নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘাড়-ত্যাঁড়া ধরণের মানুষ আমি। নিজের ইচ্ছেগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে ভালবাসি। কিছুটা অসামাজিকও বটে।

শাহ মোহাম্মদ ইসমাইল

কজিতো, এরগো সাম

শাহ মোহাম্মদ ইসমাইল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুগল্প : বলি

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:১২

“ঘটনা শুনেছেন, দাদা?”
অন্যমনস্ক হয়ে ছিল প্রণয়। চমকে মুখ তুলে দেখলো বত্রিশটা দাঁত বের করে কবির তাকিয়ে আছে ওর দিকে। কবিরটা বড্ড নিঃশব্দে হাঁটে। একদম বিড়ালের মতো। বিরক্ত বোধ করলো প্রণয়। এই অবেলায় কি শুনাতে এসেছে কে জানে!
হাতের বইটা ধীরেসুস্থে বন্ধ করে কবিরের উদ্দেশ্যে বলল,“কি হয়েছে, কবির?”
কবির একটা মোড়া টেনে নিল। বসতে বসতেই বলল,“আজ্ঞে, তেমন কিছু না। ঠাকুরমশাই এসেছিলেন। আপনার খোঁজ করেছেন। নেই জেনে আপনাকে বলতে বলেছেন, বলি ছাড়া ঐ কাজ সম্পন্ন হবে না। কোন কাজ সে আমি জানি নে। আপনি জানেন?”
মুহুর্তেই প্রণয়ের মুখটা কালো হয়ে গেল। বেশ চিন্তায় পড়ে গেছে যেন। ব্যাপারটা চোখ এড়ালো না কবিরের। জিজ্ঞেস করল,“আমি কি কোনভাবে সাহায়্য করতে পারি,দাদা?”
এবার প্রণয় হাসলো। প্রথমে কিছুটা দ্বিধান্বিত মনে হলেও পরমুহুর্তেই মিলিয়ে গেছে সেটা। কিছু না বলে বইটা আরামকেদারার উপর রেখে উঠে দাঁড়াল। দেখাদেখি কবিরও উঠল। ছেলেটা বয়সে বিশ-একুশ বছরের বেশি হবে না। কথায় বয়স্কদের মতো ধাঁচ আছে। তবে সহজ সরল, প্রাণচঞ্চল ছেলে। অনেক বছর আগে প্রণয়ই ওকে একটা এতিমখানা থেকে নিয়ে এসেছিল।
কবিরের কাঁধে হাত রাখলো ও। মুখে উচ্চারণ করলো,“চল, কবির। একটু বেড়িয়ে আসি।”
কবির কিছু বলল না। চুপচাপ দুজনে এসে হাজির হল বাড়ির পেছন দিকে। সেখানে একটা পোড়ো বাড়ি আছে। আগে কাছারিঘর হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখন কেউ পাও মাড়ায় না। প্রণয় ভেতরে ঢুকে ঘরটার এক কোণার মেঝে থেকে একটা বড়সড় তক্তা সরিয়ে নিল। তক্তা সরাতেই চতুর্ভুজাকৃতির একটা গর্ত বেরিয়ে এলো। মুখে সিঁড়ির ধাপও দেখা যাচ্ছে। প্রণয় নেমে পড়ল সেখানে। ইশারায় কবিরকেও আসতে বলল। এর আগেও অনেকবার নিচের ঘরে গিয়েছে কবির। অবশ্য ওরা দুজন ছাড়া আর কেউ জানে না এই বেসমেন্টের কথা। কয়েক লাফে নেমে এলো সেও। বেসমেন্টটা মাঝারি আকারের। কম ওয়াটের বাল্বে হালকা আলোকিত হয়ে আছে সেটা। এখানে প্রণয় তার ব্যক্তিগত শখের কাজগুলো করে থাকে। যেগুলোর কথা শুনলেই অন্য মানুষ তাকে পাগল ঠাউরাবে। ঘরটার মাঝে ছোট্ট একটা টেবিল আর তিনটে চেয়ার রাখা। টেবিলের পেছনে অনেকগুলো বুকশেলফ। একদিকে একটা কম্পিউটার রাখা। কবিরকে একটা চেয়ারে বসতে বলে প্রণয় নিজে এগিয়ে গেল বুকশেলফগুলোর দিকে। কাছে গিয়ে ঝুঁকে শেলফের তলা থেকে নিঃশব্দে তুলে নিল তার বিশস্ত তলোয়ার 'নগোরান'। মনস্থির করে ফেলেছে ও। বলিটা দেবে। আজ আর তাকে কেউ আটকাতে পারবে না। অমরত্ব এখন হাতের মুঠোয়!
ভাবনাটা শেষ করার সুযোগ পেলো না প্রণয়। তার আগেই হকি স্টিকের জোড়ালো বাড়িতে ধুপ্ করে পড়ে গেল মাটিতে। পতনের জোরে চারপাশে ধুলোর কুয়াশা তৈরি হয়ে গেল। স্টিকটা মাথার উপর তুলতে তুলতে চিৎকার করে উঠলো কবির,“অমরত্ব এত সহজ নয় রে, শালা!”
জ্ঞান হারানোর আগে প্রণয় দেখতে পেল, কবিরের বাহুতে ঠাকুরমশাইয়ের মতো উল্কি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:২৮

ফকির আবদুল মালেক বলেছেন: অনেক ভাল লাগল।


একটি গল্প লিখেছিলাম পড়ে দেখতে পারেন ভাল লাগতে পারে।

https://www.shobdonir.com/fakir007/106617

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৩০

ফকির আবদুল মালেক বলেছেন: আরেক পূর্ণিমা

৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৪৬

ওমেরা বলেছেন: ভাল লাগল ধন্যবাদ ।

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৫১

শাহ মোহাম্মদ ইসমাইল বলেছেন: ধন্যবাদ | ভালো থাকুন |

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.