নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইল্লু

ইল্লু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেলাশেষের খেলায়

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:০৮

বাইরে বেরোনোর চমক আছে একটা-আছে নতুন হওয়ার আনন্দ, খুঁজে নেওয়া নিজেকে একটা নতুন আকাশে।প্রতিদিনের গল্পের বাইরের একটা গল্প-বলে দেওয়া নিজেকে’আমিও আছি,এ আকাশে।আমি তো তোমাদের ই একজন’।ইচ্ছে থাকলেও প্রতিদিনের প্রয়োজনে হারিয়ে যাই আমরা শুধু প্রয়োজনে।আমরা শুধু সাজিয়ে রাখি নিজেকে একটা নতুনে-স্বপ্ন
ফুরোয় না স্বপ্নে। বেরিয়ে পড়লাম-দিন সাতেকের বাসের একটা Tour।টুয়র কথাটার
সাথে বেড়ানোর বেশ গরমিল। ইচ্ছের স্বাধীনতা নেই-নিজের ইচ্ছের প্রাধান্যটা সপে দেওয়া সময়ের হিসেবে।যদিও চারপাশের ইতিহাসে-এ সভ্যতায় আমার আত্মতা নেই,তবু সময়ের হিসেবে আমি তো আজ এ সময়ের খাতায়।আমার অচেনায় যদিও এরা অচেনা।বাসের সাতদিন একটা নতুন অভিঙ্গতার জানালা।।Yellow stone national park-প্রায় হাজার খানেক মাইল।কিলোমিটারের হিসেবটা মার্কনিদের রপ্তহয়ে ওঠে নি আজও, ওদের আলাদা হয়ে থাকায় একটা উন্নাসিক্তা আছে-আছে একটা ঔদ্ধত্য।
বেরোনোর কথা সকাল আটটায়-তা প্রায় নটা হলো।ব্রাজিল থেকে আসা কজন যাত্রীর বিমানের যোগাযোগে কিছুটা বিলম্ব।বিরাট বাস-তবে আরাম আয়েসের চরমে।সব মিলিয়ে প্রায় জন ষাটেক-আমরা।ড্রাইভার-আলবার্ট।জন্ম ফিলিপাইনে-যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় বছর কুড়ি।
দু চার কথায় নিজের কথা-ট্রাক ছেড়ে বাসে প্রায় বছর পনের।চমৎকার ইংরেজী বলে-
আর ভাঙ্গা ভাঙ্গা চাইনীজ।যাত্রীদের বেশির ভাগই চাইনীজ-জনকয়েক ফিলিপাইনের,
কজন ব্রাজিলের।
আলবার্টের কথায় কথায় বলা-‘কটা জরুরী কথা সেরে নেই।আমরা প্রথম থামছি Rowland Heights।পারলে সবাই আপনারা নিত্য নিয়ম সেরে নেন যেন –এর পরের থামাটা প্রায় ঘণ্টা দুই। আমাদের সব কিছু সময়ের কাটায়-অযথা থামা থামিতে আমরা হারাবো কটা দেখার জায়গা।আমার বলাটা যদি ঠিক বলা না হয় ক্ষমা চাইছি’। ভাঙ্গা ভাঙ্গা চাইনিজ আর তারপর ইংরেজিতে জানিয়ে দিল-আলবার্ট।হেলেন নামের একজনের প্রশ্ন,’প্রকৃতির প্রয়োজন যদি তীব্র হয়ে পড়ে,তখন কি করা?’ একটু হাসির আলবার্টের বলা’ আর কি,প্রাচীন সুরে প্রাচীন পদ্ধতিতে।বড়টা মানে দুই নম্বরের যদি দরকার পড়ে,তবে আমাদের
সাথে,বেশ বড়সড় একটা ছাতা আছে।য দিও বাসের পেছনে ছোট খাট একটা আয়োজন আছে,তবে পারতপক্ষে সেটা ব্যাবহার না করলেই ভাল।আমাদের নিজেদের একটু আয়েসে,একগাদা সহযাত্রীকে অসস্থিতে ফেলে দেওয়া কি ঠিক হবে?’

ঘণ্টা আধেক-আমরা Rowland Heights,আমাদের সাথে এলো আমাদের গাইড আর জন ছয় নতুন যাত্রী।বাবা,মা,তাদের মেয়ে।Taiwan থেকে বেড়াতে আসা।বাবা তার Mandarin ছাড়া আর কিছু বলা বোঝায় নেই।ছোট্ট মেয়েটা বেশ পরিছন্ন ইংলিশ বলে,কথায় কথায় জানান দিল তার স্কুল-বন্ধু বাধবের বহর।মা ভাঙ্গা চোরা কথায় কটা ইংরেজী চালিয়ে নেওয়া।Taipei শহর ছাড়িয়ে প্রায় সত্তর কিলোমিটার।আমাদের গাইড-Hsien Hung।জন্ম Guanghou প্রদেশের ছোট্ট এক শহরে। শহরের নামটা একটু দূবোর্ধ্য-কেমন জানি হারিয়ে গেল নামটা।আমাদের গাইড-নিজেকে সুবিধের জন্য’Steven’ বলে চালিয়ে দেয়।ওর নামের রক্তাক্তটার কিছুটা অব্যাহতি।ভাই বোন মিলিয়ে প্রায় নজন-ছোট বোন ডাক্তারী পড়ছে।ভাই বোনদের মধ্যে সেই তার অবস্থানটাই একটু এলোমেলো বেখাপ্পা-সকলের চোখের কালি।গাইড কিছুটা বক্তৃক্তার সুরে আমাদের সাতদিনের ভবিষত্যের একটা ছক সাজিয়ে দিল আমাদের।গোটা নয়টা রাজ্য-শহরের গন্ধ ছাড়ানো অচেনা একটা জগত।যুক্ত্ররাষ্ট্রের নিয়ম ছাড়া পশ্চিমের আকাশ।যেখানে একসময় ছিল স্বাধীন মনা রেড ইন্ডিয়ান্ দের প্রতাপ।

বেশীর ভাগ যাত্রীই বয়সের সময়ে নুয়ে পড়া-হাতে থাকা সময়টা নিয়ে নিজেকে খুঁজতে বেরোনো।সময়ে সময় হয়নি যে সময় খোজার।আমাদের দলে আমরা ও জন ছয়েক-
পঞ্চাশ ছাড়ানো সবাই অনেক কদিন।যাত্রাদলের চমকে বেশ সাজিয়ে নেওয়া আমরাও।
বাসে যাত্রীদের জন্য প্রায় পনের সিটের সারি।বিমানের সাজে তিন সারি ছাড়িয়ে একটা করে
TV ঝুলছে-বাতি,তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনের ও আয়োজন আছে।সাজিয়ে তিন সারিতে বসা-আমরা।
আমার ডানপাশটায়-রোদ ভাঙ্গা চশমা চোখের যুবতী।বেশ শব্দে তার কফির চুমুকে।তার
সামনে Taiwan এর বাবা,মা,মেয়ে।দুই বন্ধু আর এক সখী-ফিলিপাইনের তিন বোন আর
তিন বন্ধু।বাসে হাল্কা সাজে চলছে-গান পাঁচমিশালী।কখনও ইতালীয়-Beatles-Rolling stone
এলোমেলো।

আমাদের গাইড বেশ নাটকীয় সুরে জানান দিল-‘সামনে আসছে Mojave(মোহাবে)-আপেক্ষিক উচ্চতা প্রায় ২৮০ ফুট।হিসেব মত উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে নীচু জায়গা,মরুভূমি মোহাবে।কালিফোর্নিয়া ছিল একসময়-Mexico এর অঙ্গরাজ্য।তবে Texas নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আর মেক্সিকোর
যুদ্ধ-১৮৪৬ সালে।১৮৪৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কালিফোর্নিয়া কিনে নেওয়ার প্রস্তাবে এই দঙ্গল।
মেক্সিকো তখন সদ্য রাজতন্ত্র ছাড়িয়ে নতুন তন্ত্রের দিকে মোড় নেওয়া।তার ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার বাড়ানো হাতটা ফিরিয়ে দেওয়া শক্তি ছাড়া মেক্সিকো।আর দূর্ব্লের
উপর সবলের অত্যাচার সেটাই তো নিয়ম।সবাই দুপুরের খাবারটা সেরে নেবেন।
তবে এখন কেনাকাটার দপ্তরটা যেন চালু না হয়,ওটার সময় করে নেব আমরা।‘
ভাঙ্গা ইংরেজী আর চাইনিজে বলে যাওয়া গ্লপগুলো।বাস মোহাবের বিশাল বাজারে এসে
থামলো-আর ছোটা সবার নিত্য কর্মের সাজে।হাতে ধরা কটা সময় এর ফাকে খাওয়া দাওয়া আর প্রকৃতির প্রয়োজন সেরে নেওয়া।সকলের আনন্দে নিজের আনন্দের কিছুটা বির্সজন-এটাতো এমন কিছু বেমানান নয়।আর গাইডের কথাটায় বেশ গূড় তত্ব ছিল-‘
আপনাদের সময়,আপনাদের আনন্দ,আমি শুধু কিছুটা সাজিয়ে নেওয়ার দায়িত্বে।আপনারা তো কেউ বাসে ঘুমুতে আর প্রকৃতির প্রয়োজন সারতে আসেন নি।‘

বাস ছুটলো আবার।যান্রিক দানবটা ছুটছে-ছুটছি আমরাও,আমরা ছুটছি নিজেকে হারানোর জন্যে,সময়কে কোন ভাবে যদি ফেলে আসা যায় পেছনে।অনেকে ঘুমিয়ে পড়েছে-দু একজন
আধুনিক যান্ত্রিকতায় খুঁজছে আন্তরিকতা,electonics এর সাজে।ঝিমিয়ে পড়েছিলাম-হঠাৎ জানান দিল গাইড’বাইরে যা দেখছেন,এটা সূর্য নাচের দেশ।solar power station-আমরা
প্রকৃতির ভাঙন বন্ধ করতে চাই।রক্তাক্ত প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব খুঁজছি আমরা।ঘন্টা আধেক
আমরা-কালিফোর্নিয়া ছেড়ে পৌছাব- Nevadaয়।লাস ভেগাসের প্রথম পদক্ষেপ-Stateline।
গোটা চারেক casino-নাগরদোলার নাচন আর golf course,অনেকে ছুটে আসে কালিফোর্নিয়া
ছেড়ে ক্ষন আয়েকের আনন্দ খোজায়।লাস ভেগাসে আমাদের সাথে আর জন দুই যাত্রী আসছে আমাদের সাথে।আজকের রাতটা আমরা কাটাব সেন্ট জর্জ নামের ষ্রে।রাজ্যের নাম
Utah।এটা মরমনদের রাজ্য।ওরা নিজেদের খ্রীষ্ট্রান বললেও সাধারন ধর্মবাদীদের কাছে ওরা
বিধর্মী।যাকগে আমরা ফেরার সময় থামবো-Salt lake city তে মরমনদের প্রধান শহর।
সকাল ৫-৪৫ বাস ছাড়বে।হোটেলে সকালে চা-রূটি,ব্যাগেল আছে’।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:২৯

গোফরান চ.বি বলেছেন: ভালো লাগল +

২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৫৩

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: ++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.