নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রকৃত সত্যকে উপলদ্ধি করতে হবে খোলা মন নিয়ে।
নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনি সকল কিছু পরিচালনা করেন। তাঁর অনুমতি ছাড়া কেউ (তাঁর কাছে) কারও পক্ষে সুপারিশ করার নেই। তিনিই আল্লাহ তোমাদের প্রতিপালক। সুতরাং তাঁর ইবাদত কর। তবুও কি তোমরা অনুধ্যান করবে না? সুরা ইউনুস আয়াত : ৩
আজকে আমি ইউটিউবে আসাদ নূরের একটি ভিডিওতে আরশ কুরসি নিয়ে উপহাসসূচকভাবে বিদ্রুপাত্বকভাবে টিটকারীযুক্ত উস্কানিমূলক ভিডিও দেখলাম। তাই তার আলোচনার জবাব দিতেই আজ আমার এই লেখা। তিনি আল্লার একটি ছবি একেছেন এবং একটি সিংহাসনের উপর আল্লাকে বসিয়ে রঙ্গরসে হাসিতামাশা করছেন। আমরা তার আলোচনা ধিক্কার জানিয়েছে। একজনের বিশ্বাসের প্রতি তার এহেন নেক্কারজনক আচরনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা আসি আল কোরআনের সেই আরশ ও কুরসী সম্পর্কে আলোচনায়। আমারা এই ভিডিওতে আরশ ও কুরসি নিয়ে তার অজ্ঞতার প্রকাশ ঘটাতে এবং আরশ ও কুরসী বৈজ্ঞানিক প্রমান্যতা তুলে ধরার চেষ্টা করবো। প্রিয় ভিউয়ার, আরশ মহান আল্লাহর সৃষ্টি। আরশ অর্থ হচ্ছে রাজত্ব, রাজ সিংহাসন। কুরআন মাজিদে আরশ শব্দটি পঁচিশ বার এসেছে ৷ আরবি ভাষার আল কোরআনে আরশ শব্দটির বিভিন্ন স্থানে সিংহাসন বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে। চেয়ার বা সিংহাসন বলতে আরবী ভাষায় আরশ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমরা এ ক্ষেত্রে দেখবো, মহাগ্রন্থ আল কোরআনে আরশ শব্দটি ব্যবহার করা হয় নাই। আরশ শব্দ আল কোরআনে অনেকবার ব্যবহার হয়েছে। সিংহাসন বোজাতে। যেমন রানী বিলকিসের সিংহাসন সংক্রান্ত আয়াতে। কিন্তু আল্লার অবস্থানের কেন্দ্রবিন্দু আরশ বোঝাতে শুধু আরশ শব্দটি ব্যবহার হয় নাই। ব্যবহার হয়েছে আল আরশ শব্দটি। আরশ শব্দটির সাথে আল শব্দটির সংযোগ ঘটিয়ে শব্দটিতে নতুনতর ব্যাক্ষা প্রদান করা হয়েছে। আসলে এক্ষেত্রে সিংহাসন বোঝার কোন সুযোগ ই নেই।
প্রিয় পাঠক, মহাবিশ্বের সীমা পরিসীমা যেহেতু আমরা নির্ণয় করতে সক্ষম হই নি, সেহেতু মহা-বিশ্বজগতের ম্যাপ তৈরি করা বা কাঠামো কেমন তা আমরা জানিনা। এমনকি অস্পষ্ট কাঠামোও নিশ্চিত করতে পারি নাই। আমাদের সৌরজগৎ-আমাদের গ্যালাক্সি কাছাকাছি গ্যালাক্সি নিয়ে গড়ে ওঠে গ্যালাক্সি ক্লাস্টার। আর অনেকগুলো গ্যালাক্সি ক্লাস্টার যুক্ত করে পাওয়া যায় সুপার ক্লাস্টার। মহাবিশ্বের দৃশ্যমান অংশে এমন গ্যালাক্সি ক্লাস্টারগুলো জুড়ে দিয়ে একটি মহা-বিস্ময়কর কাঠামো পাওয়া যায়। সেই কাঠামোকে আল কোরআনের ভাষায় বলা হয় সামাওয়াতে ওয়াল আরদ বা মহাবিশ্ব । আর এই মহাবিশ্বজগত কাঠামোর ব্যবস্থাপনার পদ্ধতিকে বলা হয় আল আরশ । বা মহাবিশ্বের যাবতীয় নিয়ম-কানুন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ভিত্তি হলো এই আল আরশ । আল কোরআনে স্রষ্টাকে জীবিত বা জীবন্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বোঝানো হচ্ছে স্রষ্টা নামক মহাবিশ্বের চেতনা বা কনসাসনেস মহাবিশ্ব নিয়ন্ত্রনের সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করেন আরশে অবস্থান করে। আল কোরআনে কুরসি নামক একটি বিষয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। সমগ্র মহাবিশ্ব তিনি কুরসির মাধ্যমে ধারন করে আছেন এবং কুরসির মাধ্যমেই স্রষ্টা সামাওয়াতের ওয়াল আরদের প্রতিটি প্রান্তের পরিচালনার জন্য যাবতীয় তথ্য সরবরাহ করেন। এবার আসি আরস ও কুরসির বৈজ্ঞানিক ব্যাক্ষায়।
ইতালীর দুজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্র্যাঙ্কো ভাজা এবং স্নায়ুশল্যবিদ আলবের্তো ফেলেত্তির ধারনা মহাবিশ্ব একটি প্রাণ। মানবদেহের পরিচালন পদ্ধতি আর মহাবিশ্বের পরিচালন পদ্ধতি অনেকটা একই রকম। কিছু গবেষকের ধারনা প্রাণ হিসেবে মহাবিশ্বেরও একটি নার্ভাস সিস্টেম আছে যার মাধ্যমে মহাবিশ্ব পরিচালিত হয়। আল কোরআনের উল্লেখিত সকল আয়াত দ্বারা আরশ ও কুরশি সর্ম্পকে যা কিছু বোঝানো হচ্ছে তাতে উপলদ্ধি করা যাচ্ছে প্রাণিদেহের নার্ভাস সিস্টেমের মতো আরশ কুরশি মহাবিশ্ব পরিচালনার কর্মে লিপ্ত। তাহলে আরশ ও কুরশি ও মানব দেহের নার্ভাস সিস্টেম নিয়ে একটি তুলনামূলক আলোচনা করা যাক। প্রাণিদেহের নাভার্স সিস্টেম বা স্নায়ুতন্ত্র প্রাণীদেহের ঐচ্ছিক ও অনৈচ্ছিক কাজের সমন্বয় সাধন করে এবং দেহের বিভিন্ন অংশে সংকেত প্রদান করে দেহমন্ডলীকে পরিচালিত করে। অধিকাংশ প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান দুটি অংশ আছে-কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্র ও প্রান্তীয় স্নায়ু তন্ত্র। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকাণ্ড নিয়ে গঠিত। প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র স্নায়ু দিয়ে গঠিত, যা দীর্ঘ, সরু, নলাকার স্নায়ুগুচ্ছ, অ্যাক্সন দ্বারা আবৃত। এটিকে শিরা উপশিরার স্নায়ুতন্ত্র বলে। এটি কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্রকে শরীরের প্রতিটি অংশে সংযোগ করে। প্রাণী উত্তেজনায় সাড়া দিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে, দৈহিক মানসিক ও শারীরবৃত্তীয় কাজের সমন্বয় ঘটায়, দেহের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ সাধন করে। বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সংকেত পরিবাহিত করে তাদের কাজের মধ্যে সংবাদ আদান প্রদান করে সমস্ত দেহের কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করে। এই কাজটি মানবদেহে প্রান্তিয় নার্ভাস সিস্টেম বা শিরা উপশিরার নেটওয়ার্ক করে থাকে। লক্ষ্য করুন আল কোরআনে উল্লেখিত কুরসি সংক্রান্ত যত আয়াত আছে তাতে প্রতিয়মান হয় কুরসীও ঠিক এমনি একটি শিরা উপশিরা সমন্বিত মহাজিগতিক নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা। আল কোরআন বলছে তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলির তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। যার অর্থ দাড়ায় তার কুরসি সবর্ত্রই নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা তৈরী করেছে। যা দ্বারা তিনি সমগ্র মহাবিশ্ব পরিচালনা করেন। প্রশ্ন আসতে পারে আমাদের প্রাপ্ত জ্ঞান দ্বারা আমরা কি জানতে পেরেছি মানবদেহে যেমন স্নায়ু শিরা উপশিরা নিয়ে নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থার মতো এমন কি কোন নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা আদৌ এই মাহাবিশ্বে আছে? হ্যা এমনই এক মহাজাগতিক নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থার সন্ধান পাওয়া গেছে। বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞান আমাদের এমন একটি নেটওয়ার্কিং ব্যাবস্থার সন্ধান দিয়েছে। এই ক্ষেত্রটি বলা হয় কসমিক স্ট্রিং। মহাজাগতিক তারের সমাহার দিয়ে সমস্ত কিছুর সংযোগ সাধন করা হয়েছে। বিংশ শতাব্দির ৮০-র দশকে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞান বিশ্বে তথা মহাজাগতিক তার (স্ট্রিং) সম্পর্কিত সৃষ্টিতত্ত্ব আবির্ভূত হয়ে রীতিমত তাক লাগিয়ে দেয়। বিগ ব্যাং মডেল গবেষণাকারী বিজ্ঞানগণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়েই মহাজাগতিক তারের উপস্থিতি এবং এ মহাবিশ্বের সৃষ্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে এই তার যাদুময়ী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে থাকে। কসমিক স্ট্রিং গুলোই নবীন মহাবিশ্বে প্রথম গ্যালাক্সির বীজ বপন করেছিল। তখন নবীন মহাবিশ্ব ধোঁয়ায় পরিপূর্ণ ছিলো। ঐ সময় কসমিক স্ট্রিং ধোঁয়ার মধ্যে আবির্ভূত হয়ে প্রবল মাধ্যাকর্ষণ বলের মাধ্যমে ধোঁয়া, গ্যাস ও ধূলিকণাকে আকর্ষণ করে নিজেদের অভ্যন্তরে জমা করতে থাকে। ফলে এক পর্যায়ে নবীন মহাবিশ্বটি গুচ্ছ গুচ্ছভাবে গ্যাসীয় পদার্থের মেঘখণ্ডরূপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। অতঃপর মহাকর্ষ বলের প্রভাবে মেঘখণ্ডগুলো আবর্তন শুরু করে এবং দু'মিলিয়ন বছরে প্রচেষ্টাতে-গ্যালাক্সি ও চার মিলিয়ন বছরে পূর্ণ গ্যালাক্সিতে রূপান্তরিত হয়ে মহাবিশ্বের মূল কাঠামোতে পরিণত হয়। বিজ্ঞানীগণ এখনও রেডিও টেলিস্কোপের সাহায্যে কোনো কোনো গ্যালাক্সির কেন্দ্রে কসমিক স্ট্রিং-এর সন্ধান পাচ্ছেন। গ্যালাক্সিগুলো দিকে তাকালে ওদের গঠন অবয়বে কসমিক স্ট্রিং বা মহাজাগতিক তারের স্পষ্ট প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। কসমিক স্ট্রিং যা মহাবিশ্বের সকল বস্তুকে একটি অভিকর্ষের মাধ্যমে এক ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সংযোজন করেছে প্রতিটি প্রান্তের সাথে। সেই অভিকর্ষের মাধ্যমেই সামাওয়াতে ওয়াল আরদ নামক কাঠামোকে ধারন করা হয় এবং সকল তথ্য সরবরাহকৃত করে করে নিয়ন্ত্রন করা হয়। আল কোরআন বলে "তার কুরসি মহাবিশ্ব জুড়ে। তাকে ক্লান্ত করে না এই সবের নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষনাবেক্ষন এবং তিনি সুউচ্চ ও সুমহান"(২:২৫৫)।
প্রিয় পাঠক, এ সকল বিষয় আলোকপাত করে আমরা কুরসি এর দৃষ্টান্ত পেয়েছি সেটি হলো কসমিক স্ট্রিং নামক অতি গ্রাভিশনাল তার। মানব দেহের কেন্দ্রীয় নাভার্স সিস্টেম যেমন প্রান্তিয় নাভার্স সিস্টেম এর সমগ্র শিরা উপশিরা দিয়ে বৈদ্যুতিক সংকেত পরিবাহিত করে তাদের কাজের সংবাদ আদান প্রদান করে। ঠিক তেমনি কুরসির মাধ্যমে মহাবিশ্বের সকল প্রান্তে সংযোগ কৃত থাকলেও কমান্ডিং প্রক্রিয়াটি কুরসির মধ্য দিয়েই গমনাগমন করে। আরশ কেন্দ্রীয় নাভার্স সিস্টেমের মতো কাজ করছে। আরশ কি বা আরশ কোথায় অবস্থান করছে এ সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা পরে আলোকপাত করি তবে এখন যে বিষয়টি আলোকপাত করবো সেটি হলো আরশের মাঝে কে অবস্থান করে? লক্ষ্য করুন আল কোরআন বলে-তিনি চিরজীবন্ত ও সবকিছুর ধারক। তাঁর কুরসী আসমান ও যমীন পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে। আবার আল কোরআন বলে -অতএব মহিমাময় আল্লাহ, তিনি সত্যিকার মালিক, তিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই। তিনি সম্মানিত আরশের অধিপতি। লক্ষ্য করুন বলা হচ্ছে সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে তার কুরসী এবং তা সমগ্র মহাবিশ্বকে ধারন করে রেখেছে। যে অভিকর্ষ বল দ্বারা বর্তমান ইউনিভার্সকে ধারণ করছে আল-আরশ এবং এই বলের কতৃত্ব একটি স্বত্ত্বার হাতে। যিনি চির জীবন্ত। আবার সেই স্বত্ত্বাকে আরশের অধিপতি বলে বোঝানো হচ্ছে। তাহলে সেই স্বত্ত্বা এবং আরশ নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক। মানুষ জ্ঞানের প্রধান অংশ হলো অনুভূতি। বিভিন্ন তরঙ্গই মানবদেহে অনুভতী সৃষ্টি করে। বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ আমাদের অক্ষিপটে আঘাত করে। অথচ মস্তিস্কে পৌছায় স্নায়ু স্পন্দন মাত্র। এই স্নায়ু স্পন্দনই আমাদের মধ্যে বিভিন্ন অনুভতী সৃষ্টি করে। কখনও দৃষ্টির অনুভতী সৃষ্টি করে, দেহপটে আঘাতের অনুভতী সহ সুখ দুঃখ ভালবাসা কষ্ট ভালোলাগা, কখনও খাবারের স্বাদ, কোন কিছুর গন্ধ। এসকল অনুভতী সমূহ বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের প্রভাবে ঘটলেও মস্তিস্কে পৌছায় স্নায়ু স্পন্দন এতেই মস্তিস্ক বুঝে যায় এটা কি জাতীয় মানসিক ক্রিয়া। এই যে আমাদের দেহ পরিচালন পদ্ধিতি। একটি অকৃতিম আমিত্ব আমাদের দেহের মধ্য দিয়ে কমান্ডিং প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। আামদের স্নায়ুতন্ত্রু এর পরিচালনা পদ্ধতির দিকে তাকালেই বোঝা যায় আমাদের ভিতরে একটি আমিত্ব কাজ করছে। যেমন শরীরে মশা কামড়াচ্ছে মস্তিস্ক হাতকে আদেশ করলো হাত তুমি মশাকে আঘাত কর, আর অমনি হাত এসে মশার উপর আঘাত করলো। এই যে স্বল্প সময়ে মানুষের মানসিক ক্রিয়াটার প্রভাব এক সুক্ষ কমান্ডিং প্রকিয়ার মাধ্যমে ঘটে। এই প্রক্রিয়া ঘটানোর জন্য আমার দেহের মাঝে বসে আছেন আমার আমিত্ব। মানবদেহের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র দেহের সকল অংশ পরিচালনা করে প্রান্তিয় স্নায়ুতন্ত্রের শিরা উপশিরার বিদ্যুৎ চুম্বকিয় তরঙ্গের মাধ্যেমে। ঠিক অনুরুপভাবে আরশ একটি স্থান যেখানে একজন অধিপতি কনসাসনেস আল্লাহ অবস্থান করে সমগ্র মহাবিশ্ব পরিচালনা করেন। ইদানিং আধুনিক বিজ্ঞান প্রমান করতে সক্ষম হয়েছে মানুষের মস্তিস্ক এবং মহাবিশ্ব পরিচালনা পদ্ধতি ঠিক একই প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হয়। মানবদেহের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে যেমন চেতনা অবস্থান করেন। একজন আমিত্ব প্রান্তিয় স্নায়ুতন্ত্রের শিরা উপশিরার মাধ্যমে বিদ্যুৎ তরঙ্গ পরিবাহিত করে দেহ পরিচালনা করছেন। আর মহাবিশ্বের আরসে স্বয়ং স্রষ্টা তিনিই মহাজাগতিক কনসাসনেস হয়ে চির জীবন্ত স্বত্ত্বা হয়ে সমগ্র মহাবিশ্ব পরিচালনা করছে। কিন্তু এই আরশ কি এবং এটির অবস্থান সংক্রান্ত বিষয়ে আলোকপাত করা যা। হাদীস সুত্রে আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি আল আরস সামাওয়াতে ওয়াল আরদ বা মহাবিশ্বের বাইরে অবস্থান করছেন বা এই মহাবিশ্ব বাদেও আরশের আলাদা অস্তিত্ব রয়েছে। আর কুরসি আরশের সাথে এবং মহাবিশ্বের সাথে সম্পৃক্ত থেকে স্রষ্টার সকল তথ্য সরবরাহ করছে, নিয়ন্ত্রন ও রক্ষনাবেক্ষন করছে।
আল কোরআনে বলা হচ্ছে আল্লাহ, “যিনি ঊর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ। অতঃপর তিনি আরশের ওপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন।” (সুরা রাদ:২) প্রচলিত অনুবাদগুলোতে মহান আল্লাহকে দেহধারী কাঠামো কল্পনা করে তাঁকে বিশাল এক সিংহাসনে বসানোর চেষ্টা করা হয়েছে হাজার বছর ধরে। ঠিক এরকমই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নাস্তিক আসাদ নুর ভেবেছেন! আসলে আমাদের বোঝার ভূল। নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহ আরশের ওপর গিয়ে সমাসীন হননি বা সেখানে গিয়ে বসেন নি! বিষয়টি হলো আরশের সাথে সামাওয়াতে ওয়াল আরদ বা মহাবিশ্বের সংযোগের মাধ্যমে আল্লার কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। আর আরশের সাথে মহাবিশ্বের সংযোগকৃত বিষয়টি হলো কুরসি। ঠিক যেমন মানুষের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র প্রান্তিক স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে বা মানবদেহের সাথে যোগসুত্রের বিষয়। এখানে দুটি সময়কালের কথা বলা হচ্ছে। একটি মহাবিশ্ব সৃষ্টির সময়কাল আরেকটি আরশের সাথে সৃষ্টির যোগসুত্রের পর সৃষ্টি নিয়ন্ত্রনাধীন সময়কাল। সৃষ্টির পরবর্তীতে আরশে আল্লার সমাসীন মানেই মহাজগৎ কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু আরশ কি? আরশ কোথায় অবস্থান করে? এ সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের কাছে খুব বেশি তথ্য নেই তবে আমরা জানি আরশ একটি আলাদা সৃষ্টি। তাহলে আমাদের আধুনিক বিজ্ঞান কি এমন ধরনের কোন স্থানের কল্পনা করছে? যে স্থান মহাবিশ্বকে পরিচালনা করে।
হ্যা এমন স্থানের ধারনা ইদানিং আধুনিক বিজ্ঞান করঝে। আধুনিক বিজ্ঞানের চুড়ান্ত কিচু গবেষনা আমাদের নতুন কিচু তথ্য দিচ্ছে। যেমন স্ট্রিং থিওরি মতে আমাদের মহাবিশ্ব দেখতে ত্রি মাত্রিক হলেও আসলে তা ত্রি মাত্রিক নয়। এটি দশ মাত্রিক আর এক মাত্রিক সময়। তাহলে প্রশ্ন হলো আমাদের মহাবিশ্বকে আমারা পাচ্ছি ত্রিমাত্রিকরুপে তাহলে আর ৭ মাত্রা কোথায়? এই তত্ত্ব আমাদের বলছে আমরা যদিও এই অতিরিক্ত মাত্রাগুলোকে দেখাতে পাচ্ছি না বা কোন পরীক্ষার দ্বারা এদের অস্তিত্ব প্রমাণ করতেও পারছি না, কিন্তু আমাদের স্ট্রিং থিয়োরির গনিত বলছে যে তারা আছে। তারা অনুমান করছে আর সাত মাত্রা সংগোপনে কোথাও স্থানের খুব সংকীর্ণ জায়গায় জরিয়ে-পেচিয়ে এমনভাবে এমন কোথাও আছে যে আমরা তাদেরকে দেখতে পারছিনা বা বুঝতে পারছি না। কিন্ত আমাদের গনিত বলছে যে তারা আছে। লক্ষ্য করুন আধুনিক বিজ্ঞান এখন ৭ মাত্রিক আরেকটি জগতকে কল্পনা করে। এ তত্ত্ব মতে লুকায়িত সেই ৭ মাত্রা অর্ন্তবর্তী জগৎ হয়ে আছে। তাদের গানিতিক গবেষনা মতে মহাবিশ্ব কেমন হবে, তা নির্ভর করে ৭ মাত্রার অর্ন্তবর্তী জগতের নির্দেশনার উপর। ষ্ট্রিং থিওরির উন্নতর একটি শাখা এম তত্ত্ব বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ন শাখা হিসেবেই স্বিকৃত। এই এম তত্ত্বের মতে ৭ মাত্রিক অর্ন্তবতী জগত আমাদের এই ৩ মাত্রার মহাবিশ্বকে নিয়ন্ত্রিত করে। মহাবিশ্বের আকৃতিই প্রকৃতির দৃশ্যমান নিয়ম গুলো নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে দৃশ্যমান নিয়ম বলতে আমাদের মহাবিশ্বের মৌলিক চারটি বল ও তাদের পরস্পরের সাথে মিথস্ক্রিয়ার ধরন, মৌলিক কণিকা যেমন, কোয়ার্ক বা নিউট্রিনোর ভর, আধান ইত্যাদির কথা বোঝানো হচ্ছে। এক কথায় এই ত্রিমাত্রিক মহাবিশ্বের সমস্ত কিছুই ৭ মাত্রিক অর্ন্তবতী জগৎ নির্ধারন করে। অর্ন্তবর্তী জগত থেকেই সরবরাহকৃত তথ্য দ্বারা ৩ মাত্রিক জগৎ পরিচালিত হয়। প্রিয় ভিউয়ার তাহলে আমি কি আপনাদের বোঝাতে সক্ষম হলাম আরশ কি? আরশ এমন একটি স্থান যেখানে মহাবিশ্বের চেতনা অবস্থান করে মহাবিশ্বকে পরিচালনা করছেন।
প্রিয় ভিউয়ার, আসলে মানুষের জ্ঞানতো খুবই সামান্য। আমরা এখনও সৌরজগতের বাইরে পৌছতে সক্ষম হয় নাই। সেখানে বিশাল গ্যালাক্সি, গ্যালাক্সি যৌথ ক্লা্স্টার, সুপার স্পেস সহ বিশাল এরিয়া আমরা বুঝবো কি করে স্রস্টার বিষয়বস্তু? তাহলে কোন নাস্তিক যদি স্রস্টার ছবি আকিয়ে আরশ কুরশি নিয়ে হাসাহাসি করে তবে সেটি তার অল্প বিদ্যারই বর্হিপ্রকাশ! কারন আমরা এই মহাবিশ্ব নিয়ে কতটুকু জানি? কতটুকু জ্ঞানই বা আমরা অর্জন করেছি? আমরা এখনও জানিনা আমাদের গ্যালাক্সিটি দেখতে কি রকম? অথচ সেই সামান্য জ্ঞান নিয়ে আমরা মহারাজা। স্রস্টা নাই বলি আবার বলি আপনা আপনি সব হয়ে গেছে।
তো প্রিয় পাঠক, ভালো থাকুন।
১৮ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:০৭
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: অংক কখনও জোর করে মিলানো যায় না।
আমি জোর করে সব মিলিয়ে দিচ্ছেন। বিজ্ঞানের সাথে কোরনের একেবারেই মিলে না। কোনোদিন মিলবে না। বিজ্ঞানের কাজ শুধু অন্ধ বিশ্বাস নয়।
১৮ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:০৭
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: আপনি অংক বোঝেন? মিলছে কিনা বুঝবেন কি করে?
৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৮
নতুন বলেছেন: আছাদ নুর নাস্তিক না। তিনি ধর্ম বিদ্বেষী।
কিন্তু মানুষ আছে যারা কম বা বেশি বুঝে ধর্ম বিদ্বেষী হয়।
ধর্ম মানুষের সৃস্টি মানুষকে নিয়ন্ত্রনের জন্য কিছু আইন বানিয়েছে বুদ্ধিমান কিছু মানুষ।
আমাদের জ্ঞানে অনেক কিছুই এখনো জানিনা, আপনি যেহেতু বিশ্বাসী তাই আপনার মতন করে বিভিন্ন জিনিস মেলাতে চেস্টা করছে।
হিন্দু ধর্মেও অনেকেই আছে যারা বিশ্ব সৃস্টি, ব্রমা, অবতার নিয়ে নানান ভাবে তাদের মতন করে তাদের ধর্মীয় কাহিনি জাস্টাফাই করতে চেস্টা করে।
এমন ব্যক্ষা প্রায় সকল ধর্মীয় অনুসারীরা করে থাকে।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৬
রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: ধন্যবাদ, নতুন ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:১৩
আহমেদ রুহুল আমিন বলেছেন: পিঁপড়া যেমন মানুষের মতো কখনো কল্পনা করতে পারেনা, আমরা আল্লাহর সৃষ্ট সেরা জীব মানুষ হয়েও মহান আল্লাহর সৃষ্ট এই জাগতিক মহাবিশ্ব নিয়ে চিন্তা বা রহস্য উদঘাটন করা প্রায় অসম্ভব। সেই আসাদ নুর‘তো সামান্য একজন মুর্খ মানব ...!