নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘাড়-ত্যাঁড়া ধরণের মানুষ আমি। নিজের ইচ্ছেগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে ভালবাসি। কিছুটা অসামাজিকও বটে।

শাহ মোহাম্মদ ইসমাইল

কজিতো, এরগো সাম

শাহ মোহাম্মদ ইসমাইল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প: দ্য মার্ডার

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১০

আতঙ্কগ্রস্ত চোখে সামনের দিকে তাকাল মেয়েটা। ছুরি হাতে তার দিকেই এগিয়ে আসছে মৃত্যদূত। ভয়ে বিছানার চাদরের সাথে শরীর ঘষে সামান্য পেছাল মেয়েটা। তবে থেমে গেল না আততায়ী। ধীরে ধীরে এসে বসল মেয়েটার পাশে। তারপর হঠাৎ-ই গ্লাভসপড়া হাতটা বাড়িয়ে চেপে ধরল মেয়েটার মুখ। অন্য হাতে যত্ন সহকারে কেঁটে ফেলল তলপেটটা। গলা কাঁটা মুরগীর পর ছটফট করে উঠল ক্ষুদ্র নারী দেহ। কিন্তু মুখ বন্ধ থাকায় তীক্ষ্ণ গোঙ্গানি ছাড়া আর কিছুই বেরোল না। বিরক্ত হওয়ার অভিব্যক্তি ফুটে উঠল আততায়ীর মুখে। পেট থেকে ছুরিটা একটানে বের করে ধীরে ধীরে নামিয়ে আনলো মেয়েটার গলার উপর।।

[1]

চোখ খোলে কিছুই দেখতে পেলনা রিফাত। ঘন অন্ধকার চতুর্পাশে। তবে, অল্প সময়ের মধ্যেই অন্ধকার সয়ে এলো তার চোখে। মনে করার চেষ্টা করল 'কোথায় সে?'। কিন্তু কিছুই মনে পড়ল না। বরং মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করল। বাম হাতটা তুলে মাথার পেছনদিকটা ছুঁলো সে। হাত সামনে আনতেই গাঢ় অন্ধকারের মাঝেই লাল রক্ত চিনতে ভূল হলো না তার। চমকে উঠে লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল সে। পরক্ষনেই টলে উঠলেও খাটের পায়া ধরে নিজেকে সামলে নিতে সময় লাগল না তার। আবারও মনে করার চেষ্টা করলো "কোথায় সে?"। কিন্তু এবারও মনে করতে ব্যর্থ হলো। টলতে টলতে অন্ধকারের মাঝেই দেয়ালের দিকে এগিয়ে গেলো সে। উদ্দেশ্য - সুইচ বোর্ড খুঁজে বের করে আলো জ্বালানো। হাতড়ে হাতড়ে সেটার খোঁজ পেয়েও গেল। তারপর সবগুলো সুইচ অন করতেই জ্বলে উঠল বাতিগুলো এবং চালু হয়ে গেল সিলিং ফ্যান। আলোকিত হয়ে উঠল পুরো বেডরুমটা।
চমৎকার সাজানো গোছানো একটা রুম। রুমটার এক কোণে একটা কম্পিউটার টেবিল। এক পাশে একটা আলমারি এবং ড্রেসিং টেবিল। রুমের কিছুটা মধ্যখানে করে স্থাপন করা হয়েছে খাট। পুরো রুমটাতেই শৌখিনতার ছাপ স্পষ্ট। তবে এতকিছু চোখে পড়লো না রিফাতের। রুম আলোকিত হয়ে উঠতেই তার চোখ চলে গেছে খাটের উপর। সেখানে শুয়ে আছে অসম্ভব সুন্দর একটা মেয়ে। তার চোখদুটো যেন বিশাল এক সমুদ্র, যেখানে হাবুডুবু খায় অসংখ্য পুরুষের হৃদয়। তবে, এখন সেই চোখদুটো স্থির। তাতে নাই কোন প্রাণের চিহ্ন। শুধু আছে আতঙ্ক।

মেয়েটাকে চোখে পড়তেই স্তব্ধ হয়ে গেছে রিফাত। চোখের পলক ফেলতেও ভূলে গেল যেন সে। অবিশ্বাস ভরা দৃষ্টিতে চেয়ে দেখলো - বিছানাটাতে শুয়ে আছে 'তার নিধি'। মেয়েটার পেট কেঁটে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে এসেছে। গলাটা যেন কথা বলার জন্য 'হা' করে আছে। যার সানিন্ধ্য ছাড়া একটা দিনও কাঁটাতে পারতো না রিফাত - সেই মেয়েটাকে বিভৎসভাবে মৃত অবস্থায় দেখে আবারো টলে উঠল সে। ধীরে ধীরে বসে পড়লো মেঝেতে। প্রচন্ড মাথা ব্যাথার মাঝেও বুঝার চেষ্টা করলো পরিস্থিতিটা। তবে, হঠাৎ-ই বুঝতে পারলো 'কি হতে চলেছে!"...

বিড় বিড় করে নিজেকে শুনিয়ে বলে উঠল রিফাত - "নিধি নাই। আমার নিধি নাই। যে হারামজাদা আমার নিধিকে মেরেছে, তাকে আমি ছাড়বো না। কিন্তু পুলিশের সাহায্য নেয়া যাবে না। পুলিশ ভাববে আমিই খুনী.."

রাগে কাঁপতে কাঁপতে উঠে দাঁড়াল সে। "পালাতে হবে। পালাতেই হবে.." - ভেতর থেকে কেউ যেন তাড়া দিলো তাকে। টলতে টলতে শেষবারের মতো নিধির পাশে গিয়ে দাঁড়াল সে। অশ্রুসিক্ত চোখে তাকাল মেয়েটার অপূর্ব সুন্দর মুখটার দিকে। তারপর ছুটে বেরিয়ে এলো বারান্দায়। রেলিং টপকে সবার চোখের আড়ালে নেমে পড়ল অন্ধকার গলিটাতে।

[2]

ধীরে ধীরে হেঁটে সাজানো গোছানো রুমটাতে প্রবেশ করলেন ডিটেক্টিভ আসিফ। চোখে-মুখে চিন্তার ছাপ। তার পেছন পেছন রুমে ঢুকলেন ডা: রহমান। ডিটেক্টিভের মতোই বয়সে মোটামোটি তরুন পর্যায়ের ডাক্তার সাহেব। তবে অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে মোটেও তরুন বলা যায় না তাদের। দুজনে মিলে অসংখ্য জটিল কেস সলভ করার রেকর্ড আছে।

খাটের দিকে এগিয়ে গেলেন ডিটেক্টিভ। বিষন্ন চোখে তাকালেন মৃতা মেয়েটার দিকে। এমন সুন্দরী মেয়েটার এতো তাড়াতাড়ি পরপারে চলে যেেত হলো - ভেবে আফসোস হলো ডিটেক্টিভের। তার পাশে এসে দাঁড়ালেন ডাক্তার।

"প্রথমে ছুরি দিয়ে মেয়েটার পেট কাঁটা হয়েছে। তারপর গলা।" - ডাক্তারের উদ্দেশ্যে বললেন ডিটেক্টিভ।
মেয়েটার গলায় আড়াআড়ি ভাবে আটকে থাকা বড়সড় সার্জিকাল নাইফটার দিকে তাকিয়ে সম্মতিসূচক মাথা নাড়লেন ডাক্তার। তারপর এগিয়ে গিয়ে এক টানে গলা থেকে তুলে নিলেন নাইফটা। পকেট থেকে ছোটখাট ম্যাগনিফাইং গ্লাসটা বের করে ছুরির বাটটার দিকে গভীর মনোযোগে কিছুক্ষন চেয়ে রইলেন।
"খুনি অনেক চালাক। গ্লাভস পড়েই নাইফটা ধরেছিল। হাতের কোন ছাপই নাই।" - ডিটেক্টিভের উদ্দেশ্য বললেন ডাক্তার।
মাথা দুলিয়ে বলে উঠলেন ডিটেক্টিভ - "লাশের খোঁজ পাওয়া যায় সকাল এগারটার দিকে। মেয়েটার বাবা-মা বাসায় ফিরে অনেক ডাকাডাকি - ফোন করার পরও কোন সাড়া না পেয়ে পুলিশে ফোন দিয়েছিল। আপনার কি মনে হয়, খুনটা কখন হতে পারে?"
"সম্ভবত রাত একটার দিকে। তবে আমি নিশ্চিত নই। ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত করে বলা যাবে।" - উত্তর দিলেন ডাক্তার।
"আমার মনে হয়, এই খুন মেয়েটার বয়ফ্রেন্ডের কাজ। বাড়ির কেয়ারটেকার সন্ধায় মেয়েটার সাথে লম্বা একটা ছেলেকে বাসায় ঢুকতে দেখেছিল। সন্দেহ নেই, ঐ ছেলেটাই ওর বয়ফ্রেন্ড। তবে, গন্ডগোল বাঁধাচ্ছে মেঝের রক্তগুলো। মেয়েটাকে বয়ফ্রেন্ডই খুন করলে মেঝেতে রক্ত পড়ে থাকা অস্বাভাবিক। তাছাড়া আশে পাশে কোথাও আর কোন হাতিয়ার খুঁজে পাওয়া যায়নি।" - চিন্তিত মুখে আপনমনেই বললেন ডিটেক্টিভ আসিফ। তারপর এগিয়ে গেলেন রুমের সাথে লাগোয়া বারান্দার দিকে। রেলিং বিহীন বারান্দাটার দিকে এক পলক তাকিয়েই ছুটে বেরিয়ে এলেন সেখান থেকে। মেয়েটার বয়ফ্রেন্ডকে খুঁজে বের করতে হবে!

[3]

মাথায় বেন্ডেজ নিয়ে তনিমার দিকে বিষন্ন দৃষ্টিতে তাকাল রিফাত।
"তুই নিধিকে খুন করিসনি - সেটা আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু ওর মতো নিরীহ মেয়েটাকে মারলই বা কে?" - একটা দীর্ঘস্বাস ফেলে বললো তনিমা। সবচেয়ে কাছের বান্ধবীর মৃত্যু সংবাদ শুনে - সকাল থেকেই তার মনটা ভীষন খারাপ হয়ে আছে।।

"আমি জানি না। জ্ঞান ফেরার পরই নিধিকে মৃত দেখতে পাই আমি। আশে পাশে কারো ছায়াও ছিল না।" - অসহায় একটা ভঙ্গি করলো রিফাত। প্রিয়তমার মৃত্যু শোক এখনো একটুও কাটিয়ে উঠতে পারেনি সে।

নিধির বাসা থেকে পালিয়ে আসার পর আর নিজের বাসার দিকে যায়নি রিফাত। সোজা চলে এসেছিল নিধি এবং তার - দুজনেরই বেস্ট ফ্রেন্ড তনিমার বাসায়। রাত দুটায় রিফাতকে মাথা ফাটা অবস্থায় দেখে ভীষন ভড়কে গিয়েছিল মেয়েটা। তবে মেডিকেলের স্টুডেন্ট হওয়ায় রিফাতের রক্তপাত থামাতে তেমন কষ্ট হয়নি তার। তবে, এই ভরদুপুরে নিধির মৃত্যুসংবাদ জানার আগে রিফাতের মাথা ফাঁটার কারণ জানা হয়নি মেয়েটার।।

"শোন, পুলিশ এখন তোকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। তারা সম্ভবত ভাবছে, তুই-ই নিধির খুনি। আমি চাই না তুই জেলে যাস। আমি চাই, নিধির খুনীকে যেভাবেই হোক তুই খুঁজে বের করবি। তারপর তাকে নিজ হাতে খুন করবি।" - উপদেশ দেওয়ার ভঙ্গিতে বললেও কন্ঠটা ধরে এলো তনিমার।।

মাথা নেড়ে উঠে দাঁড়াল রিফাত। তারপর তনিমার অশ্রুভেজা চোখের দিকে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে বেরিয়ে পড়লো খুনির খুঁজে।।

[4]

রিপোর্ট পেপারে ভরা ফাইলটা বন্ধ করে টেবিলের উপর রাখলেন ডিটেক্টিভ আসিফ। হাত বাড়িয়ে ড্রয়ার থেকে তুলে নিলেন গোল্ডলিফ সিগারেটের প্যাকেটটা। উচ্চ পদে সরকারী চাকরি করলেও বিলাসবহুল জীবন পছন্দ নয় তার। তাই, দামী সিগারেট বলতে এই গোল্ডলিফই ভরসা।
একটা সিগারেট জ্বালিয়েই ঠোঁটের ফাঁকে পুরে দিলেন সেটা। চোখ-মুখে চিন্তার ছাপ নিয়ে একবার তাকালেন সামনের ফাইলটার দিকে, যেটার উপর বড় বড় অক্ষরে লেখা "তাসলিমা চৌধুরী নিধি"..
তারপর লম্বা একটা শ্বাস ছেড়ে, শরীর এলিয়ে দিলেন চেয়ারে।
বিড় বিড় করে যেন নিজেকেই শুনিয়ে বলে উঠলেন ডিটেক্টিভ - "নিধির খুনী যদি তার বয়ফ্রেন্ড হয় তাহলে মেঝেতে ঐ বয়ফ্রেন্ডের রক্ত কেন? ... ছেলেটা কি নিজের গার্লফ্রেন্ডকে মৃত দেখে নিজেকে বাঁচানোর জন্য পালাল নাকি মেয়েটাকে খুন করে পালাল? .. খুনী কি নিধিকে মারার আগে তার বয়ফ্রেন্ডকে আঘাত করে অজ্ঞান করে ফেলেছিল?" ....

মাথার ভেতর চক্কর দিতে থাকা প্রশ্নগুলোর কোন উত্তর পেলেন না তিনি। তবে, বহুক্ষন পর একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারলেন।। রিফাত ছেলেটা যথেষ্ট ভদ্র। খারাপ কোন রেকর্ড থাকা দূরে থাক, কোন খারাপ সঙ্গে পড়েওনি সে। এমন নিরীহ টাইপ একটা ছেলে নিজের গার্লফ্রেন্ডকেই খুন করতে পারে না, যাকে সে নিজের চেয়েও বেশি ভালবাসতো - এমনটাই ধারণা রিফাতের বন্ধুমহলের।।
কিন্তু ডিটেক্টিভের ধারণা সম্পূর্ণ আলাদা। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছেন - ভদ্র, শান্ত-শিষ্ট মানুষগুলাই হয় একেকজন ভয়ানক খুনী। তাই, রিফাতকে সন্দেহভাজনের তালিকার একদম উপরের দিকে রাখা যায়ই। তবে,খুনী যে অন্য কেউ হতে পারে - সে ধারণাটাও উড়িয়ে দিলেন না তিনি। হতে পারে খুনী রুমে ঢুকেই রিফাতকে আঘাত করে অজ্ঞান করে। তারপর খুন করে নিধিকে।
ধীরে ধীরে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন ডিটেক্টিভ। যে ভাবেই হোক রিফাত ছেলেটাকে খুঁজে বের করা দরকার।

[5]

মাথায় কালো ক্যাপ পড়ে বেন্ডেজটা চোখের আড়ালে পাটিয়ে দিল রিফাত। তারপর মাথা নিচু করে বেরিয়ে এলো নিহালের মেস থেকে। নিহালেরও দৃঢ় বিশ্বাস - রিফাত নিধিকে খুন করেনি। করতেই পারে না।।

নিহালের কাছ থেকেই জানা গেলো - গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই জেরা করেছে ওর সব বন্ধুকে। সবারই ধারণা - খুনটা রিফাতের করা নয়।।
আরো একবার সস্তির নিশ্বাস ফেলল রিফাত। তারপর এগিয়ে চলল তনিমার বাসার দিকে।

***

তনিমার চোখ লাল হয়ে আছে। সম্ভবত বান্ধবীর শোকে কান্নার ফসল। দরজা খুলে দিতেই ভেতরে এসে ঢুকলো রিফাত। তারপর সোজা এগিয়ে গেল বিছানার দিকে। তার ঘুম দরকার।।

বিছানায় গা এলিয়ে দেয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘুমিয়ে গেল রিফাত। তার পাশে এসে বসল তনিমা। পরম ভালবাসায় ঘুমন্ত ছেলেটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিল সে। তারপর নিজেও শুয়ে পড়ল রিফাতের পাশে। ডান হাতটা রাখলো সেই মানুষটার বুকের উপর - যাকে সে এবং নিধি উভয়ই ভালবাসত অথবা ভালবাসে।।

_পরিশিষ্ট_

মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেল রিফাতের। হাত তুলে তনিমাকে ছুঁতে যেয়েও পারল না। অনুভব করলো - তার হাত পা খাটের সাথে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বাঁধা। আস্তে করে ডাকলো সে - "তনিমা!?"...

দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ছায়ামুর্তি নড়ে উঠলো। হাতড়ে হাতড়ে সুইচ বোর্ড খুঁজে বের করে আলো জ্বালিয়ে দিল সে। প্রচন্ড বিস্মিত হৃযে রিফাত দেখলো - ছায়ামুর্তিটা তনিমাই। মেয়েটার হাতে একটা বড়সড় কিচেন নাইফ!

ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো তনিমা। রুমের একমাত্র ড্রেসিং টেবিলটার ড্রয়ার হাতড়ে বের করে আনলো দুটো হ্যান্ড গ্লাভস। গ্লাভস দুটো দেখেই তার মনে পড়ে গেল - নিধিদের রুমে ঢুকতে তাকে কি কষ্টই না করতে হয়েছে!
বহু কসরত করে দুই তলার বারান্দায় উঠে লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল। মাঝ রাতে রিফাত বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে যাওয়ার পথেই হাতের রডটা দিয়ে মাথায় আঘাত করেছিল সে। তারপর নিধিকে খুন করতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয়নি তার।

আতঙ্কগ্রস্ত চোখে সামনে তাকাল রিফাত। তার দিকেই ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে মৃত্যুদূত।
"তুই-ই তাহলে নিধিকে খুন করছস?" - বহু কষ্টে গলা থেকে ভয়ের ছাপ মুছে শীতল গলায় প্রশ্ন করল রিফাত।
"সন্দেহ আছে?" - ভ্রু নাচিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো তনিমা। মেয়েটাকে এখন ভয়ঙ্কর লাগছে। সেই সাথে তার সৌন্দর্য্যও ফুটে উঠেছে ভীষনভাবে।
তার শরীরের উপর থেকে চোখ সরাতে পারল না রিফাত। অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইল মেয়েটার দিকে।
"নিধিকে কেন খুন করলি তুই?" - চিৎকার করে বলতে চেয়েও রিফাতের গলা দিয়ে জোরে শব্দ বেরোল না।

প্রশ্ন শুনে ডাইনির মতোই হাসল মেয়েটা। তারপর ধীরে ধীরে বললো - "আমার প্রিয় মানুষগুলোকে দেখলেই খুন করতে ইচ্ছে হয় রে!"

বলেই গ্লাভসপড়া ডান হাতটা বাড়িয়ে চেপে ধরল রিফাতের মুখ। অন্য হাতে যত্ন সহকারে কিচেন নাইফটা বসিয়ে দিল ছেলেটার গলায়।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.