নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইল্লু

ইল্লু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিলিতিসের গান Songs of Bilitis(ধারাবাহিক)

১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১:৩২

প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৯৪ সালে,গ্রীসের নামকরা কবি,সাপ্পোর সমসাময়িক,বিলিতিস নামের কোন এক কবির অনুবাদ হিসাবে,ফরাসী লেখক পিয়ের লুইসের অনুবাদ।বিরাট এক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে লেখাটা অনুরাগীদের মনে-খ্রীষ্টপূর্ব ৬০০ সালের এ ধরনের সর্ম্পূন লেখা খুঁজে পাওয়া ছিল অনেকটা অবিশ্বাস্য।আর প্রকাশ্য ভাবে সমকামিতা নিয়ে প্রকাশনা সেটা তো আরও অভাবনীয়।পরে অবশ্য জানা যায়-বিলিতিস বলে কোন কবির অস্তিত্বই ছিল না,ঐ সময়।ওটা আর কিছু না পিয়ের লুইসের তৈরী করা একটা অভাবনীয় ফেরেপবাজী।সাজানো হলেও, তবুও পুরুষের লেখা মেয়েদের নিয়ে বেশ সাহসী এক প্রকাশনা,লেখার মর্যাদাটা আজও কমে যায়নি।

(৫)
ঘুমহারানো রাত্রি

ঘুমিয়ে পড়লাম একাই,তিতির পাখীর মত ঝোপে…হাল্কা ঠান্ডা বাতাস, ছুটে যাওয়া স্রোতের শব্দ,আর রাতের নিঝুম সুর আটকে রাখলো আমাকে।

অজান্তেই আমি ঘুমের দেশে,হঠাৎ চীৎকারে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল।ভঁয়ে কেঁদে উঠলাম আমি,তখন বেশ গভীর রাত।একটা শিশুর হাতে আর কি আনন্দই বা আছে?

সে আমাকে ছেড়ে যাবে না।আরও আদরে জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নিল,সব কিছু হারীয়ে গেছে আমার পৃথিবী থেকে,গাছপালা পাখী জন্ত কিছুই ছিল না কোথাও,শুধু দুটো কামনার আগুনে ভঁরা দুটো চোখ।

তোমার জন্যে বিজয়ী কাইপ্রিস,এটা আমার অর্ঘ,শিশিরের সুরে সাজানো আমার যন্ত্রনার কান্না,ঘুম আর ধস্তাধস্তির এখনও সাক্ষী,যা।



ধোপানীদের জন্য

শোন ধোপানীরা,বলো না কাউকে-তোমরা যে দেখলে আমাকে!তোমাদের প্রতি যথেষ্ট বিশ্বাস আছে আমার,আর যাই হোক বিশ্বাসঘাতকতা করো না আবার।
আমার স্তন আর পোষাকের মাঝের কাপড়,এটা দিয়ে গেলাম তোমাদের কাছে ধোয়ার জন্যে।

আমি যেন একটা ভঁয় পাওয়া মুরগী…এখনও কথা বেরোচ্ছে না,বলতে পারছি না কিছু,বলবো যদি সাহস হয় বলার…ছুটে যাওয়া হ্রদয়টা হয়তো মেরেই ফেলবে আমাকে…একটা কাপড় আনলাম তোমাদের কাছে ধোয়ার জন্যে।

আমার শরীরের জড়ানো কাপড় এটা,দেখ ওখানে আছে রক্তের দাগ!এপোলো দেবতার নামে শপথ করে বলছি,সব কিছু যে ঘটে গেল কিভাবে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে,অসহায় তখন আমি নিজের কাছেই।অনেক যুদ্ধেও কাজ হয়নি,ভালবাসার পুরুষদের শক্তি আর সাহসের কাছে হেরে যায় মেয়েরা সবসময়।

ভাল করে পরিষ্কার করো যেনঃসাবান সোডায় কোন কার্পন্য যেন না হয়।আমি তোমাদের নামে চারটা রুপার পয়সা(ওবোলি)অর্ঘ দিব আফ্রোদাইতির পায়ে,এমন কি একটা ড্রামাক দিতেও কার্পন্য হবে না আমার।



গান

সে যখন ফিরলো আবার,লজ্জায় মুখটা ঢেকে ফেললাম আমি।‘ভঁয় করো না,
কেউ দেখেনি আমাদের চুমু,শরীরখেলা…কেইবা দেখলো আমাদের?নিস্তব্ধ রাত্রি আর আকাশের চাঁদ হয়তো বা’।

‘হয়তো ছড়ানো নক্ষত্রের সারি,আর সকালের প্রথম গানটা।চাঁদ হয়তো নিজেকে
দেখে পুকুরের জলে,বলে দিল জলের কাছে,জানা কথাগুলো তার।আবার বাতাসের চুমু্র মাতাল ছোয়ায় পুকুর বলে দিল মাঝির হালকে,গল্পগুলো তার।

‘নৌকার হাল জানালো কথাগুলো নৌকাকে,আর নৌকাটা জানালো কথাগুলো জেলেকে।হায়!হায়!কিন্ত সেটাই কি আর শেষ!জেলে যে বলে দিল সবকিছু একটা মেয়েকে।

‘জেলে যে বলে দিল এই গোপন রহস্য একটা মেয়েকেঃএখন জানি না কে কে জানে এ রহস্য আমার,বাবা,মা,বোনেরা না শুধু,হয়তো জানবে এ কাহিনী আমার পৃথিবীর সবাই’।



বিলিতিস

একটা মেয়ে নিজেকে জড়িয়ে নিল ধবধবে সাদা বরফের মত উলের চাদরে।
আরেকজনের গায়ে ছিল সোনার গহনা আর সিল্কের পোষাক।একজনের গায়ে জড়ানো ফুল,সবুজ পাতা আর বেগুনী আঙ্গুর।

আর আমি,আমি কি সারাজীবন থাকবো এই নগ্ন শরীরে।প্রেমিক আমার,এসে নিয়ে যাও আমাকে তোমার কোলে,যে ভাবেই আছি আমি।কোন পোশাক নেই,
জুতো নেই,নেই কোন গহনা নেই গায়ে, জড়িয়ে ধর আমাকে কামনায় তোমার!
শুধু বিলিতিস,আর থাকবে না কিছুই সেখানে।

আমার কালো চুল কালো মিশে যাবে তার নিজের রংএ।ঠোঁটগুলো লাল হবে ভালবাসার সুরে।আঙ্গুলগুলো নেচে বেড়াবে ছন্দে ছন্দে শরীর খেলায়,ময়ুরের পাখাগুলো যেন বর্ষার গানে।একরাত্রির ভালবাসায় মাতাল কর আমাকে,আর যদি তৃপ্ত হও তুমি,মনে রেখ,ভুলে যেও না আমাকে।


কুঁড়ে ঘরটা

ছোট্ট কুঁড়ে ঘরটায়,বিছানা সাজানো যেখানে তার,সেটাই সব চেয়ে প্রিয় জায়গা এ পৃথিবীতে আমার।গাছের ডালপালা,পাতা দিয়ে ঢাকা কুঁড়ে ঘরের ছাদটা,চার পাশের দেয়াল কাদামাটি দিয়ে তৈরী,উপরে ঘাস,শ্যাওলা।

ভালবাসি তাকে,দুজনে আমরা শুয়ে আছি রাতের ঠান্ডা বাতাসে,আর শীত যতই বেড়ে যায় রাতটাও বেড়ে যায় ঠিক সে ভাবে।দিনে মনে হয় বেশ ক্লান্ত আমি।

বিছানা নেই,শুয়ে ছিলাম মাটিতে,গায়ে দুটো কালো ভেড়ার চামড়া শীত কমানোর জন্যে।তার বুক আমার স্তন দুটোকে নিষন পেষন
করছিল…আমার হ্রদয়টা ছুটছিল ঘোড়ার মত দ্রুতগতিতে অজানা ঠিকানায়।

এত জোরে ও চেপে ধরে ছিল আমাকে,ভেঙ্গে পড়বো যেন সেই মূহূর্তেই,
বড় ভঙ্গুর এই শরীরটা,আমার।ওর শরীর যখন আমার শরীরে ঢোকে তখন আর কিছুই না থাকে পৃথিবীতে,কেউ যদি আমার হাত পা ও কেটে নিয়ে যায়,কোন অনুভুতি জাগাবে না আমাকে।


হারানো চিঠিটা

হায়,কোথায় যে হারালাম তার চিঠিটা,স্তনের উষ্ণতায় জড়ানো,ওটা লুকানো ছিল আমার কাপড় আর শরীরের মাঝে।খুঁজতে গেলাম দৌড়ে,হয়তো চিঠিটা পড়ে গেছে কোথাও।

বাড়ীতে ফিরে যাব এখন,আমি চিঠিটা পাওয়ার আগে কেউ পেয়ে যদি তুলে দেয় মায়ের হাতে,তবে মারধর অত্যাচার হবে ভালই।তবে কোন পুরুষ মানুষ যদি খুঁজে পায়,হয়তো তুলে দিবে আমার হাতে,গোপনে আলাপ করবে,কথা হবে শরীর নিয়ে।তবে জানি আমি,কি ভাবে তাড়াতে হবে তাকে।

কোন মেয়ের চোখে যদি পড়ে চিঠিটা,তা হলে যা হবে,সে কি আর বলার অপেক্ষা রাখে,দেবতাদের রাজা জুস,রক্ষা করো তুমি আমাকে!এটা তো জানাই সে বলে বেড়াবে সবাইকে,এমনও হতো পারে সে হয়তো চুরিও করে নিয়ে যাবে আমার প্রেমিককে।



গান

‘রাতটা এতই ঘন অন্ধকার,আটকে আছে যেন আমার চোখের পাপড়িতে-খুঁজে পাবে না তুমি কোন পথ,হারাবে তুমি জঙ্গলে,গাছপালাতে।

-ঝর্নার জলের শব্দ কানে আমার…জানবে সেটা প্রেমিকের সুর যদিও সে আছে ক পা দূরে।

-ফুলের সুবাসের তীব্রতায় জ্ঞান হারানো আমি,থাকবো পড়ে পথের ধারে…জানবে না তুমি যদিও সে হেঁটে যায় পথের ওধার দিয়ে।

-ও আমি তো,জানি সে এখান থেকে অনেকদূরে পাহাড়ের ও ধারে।তবুও সে যেন আছে আমার কাছে,এই তো আমার পাশে,কথাগুলো তার কানে আমার,
হাতটা নেচে বেড়ায় শরীরে।



০০০০০০০০০০

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.