![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পর্ব-১: শক্তির নিত্যতা
শক্তির নিত্যতা সম্বন্ধে আমরা অনেকেই কম-বেশী জানি। শক্তির নিত্যতা কথাটার অর্থ হচ্ছে ''শক্তি কখনো সৃ্ষ্টি বা ধ্বংস হয়না, কেবল এক রূপ থেকে অন্য রূপে পরিবর্তিত হয়"। তাই যদি হয়, তাহলে আমরা দৈনন্দিন জীবনে যে শক্তি খরচ করি তা নিশ্চয়ই 'খরচ' হয়ে যায় না, বরং অন্য কোনো রূপে পরিবর্তিত হয়ে যায়। তাছাড়াও আমরা যে শক্তি 'খরচের' জন্য পাই তাও নিশ্চয়ই কোন না কোন রূপান্তরের মাধ্যমেই আসে। প্রকৃতপক্ষে এই জগতে প্রতি নিয়ত শক্তি একরূপ থেকে অন্যরূপে পরিবর্তিত হয়ে চলেছে। কখনো সেই পরিবর্তন আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসে- আমরা তার সুফল ভোগ করি আর কখনো শক্তির পাকৃতিক রুপান্তর আমাদের সমূলে ধ্বংস করে দিয়ে যায়। প্রাকৃতিক শক্তির এই পরিবর্তন অনেক সময় চাক্রিক প্রক্রিয়ায় আবর্তিত হয় অর্থাৎ বিভিন্ন রূপান্তরের মধ্য দিয়ে পুনরায় আগের রূপে ফিরে যায়। এই লেখায় আমি প্রাকৃতিক শক্তির রুপান্তরের এই প্রক্রিয়া, প্রকারভেদ, প্রভাব, প্রতিক্রিয়া বিশদভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
জগতে শক্তি নানা রূপে বিরাজ করে। আমাদের কাছে শক্তির যে রূপগুলো সচরাচর ধরা দেয় তা হচ্ছে: তাপ, আলো, শব্দ, গতি, চৌম্বক, বিদ্যুৱ ইত্যাদি। আমাদের জীবন ধারনের জন্য আমরা প্রতিনিয়ত শক্তিকে একরূপ থেকে অন্যরূপে পরিবর্তন করে চলেছি। সেটা কখনো আমাদের ইচ্ছাতেই হয়, আর সর্বদাই আমাদের অজান্তে হচ্ছে। যেমন: আমরা যখন বাতি জ্বালাই বা পাখা চালাই তখন বিদ্যূৱশক্তি আলোকশক্তিতে এবং গতিশক্তিতে পরিনত হচ্ছে। বৈদ্যূতিক বাতিতে আলোর সাথে বেশ খানিকটা তাপ ও উৱপন্ন হয়, কাজেই বলা যায় বিদ্যুত্ শক্তির একটা অংশ তাপশক্তিতে এবং বাকী অংশ আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। এখানে আমরা শক্তির রূপান্তরটা মোটামুটি স্পষ্টভাবেই টের পাই। আমরা যখন চুলায় কোন কিছু রান্না করি তখন গ্যাস বা লাকড়ি পুড়িয়ে তাপ উত্পন্ন করি- এখানে কি্ন্তু তাপটা কোন শক্তি থেকে রূপান্তরিত হয়ে এসেছে তা হয়তো বুঝতে পারি না, মনে হয় যেন এখানে হঠাত্ করেই শক্তির উত্পত্তি ঘটেছে। কিন্তু আসলে তা নয়। যাদের রসায়ন সম্বন্ধে সামন্য জানা-শোনা আছে তারা জানে কোনো কিছু পোড়ানোর সময় সেই জ্বালানী বস্তুর এবং বাতাসের অক্সিজেনের ভিতরকার সঞ্চিত রাসায়নিক শক্তি রূপান্তরিত হয়ে তাপ শক্তিতে পরিনত হয় এবং তার ফলে আমরা সেই তাপ অনুভব করতে পারি।
প্রকৃতিতে বিদ্যমান অনেক শক্তি আমরা অনুভব করি না, যার ফলে সেই রূপ সংশ্লিষ্ট পরিবর্তন আমরা বুঝতে পারি না- আমাদের কাছে মনে হয় শক্তি বুঝি এইমাত্র তৈরি হল। আবার সেই রাসায়নিক শক্তির রূপান্তরিত তাপে রান্না হয়ে যাওয়ার পর তাপ শক্তি যে সেই রান্নাকৃত বস্তুর মধ্যে স্থানান্তরিত হয়েছে তা বুঝতে পারি কিন্তু সেই বস্তুটি যখন ধীরে ধীরে ঠান্তা হয়ে আসে তখন মনে হয় তাপশক্তি বোধহয় নিঃশেষ হয়ে গেল। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার হল রান্নাকৃত সেই বস্তু বাতাসের সংস্পর্শে এসে তাকে উত্তপ্ত করে, উত্তপ্ত বাতাস হালকা হয়ে উপরে উঠে যায় এবং গতি শক্তির সৃষ্টি হয়। উপরের দুটি উদাহরন থেকে আমরা বুঝতে পারছি, আমরা বুঝি বা না বুঝি আমাদের গোচরে বা অগোচরে শক্তি একরূপ থেকে অন্যরূপে পরিবর্তিত হয়ে যায়- কখনো তৈরি বা ধ্বংস হয় না।
প্রায়শই শক্তির রূপান্তরগুলো এত তাত্ক্ষনিক ও এত অধিক পর্যায়ে ঘটে যে সেগুলো আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। প্রথম উদাহরনে ফিরে যাই, যেখানে বিদ্যুত্ শক্তি রূপান্তর করে আমরা পাখা চালিয়েছিলাম। এই প্রক্রিয়াটিতে আসলে শক্তির অনেকগুলো পর্যায়ক্রমিক রূপান্তর আছে। ১. বিদ্যুত্ যখন পাখায় প্রবেশ করে তখন পাখার অভ্যন্তরে স্হাপিত বৈদ্যূতিক কয়েলের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমে তা চৌম্বক শক্তিতে পরিনত হয়। ২. সেই চুম্বক পাখার অভ্যন্তরে স্থাপিত স্থায়ী চুম্বকের আকর্ষণ-বিকর্ষণের ফলে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং চুম্বকগুলো বৃত্তাকারে সজ্জিত থাকার কারনে সেখানে ঘূর্ণনগতির সৃষ্টি হয়। ৩. এই ঘূর্ণনগতির কারনে পাখা যখন নিকটস্থ বায়ুর স্তরকে আঘাত করে তখন বায়ুতে পাখার গতিশক্তি স্থানান্তরিত হয়ে যা্য়। সেই বাতাসের ভিতর দিয়ে শক্তি পরিবহনের সময় আরো অনেক ছোট ছোট রূপান্তর ঘটে যেমন: কিছুটা শব্দ সৃষ্টি হয়, ঘরে অবস্থিত হালকা জিনিস-পত্রকে নাড়িয়ে দেয় ইত্যাদি। চাইলে এই তালিকা আরো বাড়ানো যেতে পারে। তবে এই প্রক্রিয়ায় অনেক সময় শক্তি রূপান্তরের অযোগ্য হয়ে পড়ে, সেই সম্বন্ধে কোন এখ খন্ডে আলোচনা করা যাবে। আমরা আমাদের মূল আলোচনাতে যাওয়ার আগে আসা করি আপনাদের আস্বস্ত করতে পেরেছি যে “শক্তি কখনো সৃ্ষ্টি বা ধ্বংস হয় না, বরং এক রূপ থেকে অন্য রূপে পরিবর্তিত হয়। জগতের মোট শক্তির পরিমান নির্দিষ্ট ও অপরিবর্তনীয়।“ এটাই হল শক্তির নিত্যতা।
১৭ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:৪১
বেঙ্গলেনসিস বলেছেন: ইচ্ছা আছে। তবে জীবনে কোনদিন লেখালেখি করি নাই। দেখা যাক কি হয়।
২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:১৩
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: কিন্তু ভাই, এই তত্বটাও একটু হুমকির মুখে, কারন ইউনিভার্স ইস লিকিং, যদিও এটার জন্য সবাই কসমিক স্ট্রিং খুজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে...তবুও সমস্যা থেকেই যায়! রেড শিফট প্রলম্বিত হওনের অবজার্ভেশনটা পড়তে পারেন!
১৭ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৫:২৬
বেঙ্গলেনসিস বলেছেন: হ্যাঁ, কিন্তু এখন পর্যন্ত এই তত্ত্বই ভরসা। আর সাধারনভাবে আমাদের চারপাশের শক্তির আবর্তন বোঝার জন্য আশা করি এই তত্ত্বই যথেষ্ট হবে। আপনাকে ধন্যবাদ।
৩| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ১২:২৯
একলোটন বলেছেন: সামু ব্লগে স্বাগতম।
৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ৮:০৪
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: লেখক বলেছেন: হ্যাঁ, কিন্তু এখন পর্যন্ত এই তত্ত্বই ভরসা। আর সাধারনভাবে আমাদের চারপাশের শক্তির আবর্তন বোঝার জন্য আশা করি এই তত্ত্বই যথেষ্ট হবে। আপনাকে ধন্যবাদ
নোপ, এটা সত্য না! এখনো আমাদের ধারনার বাইর এনার্জী স্ট্রিংগুলো কিভাবে ইন্টারেকশন করছে অথবা এই ইন্টারেকশনের জন্য কি দায়ী...যদিও এটা ধরে নেয়া হয়েছে এখানে কোনো আধিভৌতিক কোনো কিছু নেই তবু মনে হয় শূন্য অথবা ভ্যাকুয়াম এনভায়রনমেন্টে সত্যিকারের মিথস্ক্রীয়ার প্রোবাবিলিটি আর কোয়ান্টাম ফম আর এক্সটিক এনার্জীর স্ট্যাবিলিটি এসব কথা বার্তায় একটু কিন্তু থেকেই যায় যখন চিন্তা করা হয় প্রিসাইস মিজারম্যান্টের বিষয় যেটা প্লান্কের মানের চেয়ে আরও সূক্ষ্মতর।
কোয়ান্টাম ফিজিক্স একটু বেশি বেশি করে পড়বার আহ্বান রইলো!
১৯ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১১:৩৬
বেঙ্গলেনসিস বলেছেন: আসলে কোয়ান্টাম ফিজিক্সকে বাদ দিয়েই লেখাটা লিখেছিলাম। যেমন ধরুন কোয়ান্টাম মেকানিক্স অনুসারে নিউটনের গতিসূএগুলো বাতিল হয়ে যায় এবং এটা এখন বেশ পরীক্ষিত কিন্তু অদ্যবধি আমাদের গতীয় যন্ত্রগুলো নিউটনের সূএ ফলো করেই তৈরি হচ্ছে। তবে আমার জ্ঞনের সীমাবদ্ধতার কথা অস্বীকার করব না। আপনার পরামর্শ গ্রহন করলাম।
৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১১:২২
রাহা বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম
২২ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৩:১৩
বেঙ্গলেনসিস বলেছেন: ধন্যবাদ
৬| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১১:১২
সাইমুম বলেছেন: এটা দরকারি পোস্ট। চালিয়ে যান ধারাবাহিক। ধন্যবাদ।
ব্লগে স্বাগতম। হেপি ব্লগিং।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ২:২৫
বেঙ্গলেনসিস বলেছেন: চালিয়ে যাব। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ১:০৫
শুভ রহমান বলেছেন: সামু ব্লগে স্বাগতম। প্রথম পোস্ট হিসেবে ব্যাতিক্রমী। সাধারণত প্রথম পোস্ট হিসেবে সবাই "আমি আসলাম!" টাইপের পোস্ট দেয়। শক্তির নিত্যতার উপর বেশ সরল ভাষায় লিখেছেন। পোস্টে কিছু ছবি দিয়েন। বিজ্ঞান নিয়ে নিয়মিত লিখবেন নাকি?