নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইল্লু

ইল্লু › বিস্তারিত পোস্টঃ

Orhan Pamuk এর My Name is Red(অনুবাদ) ধারাবাহিক

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩০

Orhan Pamuk এর My Name is Red(অনুবাদ)
ধারাবাহিক
ফেনিত অর্হান পামুক
জন্মঃ জুন,১৯৫২
তুরস্কের খ্যাতনামা এক উপন্যাস লেখক
২০০৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান
খ্যাতনামা লেখার মধ্যে My name is red,Silent house,white castle আরও অন্যান্য অনেক লেখা






(৩৬)

‘হয়তো কোনদিনই তোমার সাথে এক বিছানায় ঘুমানো হবে না আমার,মনে হয় আমাদের এই বিয়েটাই ভুল,তুমি তো জানই অনেকের মতে আমাদের এই বিয়ে তো একেবারেই বেআইনি।মনে হলো,ঘুমাতে যাওয়ার আগে হাসানের পায়ের শব্দ শুনলাম যেন বাইরে?আর তুমি তো জান,হাসানের পায়ের শব্দ বেশ চেনা,শ্বশুর বাড়ীতে প্রতি রাতেই হাসান আমার ঘরের দরজার সামনে অযথাই পায়চারী করতো।আমার ছেলেরা অবশ্য তাকে খুবই পচ্ছন্দ করে,ওর কাছে বিরাট একটা তলোয়ার আছে,তার ভালবাসার মানুষকে রক্ষা করার জন্যে’।

সিয়াহর দৃষ্টিতে এমন কিছু ছিল যা আমাকে বলে দিল আমার কথাবার্তায় একটুও বিচলিত হয়নি সিয়াহ।
‘আমাদের দুজনের মধ্যে তোমার সামনে আছে আশা,আছে আনন্দ খোঁজা,আমার কি আছে,
শুধু দুঃখ কান্না’,আমি বললাম,‘তবুও চেষ্টা করছি কোন ভাবে এই দুঃখ কান্না একপাশে ফেলে,ছেলেদেরকে সব বিপদ থেকে আগলে,শান্তিতে,সুখে বাকী জীবনটা কাটাতে পারি।আর তুমি নিজে্কে মহান চরিত্রের একজন মানুষ প্রমান করার জন্যে ব্যাস্ত হয়ে আছে,তার কারণ এই না যে তুমি আমাকে ভালবাস,বরং বোঝা যায় তুমি ক্ত স্বার্থপর’।

সিয়াহ বললো,আমার বোঝাটা সর্ম্পূন ভুল,তার ভালবাসা এতই গভীর যে,শুকনো মরুভুমি,
দূর্গম পাহাড়,এমন কি তুষারের ঝড়েও একটা মূহুর্তের জন্যেও সে ভোলেনি আমার মিষ্টি মুখ।সিয়াহর কথায় মোহিত হয়ে গেলাম,না হলে হয়তো আমি ছেলেদের নিয়ে ফিরে যেতাম শ্বশুর বাড়ীতে।কেন জানি বলতে চাচ্ছিলাম,‘জান মাঝে মাঝে মনে হয় আমার স্বামী হয়তো এই ফিরে আসবে যে কোনদিন।অযথাই ভঁয় হয়,যে মাঝ রাতে কেউ আমাকে দেখবে তোমার বিছানায়,ছেলেরা বা আমার স্বামী।তবে ভেবে দেখলাম,ও সব আজেবাজে কথা না চিন্তা করে,এটা মেনে নেয়াই ভাল যে আমার স্বামী আর ফিরে আসবে না,আর আমাদের তো বিয়ে হয়ে গেছে,তুমিই তো এখন ছেলেদের অভিভাবক,বাবা’।

বাইরের আঙ্গিনায় কয়েকটা বিড়াল তখন মারামারি করছিল বেঁচে থাকার যুদ্ধে,তারপর সবকিছু চুপচাপ হয়ে গেল,দীর্ঘ এক নিস্তব্ধতা,ইচ্ছা হচ্ছিল চীৎকার করে কেঁদে উঠি।পারলাম না,এমন কি মোমবাতীদানী রেখে ছেলেদের ঘরের দিকে চলে যাব,সেটাও পারলাম না।
নিজেকে বোঝালাম,আমার নিশ্চিন্ত হওয়া দরকার,যে সিয়াহ বাবাকে খুন করেনি,তার আগে এই ঘর থেকে যাব না,আমি।

‘তুমি আমাদের খুব ছোট করে দেখছো,আমাদেরকে দূর্বল,অসহায় ভাবছো।শুধু তাই না,মনে হচ্ছে বিয়ের পর থেকে তোমার ঔদ্ধত্য বেড়ে গেছে।তুমি জান আমার বাবা মারা গেছে,তোমার ভাবভঙ্গী দেখে মনে হচ্ছে,তুমি আমাদেরকে করুনা করছো,তুমি আমাদের সংসারের একজন না’,আমি বললাম।

‘আমার জান,সেকুরে’,সিয়াহ অনেক হিসাব করে বললো যেন,অবশ্য ভালই লাগছিল শুনতে সিয়াহর কথা।‘তুমি ভালভাবেই জান,তুমি যা বললে তার কোনটাই সত্যি না,এটাও জান তুমি তোমার জন্যে এমন কিছু নাই যা করতে আমি পিছু পা হবো’।

‘তা হলে বিছানায় শুয়ে আছ কেন,বের হও আর আমার পাশে এসে দাঁড়াও’।
কেন যে কথাগুলো বললাম,জানিনা?জানি সিয়াহর কথাই ঠিক,তবে রাগ হচ্ছিল আমার কথা শুনে ও মেঝেতে আমার পাশাপাশই কেন দাঁড়ালো না।
‘বাবার খুন হওয়ার আগে তুমি ভেজা বেড়ালের মত চুপচাপ বাড়ীতে ঢুকতে’,আমি বললাম, ‘আর এখন তুমি আমাকে হিসেব করে ডাকছো,সেকুরে,আমার জান বলে।জানি ঐ ডাকের মধ্যে কোন আন্তরিকতা নাই,শুধু লোক দেখানো একটা ডাক,কথার কথা’।
আমি কাঁপছিলাম তবে রাগে না,বরং শীতের প্রচন্ডতায়,পা থেকে সারা শরীর জমে যাওয়ার উপক্রম,তখন।
‘তুমি কি জান,তোমার আর এসথারের কল্যানে ওস্তাদ ওসমান এখন ঘোড়া আঁকার শিল্পী খুঁজে বেড়াচ্ছে,কে সেই শিল্পী,তাই ছবির পর ছবি বিশ্লেষ্ণ করতে ব্যাস্ত হয়ে গেছে,ওস্তাদ ওস্মান’।
‘ওস্তাদ ওসমানের সাথে আমার বাবার শত্রুতার কথা,কে না জানে?।এখন বাবা,(আল্লাহ তাকে যেন বেহেশতবাসী করে),দেখছে আর অবাক হচ্ছে যে তুমি তার খুনীকে খুঁজে বের করার জন্যে ওস্তাদ ওসমানের উপর নির্ভর করে বসে আছ।এটা ভাগ্যের নির্মম পরিহাস,আর নিশ্চয়ই বাবার আত্মার কাছে অনেক যন্ত্রনার ব্যাপার’।
সিয়াহ বিছানা থেকে উঠে আমার দিকে ছুটে আসলো,আমার একটু নড়ার শক্তিও ছিল না তখন।সিয়াহ আমার হাতের মোমদানীটা নিয়ে একপাশে সরিয়ে রাখলো,ঘুটঘুটে অন্ধকারে হাতে হাত আমরা দুজনা দাঁড়িয়ে ছিলাম ঘরের মাঝখানে।
‘তোমার বাবা এখন আমাদের আর দেখতে পাবে না’,সিয়াহ ফিসফিস করে বললো,‘এখন এখানে আর কেউ নাই,শুধু তুমি আর আমি,সেকুরে।বার বছর পরে ইস্তাম্বুলে ফিরে এসে তোমার ভাবভঙ্গী দেখে মনে হচ্ছিল সত্যি সত্যিই তুমি ভালবাস আমাকে,জানি না সেটা ঠিক কি না?আমাদের বিয়ে হলো যদিও,তুমি ছুটে বেড়াচ্ছো আরও দূরে দূরে’।
‘আমার তোমাকে বিয়ে করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না’,আমি ফিসফিস করে উত্তর দিলাম।
ঐ অন্ধকারেও অনুভব করলাম,কি ভাবে আমার কথা নখের আঁচড়ে সিয়াহর হ্রদয়কে রক্তাক্ত করছে-যেন কবি ফুজুলির কোন কবিতার বর্ননা।
‘হয়তো সময় আসবে যখন তোমার ভালবাসায় হয়তো আমি পাগল হয়ে যাব।তুমি তো জানই,কৈশোরে তোমার প্রতি প্রচন্ড দূর্বলতা ছিল আমার,আমার জীবনের প্রথম ভালবাসার স্বাদ’,ফিসফিস করে বললাম।
‘আমার অন্ধকারের রানী,তোমার তো অনেক কিছুই জানা আছে’,সিয়াহ বললো,‘তুমি তো মাঝে মাঝে উঁকি দিতে,তোমার বাবার কাছের নানান শিল্পীদের দিকে।তা তোমার তো ঐ শিল্পীদের সম্নধে কিছু জানাশোনা আছে,তোমার মনে হয়,খুনীটা কে’।
সিয়াহর কৌতুকে মনটা কিছুটা হাল্কা হলো,ও তো আমার স্বামী,আমার প্রিয়জন।
‘ঠান্ডায় কাঁপছি,আমি’,কথাগুলো কি আমার মুখ দিয়ে বেরোলো,মনে পড়ছিল না।অন্ধকারে দুজনে দুজনকে জড়িয়ে চুমু খাচ্ছিলাম আমরা,সিয়াহর নরম জিভটা আমার মুখে,আমার কান্না,চুল,রাতের পোষাক,কেঁপে উঠা শরীর,সবকিছুতেই তখন ছড়ানো একটা অজানা চমক।

আমার নাকটা সিয়াহর গালে ঘষে শুধু শীত সরাচ্ছিল না,উত্তেজনার তাপে ভঁরে উঠা শরীরটা,কিন্ত হিসেবী সেকুরেকে সংযমী হতে হলো তখন।মোমবাতীটা হাত থেকে ফেলে দেইনি,তবে মনে হচ্ছিল বাবা,আমার স্বামী,ছেলেরা সবাই দেখছে।
‘কে যেন বাড়ীতে ঢুকলো’,বলে সিয়াহকে একপাশে ঠেলে,ছুটে গেলাম আঙ্গিনার দিকে।



আমাকে সবাই ডাকে,সিয়াহ নামে

নিস্তব্ধ,শান্ত,অচেনা,সকালের অন্ধকার,অনুশোচনায় ভেসে যাওয়া অতিথির মত হেঁটে যাচ্ছিলাম গলির রাস্তায়।বায়াজিদ এলাকায় থাকার সময় আঙ্গিনায় ওজু করে মসজিদে যখন নামাজে যেতাম,কেউ থাকতো না সেখানে।শুধু ইমাম এফেন্দী আর এক বুড়ো যে নামাজ পড়তে পড়তে ঘুমাতো-খুব একটা সহজ কাজ না,অনেক অভ্যাসের ব্যাপার।অনেক সময় মনে হয় ঘুমে বা স্মৃতিতে আল্লাহ আমাদের দোয়া মঞ্জুর করে,সে ভাবেই আমার অভিযোগ সুলতানের কাছে হয়তো পৌছাবে,আল্লাহর কাছে এটুকু চাই আর কিছু না হোক একটা সুখী সংসার হয় যেন আমার।

ওস্তাদ ওসমানের বাসায় পৌছালাম,কেন জানি তার প্রভাবে আমার প্রিয় এনিষ্টের মুখটা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে মন থেকে।যদিও ওস্তাদ ওসমানের আন্তরিকতায় বরাবরই একটা দূরত্ব ছিল,
তবে তার ছবি আঁকার বিশেষত্বে ছিল অভাবনীয় এক সৌর্ন্দয,সব কিছুই ফুটে উঠতো,
প্রানবন্ত এক চেহারায়।কাজে ওস্তাদ ওসমান ছিল অনেকটা একজন সুফীর মত,একজন দরবেশ,ঝড়ো বাতাসে দূর্দান্ত সুরের ভঁয় পাওয়ানো মানুষ,যাকে অন্যান্য শিল্পীরা বিশ্বাস করতো,ভয় পেত।

বাসা থেকে সুলতানের মহলে ওস্তাদ যাচ্ছিল কুঁজো হয়ে ঘোড়া চড়ে,আর আমি যাচ্ছিলাম তার পেছনে পায়ে হেঁটে হেটে।মনে পড়ছিল ঐ ছবির একটা দৃশ্য,দরবেশ যাচ্ছে ঘোড়ায় চড়ে আর শিষ্য পায়ে হেঁটে পেছনে পেছনে।রাজমহলে পৌঁছে দেখলাম,প্রধান সুবাদার লোকজন নিয়ে উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে আমাদের জন্যে।আমাদের সুলতানের নিশ্চিত ধারণা হয়ে গেছে, শিল্পীদের ঘোড়ার ছবির নমুনা দেখে আমরা নিঃসন্দেহে বের করতে পারবো,খুনী কে?
সুলতানের আদেশ মত,অপরাধীকে প্রথমে অত্যাচার করে সব কিছু জেনে নেয়ার পর,
যথাযথ বিচার হবে।আমরা অবশ্য জল্লাদের এলাকা ছেড়ে গেলাম অন্য আরেক ঘরে।
সুলতানের প্রাসাদের এক পাশে ছিল জেরা আর অত্যাচার করার জায়গা।কমবয়সী এক বেশ নম্র,ভদ্র এক জোয়ান যাকে জেরা ঘরের পাহারাদার হিসাবে ভাবাই যায় না,টেবিলে তিনটা কাগজ রাখলো।ওস্তাদ ওসমান আতস কাঁচ দিয়ে ছবিগুলো পরীক্ষা করা আরম্ভ করলো,একটা বাজপাখী তার শ্যেন দৃষ্টি দিয়ে দেখছে নীচের মাটির জগত।ওস্তাদ ওসমান চোখ বাজপাখীর মতই ছবিগুলো দূর থেকে দেখে,খুঁজছিল নীচের ছোট্ট শিকার।
‘এখানে কিছুই নাই’,কিছুক্ষন পর মন্তব্য করলো,ওস্তাদ ওসমান।
‘কি নাই’,জিজ্ঞাসা করলো প্রধান সুবাদার।
অবাক হলাম আমি,ঘোড়ার পা,কেশর,ঘাড়,মুখ পরীক্ষা করার পর ওস্তাদ ওসমানের মন্তব্য করাটা স্বাভাবিক,তবে এত সহজে সব কিছু নাকচ করে দেয়াটা কি ঠিক হলো?
‘শিম্পীদের ছবিতে তেমন কোন ইঙ্গিত নাই,যা দিয়ে বোঝা যাবে,শিল্পীর বিশেষত্ব’,ওস্তাদ ওসমান বললো।কথাটা একেবারেই ঠিক তিনটা ঘোড়ার একটাতেও এনিষ্টে এফেন্দীর আঁকা ঘোড়ার ছবির সাথে কোন সামঞ্জস্য নাই।চোখে পড়লো তখন জেরা ঘরের অত্যাচারের সাজ সরঞ্জাম,কার উপর যে অত্যাচার হবে জানা,কে জানে?আমি ঠিক তখনই দেখলাম আস্তে আস্তে একটা চেহারা আঙ্গিনার বটগাছটার পেছনে লুকানো একটা চেহারা ঘরে ঢোকার প্র ঘরটা আলোয় ভঁরে গেল,আমাদের মহামান্য সুলতান ঘরে ঢুকলো।
‘হুজুর মাফ করবেন আমাদের শিল্পীদের ছবি আঁকার হাত এতই যে খারাপ,এটা জানা ছিল না,আমার’,ওস্তাদ ওসমান মন্তব্য করলো,‘আগে ভাবতাম যে ওদেরকে আমার শিষ্যদের হাতের পাঁচ আঙ্গুলের মতই জানি আমি,এখন দেখছি সেটা আমার বোঝার ভুল।শিল্পীদের ছবিতে খুঁতেরও একটা উৎস আছে’।
‘কি বলতে চাচ্ছেন আপনি’?মহামান্য সুলতান জিজ্ঞাসা করলো।
‘মহামান্য সুলতান,আপনি তো পৃথিবীর শাসনকর্তা,সব কিছুই জানা আছে আপনার।বাদামী ঘোড়ার নাকের যে ধরণ সেটা শিল্পীর অজান্তের কোন ভুল না,বরং তার ইতিহাসটা লুকানো আছে পুরোনো কোন এক ওস্তাদ শিল্পীর ছবি আঁকাতে।আপনার কাছে যে সব বই তালাচাবি দিয়ে বন্ধ করা আছে সেগুলো পরীক্ষা করার সূযোগ হলে পুরোনো কোন এক ওস্তাদ শিল্পীর ছবি আঁকার সাথে কোথাও কোন মিল আছে কি না খুঁজে বের করা যায়,আর সেই সূত্র থেকে এই ঘোড়ার রহস্য বের করা সম্ভব হবে,মনে হয়’।
‘ওস্তাদ,আপনি আমার খাজাঞ্চী খানায় ঢুকতে চান’?সুলতান প্রশ্ন করলো।
‘হ্যা,সেটাই আমার ইচ্ছা’,ওস্তাদ ওসমান উত্তর দিল।
ঐ অনুরোধ অনেকটা সুলতানের হারেমে ঢুকতে চাওয়ার মতই একটা ঔদ্ধত্য।বুঝতে পারলাম,হারেম আর খাজাঞ্চীখানার অবস্থান যেমন প্রাসাদের দুটো সুন্দর জায়গায়,তাদের অবস্থানও সুলতানের হ্রদয়ের একান্তে।
আগ্রহ না বলে কৌতুহল বলাটাই ভাল হবে,অপেক্ষা করছিলাম,সুলতানের চেহারা,ভাবভঙ্গী কি ভাবে বদলায় সেটা দেখার জন্যে,সে রকম কোন কিছুই ঘটলো না,সুলতান হঠাৎ উঠে কোথায় যেন চলে গেল।ওস্তাদ ওসমানের কথায় রেগে গিয়ে কি সুলতান উঠে গেল নাকি কে জানে,এর পরে হয়তো আছে অত্যাচারের পর্ব?ওস্তাদ ওসমানের এ ধরণের ঔদ্ধত্যের জন্যে কি শেষমেষ সব শিল্পীদের শাস্তি হবে হয়তো,কে জন্যে?
টেবিলের তিনটা ঘোড়ার ছবি দেখছিলাম আর ভাবছিলাম হয়তো আর দেখা হবে না প্রিয় সেকুরের সাথে,ঐ বিছানায় আর শোয়া হবে না তার সাথে।অজানা,অদ্ভুত এক সৌন্দর্য নিয়ে ঘোড়াগুলো যেন ছুটে যাচ্ছিল অন্য কোন পৃথিবী থেকে।
প্রাসাদে জন্মানো,বড় হয়ে ওঠার আর কোন মানে নাই,শুধু জীবনটা সপে দেয়া সুলতানের কাজের জন্যে।একজন শিল্পী হওয়াও আর কিছু না,নিজেকে আল্লাহর কাজে আত্মসর্মপন,জীবন দেয়া বিশ্বাস্বের স্বার্থে।বেশ কিছুটা সময় পার হয়ে গেছে,সুলতানের প্রধান খাজাঞ্চীর লোক আমাদের ডেকে নিয়ে গেল মাঝখানের গেটে,আমার মনে তখন একটাই চিন্তা,এই হয়তো শেষ সিয়াহর।গেটের পাশ দিয়ে যখন হেঁটে যাচ্ছিলাম,যেখানে লুকানো একের পর এক অনেক পাশাদের হত্যা করার ইতিহাস,পেয়াদারা কেউ আমাদের দিকে মুখ তুলেও দেখছিল না।
প্রাসাদের সুন্দর চত্বরটা দেখে অবাক হলেও,ময়ুর অন্যান্য পাখীরা আমাকে অবাক করেনি,
তখন মনে একটাই চিন্তা কি আছে আমাদের ভাগ্যে?

আমরা যাচ্ছি সুলতানের খাসমহলে প্রাসাদের সবচেয়ে সুন্দর জায়গায়,দরজা দিয়ে হেঁটে গেলাম,যেখানে উজীর নাজিরদেরও যাওয়ার অনুমতি নাই,অজানা একটা স্বপ্ন রাজ্য।আমার চোখ ছিল মাটিতে যাতে কারও সাথে চোখে চোখে না হয়ে কোন বিপদে পড়ি,এমন কি সাহস ছিল না চোখ তুলে সুলতানের দ্রবার দেখার যেখানে লোকজন,উজির নাজিরদের সাথে সুলতানের দৈনিক আসরে বসে।আমার চোখ ছিল হারেমের সাধারণ একটা তালগাছে,
এমন কোন বিশেষত্ব ছিল না গাছটার,মনে হচ্ছিল যেন লম্বা নীল পোষাক পরা একজন সুবাদার।শেষ পর্যন্ত আমরা একটা দরজায় সামনে দাড়ালাম যার কারুকাজ আর সৌন্দর্য নিঃসন্দেহে চারপাশের অন্যান্য সব দরজাকে ছাড়ানো,ওপাশে দাঁড়িয়ে ছিল ঝলমলে পোষাক গায়ে প্রধান খাজাঞ্চী।

প্রধান খাজাঞ্চী বললো,‘আপনারা খুব ভাগ্যবান মানুষ,মহামান্য সুলতানের খাসমহলে ঢোকার অনুমতি পাওয়া যা তা ব্যাপার না।আপনাদের দেখার সূযোগ হবে বই ছবি,যার অনেকগুলোতে আছে সোনা,অন্যান্য দামী মনিমুক্তাও,যা সাধারণ কোন মানুষের দেখার সূযোগ হয়নি কখনও।ওস্তাদ ওসমান এটা মহামান্য সুলতানের আদেশ,আপনার হাতে তিনদিন সময় আছে খুনীকে খুঁজে বের করার জন্যে,বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে সবকিছু জানা না গেলে,প্রধান সুবাদারের কাছে আপনাদের জেরা অত্যাচারের যথাচিত ব্যাবস্থা হবে’।

খাজাঞ্চীখানার তালার নীল কাঁপড়টা সরানো হলো,যাতে বোঝা যায় অন্য কোন চাবি দিয়ে খোলার চেষ্টা হয়নি।পাহারাদার আর দুই প্রধান দেখে নিশ্চিত হলো যে কোন ধরণের কোন কারচুপি হয়নি।তালা খোলার পর দেখলাম,ওস্তাদ ওসমানের চেহারা কেন জানি একেবারে ফ্যাকাসে হয়ে গেছে,দরজার একটা পাল্লা খোলার পর ঘরের অন্ধকারে ওস্তাদ ওসমান বদলানো চেহারায় পুরোনো যুগের কেউ।

‘কোন হিসাবের কেরানী অযথা যাতে খাজাঞ্চীখানায় না ঢোকে তাই এত সব ব্যাবস্থা’বললো প্রধান খাজাঞ্চী, ‘লাইব্রেরীর নাজিরের ইন্তেকাল হয়ে গেছে বেশ কিছুদিন,নতুন কাউকে এখনও দায়িত্ব দেয়া হয়নি।সুলতানের আদেশ হলো,যিযেম আগাঁ থাকবে আপনাদের সাথে যে কোন ধরণের সাহায্যের জন্যে’।

যিযেম আগা লোকটা একজন বেটে,বামুন,চোখদুটো জ্বলজ্বল ক্রছিল,দেখে মনে হয় বয়স প্রায় সত্তরের কাছাকাছি।পোষাকটাও বেশ অদ্ভুত,মাথার পাগড়ীটা নৌকার পালের মত।

‘যিযেম আগা খাজাঞ্চীখানার সবকিছুই জানে নিজের ঘরের মত,কোন বইটা কোথায় রাখা আছে,কোন জিনিষটা কোথায় রাখা,সবকিছু তার নখদর্পনে’,বললো প্রধান খাজাঞ্চী।
তবে মনে হলো না বয়স্ক বামুন কথাগুলো শুনে খুব একটা গর্বিত হয়ে গেছে,তার একটা চোখ ছিল প্রাসাদের পাহারাদারদের দিকে।
প্রধান খাজাঞ্চী বলে দিল,দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে আর সুলতান সেলিমের মার্কা দিয়ে তালা সিল করা হবে,মাগরেবের নামাজের পর সাক্ষীদের সামনে আবার তালা খোলা হবে।
ভুলেও কেউ যেন কোন জিনিষ পকেটে,কাপড়ে কোথাও না নেয়,বের হওয়ার পর সারা শরীর তল্লাশী হবে।এর মধ্যে অন্ধকার ঘরটার উপরের উঁচু জানালার হাল্কা আলোয় আধারী পরিবেশে আমার চোখ ধাতস্থ হয়ে গেছে।লাল ঘরের দেয়ালে ঝোলানো ভেলভেট,কার্পেট,
ভাবছিলাম কত যুদ্ধ,কত রক্ত,কত মানুষের ইতিহাস লুকানো আছে ঐ ঘরে।
‘ভঁয় লাগছে আপনাদের’,জিজ্ঞাসা করলো বামুন যিযেম আগা,অনেকটা যেন আমার ভঁয় কথা বলার ভাষা খুঁজে নিল।‘সবাই ভঁয় পায় এখানে প্রথম বার,এখানকার সোনাদানা সম্পত্তিতে লুকানো আত্মারা এঁকে অন্যের সাথে কথা বলে’।
ভঁয় আর নিস্তব্ধতার মাঝখানে সাজানো অভাবনীয় এই অজানা প্রাচুর্যতা।আমাদের পেছনের দরজা বন্ধ করা আর সিল করার শব্দ,কথাবার্তা ভেসে আসছিল আমাদের কানে,আমরা চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম।

রাখা ছিল মনিমুক্তায় সাজানো তলোয়ার,হাতীর দাঁত,রুপার মোমবাতীদানী,সিল্কের ফ্ল্যাগ,মুক্তায় সাজানো বাক্স,লোহার বাক্স,চীন দেশ থেকে আনা ফুলদানী,লম্বা বাশী,সিল্কের তাকিয়া,লোমের পোষাক,গন্ডারের শিং,সাজানো উটপাখীর ডিম,বন্দুক,তীরধনুক।গাঁদাগাঁদা গালিচা,সিল্কের কাঁপড়,ভেলভেট দেয়াল থেকে ছাঁদ পর্্যেন্ত ছুঁয়ে যাওয়া।দেয়ালে একপাশে রাখা ছোট ছোট সব বাক্স,এমন একটা দৃশ্য যা আমার স্বপ্নেরও বাইরে।
জরি লাগানো কাপড়ে সুলতানদের আচকান,তলোয়ার,বিরাট গোলাপী মোমবাতী,পাগড়ী,
মুক্তায় কাজকরা বালিশ,ঘড়ি,বদনা,ছোরা,হাতীর দাঁতে তৈরী ঘোড়া,হাতী,হীরায় সাজানো হুক্কা,
বড় বড় পাথরের তসবী,মনিমুক্তায় সাজানো মুকুট।উচু জানালার আলোতে দেখা যাচ্ছিল বাতাসের ধুলাবালি,মসজিদের উঁচু মিনারে ভেসে আসা আলোর মত,তবে এখানে ধুলাবালিরও যেন আলাদা একটা আভিজাত্য ছিল।বারে বারে দেখার পর এক জিনিষ থেকে আরেক জিনিষের পার্থক্য বোঝা সম্ভব হচ্ছিল না আমার পক্ষে।যা মনে হচ্ছিল পোষাক রাখার ড্রয়ার,দেখি সেটা একটা টেবিল।দেখলাম একপাশে রাখা মস্কো থেকে মনিমুক্তায় সাজানো একটা আলমিরা।
যিযেম আগা ঘর গরম করার বাসনটা দেয়ালের একটা খোপে রাখলো।

‘বইগুলো কোথায়’?ওস্তাদ ওসমান প্রশ্ন করলো।
‘কোন বই’,উত্তর দিল বামন যিযেম।
‘আরব থেকে আনা,হাতে লেখা কোরআন শরীফ,বেহেশতবাসী দূর্দান্ত সুলতান সেলি্মের তাব্রিজ থেকে আনা,বিভিন্ন পাশাদেরকে যুদ্ধে হারানোর পর তাদের কাছ থেকে নেয়া যথাযথ মৃত্যুদন্ডের পর,ভেনিসের রাষ্ট্রদূতের সুলতানকে দেয়া উপহার,সুলতান মেহমেতের আমলের খ্রীষ্টান ধর্মের বই?আজ থেকে পচিশ বছর আগে শাহ তাহমাসপের আমাদের বেহেশতবাসী
মহামান্য সুলতান সেলিমকে উপহার হিসাবে দেয়া বইগুলো’।

বামন যিযেম আমাদেরকে নিয়ে গেল বিরাট একটা আলমিরার সামনে,আলমিরার বইগুলো দেখে ওস্তাদ ওসমান অস্থির হয়ে গেছে তখন।এক একটা বইএর সূচীপত্র দেখে একের পর এক পাতাগুলোতে চোখ বুলাচ্ছিল ওস্তাদ ওসমান,দেখলাম টানাচোখে আঁকা মঙ্গোলীয়ান খানদের ছবি।
‘চেঙ্গিস খান,চাঙ্গাতাই খান,তুলাই খান,কুবলাই খান,চীনদেশের সব নামকরা যোদ্ধা,খানেরা যাদের নামডাক অম্র হয়ে আছে,মানুষের মনে বই এর পাতায়’,বইটা বন্ধ করার আগে ওস্তাদ ওসমান পড়ে পড়ে শোনালো,আমাকে।অবিশ্বাস্য সুন্দর একটা ছবি চোখে পড়লো,
প্রেমে পাগল ফরহাদ প্রেমিকা শিরিন আর তার ঘোড়াকে কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছে।শিরিন আর ফরহাদের যন্ত্রনা তুলে ধরার জন্যে,তাকিয়ে থাকা পাহাড় কান্নায় ভেঙ্গে,পাথরের টুকরা হয়ে ভেসে যাচ্ছিল,ভেসে যাচ্ছিল কান্না ভঁরা মেঘ,বিশাল তিনটা পাইন গাহের পাতায়ও ঝরে গেছে, শিল্পীর তুলিতে ফরহাদের মনের দুঃখ এমন ভাবে তুলে ধরা ছিল যে ওস্তাদ ওসমান আর আমার চোখ তখন কান্নায় ভঁরে গেছে।ছবিটার উদ্দেশ্য ফরহাদের শারীরিক শক্তি তুলে ধরা না বরং ভালবাসায় মানুষের মনের পরিবর্তন দেখানো।

‘মনে হয়,তাব্রিজে আঁকা বিহজাদের ছবির একটা নকল’,বইটা রেখে আরেকটা বই তুলে ওস্তাদ ওসমান মন্তব্য করলো।বই এর একটা ছবিতে বিড়াল আর ইঁদুরের মধ্যে জোর করে করা বন্ধুতের চেহারা দেখানো,খলিল আর দিমনের।ফসলের ক্ষেতের হতভাগা এক ইঁদুর আকাশের চিল আর কুকুরদের অত্যাচারে বন্ধুত্ব করলো শিকারীর ফাঁদে আঁটকে পড়া বিড়ালের সাথে।দুজনের মধ্যে একটা চুক্তিও হলো,বিড়াল ইঁদুরের বন্ধু হয়ে তাকে চুমু দিল যাতে তাকে আর কেউ বিরক্ত না করে,ইঁদুরের দায়িত্ব ছিল ফাঁদ থেকে বিড়ালকে বের করা।
আমি কোন কিছু বোঝার আগেই ওস্তাদ ওসমান বইটা বন্ধ করে আরেকটা বই হাতে নিল,
বইটাতে ছিল পারস্য আর তুরানিয়ান ঘোড়ার যোদ্ধাদের ছবি,গায়ে বর্ম,মাথায় শিরস্ত্রান,তীর ধনুক সাথে,ঘোড়ার গায়ে ছিল যুদ্ধের সাজ।মৃত্যু পর্যন্ত যুদ্ধের জন্য প্রস্ততি সবার,দলে দলে সেনাপতি দিয়ে ভাহ হয়ে ছিল সবাই,হলুদ ধুলা মাখানো যুদ্ধের জায়গাটা,হাতে বল্লম নিয়ে প্রস্তত,অপেক্ষা করে আছে নির্দেশের জন্য।
আমি নিজেকে বললাম,ছবিটা আঁকা হয়ে থাকুক আজকে বা একশ বছর আগে,এটা যুদ্ধের ছবি হোক বা না হোক,ওটা বলে শিল্পীর মনের যুদ্ধ,আর তার ছবি আঁকার মন।আমার বলার ইচ্ছা হচ্ছিল,আসলে যে কোন শিল্পী যে কোন সময় তার মনের ছবিটাই তুলে ধরে,ওস্তাদ ওসমান মন্তব্য করলো, ‘এখানেও কিছু পেলাম না’,তারপর পান্ডুলিপিটা বন্ধ করে দিল।
আরেকটা বই এ দেখলাম,পাহাড় ছুঁয়ে গেছে আকাশে,মাথায় জড়ানো সাদা মেঘ,চারপাশের প্রকৃতি যেটা ছড়ানো সারা পৃথিবী জুড়ে।ছবিটা বলে দিচ্ছে আমাদের পৃথিবীর গল্প,অচেনা কোন চোখ দিয়ে।ওস্তাদ ওসমান বলে যাচ্ছিল,চীনের ছবিটা কি অদ্ভুত ভাবে বুখারা থেকে হেরাত,হেরাত থেকে তাব্রিজ হয়ে শেষমেষ পৌছালো সুলতানের প্রাসাদে।তারপর এক বই থেকে অন্য বই এ,বাধানো,খোলা-যাত্রার শুরু চীনে আর শেষ হলো ইস্তাম্বুলে।
আমরা দেখছিলাম যুদ্ধের ছবি,মৃত্যুর ছবি,একটা থেকে আরেকটা আরও ভয়াবহ,একটার নিপুন ছোঁয়ার চেয়ে আরেকটার তুলির ছোঁয়া কোন অংশে কম না।রুস্তম আর শাহ মাজেনডেরান।রুস্তম আফ্রাসিয়াবের সৈন্যদের আক্রমন করছে,আর রুস্তমের গায়ে সাধারণ এক যোদ্ধার পোষাক।আরেকটা ছবিতে দেখলাম যুদ্ধে রক্তাক্ত শরীরের টুকরা টুকরা অংশ,মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছানো যোদ্ধার চোখের দুঃখ,এক যোদ্ধা অন্যান্যদের কচুকাটা করছে,জানি না কার সৈন্য তারা।ওস্তাদ ওসমানের হয়তো ছবিগুলো কয়েকশ বার দেখা-হুসরেভের লুকিয়ে লুকিয়ে চাঁদের আলোয় শিরিনের গোসল করা দেখার দৃশ্য,অনেক দিন পর দেখা প্রেমিকদের আনন্দ উল্লাসের ছবি,পাখী,ফুল,গাছপালায় ভর্তি অজানা এক দ্বীপে সালামান আর আবসাই,
মানুষের যন্ত্রনা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্যে।

কোন কোন ছবির এপাশ ওপাশে দু একটা খুঁত ওস্তাদ ওসমানের দক্ষ চোখ এড়ায়নি।
ছবিতে আমাদের মহামান্য পয়গম্বর সশরীরে বেহেশতে যাচ্ছেন,ছয় হাতের কালো চেহারার বুড়ো দাঁড়িওয়ালা শয়তান,নীচে মুক্তার দোলনায় শুয়ে আছে,শিশু রুস্তম,পাশে বসে আছে তার মা,দাইমা।
০০০০০০


(

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:১৯

বিজন রয় বলেছেন: আপনার এই ধারাবাহিক আমি মাঝে মাঝে পড়ার চেষ্টা করি।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৪৮

ইল্লু বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:২৪

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: সেভ করে রাখলাম, পিছনের লেখাগুলোও পড়ব।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৪৮

ইল্লু বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার এই অনুবাদ করা ধারাবাহিকটি আমি নিয়মিত পড়ছি।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৪৭

ইল্লু বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.