নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইব্রাহীম খলিল মাসুম

পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয়।

ইব্রাহীম খলিল মাসুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ ফেলানী হত্যা দিবস

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৫৮

অরণ্য পাশা: ভারতের বিএসএফ

বাহিনীর বিশেষ আদালতের রায়-

হাবিলদার অমিয় ঘোষ ‘নির্দোষ’! হায়

রে নির্মম পরিহাস! এ পরিহাস কেবল

কুড়িগ্রাম

সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুন

কিংবা তার পরিবারের সঙ্গেই নয়; এ

পরিহাস বাংলাদেশের সঙ্গে।

১৫ বছর বয়সী ফেলানী। বাংলাদেশ-

ভারত সীমান্তে কুড়িগ্রামের

অনন্তপুর-দিনহাটা সীমান্তের

খিতাবের কুঠি এলাকায় গেল ২০১১

সালের ৭ জানুয়ারি ভারতীয়

সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর

সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করেন।

এরপর পাঁচ ঘন্টা ফেলানীর লাশ

ঝুলিয়ে রাখে কাঁটাতারে।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে যে পরিমাণ

মানুষ খুন হচ্ছে, তা পৃথিবীর আর

কোনো দেশের সীমান্তে হচ্ছে না-এ

কথা বলার জন্য কোন জরিপ খোঁজার

দরকার নেই। আন্তর্জাতিক আইন ও

মানবাধিকারের

তোয়াক্কা করছে না বিএসএফ। কখনও

কখনও সীমান্ত অতিক্রম

করে ভিতরে ঢুকেও মানুষ খুন করছেন

তারা।

আশ্চর্যজনক হলেও সত্য

যে এক্ষেত্রে ক্ষমতায় থাকা সব

সরকার দায়সারা দায়িত্ব পালন

করে যাচ্ছে। এমনকি এ দেশের যেসব

মানবাধিকার সংগঠনগুলো সামান্য

ঘটনাতেও চিৎকার চেঁচামেচি করে ওঠে,

তাদের দরাজ কন্ঠও স্তিমিত। এ

নিয়ে অনেকবার বিডিআর-বিএসএফ

বৈঠক হলেও কার্যত হত্যা বন্ধ

হচ্ছে না।

ফেলানী এ দেশেরই মেয়ে। বেড়ে উঠেছিল

স্বাধীন বাংলাদেশের

আলো বাতাসে আর দশজনের মতোই।

তারও মনে সাধ ছিল। স্বপ্ন ছিল।

কিন্তু সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে।

আনন্দবাজার পত্রিকার ফটোগ্রাফার

সুভ্রদ্বীপ পাল তাকে কাঁটাতারে ঝুলন্ত

অবস্থায় আবিষ্কার করেন।

নির্মমতার চরম উদাহরণ

হিসেবে তাকে ঝুলতে হয়েছে কাঁটাতারে।

এই ঝুলন্ত লাশ জাতি হিসেবে আমাদের

অক্ষমতারও প্রতীক।

সীমান্তে সংগঠিত এসব হত্যাকাণ্ডের

বেশিরভাগেরই বিচার হয় না কখনোই।

কিন্তু আলোচিত ফেলানী হত্যাকাণ্ড

নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর চাপের

মুখে কথিত বিচারের আয়োজন

করা হলো। সেই

বিচারে অভিযুক্তকে নির্দোষ

প্রমাণিত করা- কোন বিচারের

পর্যায়ে পড়ে? কেউ যদি শাস্তিই

না পেলো, দণ্ডিতই না হলো, তবে এ

কেমন বিচার!

প্রশ্ন জাগে ফেলানী কি নিহত হয়নি,

নিহত হওয়ার পর পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত

কি সে কাঁটাতারে ঝুলে থাকেনি?

গোটা বিশ্বের সংবাদ

মাধ্যমে হৈ চৈ হওয়ার পর কাটা তার

থেকে ছাড়িয়ে তাকে যেভাবে নিয়ে যাওয়া হয়

তা দেখেও সত্যিই ফেলানীকে মানুষ

মনে হয় নি।

বাংলাদেশের

সীমান্তবর্তী প্রতিটি মানুষই বিএসএফ

এর ব্যাপারে সর্বদা আতঙ্কে থাকেন।

কারণ তাদের আচরণ থেকে মনে হয়

সীমান্তের বাংলাদেশীরা মানুষ নয়,

পাখি। শিকারীর হাত যেমন

সর্বদা নিশপিশ করে পাখি শিকার

করতে, ঠিক তেমনি বাংলাদেশিদের

গুলি করার জন্য তাদের (বিএসএফ)

অবস্থাও একই।

সামান্য ছুতো পেলেই তারা গুলি করে।

সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশীদের

ধরে নিয়ে যায়, পরে লাশ ফেরত দেয়।

অথচ বাংলাদেশের সীমান্ত কর্তৃপক্ষ

এর সমুচিত জবাব দিতে বার বার

ব্যর্থ হচ্ছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ

দাখিল করার পর মৌখিক

প্রতিশ্রুতি পেয়েই নিবৃত্ত

থাকছে তারা (বিজিবি). কিন্তু

একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের জনগণের

উপর এমন আচরণ নীতির কোন

পর্যায়ে পড়ে?

সব কিছু স্পষ্ট হবার পরেও

ফেলানী হত্যার এমন রায় কেবল

ঔদ্ধত্য ছাড়া আর কিছু নয়। বাবার

সামনে সন্তানকে মারা হয়েছে। সেই মৃত

লাশ

তো এমনি এমনি কাঁটাতারে ঝুলে থাকেনি।

আমরা অমিয় ঘোষ

বলে কাউকে চিনি না। এটা নিশ্চয়ই

কেউ না কেউ করেছে।

যদি তথ্য প্রমাণের অভাব

থাকে তবে ভারতীয় সরকার খুঁজে বের

করুক। না পারলে এর তদন্ত ভার

আন্তর্জাতিক

কোনো সংস্থাকে দেয়া হোক। কিন্তু

এইভাবে একজন

হত্যাকারী হাসতে হাসতে বেকসুর খালাশ

পেয়ে যাবে আর নতুন উন্মাদনায় আর

একজন ফেলানী পাবার প্রহর গুনবে,

সেটা তো হতে দেয়া যায় না।

যে দেশে হরিণ মারার জন্য সালমান

খানের মতো সুপারস্টারের জেল হয়,

অস্ত্র রাখার জন্য সঞ্জয় দত্ত জেল

খাটেন, সে দেশে বাংলাদেশের মানুষ

হত্যার বিচার হয় না। ভারতের

একটি পশুর চেয়ে বাংলাদেশের একজন

মানুষের জীবনের মূল্য কম! হায়

ফেলানী বাংলাদেশের মানুষ

না হয়ে ভারতের হরিণ হলে না কেনো!!

ভারত আমাদের

স্বাধীনতাযুদ্ধে সহায়তা দিয়েছিল।

এটা ঐতিহাসিক সত্য। এজন্য

আমরা কৃতজ্ঞ। তার ঋণ কি রক্ত

দিয়ে শোধ করতে হবে?

তবে কি পরিমাণ রক্ত ওরা ঝরাবে।

যদি তা না হয় তবে কেন

এভাবে হত্যা করা হবে? নির্যাতন

করা হবে?

মানবিক বোধের ন্যুনতম

একটি জায়গা তো থাকতে হবে।

অপরাধকে তো অপরাধ

হিসেবে দেখতে হবে না কি?

বিশ্বে আরও অনেক দেশে সীমান্ত

চোরাচালান আছে,

দেখতে হবে সেখানে তারা কিভাবে বিষয়টিকে ম

আমায় ক্ষমা করিস ফেলানী। ১৬

কোটি জনতাও তোকে বাঁচাতে পারিনি।

এমনকি তোর হত্যার বিচারটাও…

পারলে- আমায় ক্ষমা করিস ফেলানী!

লেখক- জনসংযোগ কর্মকর্তা,

আরটিভি

[email protected]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.