নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ধার্মিক। আমি সব কিছু ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী বিচার বিশ্রেশণ করি। আমি সামাজিক রীতিনীতি, সমাজিক কু সংস্কার, আবেগ দিয়ে কোন কিছু বিচার করি না।
আমি ক্লাস নাইনে ভর্তি হই, ভবেরচর ওয়াজীর আলী উচ্চ বিদ্যালয়, গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ।
জীবনের সেরা কিছু মুহুত্ত্ব (বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন) এই খানে কাটিয়েছি।
সকাল সকাল ওঠে গনিত ও একাউন্টিং প্রাইবেট পড়তাম। ১০ থেকে ৪ টা ক্লাস করতাম। ছুটির পর আবুল হোসেন স্যারের কাছে ইংরেজি প্রাইবেট পড়তাম। পরে বাসায় আসতাম। এটাই ছিলো রেগুলার রুটিন।
প্রথম ক্লাসে গড়ে ৮০ বা ৯০ জন ছাত্র থাকতো। ক্লাশ রুমে বসার জায়গা হতো না। শেষ ক্লাসে গড়ে ১০ থেকে ১২ জন ছাত্র অবশিষ্ট থাকতো। বাকিরা কই যে পলাইতো....... কে জানে!
ও ভালো কথা। নাইন থেকে স্নাতক পযর্ন্ত আমি নানীর বাড়িতে অবস্থান করেছিলাম। আমার নানা সোনালী ব্যাংক, ভবেরচর শাখা, মুন্সীগঞ্জ এর কর্মকর্তা ছিলেন। আমার নানা আব্দুল মালেক ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মারা যান ১০ ডিসেম্বর ২০১০। তিনি আমার এসএসসি পরীক্ষা দেখে যেতে পরেন নি। আমি প্রায় সময় নানার ব্যাংকে যেতাম। ও ২০ টাকা নিয়ে আসতাম। সিঙ্গারা খাওয়ার জন্য। মাজে মাজে টাইগার এনার্জি ড্রিংস খেতাম। টাকা বেশী দিলে সকালে নাস্তাও খেতাম। সে সময় ২০ টাকা দিয়ে পেট ভরে রুটি, ডাইল-ভাজি খাওয়া যেতো।
সম্ভবত নভেম্বর। আবুল হোসেন স্যারের প্রাইবেট পড়ে বাসায় আসলাম। আসতে আসতে মাগরিব এর আযান হয়ে গিয়েছিলো। দেখলাম আমার নানা শৈল মাছ দিয়ে ফুল কপি রান্না করেছিলেন। খুব মজা লেগেছিলো।
ভবেরচর ওয়াজীর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে যে সব সহপাঠী পেয়েছি তাদের নিয়ে আমি গর্ব করি। যদিও তারা কেউ ডাক্তার, ইজ্ঞিনিয়ার, বিসিএস ক্যাডার নহে। আমরা একে অপর কে যে ভাবে ভালোবাসতাম, যে রকম আন্তরিকতা দেখাতাম তা ছিলো বলার বাহিরে।
একদিন আমি সাইকেল চালিয়ে আবুল হোসেন স্যারের বাসায় যাচ্ছিলাম। আমার সাইকেল এর ধাক্কায় একটি মটর সাইকেল পড়ে যায়। পরে মটর সাইকেল ওয়ালা লজ্জায় চলে যায়।
আমাদের সময় অপসনাল সাবজেক্ট ছিলো উচ্চতর গনিত, বায়োলজি, কৃষি শিক্ষা, গারস্থ অর্থনীতি ও কম্পিউটার। আমার অপসনাল সাবজেক্ট ছিলো কম্পিউটার। এর জন্য আমি অনেক বাহাবা ও পেয়েছি।
আমার এক বন্ধু আছে। সে এখন বিজিবি তে চাকরি করে। সে একদিন কি করেছে জানেন? আমরা দুইজন হোটেলে সিঙ্গারা খেতে গিয়েছিলাম। সে দুটি সিঙ্গারা দিয়ে একটি সস এর বোতল শেষ করে দিয়েছিলো।
যথারীতি নিয়মে আমাদের প্রি টেস্ট ও টেস্ট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আমি সব বিষয়ে পাশ করি। তারপর আমাদের “বিদায়” এর দিন আসে। সেদিন আমরা খুব খুসি ছিলাম। এসএসসি পরীক্ষা, আমরা বড় হয়ে গেছি, কলেজে উঠবো। আর কত কি, অনুভূতি ছিলো। কে জানতো... এই দিনকে আমি মিস করবো?
আমি আজও নাইন টেইনের শেষের ক্লাস মিস করি। আমি মিস করি বন্ধুদের ভালোবাসা। শিক্ষকদের আন্তরিকতা। আমি আরো মিস করি আবুল হোসেন স্যারের প্রাইবেট। আবুল হোসেন স্যারের প্রাইবেট শেষে; শেষ বিকেলে ক্লান্ত শরীলে বাড়ি ফিরা। আমার নানা আমার জন্য বারান্দায় অপেক্ষা করতেন। আমি মিস করি “আমার নানার অপেক্ষা।” এমন আবেগ নিয়ে অপেক্ষা করা; আমার মা আমার জন্য করতেন না।
০৭ মার্চ ২০২২ সাল। ততদিনে আমার বউ আমার সাথে পুরাপুরি যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আমার বউ আমাকে তালাক দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছে সেটা আমি টের পেয়ে যাই।
এই ০৭ মার্চ ২০২২ তারিখে আমার এক বন্ধুর বৌ ভাত ছিলো। আমি বাসায় বসে বসে ভাবছিলাম “ঘরে বসে থেকে মন খারপ করে লাভ নাই। বন্ধুর বিয়ে তে যাই।” বন্ধুর বিয়ে আমার আরো বন্ধু উপস্থিত ছিলো।
তখন আবহাওয়া কেমন যেন পরিবর্তন হয়ে যায়। তখন মনে হচ্ছিলো যেন আমরা এখন ক্লাস নাইন বা টেইনে পড়ি। কোন কষ্ট নাই। কোন দুঃখ নাই। এইটা ছিলো এক স্বর্গীয় অনুভূতি।
আমি আমার স্কুল নিয়ে গর্বিত।
স্কুল এর গুগল ম্যাপ পজিশন:view this link
১৩ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:১৬
নাহল তরকারি বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১২:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: শুধু লেখা নয় আপনার নিজেকেও উন্নত করতে হবে। আধুনিক করতে হবে।
১৫ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:৩৯
নাহল তরকারি বলেছেন: আপনার উপদেশ গ্রহন করিলাম।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:১৭
অক্পটে বলেছেন: আপনার স্মৃতিচারণ ভালো লাগল।