নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্তি নাই

ইমরান সামি ব্লগ

নাচন কুদন..অলস জীবন

ইমরান সামি ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

|অনুগল্প|

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:২৪

গণধর্ষিত কিশোরী মেয়েটির বেঁচে থাকার তীব্র আকুতি মা মাকড়শাকে দিশেহারা করে । মেয়েটির উপর নির্মম নির্যাতন তাকে করে তোলে আতঙ্কিত , অসহায়। মাকড়শাটি দেখতে চায় না মেয়েটির উপর একদল মানুষের কুৎসিত বীভত্সতা , শুনতে চায় না আর্তনাদ ।

ডিমওয়ালা পেট নিয়ে মা মাকড়শাটি এক কামরার ঘরে অস্থিরভাবে ছোটাছুটি করে । মেয়েটি শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে পাষন্ডদের থেকে নিজেকে ছাড়াতে বিদ্রোহ করার চেষ্টা করে, কিন্তু বাহুবলি নরপশুদের কাছে তার দুর্বল দেহ পেরে উঠেনা।

মাকড়শা শুনতে পায় মেয়েটি চিৎকার করে বলছে,

আমারে ছাইড়া দেন , আল্লাহর দোহায় লাগে আমারে ছাইড়া দেন , আমার অনেক কষ্ট হইতেছে ... মা গো আমারে বাঁচাও মা.....

ভিন্ন প্রজাতি হওয়া সর্তেও মা মাকড়শাটি কিশোরীর আর্তনাদ স্পষ্ট বুঝতে পায় অথচ সমপ্রজাতির ঐ মানুষগুলো মেয়েটির কান্না যেন শুনতে পায় না ।

তারা একজনের পর একজন আসে । জিব্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে প্যান্টের চেইন খুলে , কেউ খুলে লুঙ্গীর গিঁট । অতঃপর হেইও বলে ঝাঁপিয়ে পড়ে মেয়েটির উপরে ।

বিছানার কোঁচকানো চাদরের মতো নীচে পড়ে রয় রক্তাক্ত মেয়েটি । গুঙাতে গুঙাতে কেবল বলে চলে
– ‘ আমারে ছাইড়া দেন ... আমি আর পারতেছি না ...... একটুখানি দয়া করেন ...... “


স্রষ্টার কাছে কৈফিয়ত জানিয়ে মেয়েটি কেবল কাঁদে আর কাঁদে । কিছুপর আসে আরেকজন ।

মানুষের এরূপ রোমহর্ষক আচরণে মা মাকড়শাটি হতবাক, ভীত সন্ত্রস্ত । তার অনাগত বাচ্চাটিকে কিশোরী মেয়েটির জায়গায় ভাবতে গিয়ে প্রচণ্ড অসহায়বোধ করে । মস্ত ডিমওয়ালা পেট টেনে টেনে মা মাকড়শাটি পাগলের মতো ছুটে চলে সিলিঙের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত । নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে । ছুটতে ছুটতে তার কেবলই মনে হয় – ‘ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দুটি পা বড় কম ! ইশশ কিশোরী মেয়েটির কেন আটটি পা থাকলো না ' !

একটা সময় মেয়েটির আর বিদ্রোহ করার শক্তি থাকেনা, আর কাঁদেনা, আকুতি জানায়না এবংকি স্রষ্টার কাছেও মুক্তির প্রার্থনা করেনা । মেয়েটির কাছে মনে হয় এটাই নিয়তি! এটাই আমার প্রাপ্য। নিথর রক্তাক্ত দেহ নিরব পড়ে থাকে কুঁচকানো বিচানার মাঝখানে।

গল্পটির সাথে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বিরোধীদের খানিকটা মিল খুঁজে পাবেন।

এখন আর তারা কোন বিদ্রোহ করেনা, আর তারা কাঁদেনওনা, আকুতিও জানায়না বরং ধর্ষিতা মেয়েটির মত নিয়তির লিখন ধরে নিয়ে রক্তাক্ত দশকের কুচকানো বাংলাদেশের বাসিন্দা হয়ে নিরব পড়ে রয়। আর ধর্ষকেরা শ্বৈরাচারের জয়দ্ধনি গাইতে গাইতে হেইয়ো বলে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিটি গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:১৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনির্বাচিত স্বৈরাচারের হাতে ধর্ষিত হচ্ছে বাংলাদেশ! গণতন্ত্র! মতপ্রকাশের স্বাধীনতা!

ভালই লিখেছেন..
এখন আর তারা কোন বিদ্রোহ করেনা, আর তারা কাঁদেনওনা, আকুতিও জানায়না বরং ধর্ষিতা মেয়েটির মত নিয়তির লিখন ধরে নিয়ে রক্তাক্ত দশকের কুচকানো বাংলাদেশের বাসিন্দা হয়ে নিরব পড়ে রয়। আর ধর্ষকেরা শ্বৈরাচারের জয়দ্ধনি গাইতে গাইতে হেইয়ো বলে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিটি গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে।

আমজনতা পেটুলা মাকড়শার মতো ইতিউতি পালানোর পথ খুজে ফেরে!!! কিন্তু জালের বাইরে যেতে পারে না।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৩

ইমরান সামি ব্লগ বলেছেন: আমজনতা পেটুলা মাকড়শার মতো ইতিউতি পালানোর পথ খুজে ফেরে!!! কিন্তু জালের বাইরে যেতে পারে না।

সত্য ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:০৭

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: চমৎকার একজন গল্পকারের আগমন ধ্বনি শুনতে পাচ্ছি ।
ফেবুতে আরো আগে থেকেই পাচ্ছি । :P

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৯

ইমরান সামি ব্লগ বলেছেন: গল্পকার! অনেক বড় বিষয়!!অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই,

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.