নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে ক্যামেরাপারসন হিসাবে চাকুরীরত। ত্রিকোন চলচ্চিত্র শিক্ষালয় নামে একটি ফিল্ম স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক। গল্প, কবিতা লেখা ও অভিনয়ের অভ্যাস রয়েছে।

ইহতিশাম আহমদ

জানতে চাই, জানাতে চাই মানুষের অনুভুতির এপিঠ ওপিঠ

ইহতিশাম আহমদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলচ্চিত্র র্নিমাণ টিপস-৯ লেন্স-নরমাল এংগেল

১১ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১৬



লেন্স কি? কিভাবে তা বানায়? কেন এই লেন্সটা এই রকম? এই জাতীয় অনেক আলোচনা করা যেতেই পারে। কিন্তু যেহেতু আপনারা বিজ্ঞানী বা ইঞ্জিনিয়ার হবেন না, হবেন চলচ্চিত্র নির্মাতা, তাই কোন লেন্স দিয়ে কি কি কাজ করা যায় বা কোন লেন্সের কি বৈশিষ্ট তাই সহজ ভাষা জানানোর চেষ্টা করব।

লেন্স মূলতঃ তিন প্রকার। ওয়াইড এংগেলে লেন্স, নরমাল এংগেল লেন্স ও টেলিফটো লেন্স। এই পর্বে আমরা নরমাল এংগেল লেন্সের বৈশিষ্ট ও ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করব।

পরিচিতি-
এই লেন্সকে নরমাল এংগেল লেন্স বলার কারণ হল মানুষের চোখের `এংগেল অফ ভিউ’-এর সাথে এই লেন্সের এংগেল অফ ভিউ অনেকটাই মিলে যায়। মানে খালি চোখে একটি বস্তুকে যত বড় বা যত দূরে দেখা যায় এই লেন্স দিয়েও সেই বস্তুটিকে একই সমান বড় বা একই সমান দূরে দেখা যাবে। কিছুদিন আগেও তর্ক ছিল ৪০ এমএম নাকি ৫০ এমএম কোন লেন্সটির এংগেল অফ ভিউ মানুষের চোখের সাথে সবচেয়ে বেশী মিলে যায়। ফিল্ম ক্যামেরার যুগে চলচ্চিত্রের জন্যে যে ফিল্ম ব্যবহার করা হত তার ফ্রেম স্টিল ক্যামেরার ফিল্মের ফ্রেমের চেয়ে ছোট ছিল। তাই চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে ৪০ এমএম এবং স্টিল ফটোগ্রাফির জন্যে ৫০ এমএম-কে নরমাল এংগেল হিসাবে বিবেচনা করা হত। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে ৫০ এমএম-কেই নরমাল এংগেল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। অবশ্য ক্রপ সেন্সর ক্যামেরার ক্ষেত্রে ২৮ এমএম থেকে ৩৫ এমএম হচ্ছে নরমাল এংগেল লেন্স।

বৈশিষ্ট-
নরমাল এংগেল লেন্সের ‘এংগেল অফ ভিউ’ ওয়াইড এংগেলের চেয়ে কম কিন্তু টেলিফটো লেন্সের চেয়ে বেশী। বিষয়টাকে একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক। মনে করেন, আপনার সামনে একটি আম গাছ, গাছের পিছনে একটা নদী, নদীর মাঝে একটা নৌকা, নদীর ওপারে একটা গ্রাম, গ্রামের শেষ মাথায় একটা তালগাছ আছে। কোথা থেকে আপনি ছবিটা তুলছেন বা শুট করছেন তার উপরে নির্ভর করে গাছ থেকে নদীর পাড় পযর্ন্ত অথবা নদীর পাড় থেকে নৌকা পর্যন্ত বা নৌকা থেকে গ্রামের শুরু পর্যন্ত ফ্রেমে ধরা পড়বে। সব কিছুকে এক সংগে এক ফ্রেমে কোন ভাবেই ধরা যাবে না।

এই লেন্সের ‘ডেপথ অফ ফিল্ড’ মাঝারি ধরনের। অর্থাৎ এই লেন্স দিয়ে তোলা ছবির পুরোটা ফোকাসে নাও থাকতে পারে। ধরা যাক, আপনার ক্যামেরার ‘ক’ ফিট দূর থেকে ডেপথ অফ ফিল্ড শুরু হয়ে শেষ হয়েছে ক্যামেরা থেকে ‘খ’ ফিট দূরে। মানে এই ‘ক’ ফিট থেকে ‘খ’ ফিটের মধ্যে যা কিছু থাকবে সব স্পষ্ট দেখাবে। এর চেয়ে কাছের বা দূরের বস্তুকে দেখাবে অস্পষ্ট। সুতরাং আপানার বিষয় বস্তুর পুরোটাই যদি এই ফোকাসড জোনের মঝে থাকে তবে ফ্রেমের পুরোটাই স্পষ্ট দেখাবে। অপর দিকে যদি বিষয় বস্তুর কিছুটা এই জোনের ভিতরে আর কিছুটা জোনের বাইরে থাকে তবে ফ্রেমের কিছুটা ফোকাসড বা স্পস্ট আর কিছুটা ডিফোকাস বা অস্পষ্ট দেখাবে।

এই লেন্স দিয়ে ক্ষেত্র বিশেষে ফোকাস শিফটিংএর কাজ করা সম্ভব। তবে মনে রাখতে হবে, যে দুটি বস্তুর মাঝে ফোকাস শিফটিংএর কাজ করবেন সেই বস্তু দুটির মাঝে বেশ অনেকখানি দূরত্ব থাকতে হবে। কারণ ডেপথ অফ ফিল্ড মোটামোটি হওয়ার কারণে দুটি বস্তুই যদি একই সাথে ফোকাস জোনের মাঝে থাকে, তবে আপনি ফোকাস কোন বস্তু থেকে কোন বস্তুতে সরাবেন বা শিফট করবেন? ফোকস শিফটিং তখনই সম্ভব যখন একই সময়ে মাত্র একটি বস্তু ফোকাসে থাকবে।

যেহেতু খালি চোখ এবং এই লেন্স দিয়ে একটি বস্তুকে প্রায় একই সমান আকারে এবং দূরত্বে দেখা যায় তাই এই লেন্স ব্যবহারে বিষয় বস্তুর আকার বা আকৃতিগত কোন বিকৃতি ঘটে না। তবে এই লেন্স ব্যবহারে দৃশ্যের মাঝে কোন গতিশীলতা বা নাটিকীয়তা যুক্ত হয় না। মানে আপনি কাহিনী, লাইটিং, কম্পোজিশন, অভিনয় ইত্যাদির মাধ্যমে যে নাটকীয়তা সৃষ্টি করবেন সেটাই আপনার সম্বল। এই লেন্সের কারণে সেখানে বাড়তি কোন গতিশীলতা যুক্ত হবে না, যেটা ওয়াইড এংগেল বা টেলিফটো লেন্সের কারণে হয়ে থাকে।

এই লেন্স ব্যবহার করে সঠিক এক্সপোজার পাওয়ার জন্যে মোটামোটির আলোর প্রয়োজন। অর্থাৎ একই সার্টার স্পিড, এ্যাপারচার ও সেন্সর সেনসিটিভিটিতে ওয়াইড এংগেল লেন্সের চেয়ে বেশী এবং টেলিফটো লেন্সের চেয়ে কম আলোতেই ঝকঝকে ছবি তোলা যায়।

ব্যবহার-
নরমাল এংগেল লেন্স ব্যবহার করা টেলিফটো লেন্সের চেয়ে সহজ হলেও ওয়াইড এংগেল লেন্সের চেয়ে কঠিন। এর ডেপথ অফ ফিল্ড মাঝারী হওয়াতে শুটিংএর সময় ফোকাস ঠিক আছে কিনা এই ব্যাপারে সচেতন থাকতে হয়। তাছাড়া সামান্য ঝাঁকুনির ফলে ছবি ঝাপসা হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। তাই শুটিংএর সময় ট্রাইপড ব্যবহার করা জরুরী। পর্যাপ্ত দক্ষতা না থাকলে হাতে ক্যামেরা নিয়ে শুট না করাই ভাল।

মিড শট, ওভার দা সোল্ডার বা ও/এস শট, টু শট, গ্রুপ শট ইত্যাদি শট নেয়ার সময় নরমাল এংগেল লেন্স ব্যবহার হয়ে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে এই লেন্স দিয়ে ক্লোজ শটও নেয়া হয়ে থাকে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.