।
১২। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত সকল আলেম-ওলামা, মাদরাসার ছাত্র, ইমাম-খতীব ও তৌহিদী জনতাকে মুক্তিদান, দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ হেফাজতে ইসলামের ঈমান-আক্বীদা ও ইসলামের ইজ্জত সংরক্ষণ, দেশের স্বাধীনতা, সংস্কৃতি, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন নিরাপদ রাখার চলমান আন্দোলনে অন্যায়ভাবে অনেক আলেম-ওলামা, মাদ্রাসা ছাত্র, মসজিদের ইমাম-খতীব ও তৌহিদে বিশ্বাসী নিরীহ নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। অনেকে শহীদ হয়েছেন, অনেকে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত সকল আলেম-ওলামা, মাদ্রাসা ছাত্র, ইমাম-খতীব ও তৌহিদী জনতাকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
১৩। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সমূহের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
ব্যাখ্যা ঃ আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে উজ্জ্বল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রয়েছে। বাংলাদেশে বহু সম্প্রদায়ের সম্প্রীতিমূলক অবস্থান বিশ্বের অনেকের কাছেই দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। বাংলাদেশের এই সুনামকে নস্যাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্রকারী মহল এদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সহাবস্থানকে কলংকিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। সংখ্যালঘুদের উপাসনালয়ে হামলায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত ও শাস্তিদান এবং দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সমূহের ন্যায্য অধিকার ও নিরাপদ বসবাস নিশ্চিত এবং সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখার দাবি জানাচ্ছি।
২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৭:৫৫
অপরিচিত অতিথি বলেছেন: dabi gulir sathe sohmot
৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:০০
কলাবাগান১ বলেছেন: "নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য
আলাদা বালিকা বিদ্যালয় বা মহিলা কলেজ
থাকতে পারলে আলাদা কর্মক্ষেত্র প্রতিষ্ঠার
দাবীতে আপত্তি তোলার যুক্তি থাকতে পারে না।"
এখন থেকে তাহলে তো মহিলা গার্মেন্টস ও পুরুষ গার্মেন্টস চালু করতে হবে........মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা করতে হবে..........।
শাহবাগ থেকে কখনও ইসলাম বিরুদ্ধকারী কোন ভাষন কখন প্রচার হয়েছিল??? ওখানে তো একটাই দাবীই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কিন্তু হেফাজতি রা কিন্তু শাহবাগের মেইন দাবীকে কি ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায় তারই চেস্টা এটা....।
এতদিন ছেলে মেয়েরা একসাথে শাহবাগে ছিল কেউ বলতে পারবে না যে কোন মহিলা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল...... সবাই শালীন ভাবেই আন্দোলন করছিল......। ওখানে তো হিজাব পড়াও অনেক নারী ছিল!!!!!
৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:২১
আহসান২২ বলেছেন: dabi shomot.
Onek e jamela krbei....
৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৭
মরেনো বলেছেন: আমি একাধিক পোষ্টে, একে একে হেফাজতের ১৩ দফা দাবির ওপর আলোচোনা করে আমার ব্যক্তিগত মতামত আর সাজেশন উপস্থাপন করছি, এই দাবির সমর্থক এবং বিরোধিতাকারি সবার বিবেচনার জন্য। আমি কোন বুদ্ধিজিবিও নই বা কোন আলেমও নই, আমি আমার সাধারন বুদ্ধি আর যুক্তি তর্কেই আমার মতামত তুলে ধরছি, যা হয়তো বাংলাদেশের বহু সাধারন মানুষের মনেই জেগেছে। আশাকরি সকলেই আমার বক্তব্যকে সেই হিসাবেই ক্ষমসুন্দর আর সহনশিল চোখেই দেখবেন।
১. সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন করতে হবে।
এই দাবির বিপরিতে হেফাজতের ব্যাখ্যা শুরু হয়েছে এদেশের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জিবনে সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা এবং ধর্মিয় চেতনার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে। যদিও ব্যাপারে আমার কনো দ্বিমত নেই। তবে নিজের মনে পরিস্কার হওয়ার জন্য আমার কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন আছে হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশ্যে।
প্রথমত, একজন মুসলমান হিসাবে আমি এবং সকল মুসলমানই বিশ্বাস করে এক এবং অদ্বিতিয় সর্বশক্তিমান আল্লাহয়। আর সে বিশ্বাসের সুত্রেই আমরা নিশ্চয় বিশ্বাস করি যে অন্য ধর্ম্বাবলম্বিরা যে নামেই তাদের ইশ্বরকে ডাকুন না কেন, আমাদের থেকে ভিন্নভাবে বিশ্বাস করুন না কেন – সে আল্লাহ ব্যাতিত আর কেউ হতে পারেন না। এমনকি তথাকথিত নাস্তিকেরাও তাদের ধারনায় আল্লাহ/ইশ্বর/ভগবান অস্বিকার করে যখন সৃষ্টির সব কৃতিত্ব প্রক্রিতি বা নেচার বা কোন অদৃশ্য শক্তিতে অর্পন করেন, তখনও তাদের অজান্তেই তারাও কিন্তু এক এবং অদ্বিতিয় সর্বশক্তিমান আল্লাহর কথাই বলছেন – বলতে বাধ্য, কারন বিজ্ঞানের মতেও সব সৃষ্টির নিয়ন্তাও এক এবং অদ্বিতিয় হতে বাধ্য। তাই আমার মতে আল্লাহ বা সর্বশক্তিমানের অবস্থানের ব্যাপারে বিতর্কের কোন অবকাশই নেই, আর সেক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যালঘিষ্ঠ ইস্যু নিতান্ত্যই অবান্তর।
দ্বিতিয়ত এবং মূল ইস্যু “সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন করতে হবে” এই দাবির ব্যাপারে মনে হয় আমদের সুক্ষ্মভাবে অনেক কিছুই ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে।
কাগুজে বা আইনি ব্যাবস্থার মাধ্যমে কি রাষ্ট্রিয়, সামাজিক বা ব্যাক্তি পর্য্যায়েই কি আমরা আমাদের জিবনের প্রতিক্ষনে প্রতিটি কর্মে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস নিশ্চিত করতে পারি বা তা কি কখোনই বাস্তবে সম্ভব? একমাত্র রসুলাল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন মানুষ কি কোনদিন বুকে হাত রেখে বলতে পারবে যে সে তার জিবনের প্রতিটি কর্মে প্রতিটি ক্ষনে একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই কাজ করেছে। বাকি সব দুর্বল মানুষের পক্ষে সেই লক্ষ্যে পৌছানোর চেষ্টা করা সম্ভব, কিন্তু সেই লক্ষ্যে পৌছানো কি সম্ভব? বোধহয় না, আর কেঊ সে লক্ষ্যে সত্যিই পৌছেছে কিনা তা অন্তর্যামি আল্লাহ ব্যাতিত আর কারো পক্ষে কি তা নিশ্চিত করা সম্ভব? সেই অবস্থায় আজকের জটিল বিশ্বে সংবিধান, আইন আর রাষ্ট্রের মাধ্যমে কি করে সম্ভব “রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করা, কারন দুর্বল মানুষই তো ঐ সব ব্যাবস্থা পরিচালনা আর বিচার করবে। আমরা কি করে জানবো আর বিচার করবো তাদের নিয়ত আর অন্তরের অন্তস্থলের কথা। বরং সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে, প্রকাশ্যে জাতিগতভাবে ঘষনা দিয়ে আমরা যদি তা নিশ্চিত করতে না পারি, তবে কি আমরা জাতি হিসাবেই মোনাফেক হয়ে যাব না?
আমরা কি বলতে পারি যে পঞ্চম আগে বাংলাদেশ পরিচালনার মূলনীতিতে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন হয়েছিল?
আমার তো মনে হয় এধরনের পোষাকি বা কাগুজে ভাবে বাংলাদেশ পরিচালনার মূলনীতিতে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন আমাদেরকে মনাফেকির পথেই ঠেলে দেবে। তার চেয়ে আমরা নিশ্চয় অনেক ভাল ফল পাব যদি দৈনন্দিন, সামাজিক বৈষয়িক আর পেশাগত কর্মকান্ডে আমরা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালাই আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রেখে কাজ চালাই। এব্যাপারে আমাদের ধর্মিয় কর্তব্য সমুহ আর ওলেমা ও ধর্মিয় নেতাদের দৃষ্টান্তমুলক জীবন আমাদের নিরন্তর স্মরন করিয়ে দিতে পারে আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপনের প্রয়োজনিয়তা।
এইব্যাপারে হেফাজত আরো দাবি তুলেছে সংসদের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন করে তাদের দাবি পূরনের। আমি তাদের এই পন্থাকে ভিষন অ্যৌক্তিক মনে করছি, কারন যখন এভাবেই পঞ্চম সংশোধোনি আনাতেই তারা আজকে তাদের দাবি তুলতে বাধ্য হয়েছেন, তখন এব্যাপারে তাদের আরো গভিরভাবে ভাবনা চিন্তা করা উচিত ছিল বলেই আমি মনে করি। প্রথমত, আমরা সকলেই জানি বাংলাদেশের বর্তমান সংসদিয় গনতানন্ত্রিক ব্যাবস্থায় সংসদের দুই তৃতিয়াংশ আসন সেই অনুপাতে জনসমর্থন নির্দেশ করে না। গত নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসিন জোট সরকার সমগ্র ভোটের ৫০% এর সামান্য অধিক ভোট পেয়েছিল মাত্র। তদপরি বাংলাদেশের সংসদ ও রাজনৈতিক দল সমুহের মধ্যে কোন গনতন্ত্রের চর্চা নেই, চলছে গনতন্ত্রের নাম একনায়কত্ব। সেই অবস্থায়, সংবিধানের যে কোন মৌলিক সংশোধন ব্যাপক আলোচনার পর গনভোটের মাধ্যমে সর্বসাধারন সিদ্ধান্তেই হওয়া বাঞ্ছনিয়।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৭:৩৭
আলতামাশ বলেছেন: প্রতিটি দাবির সাথে একমত। কোন মুসলিম এটাতে দ্বিমট পোষন করতে পারে না।