![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যা ইতিহাসের অন্যতম বুদ্ধিদীপ্ত কাজ।
এদেশে কে আসেনি? ওলন্দাজ, পূর্তগিজ, ফরাসি, ব্রিটিশ, স্পেনিস, আরব, চায়না, পারস্য। আর মোঘল বাদশারাতো ছিলেনই। এমনকি আরাকানের মগ রাজারাও এ দেশে বেশ ক'বার উকি ঝুকি দিয়েছে।
তারা কেনো আসতো?
আসবেনা কেনো? এত সোনার দেশতো গোটা বিশ্বে আর কোথাও যে নেই। যে দেশের মাটির প্রতিটা টুকরা এক একটা খাটি সোনা। যার প্রতিটা ইঞ্চিতে এক টুকরা দূর্বাঘাস হলেও জন্মে। যে দেশের মিঠা পানির এক এক ফোটা এক একটা গলা সোনা। যার মাঝে সাঁতরে বেরায় হাজারো রকমের সম্পদ।
আমি এমনও পড়েছি, এ দেশেরই কোন এক রাজা বা জমিদার মোগল দরবারে খাজনা পাঠাতেন নৌকার পর নৌকা বোঝাই কই মাছ দিয়ে।
এ দেশের সম্পদের বাহার ছিল এতটাই।
আসলে এ দেশে বিপুল সম্পদের অভাব না থাকলেও অভাব ছিলো যোগ্য লোকের। যিনি এ সম্পদ গুলো কাজে লাগাতে পারতেন। যে কারনে প্রতি নিয়ত ভীনদেশীরা আমাদের উপরেই ছড়ি ঘুরিয়ে আমাদেরই সম্পদ লুটে নিয়েছে।
ব্রিটিশিরা আমাদের দেশটা দুইশত বছর শাসন করতে পেরেছে একমাত্র এদেশীয় শাসকদের ব্যর্থতার কারনে। আর কিছুইনা।
এই ভীনদেশী শাসক শোষকদের শেষ দানটা মারে পাকিস্তান। আর বড় খেলটা দেখায় ১৪ ই ডিসেম্বর ১৯৭১।
দেশটা তখন স্বাধীন হবার পথে। দেশের তাবত বুদ্ধিজীবিরা ব্যাস্ত নতুন দেশটা কি করে সাজাবে গোছাবে সে পরিকল্পনায়। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, লেখক, গবেষক, শিল্পী, শিক্ষক, চলচিত্রকার, সবাই যার যার দিক থেকে তৈরি হয়ে গিয়েছিলেন এক মহা পরিকল্পনায়, এক মহা স্বপ্নে।
আর তখনই ইতিহাসের অন্যতম বুদ্ধিদীপ্ত হত্যাযজ্ঞটা হয়। যার খেসারত আমরা আজও দিচ্ছি। যার ক্ষতি আমরা এই ৪২ বছরেও পুষিয়ে উঠতে পারিনি। কবে পারবো তারও ঠিক নেই।
অঢেল সম্পদ ঐশ্বর্য আমাদের এখনও আছে। আমি বলবো অন্য অনেক আধুনিক রাষ্ট্র থেকে অনেক, অনেক বেশিই আছে। কিন্তু কাজে লাগাতে পারছিনা।
আমি সবার কথা বাদ দেই। এক জহির রায়হান কে যদি আমরা আরও অনেক গুলো বছর পেতাম, আমার মনে হয়না আমাদের আজও ভীনদেশী বিনোদনের উপর নির্ভর করে থাকতে হত। এই এক জহির রায়হানের হাত ধরেই গড়ে উঠত শত শত জহির রায়হান।
এই ৪২ বছর পরে আমারা এখন যে জেনারেশানে এসে দাঁড়িয়েছি, সেখানে এ প্রজন্মের অনেক মেধাবী বের হয়ে আসছে, এবং আসতেই থাকবে। কিন্তু তাদের সঠিক পথ দেখাবার সে বুদ্ধিদীপ্ত অভিভাবক কই? নাইতো কেউ। যে কয়জন আছেন তারাও তো কোন না কোন ভাবে কোনঠাসা। কারন, এক দেশকে এগিয়ে নিতেতো এক দুই বা তিন জন শিক্ষক গবেষক শিল্পী যথেষ্ট না। এখানে দরকার একটা বিশাল দল, যারা একসাথে কাজ করবেন।
একজন শিক্ষক তার মমতায় যে ছাত্রটি তৈরি করে দিবেন তাকে কাজে লাগানোর জন্যেতো ঐ শিক্ষকের মতই আর একজন অভিভাবক চাই। তাই না? আমাদের তা কই।
আমি জানি না, ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য এবং বুদ্ধিদীপ্ত এক হত্যাযজ্ঞের ক্ষতি আমরা কবে পোষাতে পারবো।
আমাদের আর কত ৪২ বছর লাগবে!!!!
©somewhere in net ltd.