![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী পশ্চিমা যুব সমাজকে ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন।
ফ্রান্সের একটি পত্রিকায় বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র প্রতি অবমাননাকর কার্টুন প্রকাশের প্রেক্ষাপটে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের যুব সমাজের প্রতি দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেছেন, 'ইসলাম আতঙ্ক' থেকে পালিয়ে না গিয়ে এ ধর্ম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা উচিত। তিনি বলেছেন, মুসলমানদের ব্যাপারে আতঙ্ক তৈরি করে তা থেকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করা পাশ্চাত্যের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এ প্রসঙ্গে এটা তুলে ধরেছেন যে, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকে গত প্রায় দুই দশক ধরে মহান ইসলাম ধর্মকে ভয়ঙ্কর শত্রুর আসনে বসানোর বহু চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি ওই বাণীতে পশ্চিমা যুব সমাজকে আরো বলেছেন:
"ইতিহাসের সাম্প্রতিক সূক্ষ্ম বিশ্লেষণগুলোর উপর চোখ বুলালেই তোমরা বুঝতে পারবে যে, অন্যান্য জাতি ও সংস্কৃতির সাথে পশ্চিমা সরকারগুলোর মুনাফিকি আচরণের নিন্দা করা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ইতিহাস দাসত্বের কারণে লজ্জিত, ঔপনিবেশিক সময়ের কারণে বিব্রত এবং যাদের গায়ের রঙ সাদা নয় ও যারা খ্রিষ্টান নয়, তাদের উপর নির্যাতনের দায়ে অপরাধী। ক্যাথোলিক ও প্রোটেস্ট্যান্টদের মাঝে ধর্মের নামে অথবা প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাতীয়তার নাম করে ঘটানো রক্তপাত নিয়ে তোমাদের গবেষক ও ইতিহাসবিদরা গভীরভাবে লজ্জিত।"
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এই চমৎকার প্রশ্নগুলোও পশ্চিমা যুবকদের কাছে তুলে ধরে বলেছেন যে, "কেনো পশ্চিমের জনগণের বিবেক জেগে উঠতে কয়েক দশক বা শতক সময় লাগে? কেনো গণ-বিবেক বা সামষ্টিক বিবেকের পুনর্বিবেচনা কেবল সুদূর অতীতের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হয়, কেনো তা বর্তমান যুগের বিষয়গুলো নিয়ে করা হয় না? কেনো ইসলামী চিন্তাধারা ও সংস্কৃতির সঙ্গে আচরণের পদ্ধতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে গণ-সচেতনতা সৃষ্টিতে বাধা দেয়া হচ্ছে? এ ছাড়াও কেনো ঘৃণা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়ার পুরনো নীতিকে নজিরবিহীনভাবে তীব্রতর কোরে ইসলাম ও মুসলমানদের টার্গেট করা হয়েছে?" তিনি আরো বলেছেন:
"কেনো দুনিয়ার ক্ষমতাশালীরা চায় যে ইসলামী চিন্তাধারা হারিয়ে যাক ও গোপন থাকুক? ইসলামের কোন্ ধারণাগুলো পরাশক্তিদের পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটায় এবং ইসলামের প্রকৃত চেহারাকে বিকৃত করার ছায়াতলে কোন্ স্বার্থকে রক্ষা করা হয়? অতএব, আমার প্রথম অনুরোধ হলো : ইসলামের চিত্রকে মলিন করার পিছনের সুদূরপ্রসারী এই উদ্দেশ্য নিয়ে পড়াশুনা ও গবেষণা করো।"
এইসব প্রশ্ন নিয়ে গবেষণা বা চিন্তা-ভাবনা করলে আসলেই অনেক গভীর সত্য বেরিয়ে আসবে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরো বলেছেন:
আমার দ্বিতীয় অনুরোধ হলো, ইসলাম সম্পর্কে পূর্বনির্ধারিত ও মিথ্যা প্রচারণার বন্যার প্রতিক্রিয়ায় তোমরা এই ধর্মটির সম্পর্কে সরাসরি জানার চেষ্টা করো।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা সব সময়ই স্বাধীন অথচ যৌক্তিক ও নিরপেক্ষ বিশ্লেষণের ওপর জোর দিয়ে থাকেন। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন: "আমার ব্যাখ্যা কিংবা ইসলামের অন্য কোনো ব্যাখ্যা গ্রহণ করতেও আমি জোর করছি না। আমি যা বলতে চাই তা হলো: বর্তমান দুনিয়ায় ইসলামের মতো একটি শক্তিশালী ও প্রভাবশালী বাস্তবতার সাথে পরিচয় পক্ষপাতদুষ্টতা ও ঘৃণার মাধ্যমে হতে দিও না। তাদের তথা সাম্রাজ্যবাদীদের ভাড়া করা সন্ত্রাসীদেরকে ইসলামের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরতে দিও না।
ইসলামের প্রাথমিক ও মৌলিক উৎস থেকে সরাসরি ইসলামী জ্ঞান অর্জনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেছেন: কুরআন ও মহান নবীর জীবন থেকে ইসলাম সম্পর্কে তথ্য নাও। মুসলমানদের কুরআন সরাসরি পড়ো। ইসলামের নবীর শিক্ষা ও তার মানবিক, নৈতিক মতাদর্শ নিয়ে গবেষণা করো। মিডিয়া ছাড়াও অন্যান্য উৎস থেকে ইসলামের বাণী গ্রহণের চেষ্টা করো।
পশ্চিমা যুব সমাজের উদ্দেশ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরো বলেছেন: তোমরা কি কখনো নিজেকে জিজ্ঞাসা করে দেখেছো, দুনিয়ার ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ বুদ্ধিবৃত্তিক ও বৈজ্ঞানিক সভ্যতাকে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করেছে কোন্ আদর্শের উপর ভিত্তি করে? কিভাবে এই মহান ধর্ম বিশিষ্ট সব বৈজ্ঞানিক ও চিন্তাবিদের উত্থান ঘটিয়েছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে?
এটা স্পষ্ট যে, বর্তমানে পাশ্চাত্য তো দূরের কথা মুসলিম বিশ্বের অনেক শিক্ষিত ব্যক্তি, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-যুব সমাজের এক বিশাল অংশও প্রকৃত ইসলামের দিশা পাচ্ছে না ইসলামের নামে পাশ্চাত্যের ও তাদের সেবাদাসদের সৃষ্ট নানা বিভ্রান্তির কারণে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এই বাণী তাদের সবারই চোখ খুলে দিতে পারে। #
রেডিও তেহরান/এএইচ/২২
©somewhere in net ltd.