নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশ বছরের একজন ক্ষুধার্ত মানুষ তবে সুখি ও বিস্ময়কর! যার অতীত ঘোলাটে, বর্তমান ধূসর আর ভবিষ্যৎ অন্ধকার.....
প্রিয় কবি,
অনেকদিন আপনার ঠিকানায় লিখা হয়না। আশ্বিন আর পৌষের মতই দূরত্ব ঘনিয়ে এসেছে হাতের লেখায়, যে দুরত্ব অভিমানী বনজ সুরের মতই মূর্ছনা মিশ্রিত। তারপর কিখবর? অনেকদিন তো কথা হয় না। সেইযে নীলক্ষেতের সে পুলিশ বক্সের পাশে একদিন আপনার পরীক্ষা শেষে দাঁড়িয়ে কথা বললাম তারপর আর দেখাই হয়নি। বেঁকে যাওয়া সরলরেখায় কেটে গেছে প্রতিটা সেকেন্ড আর সময়ের হিসেব রেখেছে অপেক্ষার মানমন্দির। ভাল আছেন নিশ্চয়, থাকবেন ই তো। নদীর তীরের মেয়ে, সুযোগ্য আবাসভূমি গড়ে তোলার লক্ষে ঢাকায় এসেছেন। প্রতিটা বিষণ্ণ বিকেলে মন খারাপের দরজায় আপনার সঙি হয় লেক ক্রিসেন্টের শ্বেতশুভ্র জল আর চারপাশের কৃষ্ণচুড়া গাছের লাল পাতা। হিন্দুপুরাণে কৃষ্ণকে কাল বা কানাই বলে উল্লেখ করেছে,কিন্তু ধ্বংস সভ্যতার সেই কৃষ্ণচুড়া গাছের পাতা গুলো সদ্য বিবাহিত নববধূর হাতে লেপ্টে থাকা মেহেদির মত। কি দারুণ, ঠিক যেনো আনন্দিত বিকেলে ধূর্ত মাছরাঙা পাখির পালকে রাঙা আপনার হাসির মতই। আচ্ছা আপনার সেই বড় বোনের খবর কী? ফুলদানীতে সাজিয়ে রাখা ভাসি রজনীগন্ধার মত সেও কি আমায় মনে রেখেছে? এক গ্রীষ্মের সকালে অনেক পথ হেটে ঢাবির মৌলচত্ত্বর থেকে খুঁজে নিয়েছে আমায়। যে তার নিজের পয়সায় আবদারের বায়নায় আমাকে খাইয়েছিলো তেলে ভাগা রুটি আর আধাভাজা ডিম। খুব ভালবাসে আপনাকে সে। তাইতো জ্বরের রাতে কপালে ভেজা রুমাল দিয়ে ঊষ্ণতা কমার দায়ে মায়ের অবহেলিত আদরের হাত বাড়িয়ে দেয়।
তারপর, আপনার বইয়ের খবর তো আর জানলাম না। বের হচ্ছে? নাকি দরিদ্র পরিবারের ছেলেটার বাপের ভিটা বিক্রির টাকা দিয়ে উপার্জন করার সুবাদে প্রবাসে যাওয়ার স্বপ্নের মত ঝুলে আছে? সেদিনের সেই খুনসুটি তে কিছুইতো আর শুনানো হয় নি। অবশ্য আমাকে শুনিয়ে আর কাজ কী? রাস্তা তো দেখিয়ে দিলাম, এখন একটা ল্যাম্পপোস্ট কে অনুসরণ করে সামনের অন্ধকার টা পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করুন। দেখা হবে আবার শহীদ মিনার কিংবা আপনার প্রিয় সেই টি-স্টলে, আমি নাহয় সেদিন বনলতা সেনের চুল থেকে লুপে নেবো ঘোর অন্ধকার। অবশেষে শুভকামনার বৈঠা হাতে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি
ইতি
তেজপাতা।
©somewhere in net ltd.