নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছন্নছাড়ার আবোল-তাবোল

ইমরান নিলয়

পকেটে কিছু খুচরো স্বপ্ন নিয়ে নিজেকে জানার চেষ্টায় আছি। মাঝে মাঝে শব্দ দিয়ে দাগাদাগি করি। অসামাজিক।

ইমরান নিলয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

গদ্যস্কেচ- লাঞ্চবক্স

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৫২

নগরীর ব্যস্ত ও ভেজা রাস্তায় হঠাৎ একটি হলদে লাঞ্চবক্স আমাদের সামনে লাফ দিলে আমরা একটু অবাক হই। শহরে এরকম ঘটনা অহরহ ঘটে না। বৃষ্টির পানিতে এখানকার বাসগুলো আগের চেয়ে বেশি পোয়াতি হয়। পেটের ভেতর অসংখ্য মানবসন্তান নিয়ে অসাবধানে চলাফেরা করে। তেমনই একটি বৃদ্ধ বাসে আরো মানুষ ওঠার সময় হুড়োহুড়িতেই বোধহয় দুর্ঘটনাটি ঘটে গেল। খাবারের বাটিটা ন্যাংটো হয়ে টকটকে সাদা ভাত আর লাল শাক বের হয়ে আসলো। তারা কাদাপানির পাশের অন্ধকারে পড়ে থেকেও আমাদের দিকে জ্বলজ্বল করে তাকিয়ে থাকে।

লাঞ্চবক্সের মালিক ভদ্রলোক নিশ্চয়ই দুপুরে খান নি। অথচ তার কাছে খাবার ছিল। দুপুরে বস হয়ত ডেকে পাঠিয়েছিল। কড়া কড়া কথা বলে একগাদা কাজ ধরিয়ে দিয়েছিল। অফিসের এই বড় কর্তাটি কেন যেন তাকে পছন্দ করছে না। খুব খাটিয়ে নিচ্ছে। আজকেতো রীতিমত অপমান সহ্য করতে হয়েছে। এরপরে আর কিছু মুখে দিতে ইচ্ছা করে নি।

তাই ভাত আর লালশাকটুকু এখন আবার বাসায় বয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। যদিও যেতে আর পারলেন কই। হতে পারে ভদ্রলোক অপচয় করা পছন্দ করেন না। তাছাড়া বেচারী এত যত্ন করে খাবার দিয়ে দেয়। ফেলে দিতে ইচ্ছা করে না। কেমন যেন অপরাধ হয়। তাছাড়া রাতটাতো আছেই। খেয়ে নেয়া যাবে।

বা হয়ত ভদ্রলোক ইচ্ছা করেই খান নি। বাসায় তুমুল ঝগড়া চলছে। নিজের রাগ দেখানোর শেষ অবলম্বন হিসেবে অনেক চিন্তা-ভাবনা করে বেছে নিয়েছিলেন এটা। আস্ত লাঞ্চবক্স বাসায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। কুসুম দেখুক যে তিনিও কমজোর না। কুসুমের হাতের খাবার না খেলে তার বয়েই গেছে।

এবং আরো কিছু গল্প শোনার আগেই একজন বিমর্ষ চেহারার ভদ্রলোক মাথা নিচু করে এগিয়ে গেলেন আহত লাঞ্চবক্সটার দিকে। তুমুল হতাশায় তার চেহারা কালো হয়ে আছে, পায়ে যেন ভর করেছে শতবর্ষার ক্লান্তি। মনে মনে নিশ্চয়ই খুব লজ্জা পাচ্ছে বেচারা। তবু তিনি বাস-গাড়ির ফাঁক গলে অনেক কষ্টে রাস্তার মাঝখান থেকে লাঞ্চবক্সটি কুড়িয়ে নিয়ে যখন আমাদের কাছে প্রায় চলে এসেছেন, আমাদের সাথের কেউ একজন রাস্তার দিকে ইঙ্গিত করে রোবটের মত ভাবলেশহীন গলায় নীরবতা ভাঙ্গল,
'ঐ যে ঢাকনটা রয়ে গেছে'

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: একটা লাঞ্চবক্স থেকেই এতো চিন্তার খোরাক পেয়েছেন?
দারুণ লাগল

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:২৬

ইমরান নিলয় বলেছেন: চারিদিকে এত গল্প।
ধন্যবাদ জানবেন। ভালো থাকুন।

২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:২৬

িত্রস্তান বলেছেন: চমৎকার।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:১০

ইমরান নিলয় বলেছেন: কারো কিছু না বলার ভীড়ে ছোট করে কিছু বলে ফেলাটাও একটা সুন্দর। অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।

৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:২৫

সুমন কর বলেছেন: লেখা ভালো লেগেছে।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৩৯

ইমরান নিলয় বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন কর।

৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লেগেছে।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:১৫

ইমরান নিলয় বলেছেন: পড়াতেই কৃতজ্ঞতা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.